You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.07.12 | রাজশাহী উত্তরে বিমান অবতরণ ক্ষেত্রে মুক্তিফৌজের আক্রমণ | দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকা - সংগ্রামের নোটবুক

রাজশাহী উত্তরে বিমান অবতরণ ক্ষেত্রে মুক্তিফৌজের আক্রমণ

কৃষ্ণনগর, ১১ জুলাই-আজ প্রত্যুষে মুক্তিফৌজের গেরিলারা রাজশাহীর উত্তরে, নওহাটা বিমান অবতরণ ক্ষেত্রে হাতবােমা নিয়ে আক্রমণ চালায়। গেরিলা, আক্রমণ শুরু করার সঙ্গে সঙ্গেই ক্ষতি এড়াবার জন্য দুটি পাক হেলিকপ্টার বিমান অবতরণ ক্ষেত্র ত্যাগ করে। গেরিলাদের আক্রমণে ছয়জন পাক সৈন্য খতম হয়। গতকাল মধ্য রাত্রি থেকে কুষ্টিয়া জেলার ইছাখালি, মহেশকুন্ডি এবং কামুনিতে মুক্তিফৌজ ও পাক সৈন্যদের মধ্যে প্রচণ্ড গােলাগুলি বিনিময় হচ্ছে। মেহেরপুরের চার মাইল উত্তর কালাে চাঁদপুরে পাকিস্তানী সৈন্যরা তিন ইঞ্চি মরটার ও রিকয়েললেস রাইফেল থেকে গােলাগুলি চালায়। মুক্তিফৌজও তিন ঘণ্টা ধরে অবিরাম গােলাগুলি চালায়। জানা গিয়েছে যে, পাক সেনাদের অনেকে হতাহত হয়েছে, তবে সঠিক সংখ্যা জানা যায়নি।

নদীয়া সীমান্তের কাছে যুদ্ধে কয়েকজন পাক সেনা হতাহত 

শনিবার রাত্রে ভারতের নদীয়া সীমান্তের কাছে বাংলাদেশের কাথুলি, মহেশকোনা ও ইছাখালিতে পাক সেনা ও মুক্তিযােদ্ধাদের মধ্যে এক সংঘর্ষে কয়েকজন পাক সেনা হতাহত হয়। সংঘর্ষের সময় মরটার এবং মেশিনগান ব্যবহার করা হয় বলে খবর।

মুক্তিফৌজের হাতে এ এ পর্যন্ত ২৪৭ জন পাক অফিসার খতম

আগরতলা, ১১ জাই বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামে এ পর্যন্ত পাক সেনাবাহিনীর প্রায় ২৫৭ জন অফিসার মুক্তিফৌজের হাতে নিহত হয়েছে। সীমান্তের ওপার থেকে মুক্তিফৌজ বাহিনীর সূত্রে পাওয়া খবরে এ কথা জানা যায় ।

পাক সেনাদের শিবিরে মুক্তিফৌজের অতর্কিত আক্রমণ 

করিমগঞ্জ থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা জানান : মুক্তিফৌজ সম্প্রতি সীমান্ত এলাকার সুতারকান্দির কাছে পাক সেনার একটি শিবিরে অতর্কিতে আক্রমণ চালায়। পাক সেনাদের কাছে ছিল হালকা মেশিনগান, আর ওদিকে মুক্তিফৌজ মাঝারি মেশিনগান নিয়ে তুমুল লড়াই শুরু করে। লড়াই বেশ কিছুক্ষণ ধরেই চলে। গােলাগুলির প্রচণ্ড আওয়াজ করিমগঞ্জ শহর থেকে শােনা যায়।  করিমগঞ্জের অপর দিকে জকিগঞ্জে পাক সেনাদের নাক্কারজনক অত্যাচার আবার শুরু হয়েছে। পাক সেনাদের কয়েকজন অফিসার বিয়ে করার জন্য কয়েকজন মুসলমান মেয়েকে জোর করে ধরে নিয়ে যায়। তার মধ্যে জনৈক মুসলিম লীগ নেতার মেয়েও আছে। জকিগঞ্জে গত সপ্তাহে ১২ জন সাধারণ লােককে হত্যা করে। পাক সেনারা মাটিতে পুতে ফেলে। গত সপ্তাহেই মুক্তি ফৌজ কানিরঘাট পুলিশ স্টেশনটি ভেঙ্গেচুরে এক শেষ করে দেয়। মুক্তিফৌজ প্রচুর গােলাবারুদ নিয়ে আক্রমণ করলে থানার লােকেরা যে যার মতাে পালিয়ে যায়। মুক্তি ফৌজ জাকিগঞ্জ শ্রীহ রুটের রহিমপুর সেতুটিও উড়িয়ে দিয়েছে।

Reference:

১২ জুলাই ১৯৭১, দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকা