You dont have javascript enabled! Please enable it! বর্নী বি ও পি সংঘর্ষ -বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস - সংগ্রামের নোটবুক
বর্নী বি ও পি সংঘর্ষ
বর্নী বিওপিতে ছিল ৭৫ জন পাকিস্তানি সেনার একটি মজবুত ঘাটি। ক্যাপ্টেন নাজমুল হুদা প্রায় দু’কোম্পানি মুক্তিযােদ্ধা নিয়ে ৫ই আগস্ট ব্যাপকভাবে এই ঘাঁটির পাকিস্তানি সেনাদের উপর আক্রমণ চালায়। মুক্তিবাহিনীর তীব্র আক্রমণের মুখে পাকিস্তান সেনারা তাদের ১৫ জনের লাশ ফেলে রেখেই পালিয়ে যায়। এই সংঘর্ষেই প্রথম ই. পি, আর বাহিনীর সাথে এফ, এ বাহিনীর একটি কোম্পানি অংশগ্রহণ করে। বনী বি. ও, পি’র ঘাটি থেকে ক্যাপ্টেন নাজমুল হুদা ও তার লােকজন অস্ত্র ও গােলাবারুদ নিজেদের মূল ঘাটিতে নিতে শুরু করে। এমতাবস্থায় পাকিস্তানি সেনারা পেছন থেকে অগ্রসর হয়ে মুক্তিবাহিনীর উপর প্রবলভাবে প্রতি-আক্রমণ করে। মুক্তিবাহিনী এর জন্য প্রস্তুত ছিল না। ব্যাপক সংঘর্ষে মুক্তিবাহিনীর ৪ জন যােদ্ধা শহীদ হয়, কিন্তু অলৌকিকভাবে ক্যাপ্টেন নাজমুল হুদা মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পান। ল্যান্স নায়েক নূর মােহাম্মদ ও হাবিলদার আবুল হােসেনের সাহায্যে ক্যাপ্টেন হুদা খাল পার হয়ে অন্যান্যদের নিয়ে নিরাপদ স্থানে ফিরে আসে।
অন্যদিকে ক্যাপ্টেন মুস্তাফিজুর রহমান, ক্যাপ্টেন তৌফিক এলাহী চৌধুরী, ক্যাপ্টেন মাহবুবউদ্দিন আহমেদ, লে. জাহাঙ্গীর প্রমুখ নিজ নিজ সাব-সেক্টর এলাকায় পাকিস্তানি বাহিনীর উপর আক্রমণ, রেইড ইত্যাদি অব্যাহত রাখে। ক্যাপ্টেন মুস্তাফিজুর রহমানের নির্দেশে হাবিলদার মফিজুল হক তার প্লাটুন নিয়ে গয়েসপুর এলাকায় অবস্থান করছিলেন। ১৭ই আগস্ট পাকিস্তানি বাহিনীর একটি টহলদার দল অগ্রসর হবার খবর পেয়ে হাবিলদার মফিজুল হক সঙ্গে সঙ্গে তার প্লাটুনকে দুটি কলামে ভাগ করে চুপচাপ অপেক্ষা করছিল। পাকিস্তানি টহলদার দল নির্দ্বিধায় অগ্রসর হচ্ছিল। রেঞ্জের মধ্যে আসার সাথে সাথে মুক্তিবাহিনীর গানগুলাে সব গর্জে উঠলো। এই আকস্মিক আক্রমণে পাকিস্তানি সেনারা এতই সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে যে পাল্টা আক্রমণ করার পরিবর্তে তারা তাদের জিপ গাড়িটি রেখেই পালিয়ে যায়। হাবিলদার মফিজুল। হক জিপ গাড়িটি ও বেশ কিছু গােলাবারুদ সাব-সেক্টর হেডকোয়ার্টার বানপুরে পাঠিয়ে দেয়।

সূত্রঃ  এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম ১৯৪৭ থেকে ১৯৭১ – লে. কর্নেল (অব.) আবু ওসমান চৌধুরী