You dont have javascript enabled! Please enable it!

শিরোনামঃ শামসুল হক কর্তৃক আত্তয়ামী মুসলিম লীগের প্রথম প্রস্তাবিত ম্যানিফেষ্টো
সুত্রঃ পূর্ব বাংলার ভাষা আন্দোলন ও তৎকালীন রাজনীতি : বদরুদ্দীন উমর, পৃষ্ঠা-২৪১
তারিখঃ ২৪শে জুন, ১৯৪৯

শামসুল হকের প্রস্তাব ও আওয়ামী মুসলিম লীগের প্রথম ম্যানিফেষ্টোঙ্ক পুর্ব পাকিস্তান মুসলিম লীগ কর্মী সম্মেলনে বিবেচনার জন্যে শামসুল হক ‘মূলদাবী নামে একটি ছাপা পুস্তিকাতে লিপিবদ্ধ তাঁর বক্তব্য পাঠ করেন। পুস্তিকাটির মুখবন্ধের প্রারম্ভে তিনি বলেনঃ ইং ১৯৮৯ সনের ২৩শে ও ২৪শে জুন তারিখে ঢাকায় অনুষ্ঠিত “পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম লীগ কর্মী সম্মেলন” মনে করে যে, সর্বকালের, সর্বযুগের সর্বদেশের যুগ প্রবর্তক ঘটনাবলীর ন্যায় লাহোর প্রস্তাবও একটি নূতন ইতিহাসের সৃষ্টি করিয়াছে। বিরুদ্ধ পরিবেশে মানবের দেহ, মন ও মস্তিস্কের উন্নতি ও পূর্ণ বিকাশ সম্ভব নয়। মানুষ পরিবেশের দাস এ কথা আধুনিক বৈজ্ঞানিকগণও স্বীকার করেন। বিরুদ্ধ পরিবেশে পূর্ণ ইসলামিক মনোভাব এবং সমাজ বিধান গড়িয়া তোলা সম্ভব নয়। ভারতের মুসলমানগণ বহু শতাব্দীর সঞ্চিত অভিজ্ঞতা হইতে এই মহা সত্য উপলব্ধি করিয়াই বিরুদ্ধ পরিবেশে বা দারুল হরবের পরিবর্তে ইসলামিক পরিবেশ বা দারুল ইসলাম কায়েম করার জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হইয়াছিল। কিন্তু পাকিস্তান ইসলামিক রাষ্ট্র হইলেও শুধু মুসলমানের রাষ্ট্র বা শুধু মুসলমানের জন্য প্রতিষ্ঠিত করিবার এবং পাশ্চাত্য সভ্যতা ও শিক্ষা প্রভাবাম্বিত ইসলামবিরোধী সাম্রাজ্যবাদী, ধনতান্ত্রিক ও আত্মকেন্দ্রিক পরিবেশ গড়িয়া তুলিবার ইচ্ছা তাহদের ছিল না। রব বা স্রষ্টা হিসেবেই সৃষ্টির বিশেষ করিয়া সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব মানুষের সাথে আল্লাহ সবচাইতে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বস্তুতঃ রব বা স্রষ্টা, পালন বা পোষণকর্তা হিসাবে, বিশ্ব ও সৃষ্টিকে ধাপের পর ধাপ, স্তরের পর স্তর, পরিবর্তনের পর পরিবর্তনের ভিতর দিয়া কতকগুলি স্থায়ী ও সাধারণ ক্রমবিকাশ ক্রমোন্নতির নিয়মানুসারে এক অবস্থা হইতে অপর অবস্থার ভিতর দিয়া ধীরে ধীরে কিন্তু সুনিশ্চিতরূপে চরম সুখ, শান্তি ও পূর্ণতা প্রাপ্তির দিকে আগাইয়া নিবেন। ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গিতে আল্লাহ শুধু মুসলমানের নয়- জাতি, ধর্ম ও বর্ণ নির্বিশেষে সমগ্র মানবের। রবই আল্লাহ সত্যিকার পরিচয়। রব হিসাবে রবুবিয়াৎ বা বিশ্ব-পালনই তাঁর প্রথম ও প্রধান কাজ। সুতরাং দুনিয়ার উপর আল্লাহর খলিফা বা প্রতিভূ হিসাবে মানব এবং খেলাফৎ হিসাবে রাষ্ট্রের প্রথম এবং প্রধান কাজ ও কর্তব্য হইল আল্লাহর উপায় ও পদ্ধতি অনুসারে বিশ্বের পালন করা এবং জাতি, ধর্ম ও বর্ণ নির্বিশেষে মানুষের সামগ্রিক সুখ, শান্তি, উন্নতি, কল্যাণ ও পূর্ণ বিকাশের জন্য চেষ্টা, সাধনা ও সংগ্রাম করা। মুসলিম লীগ সম্পর্কে শামসুল হক পুস্তিকাটিতে বলেনঃ নিখিল ভারত মুসলিম লীগ কখনও দল বিশেষের প্রতিষ্ঠান ছিল না; ইহা ছিল ভারত উপমহাদেশের মুসলিম জনগণের জাতীয় প্ল্যাটফর্ম বা মঞ্চ। ইহার উদ্দেশ্য পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর, পাকিস্তানের মূল নীতিগুলিকে কার্যকরী করিয়া তুলিতে হইলে প্রয়োজন নতুন চিন্তাধারা, নতুন নেতৃত্ব এবং নতুন সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক নীতি ও কর্মসূচী এবং মুসলিম লীগকে মুসলিম জনগণের সত্যিকার জাতীয় প্ল্যাটফর্ম বা মঞ্চ হিসাবে গড়িয়া তোলার।…
• ১৯৪৮ সালের ২৩শে জুন আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠিত হয়। এই সংগঠনের প্রথম সভাপতি মওলানা ভাসানী, সম্পাদক শামসুল হক এবং যুগ্ম সম্পাদক শেখ মুজিবুর রহমান ও খোন্দকার মোশতাক আহমেদ।

কিন্তু দুঃখের বিষয় বর্তমান পকেট লীগ নেতৃবৃন্দ উপরোক্ত কর্মপন্থা অনুসরণ না করিয়া তাঁদের নিজেদের কায়েমী স্বার্থ এবং প্রতিক্রিয়াশীল নেতৃত্ব বজায় রাখার জন্য লীগের মর্যাদা ও জনপ্রিয়তা ভাঙ্গাইয়া চলিয়াছেন। এই উদ্দেশ্যেই তাহারা মুসলিম লীগকে দলবিশেষের প্রতিষ্ঠান করিয়া ফেলিয়াছেন। শুধু তাহাই নয়, মানবের প্রতি আশীর্বাদস্বরূপ ইসলামকেও ব্যক্তি, দল ও শ্রেণীবিশেষের স্বার্থসিদ্ধির জন্য অন্যায় এবং অসাধুভাবে কাজে লাগান হইতেছে। কোনও পাকিস্তান প্রেমিক এমন কি মুসলিম লীগের ঝানু কমিগণ পর্যন্ত নীতি ও কর্মসূচী সম্পর্কে কোনরূপ প্রশ্ন উত্থাপন করিতে অথবা প্রস্তাব করিতে পারে না। কেহ যদি এইরূপ করিবার চেষ্টা করে তাহা হইলে তাহাদিগকে পাকিস্তানের শক্র বলিয়া আখ্যায়িত করা হয়। পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম লীগ কর্মী সম্মেলন মনে করে যে, মুসলিম লীগকে এইসব স্বার্থান্বেষী মুষ্টিমেয় লোকদের পকেট হইতে বাহির করিয়া সত্যিকার জনগণের মুসলিম লীগ হিসাবে গড়িয়া তুলিতে হইলে, মুসলিম লীগকে সত্যিকার শক্তিশালী মুসলিম লীগ বা মুসলিম জামাত বা মুসলিম জাতীয় প্ল্যাটফর্ম বা মঞ্চে পরিণত করিতে হইলে প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক মুসলিমকে ইহার সদস্য শ্রেণীভুক্ত করিতে হইবে, অন্যথায় মুসলিম লীগকে পাশ্চাত্য সভ্যতা, গণতন্ত্র ও সাংগঠনিক নীতি প্রভাবান্বিত দলবিশেষের পার্টি বলিয়া ঘোষণা করিয়া অপরাপর সবাইকে সাধ্যমত দল গঠন করিবার সুযোগ-সুবিধা ও অধিকার দিতে হইবে। মুসলিম লীগের ভিতর প্রত্যেক ব্যক্তি, দল ও উপদলের স্বাধীন মতামত, আদেশ, নীতি ও কর্মসূচী ব্যক্ত এবং তার পিছনে সংঘবদ্ধ হইবার অধিকার দিতে হইবে। তদুপরি ছাত্র, যুবক, মহিলা, চাষী, ক্ষেতমজুর, মজদুর প্রভৃতি শ্রেণীসংঘ গড়িয়া তুলিবার স্বাধীনতা থাকিবে। ইসলামী রাষ্ট্রের রূপ সম্পর্কে তাতে বলা হয়ঃ ১। পাকিস্তান খেলাফৎ অথবা ইউনিয়ন অব পাকিস্তান রিপাবলিকস বৃটিশ কমনওয়েলথের বাহিরে একটি স্বাধীন সার্বভৌম ইসলামী রাষ্ট্র হইবে। ২। পাকিস্তানের ইউনিটগুলিকে আত্মনিয়ন্ত্রণের পূর্ণ অধিকার দিতে হইবে। ৩। রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব আল্লাহর প্রতিভূ হিসাবে জনগণের উপর ন্যস্ত থাকিবে। ৪। গঠনতন্ত্র হইবে নীতিতে ইসলামী, গণতান্ত্রিক ও আকারে রিপাবলিকান। কৃষি পুনর্গঠন প্রস্তাবে বলা হয়ঃ ১। জমিদারী প্রথা ও জমির উপর অন্যান্য কায়েমী স্বার্থ বিনা খেসারতে উচ্ছেদ করিতে হইবে। ২। সমস্ত কৰ্ষিত ও কৃষি উপযোগী আকৰ্ষিত জমি কৃষকদের মধ্যে বন্টন করিয়া দিতে হইবে। ৩। তাড়াতাড়ি অর্ডিন্যান্স জারী করিয়া তেভাগা দাবী মানিয়া লইতে হইবে। ৪। রাষ্ট্রের তত্ত্বাবধানে অবিলম্বে সমবায় ও যৌথ কৃষি প্রথা প্রতিষ্ঠা করিতে হইবে।… ৫। নিম্নলিখিত বিষয়ে কৃষকদের অবিলম্বে সাহায্য করিতে হইবেঃ (ক) সেচ ব্যবস্থা সুবিধা ও সার প্রস্তুতের পরিকল্পনা। (খ) উন্নত ধরনের বীজ ও বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি। (গ) সহজ ঋণদান ও কৃষিঋণ হইতে মুক্তি। (ঘ) ভূমি-করের উচ্ছেদ না হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত ভূমিকর শতকরা পঞ্চাশ ভাগ কমানো। (ঙ) ভূমি-করের পরিবর্তে কৃষি আয়কর বসানো। (চ) খাদ্যশস্য প্রভৃতি জাতীয় ফসলের সর্বনিম্ন ও সর্ব-উর্ধ্ব দর নির্ধারণ করিয়া দিতে হইবে এবং পাটের সর্বনিম্ন দর বাঁধিয়া দিতে হইবে।

