You dont have javascript enabled! Please enable it! চাঁদগাজী আক্রমণ -বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস - সংগ্রামের নোটবুক
চাঁদগাজী আক্রমণ
অতঃপর ২০ নভেম্বর সেক্টর কমান্ডারের নির্দেশে ক্যাপ্টেন মাহফুজ তার বাহিনী নিয়ে চাঁদগাজীর নিকট মােহাম্মদপুরে প্রতিরক্ষা পজিশন গ্রহণ করেন। মিত্র বাহিনীর ৬ নম্বর জাঠ রেজিমেন্ট লে. কর্নেল হাসাবনিস-এর নের্তৃত্বে ক্যাপ্টেন মাহফুজের বাহিনীর সাথে যােগদান করে। ২০শে নভেম্বর পাকিস্তানি বাহিনী ট্যাংক এর সাহায্যে এই যৌথ বাহিনীর উপর আক্রমণ চালায়। তুমুল সংঘর্ষে মিত্র বাহিনীর একজন নায়েক ও বেশ কয়েকজন মুক্তিযােদ্ধা শহীদ হয়। যৌথ বাহিনীর পাল্টা আক্রমণে পাকিস্তানি বাহিনী পিছু সরে যায়। শক্রর পিছনে ধাওয়া করে চাঁদগাজী পর্যন্ত পৌছুতে মুক্তিবাহিনীর ২০জন যােদ্ধা পাকিস্তানি সেনাদের পাতানাে মাইনের আঘাতে শহীদ হয়। ২৫শে নভেম্বর ক্যাপ্টেন মাহফুজ তার বাহিনীসহ চাঁদগাজী পৌছুলে পাকিস্তানি বাহিনীর আর্টিলারির আক্রমণে মুক্তিবাহিনী চরম ক্ষতির সম্মুখীন হয়।
অবশেষে পাকিস্তানি বাহিনীর ট্যাংকের মােকাবেলার জন্য মিত্র বাহিনীর ট্যাংক ২৬শে নভেম্বর রণাঙ্গনে আনা হয়। তুমুল সংঘর্ষের মধ্যে দিয়ে পাকিস্তানি সেনাদের চাঁদগাজী থেকে উৎখাত করা হয়। কিন্তু পাকিস্তানি মাইন ফিল্ডের জন্য মুক্তিবাহিনীকে চরম ক্ষতি স্বীকার করতে হয়। এদিকে ২১/২২ নভেম্বর মুক্তিবাহিনী একই সঙ্গে চম্পকনগর বি ও পি ও বল্লভপুর আক্রমণ করে। ক্যাপ্টেন মাহফুজের কোম্পানি চম্পকনগর বি ও পি এবং লে, তাহের তার কোম্পানি নিয়ে বল্লভপুরের দিকে অগ্রসর হন। মিত্র বাহিনীর আর্টিলারি সাপাের্টের সমন্বয়ে রাত ৩-৩০ মি, উভয় স্থানে একত্রে মুক্তিবাহিনী আক্রমণ করে। কিন্তু পাকিস্তানি সেনাদের তীব্র প্রতি-আক্রমণ ও গােলন্দাজ শেলের বিরুদ্ধে মুক্তিবাহিনী কিছু ক্ষয় ক্ষতি স্বীকার করে দিয়ে পিছনে সরে আসতে বাধ্য হয়। কয়েক ঘণ্টার সংঘর্ষে মুক্তিবাহিনীর ৩জন শহীদ এবং কয়েকজন আহত হয়। ৫০ জন পাকিস্তানি সেনা নিহত ও বেশ কয়েকজন আহত হবার খবর পাওয়া যায়। মেজর রফিক অলৌকিকভাবে। সেদিন নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পান।

সূত্রঃ  এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম ১৯৪৭ থেকে ১৯৭১ – লে. কর্নেল (অব.) আবু ওসমান চৌধুরী