You dont have javascript enabled! Please enable it!

জিয়া | ১৫ আগস্ট ৭৫ থেকে ৭ নভেম্বর ৭৫

১) সাপ্তাহিক জনমতে দেয়া সাক্ষাৎকারে শফিউল্লাহ বলেছেন ১৫ আগস্টের ঘটনা জিয়া সব জানতেন।
২) ২৪ আগস্ট জিয়া সেনা প্রধান হন কর্নেল রশিদের আশীর্বাদে 
৩) আগস্টে মোস্তাক, ওসমানী, খলিল জিয়াকে পাত্তাই দিতেন না কিন্তু ফারুক রশিদের আস্থাভাজন ছিলেন জিয়া। 
৪) কর্নেল হামিদ বলেছেন আগস্টে জিয়া আমার সাথে মোস্তাক, ওসমানী, খলিলের কড়া সমালোচনা করতেন। 
৫) এই তিন জনের কারনে জিয়া মোস্তাকের উপর নাখোশ ছিলেন 
৬) জিয়া সাফায়েত জামিল ও ফারুক রশিদ চক্রের সাথে ভারসাম্য পূর্ণ সম্পর্ক রাখতেন। 
৭) তাহেরের সাথে জিয়ার বন্ধুত্ব পূর্ণ সম্পর্ক ছিল। তাহেরকে অবসর দেয়ার পরও জিয়া তার সাথে সংযোগ রক্ষা করে চলেছিলেন। অভ্যুত্থান সংগঠিত করার জন্য তাদের মধ্যে একাধিক বৈঠক হয়। এমনকি মুজিব উৎখাতেও তাদের যৌথ পরিকল্পনা ছিল। 
৮) আগস্টে অফিসিয়াল কাজে সরাসরি জিয়া – মোস্তাক, জিয়া – ওসমানী সরাসরি আলাপ হত না। এ মধ্যস্থতা করতেন কর্নেল রশিদ। 
৯) সেপ্টেম্বরেই শেখ মুজিবের খুনিচক্র নিয়ে খালেদ এবং জিয়ার মধ্যে সম্পর্কে ফাটল ধরে। খালেদ সেনাবাহিনীর চেইন অব কম্যান্ড ফিরে আনার পক্ষপাতি ছিলেন। জিয়া তাদের সাথে ব্যালেন্স করায় খালেদ জিয়াকে সরানোর পরিকল্পনা নেন অক্টোবরেই। 
১০) খালেদের অভ্যুত্থান সম্পর্কে জিয়া জানতেন কিন্তু কোন ব্যাবস্থা নেননি। 
১১) অক্টোবরের শেষে এক পর্যায়ে মোস্তাক ওসমানী চক্র জিয়াকে সরিয়ে দিতে চেয়েছিলেন। 
১২) কর্নেল রশিদ বলেন জিয়া অক্টোবরেই মোস্তাকের পরিবর্তে নিজে প্রেসিডেন্ট হওয়ার জন্য পাগল হয়ে গিয়েছিলেন 
১৩) নভেম্বরের প্রথমেই বঙ্গভবন থেকে সিদ্ধান্ত হয় জিয়া এবং খালেদ দুজনকেই সরিয়ে দেয়া হবে কিন্তু বঙ্গভবন থেকে ২ তারিখ রাতে ফারুক অনুগত সৈন্যরা পালালে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হয়। 
১৪) ২ তারিখ মাঝ রাতেই জিয়াকে গৃহবন্দী করা হয়। গৃহবন্দী থাকায় দ্রুত তার জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পায়।
১৫) জিয়াকে উদ্ধারের জন্য ইঞ্জিনিয়ারিং ব্যাটেলিয়ন বিদ্রোহের প্রস্তুতি নেয়। পাশাপাশি তাহের বাহিনী ক্যান্টনমেন্ট এর বাহিরে সিভিল গাড়ীতে প্রস্তুত। 
১৬ ) ৭ নভেম্বর দ্বিপ্রহরে ২ ফিল্ড আর্টিলারি বিদ্রোহ করে সুবেদার মেজর আনিসুল হকের মাধ্যমে এএকে রেজিমেন্ট তারপর পর শুরু করে। তাহেরের বাহিনী ক্যান্টনমেন্ট প্রবেশ করে। বিপ্লবী সৈনিক গন সুবেদার মেজর আনিস ও মেজর মহিউদ্দিন জিয়াকে মুক্ত করে ২ ফিল্ড আর্টিলারিতে নিয়ে যায়। (২ ফিল্ড আর্টিলারির কমান্ডার রা ক্ষমতাহীন ছিলেন। এটি ছিল রশিদের বাহিনী) 