(ছ) খাদ্যশস্যের ব্যবসা সরকারের হাতে একচেটিয়া থাকা উচিত। পাট ব্যবসা ও বুনানীর লাইসেন্স রহিত করিতে হইবে। (জ) সকল রকমের সমবায় সমিতিগুলিকে সাহায্য ও উৎসাহ দিতে হইবে। ৬। কালে সমস্ত ভূমিকে রাষ্ট্রের জাতীয় সম্পত্তিতে পরিণত করিতে হইবে এবং সরকারের অধিনায়কত্ব ও তত্ত্বাবধানে যৌথ ও সমবায় কৃষিপ্রথা খুলিতে হইবে। দেশীয় শিল্পকে নানা বিপদের হাত থেকে রক্ষা করার উদ্দেশ্যে মূল দাবীতে নিম্নলিখিত কর্মসূচীর উল্লেখ করা হয়ঃ ১। প্রাথমিক শিল্পগুলিকে জাতীয় সম্পত্তিতে পরিণত করিতে হইবে যেমনঃ যুদ্ধ শিল্প, ব্যাঙ্ক, বীমা, যানবাহন, বিদ্যুৎ সরবরাহ, খনি, বন-জঙ্গল ইত্যাদি; এবং অন্যান্য ছোটখাটো শিল্পগুলিকে পরিকল্পনার ভিতর দিয়া সরাসরি রাষ্ট্রের তত্ত্ববধানে আনিতে হইবে। ২। পাট ও চা শিল্পকে জাতীয় সম্পত্তিতে পরিণত হইবে এবং পাট ও চা ব্যবসা সরকারের হাতে একচেটিয়া থাকিবে। ৩। কুটির শিল্পগুলিকে সুচিন্তিত পরিকল্পনার ভিতর দিয়া বিশেষভাবে সাহায্য ও উৎসাহ দান করিতে হইবে। ৪। বিল, হাওর ও নদীর উপর হইতে কায়েমী স্বার্থ তুলিয়া দিয়া সরকারের কর্তৃত্বাধীনে মৎস্যজীবীদের মাঝে যৌথ উপায়ে বন্টন করিয়া দিতে হবে এবং সুপরিকল্পিত পদ্ধতিতে বৈজ্ঞানিক উপায়ে মৎস্যের চাষ ও মৎস্য ব্যবসার পত্তন করিতে হইবে। ফিশারী বিভাগের দ্রুত উন্নয়ন করিয়া এই সমস্ত বিষয়ে শিক্ষা প্রসার করিতে হইবে ও উন্নত ধরনের গবেষণাগার খুলিতে হইবে। ৫। শিল্প ও ব্যবসায়ে ব্যক্তিগত একচেটিয়া অধিকার থাকিবে না। ৬। বৃটিশের নিকট হইতে স্টার্লিং পাওনা অবিলম্বে আদায় করিতে হইবে এবং তাহা দ্বারা যন্ত্রপাতি ক্রয় করিতে হইবে ও শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়িয়া তুলিতে হইবে। ৭। দেশের আভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক ব্যবসাকে নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত করিবার ভার রাষ্ট্রকে গ্রহণ করিতে হইবে। ৮। সমস্ত বৃটিশ ও বৈদেশিক ব্যবসাকে জাতীয় সম্পত্তিতে পরিণত করিতে হইবে। ৯। শিল্পে বৈদেশিক মূলধন খাটানো বন্ধ করিতে হইবে। ১০। শিল্পে মুনাফা হার আইন করিয়া বাধিয়া দিতে হইবে। মানবতার চূড়ান্ত মুক্তি সংগ্রাম যাতে বিলম্বিত না হয়, সেজন্য জনতাকে তাহদের সমস্ত ব্যক্তিগত এবং দলগত বিভেদ বিসর্জন দিয়া এক কাতারে সমবেত হইতে মুসলিম লীগ কর্মী সম্মেলন আবেদন জানাইতেছে। সাম্রাজ্যবাদী সরীসৃপের ফোঁস-ফোঁস শব্দ আজ সমাজের আনাচে-কানাচে সর্বত্র শোনা যাইতেছে- সেই ফোঁসফোঁস শব্দই যেন এই যুগের সঙ্গীত। আমাদের কওমী প্রতিষ্ঠান এই সরীসৃপদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম চালাইয়া তাহাদের বিষদাঁত উৎপাটন করিতে বদ্ধপরিকর। হজরত আবু বকর সিদ্দিকী (রাঃ) বলিয়াছিলেন : “যদি আমি ঠিক থাকি, তবে আমাকে অনুসরণ কর, আর যদি আমি ভ্রান্ত হই, আমাকে সংশোধন কর।” সেই অমর আদর্শকেই সামনে ধরিয়াই কওমী প্রতিষ্ঠান সমস্ত দেশবাসীকে সমতালে আগাইয়া আসিতে আহবান জানাইতেছে আসুন আমরা কোটি কোটি নর-নারীর সমবেত চেষ্টায় গণ-আজাদ হাসিল করিয়া সোনার পূর্ব পাকিস্তানকে সুখী, সমৃদ্ধ ও গণতান্ত্রিক ভিত্তিতে গড়িয়া তুলি।

