স্বরূপনগরের জনসভায় বাঙলাদেশের প্রতি সমর্থন ঘােষণা
স্বরূপনগর, ১৬ মে (সংবাদদাতা) বাঙলাদেশে পশ্চিম পাকিস্তানের জঙ্গীশাহীর বর্বর অত্যাচারের বিরুদ্ধে তীব্র ধিক্কার জানিয়ে গত ১১ মে স্থানীয়, চারাঘাট গ্রামে কমিউনিস্ট পার্টির ডাকে এক সুবৃহৎ জনসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রায় আড়াই হাজার মানুষ ঐ সমাবেশে যােগ দেন।
সভার প্রধান বক্তা কমিউনিস্ট নেতা শ্রীভবানী সেন তার ভাষণে বাঙলাদেশের উপর পাক সৈন্যদের অমানুষিক অত্যাচারের উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, পাকিস্তানী শাসকরা আমেরিকার মদৎ পেয়ে বরাবর ডিক্টেটরী চালিয়ে এসেছে। পাক জঙ্গীশাহী বর্তমানে চীন এবং আমেরিকার যৌথ সহায়তায় বাংলাদেশে তাদের ডিক্টেটরী শাসন ও শােষণ বজায় রাখছে। বাঙলাদেশের বর্তমান আন্দোলন সেই শাসন ও শােষণের বিরুদ্ধে। এই আন্দোলন জয় যুক্ত হবেই বলে তিনি ঘােষণা করেন।
সভায় বাঙলাদেশের ন্যাপের জনৈক নেতা তার ভাষণে বাঙলাদেশের উপর পাকিস্তানী শাসকদের শশাষণের ধারাবাহিক ইতিহাস তুলে ধরেন। তিনি পাক সৈন্যের বিরুদ্ধে বাঙলাদেশের বর্তমান মুক্তি আন্দোলনের বিবরণ দিয়ে বলেন যে, ইয়াহিয়া-ভুট্টো চক্রের বিরুদ্ধে আমাদের সংগ্রাম জয়লাভ করবেই।
এছাড়াও সভায় সর্বশ্রী যামিনী সেন, অর্ধাংশু চ্যাটার্জী, গােপীসাহা প্রমুখ নেতৃবৃন্দ বক্তৃতা করে।
ভারত সরকারের কাছে বাঙলাদেশকে স্বীকৃতি ও সর্বপ্রকার সাহায্যে দানের দাবিসহ সভা থেকে কয়েকটি প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন শ্রীবলরাম রায়।
বালুরঘাটে সুবিশাল গণমিছিল গত ১০ মে কমিউনিস্ট পার্টির বালুরঘাট আঞ্চলিক পরিষদের উদ্যোগে এক বিরাট গণ মিছিল বিভিন্ন দাবিতে জেলা সমাহিতার কাছে ডেপুটেশন দেয়।
বাঙলাদেশের মুক্তি সংগ্রামে সর্বপ্রকার সাহায্য দানের দাবি ছাড়াও কৃষি সংক্রান্ত কয়েকটি স্থানীয় সমস্যার সমাধানের দাবির উল্লেখ করে মিছিলের পক্ষ থেকে একটি স্মারক পত্র জেলা সমহর্তার কাছে পেশ করা হয় মিছিলের পক্ষ থেকে এক প্রতিনিধিদল বাঙলাদেশ থেকে আগত শরণার্থীদের আশ্রয়দানের জন্য জেলা শাসকের কাছে গ্রামে গ্রামে আরাে সাহায্য শিবির খােলার দাবি জানান। গণ মিছিলের নেতৃত্ব করেন সর্বশ্রী মনী চৌধুরী, তেজেস পঞ্চানন, তপন চৌধুরী, প্রমুখ স্থানীয় কমিউনিস্ট নেতৃবৃন্দ।
ওড়িশার বণ্ডামুণ্ডায় জনসভা
বাঙলাদেশ মুক্তি সংগ্রামের সমর্থনে গত ১০ মে ওড়িশার বামুণ্ডায় শ্রমিক কর্মচারীদের একটি জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। দক্ষিণ পূর্ব রেলওয়ে মেনস ইউনিয়নের স্থানীয় শাখা ও রাউরকেলা ইস্পাত শ্রমিক ইউনিয়নের যৌথ উদ্যোগে অনুষ্ঠিত ঐ জনসভা থেকে বাঙলাদেশকে স্বীকৃতি দানের জন্য ভারত সরকারের কাছে দাবি জানান হয়।
খাদি কর্মচারীদের সাহায্য
বাঙলাদেশের মুক্তি সংগ্রামের সাহায্যার্থে খাদি কমিশন কর্মচারীদের পক্ষ থেকে প্রথম কিস্তি হিসাবে গতকাল ৮৫১ টাকা বাংলাদেশ কূটনৈতিক মিশনের প্রধানের হস্তে অর্পণ করা হয়।
সূত্র: কালান্তর, ১৭.৫.১৯৭১