রংপুর শহর সাবেক ইসপিক এর পাশে আর্মি হেডকোয়ার্টার সংলগ্ন জনৈক মেজরের বাস ভবনে রাত্রি ১১ টার দিকে জলসা বসতো। বিভিন্ন স্থান থেকে ধৃত তরুণীদের দিয়ে জোরপূর্বক নাচ এবং গানের আসর করানো হত। তখন তরুনীদের যথেচ্ছ ধর্ষণ করা হত। ধর্ষিতা মেয়েদেরকে শুকনো রুটি এবং রাত্রে সামান্য ভাত দেয়া হত।
রংপুর ক্যান্টনমেন্টের সেনাবাহিনীর মেজর বশীর ছিল নারী ধর্ষনের হোতা। প্রতি রাত্রে তার চিত্ত বিনোদনের জন্য ৩ থেকে ৪ জন বাঙ্গালী তরুণী সরবরাহ করা হতো।
সেনাবাহিনীর অফিসাররা বিভিন্ন স্থান থেকে ধৃত শিক্ষিতা তরুণীদের সাথে নিয়ে ফিরতো। রাজশাহী এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ জন শিক্ষিতা তরুণীকে একদিন কালো বোরখা পরিয়ে জনৈক অফিসার ওরিয়েন্টাল সিনেমায় নিয়ে আসে। অফিসারটি কিছুক্ষণের জন্য বাইরে বাইরে যায়। পাশের ছিটে আমি বসা ছিলাম। একজন তরুণী সরাসরি আমার সাহায্য চায়। তিনি নিজেকে বাংলা বিভাগের ছাত্রী বলে জানান। ইত্যবসরে অফিসারটি এসে পড়ে। উক্ত হতভাগিনী তরুণীদ্বয়ের জন্য আমি কিছুই করতে পারি নি।
স্বাক্ষর/-
মোঃ ওয়াহিদুজ্জামান চৌধুরী
একাউন্ট ইনচার্জ, তিস্তা বীমা কর্পোরেশন
সেন্ট্রাল রোড, রংপুর
আমি ১৯৭১-এর ২৫ শে মার্চের পরপরই রংপুর শহর সেনাবাহিনীর কবলিত হবার সঙ্গে সঙ্গে শহর ত্যাগ করে নিকটবর্তী গ্রামে আশ্রয় গ্রহণ করি। যুদ্ধকালীন সময়ের প্রথম কয়েক মাসে সেনাবাহিনীর রংপুর শহর ও শহরের আশে পাশে বিভিন্ন স্থানে নির্বিচারে বাঙ্গালী নিধন যজ্ঞের আমি একজন উৎসাহী পর্যবেক্ষক ছিলাম। বিভিন্ন স্থানে সেনাবাহিনী কর্তৃক মৃত ব্যাক্তিদের সংখ্যা এবং সঠিক তারিখ আমি সযত্নে আমার ডায়েরীতে লিপিবিদ্ধ করেছি। তথ্যগুলোর সত্যতা সম্পর্কে আমি নিশ্চিত।