খসড়া
পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগের গঠনতন্ত্র ও নিয়মনীতি
নাম
এই সংগঠন “পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ” নামে অভিহিত হইবে এবং যথা সময়ে নিখিল পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগের সহিত সম্বন্ধযুক্ত করা হইবে।
আওয়ামী মুসলিম লীগ কেন গঠিত হয়েছিলো?
এর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য
সর্বভারতীয় মুসলিম লীগ স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম করে এবং এর প্রধান লক্ষ্যই ছিলো পাকিস্তানের স্বাধীনতা অর্জন। পাকিস্তান অর্জিত হওয়ার পর নেতাগণ এই সংগঠনটি বিলীন করে তার অস্তিত্ব পাকিস্তান মুসলিম লীগের মধ্যে আনার সিদ্ধান্ত নেয়। শুরুর দিকে, পাকিস্তানের মুসলমানগণ এই সংগঠনকে সর্বভারতীয় মুসলিম লীগের উত্তরাধিকারী হিসেবে গ্রহণ করে যা পাকিস্তানের পক্ষে সংগ্রাম করেছিলো; কিন্তু কালক্রমে তাদের মোহ কাটতে লাগলো। এটা তাদের কাছে স্পষ্ট হয়ে অঠে যে, পাকিস্তান মুসলিম লীগ পূর্বসূরিদের সব গোরবের উত্তরাধিকারী হওয়া সত্ত্বেও ততটা জনপ্রিয় হতে পারেনি। বরং একটি দলের প্রধান লক্ষ্যই ছিলো মন্ত্রণালয়ে ক্ষমতা বজায় রাখা। স্বাধীনতা সংগ্রামে যারা প্রকৃতপক্ষে সবকিছু হারিয়েছেন, তারাই সংগঠনে প্রবেশ করতে পারলোনা। সংগঠকদের এই চক্রান্তকে ধন্যবাদ দিতেই হয়, যখন বহুসংখ্যক পূর্বেকার ‘জাতীয়তাবাদী ‘, পাকিস্তানবিরোধী এবং সুযোগসন্ধানী, ক্ষমতালোভী মানুষজন রাতারাতি মুসলিম লীগের সদস্য হয়ে গেলো এবং একটিমাত্র গোষ্ঠী দ্বারা গঠিত হলো তথাকথিত ” মুসলিম লীগ”।
দেশের বহুল আলোচিত সমস্যা অসমাপ্তই থেকে গেলো এবং এই দীর্ঘ বছর মুসলিম লীগ জনগণের দুর্দশা লাঘবের জন্য কিছুই করেনি। পার্টি সম্পূর্ণভাবে সরকারের যন্ত্র হিসেবে প্রমাণিত হলো এবং কালক্রমে মুসলিম লীগ একটি সরকারি লীগে পরিণত হলো। বিরোধীদলের কণ্ঠ রোধ করা হয়েছিলো এবং যারা ন্যায়বিচার এবং বৈধ অধিকারের দাবি জানিয়েছিলো, সেসব সত্যিকার ও প্রকৃত নেতাদেরকে কারারুদ্ধ করার জন্য বিভিন্ন নিরাপত্তা আইন ও অধ্যাদেশ প্রণীত হয়েছিলো। প্রধানত মুসলিম লীগের মনোভাবের কারণেই দেশের অগ্রগতি সাধিত হয়নি, জনগণের শিক্ষাব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে, উদ্বাস্তুদের পুনর্বাসিত করা হয়নি, শিল্পখাত বিকশিত হয়নি, দুইবছরেরও বেশি সময় ধরে নির্বাচন আটকে থাকায় আসন শূন্যই থেকে গেছে; প্রশাসনিক মান প্রায় প্রতিটি শাখায় অবনতি হয়েছে এবং দিনদিন নিরাপত্তা আইনের তালিকা বৃহৎ হয়ে উঠছে।
এই প্রসঙ্গে, জনমত গঠন এবং দারিদ্র্যপীড়িত জনগণের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এবং সাম্যবাদী ইচ্ছাশক্তি দ্বারা সব দুর্দশা থেকে পরিত্রাণের জন্য সাধারণ মানুষ একটি সংগঠন গঠনের প্রস্তাব করেন। বর্তমান শাসকদের পকেটস্থ এবং আজ্ঞাবহ সরকারি লীগের বিপরীত এই সংগঠনটি হবে সকল মানুষের। আওয়ামী মুসলিম লীগ স্বতন্ত্র একটি পৃথক সংগঠন।

লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য
পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য প্রসঙ্গত নিম্নরূপ হতে হবে:-
(১) পাকিস্তানের সার্বভৌমত্ব, অখণ্ডতা, মর্যাদা ও স্থিতিশীলতা রক্ষা করা।
(২) পাকিস্তানের সংবিধান ও আইন সত্যিকারের গণতান্ত্রিক মূলনীতিরর উপর প্রতিষ্ঠিত হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত করা।
(৩) পাকিস্তানের মুসলমানদের ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক, সামাজিক, শিক্ষাগত এবং অর্থনৈতিক স্বার্থ বজায় রাখা ও উন্নত করা এবং পাকিস্তানের অন্যান্য অমুসলিমদের জন্যও অনুরূপ অধিকার নিশ্চিত করা।
(৪) পাকিস্তানের প্রত্যেক নাগরিকের জীবনধারণের মৌলিক উপকরণ যেমন :- খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা সেবা এবং সৎ উপায়ে সম্মানীয় পারিশ্রমিক আয় করার সুযোগ নিশ্চিত করে দেয়া।
(৫) সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত করা এবং শ্রমের বিনিময়ে তাদের পূর্ণ পারিশ্রমিক পেতে সাহায্য করা।
(৬) দুঃখ-দুর্দশা উপশম, জ্ঞান সঞ্চারণ, সমতা ও ন্যায়বিচার প্রসারণ, নিপীড়ন দূরীকরণ, দুর্নীতি দমন এবং আত্মনির্ভরতা ও সহযোগিতার ভিত্তিতে সামাজিক সেবা সংগঠিত করে মানুষের নৈতিক ও বৈষয়িক মানোন্নয়ন করা।
(৭) নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগ পৃথকীকরণ এবং বিচার বিভাগ ও পাবলিক সার্ভিস কমিশনের স্বাধীনতা বজায় রাখা; যুদ্ধবিগ্রহ কিংবা এধরনের জরুরি অবস্থা না হলে যেকোনো শাস্তিমূলক আটকাবস্থার পূর্বে জুডিশিয়াল ট্রায়াল প্রদান করা।
(৮) নাগরিক স্বাধীনতা রক্ষা করা যেমন : ব্যক্তিগত ও সমষ্টিগত বিশ্বাস, অভিব্যক্তি, সংঘ-সমিতি ইত্যাদির স্বাধীনতা।
(৯) বিশ্বজুড়ে মুসলমানদের মধ্যে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনকে শক্তিশালী করা এবং প্রতিবেশী দেশ তথা বিশ্বজুড়ে মুসলিম দেশগুলোর সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন ও জোরদার করা।
(১০) মানুষের মধ্যে ইসলামি নৈতিকতা ও ধর্মীয় রীতিনীতির প্রকৃত জ্ঞান প্রচার করা।
(১১) আন্তর্জাতিক বিষয়ক শান্তি বজায় রাখা।

তাৎক্ষণিক কর্মসূচি
(১) জমিদারি প্রথার বিলোপসাধন এবং প্রতিদান ছাড়াই কৃষকদের মধ্যে ভূমির সুষম বণ্টন।
(২) জাতির অপরিহার্য মৌলিক শিল্পসমূহ জাতীয়করণ করা এবং সরকারি উদ্যোগে শিল্প প্রতিষ্ঠা ও সংগঠন, প্রসারণ, কুটির শিল্প উৎসাহিতকরণ ইত্যাদি।
(৩) বিনামূল্যে এবং বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা প্রবর্তন ; আধুনিক ও বৈজ্ঞানিক ভিত্তিতে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা সংগঠন করা।
(৪) প্রশাসনিক এবং সামাজিক জীবন থেকে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি এবং পক্ষপাতিত্ব সহ অন্যান্য সমাজবিরোধী কার্যক্রম সমূলে উৎপাটন করা।
(৫) দেশীয় স্বার্থে মুহাজিরদের পুনর্বাসনের মাধ্যমে সার্থক নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে সাহসী এবং দ্রুতগতির ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
(৬) রাষ্ট্রীয় সোনালী আঁশ নামে খ্যাত পাটের সর্বোচ্চ সুবিধাকে কাজে লাগানো এবং চাষীদের জন্য সর্বোচ্চ মূল্য নিশ্চিত করা ও পাটের বাজার নিশ্চিত করার জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক মিল-কারখানা প্রতিষ্ঠা করা।
(৭) প্রশাসনের ব্যয় সংকোচনের জন্য কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ এবং নিম্নপদস্থ কর্মকর্তাদের জন্য সৎ জীবনযাপনের ব্যবস্থা করা।
(৮) দেশজুড়ে সরকারি দাতব্য চিকিৎসালয়ের মাধ্যমে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান।
(৯) কেন্দ্রীয় এবং বিভাগীয় এলাকায় ন্যায়সঙ্গত এবং নিরপেক্ষ ভাবে আয় বণ্টন করা।
(১০) ভিক্ষাবৃত্তি দূর করে কাজের ব্যবস্থা করা এবং নিঃস্ব অনাথ শিশুদের প্রয়োজনীয় শিক্ষার ব্যবস্থা করে উপযুক্ত নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা।
(১১) সড়ক, রেলপথ ও নদীপথে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি করা।
সংগঠনের ভিত্তি
৩. পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ সংগঠনটি নিম্নোক্ত ভিত্তিতে গঠিত হইবে-
(ক) প্রাদেশিক আওয়ামী মুসলিম লীগের বার্ষিক ও বিশেষ সভার ভিত্তিতে।
(খ) আওয়ামী মুসলিম লীগ পরিষদের ধারা-৯ এর অধীনে।
(গ) প্রাদেশিক আওয়ামী মুসলিম লীগের ওয়ার্কিং কমিটির ধারা-১১ এর অধীনে।
(ঘ) জেলা আওয়ামী মুসলিম লীগের ধারা-২৮ এর অধীনে গঠন এবং পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগের সাথে সম্বন্ধযুক্ত করা।

