টেস্ট রিলিফের জন্য আরও ১০ কোটি টাকা।
দেশে টেস্ট রিলিফের কাজের জন্য সরকার শীগগরই আরও ১০ কোটি টাকা প্রদান করবে। রিলিফের কাজের জন্য মােট টাকার পরিমাণ দাড়াবে ২৬ কোটি টাকা। যুদ্ধ বিধ্বস্ত জাতির পুনর্বাসনের ক্ষেত্রে সরকার জনগণকে খাওয়ানােই অগ্রাধিকার দিয়েছেন। এর পরেই স্থান পেয়েছে আশ্রয় সংস্থা। সাহায্য পুনর্বাসন মন্ত্রী জনাব এ এইচ এম কামারুজ্জামান শুক্রবার ঢাকায় এ কথা বলে জানান যে টেস্ট রিলিফের কাজে ১০ কোটি টাকার মধ্যে ৪ কোটি টাকা দু’এক দিনের মধ্যেই দেওয়া হবে। ইতােপূর্বে প্রদত্ত ১৬ কোটি টাকার উল্লেখ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন যে, এ সব অর্থের প্রকল্পের ৮০ থেকে ১০০ ভাগ কাজই ইতােমধ্যে শেষ হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন যে, এস নতুন নতুন রাস্তা হয়েছে, খাল পুনরায় খনন করা হয়েছে ও সংস্কার করা হয়েছে। খাদ্য সমস্যা প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন যে, বর্তমান মুহূর্তে আশু কাজ হলাে অভাবী এলাকায় খাদ্য পৌছে দেওয়া। তিনি বলেন সরকার এ ব্যাপারে সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছে। যােগাযােগ ব্যবস্থার অসুবিধা সত্ত্বেও সরকার জনগণের নিকট খাদ্য পৌছে দিচ্ছে, প্রয়ােজনবােধে বিমান থেকে খাদ্য নিক্ষেপ করছে। মন্ত্রী আরও বলেন – সরকার বিশ্বের বিভিন্ন দেশের তরফ থেকে এ যাবৎ ১৩ লাখ ১৮ হাজার টন খাদ্য শস্যের প্রতিশ্রুতি পেয়েছে। এসব দেশের মধ্যে ভারতের স্থান সবার উর্ধ্বে। ভারত সাড়ে ৩ লাখ টন খাদ্য শষ্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। ভারতের প্রতিশ্রুত চালের ১ লাখ টন ইতােমধ্যেই পাওয়া যাচ্ছে। ৬৫ লাখ টন গমেরও শতকরা ৫০ ভাগ পাওয়া গেছে। বলতে কি, এখন জনসাধারণ ভারতের চালই পাচ্ছে বলে মন্ত্রী জানান। খাদ্য শস্য সরবরাহের ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্থান হলাে দ্বিতীয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ৪ লাখ ৭০ হাজার টন খাদ্য শস্য প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এর মধ্যে ১ লাখ ৫৬ হাজার ৭শ টন হলাে চাল। তবে মার্কিন খাদ্য সরবরাহ কখন থেকে আসতে শুরু করবে তা নির্দিষ্টভাবে জানা যায়নি। খাদ্য শস্যের ব্যাপারে তৃতীয় শীর্ষ দেশ হলাে সােভিয়েত ইউনিয়ন। সােভিয়েত ইউনিয়নের প্রতিশ্রুতি ৩০ হাজার টন চাল ইতােমধ্যেই পৌঁছে গেছে। খাদ্য শস্য সাহায্যকারী অপরাপর দেশ হলাে- অস্ট্রেলিয়া ১৪ হাজার টন গম ও ৮শ টন চাল, কানাডা ২৫ হাজার টন গম, জাপান ৭ হাজার টন চাল, নেদারল্যান্ড ২ হাজার টন গম ও বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি ১৪ হাজার ৪শ ৬৮ টন গম। এসব ছাড়াও ৫৯ হাজার টন খাবার তেলও কানাডা, সােভিয়েত ইউনিয়ন ও বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি থেকে আসছে।
Reference:
১৯ মে ১৯৭২, দৈনিক বাংলা
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭২, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ, p 362