You dont have javascript enabled! Please enable it! 1951 | পূর্ব বাংলার লবণ সংকট | অক্টোবর-নভেম্বর ১৯৫১ - সংগ্রামের নোটবুক

পূর্ব বাংলার লবণ সংকট

দৈনিক আজাদ ও পূর্ব বাংলা ব্যবস্থাপক | অক্টোবর-নভেম্বর, ১৯৫১

সভার কার্যবিবরণী ১৯৫১ সনের লবণ সঙ্কট সম্পর্কে ঢাকা বণিক সমিতির সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন-এর বিবৃতিঃ পূর্ব পাকিস্তানের লবণের দুষ্প্রাপ্যতার জন্যে প্রদেশের সর্বত্র গভীর অসন্তোষের সৃষ্টি হইয়াছে। লবণের অভাবের কারণ সম্পর্কে বিভিন্ন মহল বিভিন্ন মত পোষণ করেন। কিন্তু সাধারণভাবে ইহার আসল কারণ কাহারও জানা নাই। তবে করাচী হইতে অপর্যাপ্ত সরবরাহই যে ইহার মূল কারণ তাহা নিঃসন্দেহে বলা চলে। সরকার নিযুক্ত লোভী আড়তদারদের অতিরিক্ত মুনাফা লোভই সম্ভবতঃ বর্তমান পরিস্থিতির কারণ। সরকারী হিসাব মতে পূর্ব পাকিস্তানে বার্ষিক ৭৫ লক্ষ মণ লবণের প্রয়োজন হয়। পশ্চিম পাকিস্তানের বাসিন্দাগণ সাধারণতঃ সামুদ্রিক লবণ ব্যবহার করে না। তথায় বৎসরে মাত্র ৬ লক্ষ মণ লবণ খরচ হয়। ইহাও সর্বজনবিদিত যে, সরকার দেশী শিল্পকে উৎসাহ দানের জন্যে বাহির হইতে লবণ আমদানী সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করিয়া দেওয়ার নীতি অবলম্বন করিয়াছেন। পশ্চিম পাকিস্তানের ৫টি লবণের কারখানা রহিয়াছে এবং তাহাতে বৎসরে ৫২ লক্ষ মণ লবণ উৎপন্ন হয়। পূর্ব পাকিস্তানের কোথাও সেরূপ নামকরা কারখানা নাই। সুতরাং দেশে যে লবণ উৎপন্ন হয় তাহাতে শেষ পর্যন্ত প্রয়োজন অপেক্ষা বৎসরে ৩৯ লক্ষ মণ লবণ ঘাটতি পড়ে। অর্থাৎ দেশের প্রয়োজনের তুলনায় পাকিস্তানে লবণ উৎপাদনের পরিমাণ খুবই কম। সুতরাং উপৎপাদন বৃদ্ধি বা বিদেশ হইতে লবণ আমদানী ব্যতিরেকে অন্য কোন উপায়ে দেশের প্রয়োজন মিটানো সম্ভবপর নয়। সরকার কর্তৃক লবণ আমদানী বন্ধ হওয়ার পর হইতেই আমি লবণের নিশ্চিত ঘাটতি অনুমান করিয়াছিলাম। আমি সরকারকে ভারত এবং অন্যান্য বিদেশী রাষ্ট্র হইতে লবণ আমদানীর অনুমতি দানের জন্য অনুরোধ করিয়াছিলাম। আমার প্রস্তাব অনুযায়ীই গত এপ্রিল মাসে বৈদেশিক বাণিজ্য উন্নয়ন পরিষদ বিদেশ হইতে লবণ আমদানীর অনুমতি দানের সোপারিশ জানাইয়াছিলেন। কিন্তু সরকার এ সম্পর্কে এখনও কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন নাই। ঢাকা বণিক সমিতি প্রায় একই সময় খাদ্য মন্ত্রীর নিকট অনুরূপ সোপারিশ জানাইয়াছিল। কিন্তু এ সম্পর্কেও এখন পর্যন্ত কিছু করা হয় নাই। উৎপাদনের স্বল্পতা ছাড়া প্রদেশে লবণের বিলি ব্যবস্থাও যথেষ্ট ভালই রহিয়াছে। চট্টগ্রাম বন্দরে লবণ খালাস ও তাহা হইতে অন্যত্র চালান দেওয়ার ভার একটি ভারতীয় প্রতিষ্ঠানের একচেটিয়া। এ সম্পর্কে আমি আরও জানাইতে চাই যে, পশ্চিম পাকিস্তান চা ও পানের অভাব থাকায় তথাকার বাসিন্দাগণকে বিদেশ হইতে এই উভয়বিধ দ্রব্য আমদানীর অনুমতি দেওয়া হইয়াছে। স্বদেশী দ্রব্যের পৃষ্ঠপোষকতা করিতে যাইয়া পূর্ববঙ্গের অধিবাসীগণকে এক সের লবণের জন্য যখন ২.০০ টাকা হইতে ৩.০০ টাকা ব্যয় করিতে হইতেছে, তখন পশ্চিম পাকিস্তানের অদিবাসীগণ কোন যুক্তিতে বিদেশ হইতে পান ও চা আমদানী করিয়া নিজেদের ঘাটতি পূরণের অনুমতি পাইতেছে? একই পরিপস্থিতিতে পশ্চিম পাকিস্তানের জন্য এইরূপ ভিন্ন ভিন্ন নীতি গৃহীত হইতে পারে কিরূপে? এ প্রসঙ্গে উল্লেখযোগ্য যে, করাচীতে বর্তমানে মাত্র দুই আনা সের দরে লবণ বিক্রয় হইতেছে। দৈনিক আজাদ, ২২-১০-১৯৫১] গদী ছাড় চড়াদর ইতিহাস সৃষ্টি করিয়াছে। সের প্রতি দুই টাকা হইতে আরম্ভ করিয়া স্থানবিশেষে ষোল টাকায় পর্যন্ত লবণ খরিদ করিতে লোক বাধ্য হইতেছে। এই অত্যাবশ্যকীয় এই নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের অভাবে জনসাধারণের দুৰ্দ্দশার অবধি নাই। তাই চারদিক হইতে কিছু কিছু সোরগোল উঠিয়াছে। আমাদের আফজল মন্ত্রী আবার বিবৃতি ঝাড়িয়াছেন, কেন্দ্রীয় সরকারে শৈথিল্য ও অব্যবস্থার জন্যই নাকি এই বিড়ম্বনা। সাপ্তাহিক নও বেলাল- এ প্রকাশিত সম্পাদকীয়, ১-১১-১৯৫১