(৫)উপ-বিভাগীয় আওয়ামী মুসলিম লীগ এবং নগর লীগসমুহ।
(৬) তৃণমূল লীগসমুহ

আওয়ামী মুসলিম লীগের সদস্যপদ
৪। পুর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগের প্রতিটি সদস্যকে অবশ্যই
ক) মুসলিম
খ)পুর্ব বাংলার নাগরিক
গ) নুন্যতম ১৮ বছর বয়সী

হতে হবে, সদস্যপদপ্রার্থী কেউ যদি এর এক বা একাধিক শর্ত পুর্ন না করেন তাহলে পুর্ব আপকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগের ওয়ার্কিং কমিটি কতৃক তাকে অব্যাহতি দেয়া হতে পারে।

৫।প্রাথমিক সদস্য প্রত্যেকে এই মর্মে লিখিত অঙ্গীকার দিতে হবে যে তিনি উল্লেখিত শর্ত এবং নিয়ামাবলী মেনে চলবেন। একজন সদস্য সদস্যপদ থেকে রহিত হবেন যদি তিনি ২ মাসের মধ্যে সদস্য ফর্মে সই করে
পরবর্তী বছরের সদস্যতা নবায়ন না করেন।

পুর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগের দাপ্তরিক পদসমুহ

৬। পুর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগের নিম্নলিখিত দাপ্তরিক পদসমুহ থাকবে
ক)সভাপতি ১
খ)সহ-সভাপতি ৫
গ)অনারারি সাধারন সম্পাদক ১
ঘ)অনারারি কোষাধ্যক্ষ ১
ঙ)স্থায়ী সম্পাদক১
চ) সহকারী সম্পাদক ৩

৭। প্রাদেশিক আওয়ামী মুসলিম লীগের দাপ্তরিক পদধারীরা প্রতি বছর প্রাদেশিক আওয়ামী মুসলিম লীগের কাউন্সিল কতৃক নির্বাচিত হবেন তার সদস্যদের মধ্য থেকে প্রথম সভায় যা বার্ষিক সভা হিসেবে জেলা লীগের কাউন্সিল নির্বাচন এবং ৯ ধারা অনুসারে এর পুনর্গঠনের পরে এবং তারা পরবর্তী বার্ষিক নির্বাচন পর্যন্ত পদে আসীন থাকবেন এবং পুনঃনির্বাচনের জন্য যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন।

৮।সংগঠনের কোন প্রাথমিক শাখার সদস্য না হলে কেউ দাপ্তরিক পদধারী হতে পারবেন না।

পুর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগের কাউন্সিল

৯। পুর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগের কাউন্সিলটি গঠিত হবে নিম্নলিখিত নিয়ামাবলী দ্দ্বারা

(i)কাউন্সিল গঠিত হবে ১০৪৩ জন সদস্য দ্বারা যারা(আইনসভার সদস্য ব্যাতীত) প্রাথমিক লীগের সদস্যদের মধ্য থেকে জেলালীগের সদস্যদের দ্বারা নির্বাচিত হবেন এবং তারা জেলা লীগ কতৃক পরবর্তী বার্ষিক নির্বাচন পর্যন্ত পদে আসীন থাকবেন এবং পুনঃনির্বাচনের জন্য যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। জেলা আওয়ামী লীগ পনের দিনের নোটিশে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করবেন প্রাদেশিক আওয়ামী লীগের দাপ্তরিক পদসমুহের নির্বাচনের অন্তত এক মাস আগে।

(ii) (ক) প্রতি জেলা থেকে কাউন্সিল সদস্য সংখ্যা হবে নিম্নরুপঃ

বাকেরগঞ্জ ৭২ খুলনা ৩২
বগুড়া ৩২ ময়মনসিংহ ১৩৫
চট্রগ্রাম শহর ২০ কুষ্টিয়া ৩২
চট্রগ্রাম জেলা ৪০ নোয়াখালী ৫০
ঢাকা শহর ৫০ পাবনা ৪৫
ঢাকা জেলা ৮০ রাজশাহী ৪৫
দিনাজপুর ৩০ রংপুর ৬০
ফরিদপুর ৪৮ সৈয়দপুর শহর ১০
নারায়নগঞ্জ শহর ১০ ত্রিপুরা(Tippera) ৮৫
যশোর ৪০ সিলেট ৫০

(খ) উপরিউক্ত নির্ধারিত সংখ্যার সদস্যদের সাথে পুর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লিগের যে সদস্যরা কেন্দ্রীয় আইনসভা বা পুর্ববাংলার আইনসভার সদস্য হবেন তারা পদাধিকার বলে লীগের কাউন্সিল সদস্য হবেন।

(গ) নির্বাচিত এবং পদাধিকার বলে নিযুক্ত সদস্যরা কাউন্সিলের প্রথম বার্ষিক সভায় পুর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগের প্রাথমিক শাখাগুলো থেকে আরো ২০ জন সদস্যকে কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে সহযোজিত করবেন।

(iii) যদি কোন জেলা আওয়ামী লীগ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তার কোটার প্রতিনিধি নির্বাচন করতে ব্যার্থ হয় তাহলে পুর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ জেলার প্রতিনিধিত্ব করার জন্য অবশিষ্ট কোটার সদস্যদের মনোনীত করার ক্ষমতা রাখবেন। মনোনীত সদস্যরা পরবর্তী বার্ষিক সভা বা যে জেলার প্রতিনিধিত্ব করছেন সেই জেলার কাউন্সিল প্রতিনিধি নির্বাচনের আগ পর্যন্ত সভায় উপস্তিতি,অংশগ্রহন এবং ভোট প্রদানের ক্ষমতা রাখবেন।

(iv) নির্বাচন,মনোনয়ন অথবা সদস্য নির্বাচনের কোন ত্রুটি বা অনুরুপ কারনে কাউন্সিল গঠন অনুপযুক্ত বলে বিবেচিত হবে না।

১০। পুর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগের নোটিশের এক মাসের মধ্যে কাউন্সিলের প্রতিটি সদস্যকে প্রাদেশিক আওয়ামী মুসলিম লীগের বার্ষিক সদস্য চাঁদা হিসেবে ২/- পরিশোধ করতে হবে। চাঁদা কাউন্সিলের প্রতি বার্ষিক সাধারন সভার পুর্বে পরিশোধ করতে হবে। পদাধিকার বলে নিযুক্ত বা সহযোজিত সদস্যরা চাঁদা পরিশোধ না করলে কাউন্সিলের কোন সভায় অংশগ্রহন করতে পারবেন না কিন্তু নির্বাচিত বা মনোনীত সদস্যরা নির্ধারিত চাঁদা না দিলে কাউন্সিলের সদস্য থাকবেন না আর। ওয়ার্কিং কমিটির ক্ষমতা থাকবে চাঁদা প্রদান না করায় শুন্য হওয়া পদে সদস্য মনোনীত করার।

পুর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগের ওয়ার্কিং কমিটি

১১। পুর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগের ৩৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি ওয়ার্কিং কমিটি থাকবে সভাপতি সম্পাদক কোষাধক্ষ্য স্থায়ী সম্পাদক এবং সহকারী সম্পাদক ব্যাতীত যারা পদাধিকার বলে সদস্য এবং দপ্তরধারী হবেন ।

৩৫ জনের মধ্যে ৩০ জনকে কাউন্সিল সদস্যরা নিজেদের মধ্যে থেকে নির্বাচন করবেন এবং ৫ জনকে সভাপতি লীগের কাউন্সিল থেকে মনোনীত করবেন। কোন কারনে কাউন্সিল নির্বাচিত সদস্য পদে শুন্যতা দেখা দিলে কাউন্সিল তার সদস্যদের মধ্য থেকে নির্বাচন করবেন এবং সভাপতি নির্বাচিত সদস্য পদে শুন্যতা দেখা দিলে সভাপতি মনোনয়নের মাধ্যমে শুন্যতা পুরন করবেন।

পুর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগের অধিবেশন

১২। পুর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগের বার্ষিক এবং সাধারন অধিবেশন লীগের নির্ধারিত উপযুক্ত সময় এবং স্থানে অনুষ্টিত হবে।

১৩। ওয়ার্কিং কমিটি প্রয়োজন মনে করলে বিশেষ অধিবেশন আহ্বান করতে পারেন এবং লীগের অনুন্য ১০০ জন সদস্য অনারারি সম্পাদকের কাছে অধিবেশনের জন্য লিখিত ভাবে দাবি জানানোর ২ মাসের মধ্যে আহ্বান করবে।

১৪। প্রাদেশিক আওয়ামী মুসলিম লীগের বার্ষিক বা বিশেষ অধিবেশনের সভাপতি জেলা আওয়ামী লীগের মনোনীত সদস্যদের মধ্য থেকে কাউন্সিলের দ্বারা নির্বাচিত হবেন। অয়ার্কিং কমিটি সভাপতি নির্বাচনের জন্য সভা না ডেকে বিবেচনা মোতাবেক কাউন্সিল সদস্যদের লেখার মাধ্যমে ভোট সংগ্রহ করতে পারেন।

