হত্যার খবরে বিদেশের মাটিতে হাসিনা-রেহানা | হুমায়ূন রশিদ চৌধুরীর ভূমিকা
হুমায়ুন রশিদ সাহেবকে এম্বাসেডর সানাউল হক সাহেব বললেন যে, “আপনি যে বিপদটা আমার ঘাড়ে দিয়েছেন এটা আপনি এখন নিয়ে যান।” কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে মানুষের যে পরিবর্তন, ক্যান্ডেল লাইট ডিনারের থেকে ঘরের থেকে বের করে দেয় এই অবস্থা। আমাদেরকে ওনার বর্ডার পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়ার কথা। উনি নিজের গাড়িটা দিলেন না। সােজা বলে দিলেন যে গাড়িটা নষ্ট। তাে ওখানে আরেকজন অফিসার ছিলেন, তার স্ত্রী আবার আমার ক্লাশের – আমরা ক্লাশ সেভেন থেকে একসাথে পড়তাম। সেই ভদ্রলােক একটু খাতির করলেন। তখন বেলজিয়াম ভাষায় নিউজ হচ্ছে। বারবার টিভিতে বাবার ছবি দেখাচ্ছে। কিন্তু আমরা কোন ভাষা বুঝতে পারছিনা। বেলজিয়ামের বর্ডারে আমরা এপাশে নামলাম। তারপরে নাে ম্যান্স ল্যান্ড হেঁটে আমাদের মালপত্র সব হাতে করে নিয়ে – ইমিগ্রেশন করে- ওপারে যেয়ে – হুমায়ুন রশিদ সাহেব ওনার সেক্রেটারি পাঠিয়েছিলেন গাড়ি দিয়ে – কারণ চার-পাঁচ ঘণ্টা যেতে হবে। আমাকে রাত্রে বেলা হুমায়ুন সাহেব আলাদা ডেকে নিলেন। যে, তুমি একটু আসাে। ওনার রুমে। উনি আর উনার স্ত্রী বসা। তখন উনি বললেন, যে “আমরা অনেক চেষ্টা করছি খোঁজ করতে যতদুর খবর পাচ্ছি কেউ বেঁচে নাই।”
তবে হুমায়ুন রশিদ সাবের ওয়াইফ, উনি যথেষ্ট করছেন। আমাদের কাভার উনি গাড়িতে করে কার্লশ্রুয়ে (Karlsruhe) পৌঁছে দিলেন। আমাদের হাতে এক হাজার ডাস মার্ক (Deutsche Mark) দিয়ে দিলেন – যে তােমাদের হাতে তাে টাকা পয়সা… । তারপর একটা স্যুটকেইস বের করে গরম কাপড় ভরে দিলেন – যে যেখানেই থাকো – এখানে না থাকলেও তাে লাগবে – কোথায় পাবা কীভাবে কিনবা। বােধ হয় ঐ সময় ওনার ঐ স্নেহটা ভালােবাসাটা বা একটা আস্থা এটা আমাদের জন্য খুব দরকার ছিলাে।