প্রসঙ্গঃ পাকিস্তানপন্থী ১৯৭৫
দেশটা তখন পাকিস্তান হয়ে গিয়েছিল। না পূর্ব পাকিস্তান নয় পূর্ব পাকিস্তান হলে দক্ষিনপন্থীরা হিসেব নিকেশ করে চলত। পূর্ণ পাকিস্তান হয়েছিল। পরাজিতরা সবাই গর্ত থেকে বের হয়ে আসছিল। পাশাপাশি পাকিস্তান বিরোধীরাও পাকিস্তানী হওয়া শুরু করল। কে কত খাটি পাকিস্তানী হতে পারে তার প্রতিযোগিতা শুরু হল। আবু সাইদ চৌধুরী ছুটে গেলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে উদ্দেশ্য সেখানে সফররত পাকিস্তানী পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর সাথে যদি একটা সাক্ষাৎ পাওয়া যায়। দেড় মাসে চালের দাম দেড় গুণ বেড়ে গেছে। সরকার পরিবর্তন উপলক্ষে জুলফিকার আলী বাংলাদেশকে ৫০০০০ টন খাদ্য দিয়েছে সেটা আসার সময় আর সইছে না। মুস্তাক জাতীয় পতাকার পাশাপাশি আধা পাকিস্তানী পতাকা উত্তোলন করলেন। জিন্নাহ টুপীকে জাতীয় পোষাকে নিয়ে আসলেন। ভাষণ দেয়ার জন্য শবে কদরের রাতকে বেছে নিলেন। শার্ট প্যান্ট পড়া কমে পাজামা পাঞ্জাবী পড়ার ধুম পড়ে গেল। আগে নাকি ইসলাম শেষ হয়ে গিয়েছিল তাই সবার মধ্যে ইসলাম চর্চা বেড়ে গেল।
এ সময় সরকারের সাথে যারা ছিল তারা সবাই পাকিস্তানপন্থী ভারতপন্থী নয়। তাই এই সরকারের প্রধান দুই সমর্থক ভাসানি ও তর্কবাগীশ দুজনই পাকিস্তানপন্থী। এদের এ পন্থী আর পরিবর্তন হয়নি। আওয়ামী লীগের অনেকেই ভয়ে মন্ত্রী হয়েছিল। তর্কবাগীশ তো আর আওয়ামী এমপি ছিল না। বার্ধক্যজনিত কারনে ছিটকেই গিয়েছিলেন। তার আবার কিসের ভয়। আওয়ামী মন্ত্রীরা তো মুস্তাকের জন্য দোয়া আশীর্বাদ চায়নি। তর্কবাগীশের এত আগ বাড়িয়ে দোয়ার কি প্রয়োজনই বা ছিল। ৭৬ এ আওয়ামী লীগ পুনরিজ্জিবিত হলে অনেক মুস্তাক অনুসারী আওয়ামী লীগে ফিরে আসে আসেনি তর্কবাগীশ। তাকে আওয়ামী লীগ আবর্জনা মনে করে প্রাথমিক সদস্যপদেই রাখেনি।