১৫।লীগের বার্ষিক এবং সাধারন অধিবেশনের কোরাম হবে ১২৫।

১৬। (ক) লীগের বার্ষিক এবং বিশেষ অধিবেশনে পুর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগের কাউন্সিল সদস্যরা এবং সংশ্লিষ্ট জেলা প্রতিনিধিরা সেশন প্রতি ২/- পরিশোধ পুর্বক অংশগ্রহন করতে পারবেন।

(খ) জেলা লীগ এ ধরনের সেশনের জন্য কাউন্সিলের জন্য জেলার নির্ধারিত কোটার ৩ গুন পর্যন্ত প্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারবে।

এটা করার সময় জেলা লীগগুলো তাদের জন্য বরাদ্দকৃত সংখ্যাগুলো সমভাবে মহকুমাগুলোর মধ্যে বিতরণ করবে। যেখানে প্রত্যেক জেলার প্রতিনিধিরা কাউন্সিলে মনোনীত হয় গঠন কমিটি দ্বারা, গঠন কমিটির অধিকার থাকবে উপরের নীতি অনুসারে অধিবেশনের জন্য প্রতিনিধি নির্বাচন করা।
১৭. পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগের পরামর্শসভা একত্রে কিন্তু ৫০ জনের বেশি নয় নাগরিক কমিটি গঠনের কাজ করবে যেখানে রাষ্ট্রপতি প্রতিনিধিদের মধ্য থেকে মনোনীত করবেন এবং এমন সংকল্প গ্রহন করবেন যেগুলো লীগের বার্ষিক বা বিশেষ অধিবেশনে পেশ করা যায়। সকল সংকল্প যেগুলো বার্ষিক বা বিশেষ অধিবেশনে পেশ করা হবে তা অবশ্যই আগে নাগরিক কমিটির কাছে পেশ করতে হবে। নাগরিক কমিটির অনুমোদিত সংকল্পগুলোই কেবল উন্মুক্ত অধিবেশনে পেশ করা যাবে।
পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগে কাউন্সিলের সভা
১৮. লীগ কাউন্সিলের সভা বিভিন্ন সময়ে সুবিবেচনার সহিত সংগঠিত হবে। প্রেসিডেন্টের অনুমতি নিয়ে কাউন্সিল বছরে অন্তত দুইবার সভা আয়োজন করবে। আরও লিখিত চাহিদাপত্রের মাধ্যমে কাউন্সিলের আইসিও সদস্যরা বিশেষ সভা আহ্বান করত পারবে চাহিদাপত্র প্রাপ্তির ৩০ দিনের মাধ্যমে।
১৯. ৪০ জন সদস্য সকল সভার কোরাম গঠন করবে যেখানে মুলতবীকৃত সভায় কোরামের প্রয়োজন থাকবে না।
২০. সাধারন সভার অন্তত ১৫ দিন ও বিশেষ সভার অন্তত ৭ দিন আগে সচিব প্রত্যেক সদস্যকে সভায় আলোচ্য বিষয়সূচির ব্যপারে বিজ্ঞপ্তি দিবেন যেখানে শুরুতে সভার সময় ও স্থান উল্লেখ থাকবে।
২১. প্রেসিডেন্টের সভাপতিত্বে সভাগুলো অনুষ্ঠিত হবে এবং তার অনুপস্থিতিতে ভাইস প্রেসিডেন্ট সভাপতিত্ব করবেন। প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্ট দুইজনেরই অনুপস্থিতিতে সভায় উপস্থিত সদস্যদের মধ্য থেকে সভাপতি নির্বাচিত করা হবে কেবল ওই সভার সকল উদ্দেশ্য সুষ্ঠুভাবে সম্পদনের জন্য।
গঠন কমিটির সভা
২২. গঠন কমিটি মাসে অন্তত একবার সভা করবে এবং প্রয়োজন অনুসারে যতবার সম্ভব সভা করবে।
২৩. (ক) গঠন কমিটির সভার জন্য সাতজন সদস্য কোরাম গঠন করবে।
(খ) . সাধারন সভার অন্তত ৭ দিন আগে সচিব প্রত্যেক সদস্যকে সভায় আলোচ্য বিষয়সূচির ব্যপারে বিজ্ঞপ্তি দিবেন যেখানে শুরুতে সভার সময় ও স্থান উল্লেখ থাকবে। জরুরি সভাগুলো আরো কম সময়ের বিজ্ঞপ্তিতে অনুষ্ঠিত হবে।
২৪. গঠন কমিটির সকল সংকল্প অনুমতির জন্য লীগের কাউন্সিলের সামনে পেশ করতে হবে।

কাউন্সিলের কাজসমূহ
২৫. কাউন্সিল নিম্নলিখিত কাজগুলো করবে
(ক) অনুচ্ছেদ ৭ এর নিয়মানুসারে পদাধিকারী নির্বাচন করা।
(খ) অনুচ্ছেদ ১৪ এর নিয়মানুসারে বার্ষিক ও বিশেষ অধিবেশনের জন্য প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করা।
(গ) লীগের উদ্দেশ্য অনুযায়ী সকল সংকল্প বিবেচনা ও পাশ করা।
(ঘ) সকল সংকল্প যেগুলো পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগের অধিবেশনে অথবা প্রাদেশিক আওয়ামী মুসলিম লীগের পাশ হয়েছে সেগুলো বাস্তবায়নের জন্য যথেষ্ঠ পদক্ষেপ নেয়া।
(ঙ) প্রাদেশিক আওয়ামী মুসলিম লীগের ফান্ডের সকল খরচ নিয়ন্ত্রন করা।
(চ) হিসাব পরীক্ষক নিয়োগ দেয়া।
(ছ) উপকমিটি নির্বাচন করা সকল দায়িত্ব পালন করার জন্য এবং নিয়ন্ত্রন ও শর্তের সহিত সকল ক্ষমতা প্রয়োগ করা।
(জ) শাখা লীগগুলো অধিভুক্ত ও অনধিভুক্ত করা।
(ঝ) পূর্ব পাকিস্তান প্রদেশের(যখন অধিভুক্ত) সর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগের কাউন্সিলের জন্য সদস্য নির্বাচন করা।
(ঞ) লীগ এবং শাখা লীগের সদস্যদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া।
(১) নিয়মকানুন গঠন –
(ক) পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগের অধিবেশন ও সভাগুলোর আচার ব্যবহার নিয়ন্ত্রন করা।
(খ) অনুবিধি(ছ) অনুসারে নিযুক্ত উপকমিটিগুলোর আচারব্যবহার নিয়ন্ত্রন করা।
(গ) লীগের অন্যান্য উদ্দেশ্য সফল করার জন্য অন্যান্য বিষয়গুলোর জন্য নিয়মকানুন গঠন করা।
কাউন্সিলের গঠিত কোন নিয়ম প্রযোজ্য হবে না এখানে বাস্তবায়িত নিয়মের সাথে অসঙ্গতি প্রকাশ করলে।
২৬. কাউন্সিল তার এক বা একাধিক ক্ষমতা পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগের সচিবের কাছে অর্পন করতে পারে যদি এটা আরোপ করা প্রয়োজনীয় মনে হয়।
গঠন কমিটির কার্যাবলী
২৭. গঠন কমিটি নিম্নলিখিত কার্যাবলী পালন করবেঃ

