২৪ জুলাই ১৯৭১ঃ স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল প্রথম খেলায় নদীয়া জেলা একাদশের মুখোমুখি
সাবেক পূর্ব পাকিস্তান ক্রীড়া সমিতির সাধারন সম্পাদক লুতফর রহমান আগরতলা পালিয়ে যাবার পর সেখানে শরণার্থী একাদশ নামে একটি দল গঠন করেছিলেন। পরে তিনি কলকাতায় এসে সকল খেলোয়াড়দের একত্র করে স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল নামে একটি দল গঠন করে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে প্রচারণা ও অর্থ সংগ্রহের লক্ষ্যে কতক গুলি প্রদর্শনী ফুটবল ম্যাচের আয়োজন করেন। এ দলের প্রথম খেলা ছিল ১৯৭১ সালের ২৪ জুলাই। এই দিন তারা ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলা একাদশের মুখোমুখি হয়েছিল। সেদিন পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগর স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের পতাকা নিয়ে মাঠ প্রদক্ষিণ করেছিল ৩১ ফুটবলারকে নিয়ে গড়া দলটি, যে দলের অধিনায়ক ছিলেন জাকারিয়া পিন্টু আর সহ-অধিনায়ক প্রতাপ শংকর হাজরা। বাংলাদেশ নামে খেলতে আপত্তি করেছিল সংশ্লিষ্ট ভারতীয় ফেডারেশন সমুহ। তাদের যুক্তি তারা ফিফার সদস্য নয়। দলটিকে প্রবাসী সরকার আগেই অনুমোদন দিয়েছিল।
NB:
Additional info
বাংলাদেশ ফুটবল দল ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় বিভিন্ন সাংস্কৃতিক মাধ্যম মুক্তিযোদ্ধাদের অপরাজেয় সাহসিকতা অক্ষুন্ন রেখেছে তাদের নির্ভীক পদক্ষেপের মাধ্যমে। এসময় বাংলাদেশ বেতার, বিভিন্ন পত্র পত্রিকার অবিস্মরণীয় অবদান মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি পদক্ষেপে প্রেরণা যুগিয়েছেসর্বাগ্রে এগিয়ে যাবার। মুক্তিযুদ্ধের সময় আরেকটি মাধ্যম যা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য জনমত গঠন এবং অর্থ সংগ্রহের মাধ্যমে অন্যরকম একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিল তাহলো “স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল।”
বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকারের উদ্যোগে গঠিত এ দলটির পেছনে যাঁদের অবদান চিরস্মরণীয়- মরহুম আলী ইমাম, জাকারিয়া পিন্টু, প্যাটেল, প্রতাপ শংকর হাজরা, আশরাফ, লুতফর রহমান প্রমুখ।
এ দলটি ভারতেরই বিভিন্ন স্থানে ১৬ টি প্রদর্শনী খেলায় অংশগ্রহন করেছিল। তারমাঝে ১২ টিতে জয়লাভ, ৩ টিতে পরাজিত, এবং ১ টিতে ড্র করার মাধ্যমে বিপুল সাড়াজাগানো প্রশংসা অর্জন করেছে।nপ্রথম খেলার পূর্বে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং জাতিয় সঙ্গীত বাজিয়ে সেদিন ভারতবাসী উষ্ণ অভ্যর্থনার মাধ্যমে বাঙালীকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে সমর্থন জানিয়েছিল।
স্বাধীনবাংলা ফুটবল দলের প্রথম সভাপতি ছিলেন শামসুল হক; দ্বিতীয় সভাপতি ছিলেন আশরাফ আলী চৌধুরী এবং তৃতীয় সভাপতি ছিলেন এনএ চৌধুরী
তানভীর মাঝহারুল ইসলাম তান্না ছিলেন ফুটবল দলটির ম্যানেজার এবং ননী বসাক ছিলেন গর্বিত দলটির কোচ।
স্বাধীনবাংলা ফুটবল দলে যেসব মুক্তিযোদ্ধা অভীষ্ঠ জয় অর্জনে বদ্ধপরিকর ছিলেন-
অধিনায়ক জাকারিয়া পিন্টু, সহ অধিনায়ক প্রতাপ শংকর হাজরা, লে. নুরুন্নবী, আলি ইমাম, লালু, শাহজাহান আলম, আইনুল হক, অমলেশ সেন, কায়কবাদ, শেখ আশরাফ আলী, সুভাষচন্দ্র সাহা, বিমল কর, সাইদুর রহমান পযাটেল, তসলিম, এনায়েতুর রহমান, অনিরুদ্ধ, আব্দুল হাকিম, নওসুরুজ্জামান, কাজী সালাহউদ্দীন, খোকন সুরুজ, মোমিন, গোবিন্দ কুন্ডু, মাহবুবুর রহমান, নিহার, সঞ্জিত, লুতফর রহমান, মোজাম্মেল, পেয়ারা, সাত্তার ও মাহমুদ।
স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল জয়বাংলা ফুটবল দল হিসেবে পরিচিত ছিল।
জয় বাংলা পত্রিকার কাটিং