You dont have javascript enabled! Please enable it! 1974.11.15 | কিসিঞ্জারের সফর তালিকা - সংগ্রামের নোটবুক

কিসিঞ্জারের চক্রবাল সফর

কিসিঞ্জারের সফর

১ । সোভিয়েট ইউনিয়ন ঃ অক্টোবর ২৩-২৭

২ । ভারত ঃ অক্টোবর ২৭-৩০

৩ । বাংলাদেশ ঃ অক্টোবর ৩০-৩১

৪ । পাকিস্তান ঃ অক্টোবর ৩১-১

৫ । আফগানিস্তান ঃ নবেম্বর ১

৬ । ইরান ঃ নবেম্বর ১-৩

৭ । রুমানিয়া ঃ নবেম্বর ৩-৪

৮ । যুগোস্লাভিয়া ঃ নবেম্বর ৪

৯ । ইটালী ঃ নবেম্বর ৪-৫

১০ । মধ্যপ্রাচ্য ঃ নবেম্বর ৫

নবেম্বরের ২৩ এবং ২৪ তারিখ মার্কিন প্রেসিডেণ্ট ফোর্ড-এর সঙ্গে সোভিয়েট পার্টি প্রধান ব্রেজনেভের বৈঠক বসবে সোভিয়েট ইউনিয়নের বন্দরনগরী ভ্লাদিভস্তক-এ। কিসিঞ্জারের সাম্প্রতিক মস্কো সফরের সময় এটা ঠিক হয়েছে। প্রেসিডেণ্ট ফোর্ডের প্রস্তাবিত জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া সফরশেষে এই বৈঠক হবে।

কিসিঞ্জার ২৩ অক্টোবর মস্কো যান, ২৭ তারিখ মস্কো থেকে যান দিল্লীতে। ২৩ তারিখ শুরু হয় তার এ পর্যায়ের সফর। ওয়াশিংটন থেকে সোজা তিনি মস্কো গিয়ে নামলেন ২৩ অক্টোবর। বৈঠক বসলেন ব্রেজনেভের সঙ্গে। ব্রেজনেভ বললেন, নিক্সনের সঙ্গে রাশিয়ার যে সম্পর্ক ছিল ফোর্ডের সঙ্গে দরকার হলে তার চেয়েও গভীর সম্পর্ক নির্মিত হবে। কিসিঞ্জার বৈঠকের শুরুতে ভ্লাদিভস্তক সম্মেলনের জন্য রাজী হয়ে বললেন, ফোর্ড এবং ব্রেজনেভের বৈঠকে যাতে একটা কিছু হতে পারে তার ব্যবস্থা হওয়া দরকার। একটা ব্যাপারে দুই পক্ষ রাজী হলেন ঃ১৫০ কিলোটন-এর উপর শান্তির জন্যে পারমাণবিক বোমার বিস্ফোরণ (মাটির নীচে) করা হবে না। এই চুক্তি ২৩-২৪ এর শীর্ষ বৈঠকে সই করা হবে। বাণিজ্যের ব্যাপারে আলোচনায় মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এক ঘণ্টারও বেশী ব্যয় করেন। ব্রেজনেভ আশ্বাস দিয়েছেন বাণিজ্য ক্রমশ ব্যাপক হবে।

তিনদিনের বৈঠকে কিসিঞ্জার মধ্যপ্রাচ্যে তার শান্তি মিশনে সোভিয়েট সমর্থন কামনা করেন। ব্রেজনেভ সমর্থনের আশ্বাস দিয়ে বলেন সমগ্র অধিকৃত আরব এলাকা থেকে ইসরাইলী বাহিনী প্রত্যাহার করতে হবে এবং মধ্যপ্রাচ্য শান্তি বৈঠকে প্যালেস্টাইন মুক্তি সংস্থাকে গ্রহণ করতে হবে।

মস্কো থেকে ২৭ তারিখ দিল্লী গেলেন কিসিঞ্জার। ১৯৭১ সালে ভারতের সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্ক খারাপ হয়ে যায়। গত কয়েক মাস থেকে সে সম্পর্ক উন্নতির দিকে। কিসিঞ্জারের সফর তা আরো দৃঢ় করবে। দিল্লীতে খাদ্য নিয়ে আলোচনা হল ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে। ৩০ তারিখ তিনি এলেন ঢাকায়, এখানে খাদ্য পেল প্রাধান্য, খাদ্য সাহায্যের আশ্বাস দিলেন কিসিঞ্জার। ৩১-এ তিনি গেলেন ইসলামাবাদ, প্রধানমন্ত্রী ভুট্টো মার্কিন অস্ত্র চাইলেন, কিসিঞ্জার অরাজী হননি তবে কথাও দেননি। নবেম্বরের ১ তারিখ ইসলামাবাদ থেকে কাবুল হয়ে তিনি পৌছুলেন ইরানের রাজধানী তেহরানে। এখানে অস্ত্র নিয়ে কথা হলেও কিসিঞ্জার তেলের ব্যাপারকেও গুরুত্ব দিলেন। ৩ তারিখ তিনি গেলেন রুমানিয়া। ৪ তারিখ ‍যুগোস্লাভিয়া হয়ে ইটালী। রোমে বিশ্ব খাদ্য সম্মেলনে ভাষণ দিলেন। এবং ৫ তারিখ গেলে মধ্যপ্রাচ্যে।

এবারের মস্কো সফরে তিনি ছিলেন ভীষণ ব্যস্ত। ওয়াশিংটন থেকে পাঠানো টেলিগ্রামগুলো তিনি পড়তেন সকালের নাস্তা শেষে কাপড় পড়তে পড়তে। মস্কো সফর শেষলগ্নে তিনি বলেন, এইবার আমরা অনেক ক্ষেত্রে একমত হয়েছি। এতে দু’দেশর মানুষের যেমন উপকার হবে তেমনি মানবজাতিও উপকৃত হবে।