(ক) কাউন্সিলের অনুমোদনের জন্য বার্ষিক বাজেট তৈরী এবং সে অনুযায়ী প্রদত্ত অর্থের অনুমোদন;
(খ) বাজেট বহির্ভুত ৫০ রুপির অধিক সব পারিশ্রমিকের জন্য অনুমতি প্রদান;
(গ) কর্মচারী নিয়োগ ও বরখাস্ত করা
(ঘ) এরকম সীমাবদ্ধতা ও পরিস্থিতিতে এর দায়িত্ব ও ক্ষমতা আরোপের জন্য উপযুক্ত উপ-কমিটি গঠন;
(ঙ) ওয়ার্কিং কমিটি থেকে এমন সদস্যের নাম বাদ দেওয়া যিনি কমিটিকে যথেষ্ট সন্তোষজনক কারন
দর্শানো ছাড়াই একটানা চারটি সভায় অনুপস্থিত থাকবেন;
(চ) সিদ্ধান্ত অনুযায়ী উপযুক্ত সময় এবং স্থানে বার্ষিক ও বিশেষ অধিবেশন আহ্বান করা;
(ছ) বার্ষিক ও বিশেষ অধিবেশনে সভাপতি নির্বাচন সম্বন্ধে কাউন্সিলের মেম্বারদের অভিমত সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া;
(জ) যেসকল জেলায় কাউন্সিল নিজের প্রতিনিধি নির্বাচনে ব্যর্থ হয়েছে, সেখানে প্রতিনিধি মনোনয়ন দেওয়া;
(ঝ) যেসকল জেলা কাউন্সিলের জন্য নিজেদের প্রতিনিধি নির্বাচনে ব্যর্থ হয়েছে, সেসব জেলায় প্রতিনিধি মনোনয়ন দেওয়া;
(ঞ) আওয়ামী লীগের উদ্দেশ্য সাধনের জন্য প্রয়োজনীয় সব কাজ করা;
(ট) কাউন্সিল কর্তৃক অন্য কোন সিদ্ধান্ত নেওয়া না হলে, কাউন্সিলের ওপর অর্পিত ৭, ১১, ১৪, ১৭,
২৫(চ), (ছ), (ঝ), (ঞ) ধারার ক্ষমতা বাদে, কাউন্সিলের যাবতীয় কাজ করা;
প্রাদেশিক আওয়ামী লীগের শাখা সমুহ
জেলা লীগ
২৮. প্রতি জেলায় একটি করে জেলা লীগ থাকবে, যা নিম্নানুযায়ী তৈরী হবেঃ-
(ক) প্রতি জেলার প্রত্যেক উপ-জেলা লীগের মাধ্যমে ২৫ জন সদস্য নির্বাচিত হবে।
(খ) প্রত্যেক সিটি লীগ কর্তৃক ২৫ জন সদস্য নির্বাচিত হবে, ধারা ৩১(২)দ্রষ্টব্য।
(গ) অফিস-বেয়ারারদের বার্ষিক নির্বাচনের পুর্বে প্রত্যেক উপ-বিভাগে ও (ক) এবং (খ)নং এর
সদস্যদের দ্বারা নির্বাচিত শহরে ৫ জন করে সদস্য নির্বাচন।
(ঘ) জেলা লীগের একটি মিটিং এর কোরাম জেলা লীগের মোট সদস্যের এক-পঞ্চমাংশ হবে।
২৯. জেলা লীগের প্রত্যেক সদস্য জেলা ফান্ডে বার্ষিক ১/- হারে চাঁদা প্রদান করবে। জেলা লীগের এমন কোন সদস্য যিনি জেলা আওয়ামী লীগের চাঁদা প্রদানের নোটিশ পাওয়ার ১ মাসের মধ্যেও চাঁদা প্রদান করেননি, তাদেরকে নির্বাহী কমিটি তাদের সদস্য হিসেবে পাওয়া জেলা আওয়ামী লীগের অফিস খালি করার নির্দেশ দিতে পারে এবং নির্বাহী কমিটির এই খালি পদ গুলো পুরণ করার ক্ষমতা থাকবে।

৩০. (ক) জেলা আওয়ামী লীগ নিম্নোক্ত সভ্যগণকে/ পদাধিকারীদেরকে নির্বাচন করবেনঃ
সভাপতি – ০১ জন
সহ-সভাপতি – ০৫ জন
সচিব – ০১ জন
স্থায়ী সচিব – ০১ জন
সহকারী সচিব – ০৩ জন
কোষাধ্যক্ষ – ০১ জন
পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ কার্যনির্বাহী কমিটির পূর্বসম্মতিসাপেক্ষে সভ্যগণের/ পদাধিকারীদের সংখ্যা পরিবর্তিত হতে পারে।
(খ) সভ্যগণ/ পদাধিকারীগণ এবং জেলা আওয়ামী লীগ কর্তৃক তাদের মধ্য হতে নির্বাচিত ২৫ জন সদস্য জেলা আওয়ামী লীগের নির্বাহী কমিটি গঠন করবেন। নির্বাহী কমিটির কোরাম পূর্ণ হতে ন্যূনতন সাত সদস্যের উপস্থিতি প্রয়োজন হবে।
মহকুমা আওয়ামী লীগ
৩১. (১) প্রত্যেক মহকুমায় একটি মহকুমা আওয়ামী লীগ দল থাকবে, যা নিম্নরূপে গঠিত হবেঃ
(ক) প্রত্যেক ইউনিয়ন লীগ থেকে ০৬ জন সদস্য;
(খ) মহকুমার অধীনে ১০,০০০ জনের চেয়ে কম মুসলিম অধিবাসী-বিশিষ্ট প্রত্যেক পৌরসভা থেকে ২০ জন সদস্য;
(গ) কোনো পৌরসভা নেই এমন প্রত্যেক মহকুমা সদর থেকে ২০ জন সদস্য;
(ঘ) বার্ষিক সভ্য/ পদাধিকারী নির্বাচনের পূর্বে উপর্যুক্ত নির্বাচিত সদস্যগণ কর্তৃক কো-অপ্টকৃত (নির্বাচিত/ সহযোজিত) ১০ জন সদস্য;
(ঙ) মহকুমা আওয়ামী লীগের কোনো মিটিংয়ে কোরাম পূরণের জন্য মহকুমা লীগের মোট সদস্যসংখ্যার এক-পঞ্চমাংশ সদস্যের উপস্থিতি প্রয়োজন হবে;
(চ) মহকুমা লীগের সভ্যগণ/ পদাধিকারীগণ নিম্নরূপে গঠিত হবেঃ
সভাপতি – ০১ জন
সহসভাপতি – ০৫ জন
সচিব – ০১ জন
স্থায়ী সচিব – ০১ জন
সহকারী সচিব – ০৩ জন
কোষাধ্যক্ষ – ০১ জন
পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ কার্যনির্বাহী কমিটি যেকোনো মহকুমা লীগের সভ্যগণের/ পদাধিকারীদের সংখ্যা পরিবর্তন করার ক্ষমতা সংরক্ষণ করবেন।

(ছ) সভ্যগণ/ পদাধিকারীগণ এবং ধারা ৩১ (ক), (খ), (গ) ও (ঘ) অনুযায়ী সদস্যগণের মধ্য থেকে নির্বাচিত ১৮ জন সদস্য নিয়ে প্রত্যেক মহকুমা আওয়ামী লীগের নির্বাহী কমিটি গঠিত হবে।
নির্বাহী কমিটির কোরাম পূর্ণ হতে ন্যূনতম সাত সদস্যের উপস্থিতি প্রয়োজন হবে। মহকুমা লীগের প্রত্যেক সদস্য মহকুমা আওয়ামী লীগের তহবিলে বার্ষিক ৮ আনা হারে চাঁদা প্রদান করবেন।
শহর আওয়ামী লীগ
(ক) ১০,০০০ জনের অধিক মুসলিম অধিবাসী-বিশিষ্ট প্রত্যেক পৌরসভা থেকে মহকুমা আওয়ামী লীগের আদলে (গঠনতন্ত্রের অনুরূপে) একটি শহর লীগ গঠিত হবে। পৌরসভার অধীনে প্রত্যেক ওয়ার্ডে একটি করে ওয়ার্ড লীগ গঠিত হবে এবং ওয়ার্ড লীগগুলো ইউনিয়ন লীগ পরিচালনার নিয়মানুসারে পরিচালিত হবে; তবে এটুকু ব্যতিক্রম যে, এই ওয়ার্ড লীগ শহর লীগের জন্য ২০ জন প্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারবে।
(খ) প্রত্যেক ওয়ার্ড লীগ থেকে ২০ জন করে প্রতিনিধি নিয়ে শহর লীগ গঠিত হবে এবং শহর লীগগুলো জেলা আওয়ামী লীগে ২৫ জন প্রতিনিধি প্রেরণ করতে পারবে। শহর লীগের প্রত্যেক সদস্যের জন্য শহর লীগ তহবিলে পরিশোধযোগ্য বার্ষিক চাঁদার পরিমাণ ৮ আনা ।
ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ
৩২. (ক) প্রত্যেক ইউনিয়নে একটি ইউনিয়ন লীগ গঠিত হবে এবং ইউনিয়ন লীগ পদাধিকারীদের/ সভ্যগণের বাইরে থেকে সদস্য নিয়ে অনূর্ধ্ব ৫০ সদস্যবিশিষ্ট একটি নির্বাহী কমিটি নির্বাচন করতে পারবে। নির্বাহী কমিটির মিটিংয়ে কোরাম পূরণের জন্য কমিটির মোট সদস্যসংখ্যার এক-পঞ্চমাংশ সদস্যের উপস্থিতি প্রয়োজন হবে।
(খ) নির্বাহী কমিটির প্রত্যেক সদস্য ইউনিয়ন লীগ তহবিলে বার্ষিক ২ আনাহারে চাঁদা প্রদান করবেন।
(গ) পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটি যদি মনে করেন যে, আরো ভালভাবে পরিচালনার স্বার্থে কোথাও দুই বা ততোধিক ইউনিয়নকে একটি প্রশাসনিক এককে (ইউনিট) একীভূত করা প্রয়োজন, সেক্ষেত্রে জেলা এবং মহকুমা আওয়ামী লীগের সাথে পরামর্শক্রমে এমন ইউনিট স্থাপন করা হবে এবং ইউনিয়ন লীগ পরিচালনার সমস্ত নিয়মানুসারে এটি পরিচালিত হবে।
(ঘ) ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভ্যগণ/ পদাধিকারীগণ নিম্নরূপ হবেনঃ
সভাপতি – ০১ জন
সহসভাপতি – ০৫ জন
সচিব – ০১ জন
স্থায়ী সচিব – ০১ জন
সহকারী সচিব – ০৩ জন
কোষাধ্যক্ষ – ০১ জন

