দস্যুবাহিনীর হাতে দু’জন সাবজজ নিহত
যশােহরের সাবজজ মি: সন্তোষ কুমার দাশগুপ্তের স্ত্রী মিসেস মায়া দাশগুপ্তা তার নাবালক পুত্রকন্যাদের নিয়ে সম্প্রতি মুজিবনগরে এসে পেীছেছেন। গত পয়লা মে তার স্বামীকে পশ্চিম পাকিস্তানী পশুরা নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করেছে। জল্লাদবাহিনী এছাড়া বরিশালের সাব জজ মি: শ্রী নিতীন্দ্রনারায়ণ দাশ ও একমাত্র পুত্র অরবিন্দও গুলী করে হত্যা করেছে। যশােরের জনৈক পাঞ্জাবী কর্ণেল তােফায়েলের নির্দেশে মি: সন্তোষ দাশগুপ্ত ১০ বছরের পুত্র সন্তান দেবাশীষ ও বাসার গৃহ ভূত্য বাদল নন্দীকে বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর পর পাঞ্জাবী পশুরা তাদের একটা ইটখােলার কাছে গাড়ী থেকে নামিয়ে গুলী করে। গুলীবর্ষণের ফলে মি: দাশগুপ্ত ও গৃহভৃত্য সাথে সাথে মৃত্যুবরণ করে। কিন্তু পুত্র দেবাশীষ গুলীবিদ্ধ হওয়ার আগেই মাটিতে পরে যাওয়ার ফলে বেঁচে যায়। মিলিটারীর দল ঐস্থান ত্যাগ করে না যাওয়া পর্যন্ত সে মৃতের ভান করে মাটিতে পড়ে থাকে। কিছুক্ষণ পর নরপশুর দল চলে গেলে সে দৌড়ে গিয়ে মাকে তার বাবার মৃত্যু সংবাদ দেয়। পাঞ্জাবী পশুর দল ছেলেটি বেঁচে আছে শুনে কয়েক ঘণ্টা পর ইটখােলার কাছে গিয়ে ছেলেটির সন্ধান করে, সেখানে ওকে না পেয়ে উন্মত্ত পশুরদল তার বাসায় গিয়ে হানা দেয়। সৌভাগ্যবশত: এর মধ্যে মি: দাশগুপ্তের স্ত্রী তাঁর সব ছেলেমেয়েদের নিয়ে কোন নিরাপদ স্থানে পালিয়ে যাওয়ায় মিলিটারীর হাত থেকে রক্ষা পান। যশােহরের কোন এক মুসলমানের বাড়ীতে তারা প্রায় আড়াই মাস আত্মগােপন করে থাকার পর মিসেস মতি দাশগুপ্তা সম্প্রতি মুজিব নগর এসে পৌঁছেছেন।
জয়বাংলা (১) ১: ১৩ ॥ ৬ আগস্ট ১৯৭১