১৭) ২ফিল্ডে স্টেশন কম্যান্ডার কর্নেল হামিদ জিয়ার সাথে দেখা করলেন। জিয়া তাকে পূর্বের কথা কানে কানে স্মরন করিয়ে দেন।(জিয়ার গোপন অভ্যুত্থান পরিকল্পনা) 
১৮) তাহের জিয়ার সাথে দেখা করেন। রাতেই আড়ালে গিয়ে তারা অনেকক্ষণ মিটিং করেন। রেডিও স্টেশনে যাওয়া নিয়ে তাদের মধ্যে বিভক্তি দেখা দেয়। জিয়া সুবেদার মেজর আনিসকে কানে কানে আদেশ দেয় তাহেরকে সেখান থেকে সরিয়ে নিতে। তাহের বুঝে যায় জিয়ার বেইমানী। 
১৯) জিয়া বিমান বাহিনী প্রধান তোয়াব ও মেজর জেনারেল খলিলকে আনার নির্দেশ দেন। মেজর জেনারেল খলিল বিডিআর এর ভিতর অবস্থান করছিলেন। তিনি রাতে যেতে অস্বীকৃতি জানান। 
২০) তাহেরের অগোচরেই ২ ফিল্ডে জিয়ার ভাষণ রেকর্ড হয় ভোর বা সকালে তা প্রচার হয়। ভাষণে জিয়া নিজেকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক পরিচয় দেন। 
২১) সকাল ৭ টায় ফারুকের ১ বেঙ্গল লেন্সার জোর করে মোস্তাককে রেডিওতে আনে এবং বক্তব্য প্রদানের চেষ্টা চালায়। তাহের বাহিনীর বাধায় তা সম্ভব হয়নি। 
২২) সকাল ৮ টায় জিয়াকে অভিনন্দন জানাতে আসেন ওসমানী, খলিল, তোয়াব এমএইচ খান। মাহবুবুল আলম চাষিও এসেছিলেন। এরপর সকাল ১০ টায় তাহের আসেন। সেখানে তাদের বৈঠক হয়। বৈঠকে তাহের জ্বালাময়ী বক্তৃতা দেন। সভায় রাষ্ট্রপতি মনোনয়ন নিয়ে আলোচনা হয়। ওসমানী মোস্তাকের নাম প্রস্তাব করেন তাহের, খলিল তা নাকচ করে দেন। পরে সভায় সিদ্ধান্ত হয় সায়েমই রাষ্ট্রপতি বহাল থাকবেন। তাহের আর খলিলের চাপে জিয়া প্রধান সামরিক আইন প্রশাসকের দায়িত্ব রাষ্ট্রপতির উপর ছেড়ে দেন। সকালেই জিয়া রেডিওতে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক হিসেবে ভাষণ প্রচার করেছিলেন। সভায় তাহেরের ১২ দফা উপস্থাপন হলে সবাই তা প্রত্যাখ্যান করলে তাহেরের ২য় দফা রাজনৈতিক পরাজয় ঘটে। 
২৩) দুপুরে জিয়া ক্যান্টনমেন্ট এর বিভিন্ন ইউনিট পরিদর্শন করেন। এসময় তিনি সবাইকে শান্ত থাকার আহবান জানান। সকলকে অস্র সমর্পণ করতে বলেন। তিনি সৈনিকদের মেসে বিশেষ খাবার গ্রহন করতে বলেন। 
২৪) সন্ধ্যায় বিদায়ী এবং নতুন রাষ্ট্রপতির ভাষণ শুনতে রেডিওতে যান জিয়া। আগে থেকেই তাহের সেখানে ছিলেন। তাহের বাহিনী জিয়ার কাছ থেকে ১২ দফার উপর দস্তখত নেয়।
২৫) সন্ধ্যা থেকে রাত্রে নারায়ে তাকবির আল্লাহ আকবর বলে জিয়ার সমর্থনে ঢাকা শহরে সিপাহিদের সাথে স্লোগান দেয় জনতা। রাজনীতিতে ইসলামী কানেকশন পাওয়া যায়। 
২৬) ৭ নভেম্বর সন্ধ্যায় জিয়ার সাথে বনিবনা না হওয়ায় এবং দাবি দাওয়া সব মানতে অস্বীকার করায় তাহের অনুগতরা অফিসার হত্যায় মেতে উঠে। 
নোটঃ ৭ নভেম্বর ক্যান্টনমেন্ট এ মুল নেতা ছিলেন কর্নেল রশিদের অনুগত ২ ফিল্ডের সুবেদার মেজর আনিসুল হক। তথ্য – কর্নেল হামিদের বই অবলম্বনে

 

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!