মহকুমা আওয়ামী লীগের সাথে পরামর্শক্রমে জেলা আওয়ামী লীগ নির্বাহী কমিটি এর আওতাভুক্ত যে কোনো নির্দিষ্ট ইউনিয়ন লীগের সভ্যগণের/ পদাধিকারীদের সংখ্যা পরিবর্তন করতে পারবেন।
(ঙ) পৌরসভা নেই এমন প্রত্যেক মহকুমা সদরে এবং ১০,০০০ জনের কম মুসলিম অধিবাসী-বিশিষ্ট প্রত্যেক পৌরসভায় একটি করে লীগ গঠিত হবে, যা যথাক্রমে টাউন ও পৌরসভা লীগ বলে অভিহিত হবে। ইউনিয়ন লীগের গঠনতন্ত্র ও পরিচালনার নিয়মানুসারে এই টাউন লীগ বা পৌরসভা লীগ গঠিত ও পরিচালিত হবে তবে টাউন লীগ বা পৌরসভা লীগ মহকুমা লীগে ২০ জন করে প্রতিনিধি প্রেরণ করতে পারবে।
(চ) ইউনিয়ন বোর্ড নেই এমনসব স্থানে ইউনিয়ন লীগ কমিটির এলাকা এর পঞ্চায়েত কমিটির সাথে সহব্যাপী/ সমায়ত হবে।
প্রাইমারি আওয়ামী লীগ
৩৩. প্রাইমারি আওয়ামী লীগের ক্ষেত্রে নিম্নোক্ত বিষয়সমূহ বিবেচিত হবেঃ
(ক) ইউনিয়ন লীগ;
(খ) টাউন অথবা মহকুমা সদর লীগ;
(গ) ১০,০০০ জনের কম মুসলিম নিবাসী-বিশিষ্ট পৌরসভার ক্ষেত্রে পৌরসভা লীগ;
(ঘ) শহর লীগের অধীন ওয়ার্ড লীগ;
(ঙ) ঢাকা এবং চট্টগ্রাম শহরের পৌরসভাগুলোতে ওয়ার্ড লীগ
আওয়ামী মুসলিম লীগ তহবিল
প্রাইমারি লীগ তহবিল
৩৪. নির্বাহী কমিটির সদস্যগণ কর্তৃক প্রদত্ত চাঁদা ও অনুদানের সমন্বয়ে প্রাইমারি আওয়ামী লীগ তহবিল গঠিত হবে।
মহকুমা বা শহর আওয়ামী লীগ তহবিল
৩৫. মহকুমা বা শহর আওয়ামী লীগ তহবিল নিম্নোক্ত উপায়ে গঠিত হবেঃ
(ক) মহকুমা লীগের সকল সদস্য কর্তৃক বার্ষিক ৮ রুপি হারে প্রদত্ত বিশেষ চাঁদা;
(খ) ২ রুপি হারে প্রত্যেক ইউনিয়ন লীগ কর্তৃক প্রদত্ত সংযুক্তিকরণ/ অন্তর্ভুক্তিকরণ ফি;
(গ) অনুদান
৩৬. জেলা আওয়ামী লীগ তহবিল নিম্নোক্ত উপায়ে গঠিত হবেঃ
(ক) জেলা লীগের সকল সদস্য কর্তৃক বার্ষিক ১ রুপি হারে প্রদত্ত বিশেষ চাঁদা;
(খ) ২০ রুপি হারে প্রত্যেক ইউনিয়ন লীগ কর্তৃক প্রদত্ত সংযুক্তিকরণ/ অন্তর্ভুক্তিকরণ ফি;
(গ) অনুদান

কেন্দ্রীয় পরিষদ তহবিল
৩৭. কেন্দ্রীয় পরিষদ তহবিল নিম্নোক্ত উপায়ে গঠিত হয়ঃ
ক) সংবিধানের ১০(ক) ধারা অনুযায়ী আওয়ামী মুসলিম লীগের কাউন্সিলের সদস্যরা বিশেষ চাঁদা দিয়ে থাকে।
খ) সংবিধানের ১০(খ) ধারা অনুযায়ী পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামীলীগের পদ ধারী সদস্যরা মাসিক চাঁদা দিয়ে থাকে।
গ) বিভাগীয় লীগের অন্তর্ভুক্তি ভাতা ৩০ টাকা।
ঘ) অনুদান।
৩৮. উপরোক্ত প্রতিটি তহবিলকে বলা হয় প্রাথমিক পরিষদ তহবিল, উপজেলা বা নগর পরিষদ তহবিল, জেলা পরিষদ তহবিল এবং কেন্দ্রীয় পরিষদ তহবিল। কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সম্মতিতে এই তহবিল ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংক বা অন্য কোন ব্যাংকে কোষাধ্যক্ষ এবং সম্পাদকের যৌথ নামে রাখা হবে।
৩৯. প্রতিটি তহবিলের হিসেব বছরে অন্তত একবার নিরীক্ষিত হবে।
৪০. ক) ব্যাংকে জমাকৃত তহবিল ঐ এলাকার লীগের শাখার কোষাধ্যক্ষ এবং সম্পাদকের যৌথ স্বাক্ষরের তত্ত্বাবধানে থাকবে। কেন্দ্রীয় তহবিলের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম প্রযোজ্য হবে।
খ) প্রয়োজনীয় খরচের জন্য কিছু অর্থ প্রাদেশিক অথবা শাখা লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সম্মতিতে প্রাদেশিক অথবা শাখা লীগের সম্পাদকের নিকট জমা থাকবে।
দপ্তর পরিচালকের ক্ষমতা এবং দায়িত্ব

৪১. মাননীয় সম্পাদক প্রাদেশিক আওয়ামীলীগ বা কার্যনির্বাহী কমিটি কতৃক ন্যস্ত সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী হবেন।
৪২. মাননীয় সম্পাদক সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী হবেন এবং তার উপর অর্পিত সব দায়িত্ব পালন করবেন, এবং সব নিয়মগুলো দলের মধ্যে ও নিজের দপ্তরে প্রতিষ্ঠিত করবেন।
৪৩. মাননীয় সম্পাদকের হাতে থাকবে আওয়ামীলীগের বেতনভুক্ত কর্মচারীদের নিয়োগ, শাস্তি প্রদান, বরখাস্ত করা এবং বেতনসহ কিংবা বেতন ছাড়া ছুটি প্রদান এবং কার্যনির্বাহী কমিটির সকল বিষয় অনুমোদন করার ক্ষমতা।

সহকারী সম্পাদক

৪৪. সহকারী সম্পাদকেরা মাননীয় সম্পাদকের অধীনে কাজ করবেন এবং তার তত্ত্বাবধানে নিজেদের দায়িত্ব পালন করবেন। স্থায়ী সম্পাদকই কেন্দ্রীয় সচিবের দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবেন।

৪৫. ক) পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামীলীগের দপ্তর পরিচালকেরা জেলা, উপজেলা অথবা নগর পরিষদ এবং তাদের কার্যনির্বাহী কমিটির অধিবেশনে উপস্থিত থাকতে এবং আলোচনায় অংশ নিতে পারবেন।
খ) প্রাদেশিক আওয়ামীলীগের দপ্তর পরিচালকের কাছে ঐ প্রদেশের অধীনস্ত সকল শাখা লীগের রেকর্ড, দলিল এবং হিসেব যাচাই করার ক্ষমতা থাকবে।
সাধারণ নিয়মাবলী

৪৬. দপ্তর পরিচালক বা কাউন্সিল সদস্যদের সকল শূন্য পদে কাউন্সিলের ভোটের মাধ্যমে নিয়োগ করা হবে।
৪৭. আওয়ামীলীগের বিভিন্ন নির্বাচন সাধারণত নিম্নোক্ত সময়সূচীতে করা হয়ঃ
ক) সকল প্রাথমিক পরিষদ প্রতি বছর জানুয়ারি থেকে মার্চ মাসে তাদের দপ্তর পরিচালক এবং
কার্যনির্বাহী কমিটি, এবং উপজেলা অথবা নগর পরিষদে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচনের জন্য ভোট গ্রহণের ব্যবস্থা করবে।
খ) সকল উপজেলা অথবা নগর পরিষদ প্রতি বছর এপ্রিল মাসে তাদের দপ্তর পরিচালক এবং কার্যনির্বাহী কমিটি, এবং জেলা আওয়ামীলীগে (অথবাপ্রাদেশিক আওয়ামীলীগে) তাদের প্রতিনিধি নির্বাচনের জন্য ভোট গ্রহণের ব্যবস্থা করবে।
গ) সকল জেলা পরিষদ প্রতি বছর মে মাসে তাদের দপ্তর পরিচালক এবং কার্যনির্বাহী কমিটি, এবং প্রাদেশিক আওয়ামী মুসলিম লীগ কাউন্সিলের সদস্য কোটায় নির্বাচনের জন্য ভোট গ্রহণের ব্যবস্থা করবে।
ঘ) পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ কাউন্সিল প্রতি বছর জুন অথবা জুলাই মাসে তাদের দপ্তর পরিচালকদের নির্বাচন এবং কার্যনির্বাহী কমিটি গঠন করবে।
৪৮. কিছু ব্যতিক্রমী ক্ষেত্রে কিছু শাখা পরিষদ কোন প্রদেশে সংস্থার উন্নয়নের জন্য কার্যকরী সমিতির অধীনে কিছু সাময়িক নিয়োগ বা স্বীকৃতি প্রদান করতে পারে।
৪৯. ক)
i) উপজেলা অথবা নগর পরিষদের এক্তিয়ারাধীন প্রাথমিক পরিষদ উপজেলা অথবা নগর পরিষদের অন্তর্ভুক্তি মঞ্জুর করতে পারে।
ii) জেলা পরিষদ উপজেলা অথবা নগর পরিষদের অন্তর্ভুক্তি মঞ্জুর করবে।
iii) পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ জেলা পরিষদের অন্তর্ভুক্তি মঞ্জুর করবে।
এছাড়াও প্রাদেশিক আওয়ামী মুসলিম লীগের কার্যকরী সমিতি যেকোন শাখা পরিষদে সরাসরি নিয়োগ করার খমতা রাখবে।
খ) সম্পর্কযুক্ত সকল শাখা পরিষদ পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগের শাখা হিসেবে বিবেচনা করা হবে।

