শেখ মুজিব থেকে খন্দকার মােশতাক ছিলেন বয়সে বড় এবং আওয়ামী মুসলিম লীগের জন্মের সময় দুজনে একই সঙ্গে যুগ্ম সম্পাদক ছিলেন। উপরন্তু নিজে অ্যাডভােকেট বলে মােশতাকের ধারণা তিনি সব সময়েই শেখ মুজিব থেকে বড় নেতা এবং রাষ্ট্র পরিচালনায় সক্ষম। কিন্তু দুঃসাহসী শেখ মুজিবের প্রবল জনপ্রিয়তা ও সাংগঠনিক ক্ষমতা দেখে খন্দকার সাহেব বাহ্যত নিশ্ৰুপ থাকলেও মনে মনে গুমরে মরছিলেন। খন্দকার মােশতাক আওয়ামী লীগে পুনরায় যােগদানের পর শেখ মুজিব তার এই পুরনাে সহকর্মীকে সৈয়দ নজরুল, তাজউদ্দিন ও মনসুর আলীর উপরে স্থান দিতে পারলেন না। পার্টি লাইন-আপ-এ মােশতাকের স্থান হলাে পাঁচ নম্বরে। অর্থাৎ কিনা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান, সৈয়দ নজরুল, তাজউদ্দিন এবং মনসুর আলীর পরে। তাই প্রায় দশ বছরের জন্য দলত্যাগ ও ১৯৫৪ সালের বিশ্বাসঘাতকতার “কাফফরা” হিসাবে মােশতাককে আপাতত জুনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসাবে সন্তুষ্ট থাকতে হলাে। কিন্তু মনে মনে তিনি প্রতিহিংসার আগুনে জ্বলতে লাগলেন আর ষড়যন্ত্রের জাল বুনতে শুরু করলেন। কিছুদিনের মধ্যেই মােশতাক বুঝতে পারলেন যে, আওয়ামী লীগের কাদের সঙ্গে তিনি উপদল সৃষ্টি করবেন।
তথ্য – মুজিবের রক্ত লাল – এম আর আখতার মুকুল