৫০. শাখা পরিষদগুলোর মধ্যে অভ্যন্তরীণ কোন বিষয় নিয়ে বিরোধের সমাধান করবে তাদের সরাসরি পূর্ববর্তী উচ্চতর পরিষদ এবং প্রয়োজনে তাদের আরও উচ্চ পরিষদে আবেদনের সুযোগ থাকবে।
এছাড়াও যেকোন আবেদন মঞ্জুর এবং বিরোধ মীমাংসা করার অধিকার পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির থাকবে।

শাখা আওয়ামীলীগের পথপ্রদর্শনের নিয়মাবলী

৫১. ক)জেলা পরিষদের দপ্তর পরিচালকেরা উপজেলা অথবা নগর পরিষদ এবং তাদের কার্যনির্বাহী কমিটির অধিবেশনে উপস্থিত থাকতে এবং আলোচনায় অংশ নিতে পারবে, এবং অধিবেশনে উপজেলা এবং নগর পরিষদের দপ্তর পরিচালকেরা তাদের শাখা পরিষদের দপ্তর পরিচালকদের সম ক্ষমতা পাবে।
খ) ধারা ৪৫(খ) অনুযায়ী জেলা, উপজেলা অথবা নগর আওয়ামীলীগের অধীনস্ত সকল শাখা পরিষদের সভাপতি এবং সম্পাদকের ক্ষমতা সমান হবে।
৫৩. যদি উপজেলা অথবা নগর আওয়ামীলীগ তাদের জেলা পরিষদের কোটার জন্য সদস্য নির্বাচন করতে ব্যর্থ হয় তবে জেলা পরিষদের কার্যনির্বাহী কমিটি তাদের নিজস্ব ক্ষমতা দিয়ে সেসব উপজেলার সদস্য মনোনয়ন করতে পারবে।
৫৪. জেলা অথবা উপজেলা অথবা নগর পরিষদের সদস্যদের বছরে অন্তত একবার নিজেদের মধ্যে সাক্ষাৎ করতে হবে। এছাড়াও জেলা অথবা উপজেলা অথবা নগর পরিষদের ৩০ জন সদস্যের লিখিত অনুরোধে ৩০ দিনের মধ্যে মাননীয় সম্পাদক দলীয় সদস্যদের নিয়ে একটি বিশেষ বৈঠকের ব্যবস্থা করবেন।
৫৫. জেলা অথবা উপজেলা অথবা নগর পরিষদের কার্যনির্বাহী কমিটি মাসে অন্তত একবার সাক্ষাৎ করবে। এছাড়াও ১০ জন সদস্যের লিখিত অনুরোধে ১৫ দিনের ভেতর মাননীয় সম্পাদক কার্যনির্বাহী কমিটির বিশেষ বৈঠকের ব্যবস্থা করবেন।
৫৬. ক) জেলা অথবা উপজেলা অথবা নগর পরিষদের বৈঠকের বিজ্ঞপ্তিঃ জেলা অথবা উপজেলা অথবা নগর আওয়ামীলীগের সকল বৈঠকে সংবিধানের ২০নং ধারাটি প্রযোজ্য হবে।
খ) জেলা অথবা উপজেলা অথবা নগর পরিষদের সাধারণ বৈঠকের জন্য কমপক্ষে ৭ দিন আগে সুস্পষ্ট বিজ্ঞপ্তি দিতে হবে।
৫৭. অনুমোদনের জন্য জেলা অথবা উপজেলা অথবা নগর পরিষদে পাঠানোর আগে সকল বিষয়ের সমাধানই জেলা অথবা উপজেলা অথবা নগর পরিষদের কার্যনির্বাহী কমিটি দ্বারা যাচাই করা হবে।

৫৮। জেলা লিগ বা জেলা লীগের কার্যনির্বাহী সভায়. আকস্মিক খালি উপনির্বাচন নির্বাহী কমিটি দ্বারা পূরণ করা যাবে, কিন্তু অফিস-ধারককে অন্তর্ভূক্ত খালি জেলা আওয়ামী লীগের দ্বারা পূরণ শূন্য পদ পুরন করা হবে। তবে এই নিয়ম পরিবর্তন করা হলে উপ বিভাগীয় ও সিটি লিগ প্রযোজ্য হইবে।.
৫৯।. (ক) জেলা, উপ বিভাগীয় বা সিটি লীগের সম্মেলন জেলা বা উপ বিভাগীয় বা সিটি লিগ অনুযায়ী প্রতিনিধিদের সদস্যদের উপস্থিত থাকতে হবে। প্রতিটি ভোটের জন্য ১ টাকা করে ধার্য করা হয়েছে।
(খ) তাদের নিজ নিজ শাখা লিগ দ্বারা নির্বাচিত হয়ে প্রতিটি জেলায় প্রতিনিধি, উপ বিভাগীয় বা নগর আওয়ামী মুসলিম লীগের সম্মেলন করবে, কিন্তু এই ধরনের প্রতিনিধিদের সংখ্যা ৫ জনের বেশি হবেনা। নির্দিষ্ট প্রতিনিধিদের জন্য তাদের কোটা নির্ধারিত থাকবে।
(গ) জেলা উপ বিভাগীয় বা সিটি লিগ সদস্যরা রাষ্ট্রপতিকে উদ্দেশ করিয়া ক্ষমতা সাপেক্ষে কমিটির প্রতিনিধিদের মধ্য থেকে ১০ জন সদস্য মনোনীত করে যথাক্রমে জেলা প্রজারা কমিটি ও উপ বিভাগীয় বা সিটি লীগের সম্মেলন গঠন করিবে।.
৬০। জেলা, উপ বিভাগীয় বা সিটি লিগ, ইস্ট পাক কাউন্সিলের সদস্যদের সম্মেলন এ. আওয়ামী মুসলিম নিজ নিজ জেলা বা মহকুমা বা শহরটির লীগ, পদাধিকারবলে প্রতিনিধি এবং সাবজেক্টস কমিটির সদস্য হবেন.
৬১।প্রাথমিক লিগ সভানোটিশ: –
(ক) বিধি ৫৬ প্রাথমিক আওয়ামী লীগ সব সাধারণ সভার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে।.
(খ) প্রাথমিক লিগ হুকুমদখল সভার ক্ষেত্রে বিধি নম্বর ৫৫ যে ধরনের রিকুইজিশন ব্যতীত প্রযোজ্য হবে এবং তা অন্তত২০ জন সদস্য দ্বারা স্বাক্ষরিত হতে হবে।
৬২। . অফিস-বাহক এবং প্রাথমিক লীগ কার্যনির্বাহী কমিটি সদস্যদের সারিবদ্ধভাবে সকল শূন্য পদ উপনির্বাচন নির্বাহী কমিটি দ্বারা পূরণ করা হইবে।.
৬৩।. সকল শাখা লিগ তাদের নিজ নিজ অব্যবহিত ঊর্ধ্বতন লিগ তাদের কার্যক্রম ত্রৈমাসিক প্রতিবেদন পেশ করিবে।
৬৪। নির্বাহী জেলা ছাত্রলীগ কমিটি এখতিয়ারের মধ্যে কোন সদস্য, যারা নীতি ও লীগের নীতি লংঘন লীগের সিদ্ধান্ত বা কাজ লঙ্ঘন বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার ক্ষমতা দেয়া হবে।. যেসব সদস্যদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে, তাদের ব্যাপারে প্রাদেশিক আওয়ামী লীগের ওয়ার্কিং কমিটির আপিলের অধিকার আছে এবং এই ওয়ার্কিং কমিটির সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে বিবেচিত হবে।
………………………………………………………………………………………………………………………………………………………
বিশেষ দ্রষ্টব্য- এই একটি কাঁচা সংবিধান, যা পরিশেষে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগের নির্বাচিত পরিষদের প্রথম সভায় গৃহীত হবে, এমন পরিবর্তন, সংযোজন বা সংশোধন সহ যেমন, পরিষদ কর্তৃক প্রয়োজনীয় বলে বিবেচিত করা হয়. *

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!