প্রদেশে লবণ নিয়ে সৃষ্ট পরিস্থিতি সামাল দিতে বিশেষ প্রস্তাব ও বিবেচনা (২ নভেম্বর ১৯৫১)

মাননীয় জনাব এসএম আফজালঃজনাব,আমি পদক্ষেপ নেয়ার প্রার্থনা করছি যে এই অধিবেশনে পূর্ব পাকিস্তানের একটি প্রদেশের লবণের খারাপ অবস্থা বিবেচনা করেছে সেটা নিয়ে আলোচনা হবে।

জনাব সভাপতি, এটি ছিল ১৯৫০ সালের আগস্ট, প্রাদেশিক সরকার বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিলো লবণের দাম বাড়িয়ে দিতে। এই দাম বৃদ্ধির কারণ ছিলো করাচির লবণ ব্যবসায়ীদের একচাটিয়া প্রবৃত্তি।তাদের এই কাজগুলো নিবারণ করতে প্রাদেশিক সরকার সংবিধিবদ্ধ প্রচার করে লবণের দাম যুক্তিপূর্ণ রাখার জন্য। তদনুসারে ‘পূর্ব বাংলা লবণ নিয়ন্ত্রন আদেশ’ প্রচার করা হয় ১৯৫০ সালের ৩০ শে আগস্ট। খুচরা বিক্রেতারা এই আদেশের আওতার বাইরে ছিল কারণ প্রদেশের সব হাট বাজারেই কম উৎপাদনের বেশ বড় সংখ্যক মানুষ এই লবণের ব্যবসার সাথে জড়িত ছিল এবং তাদের এই আদেশের আওতায় আনলে সরকারি পরিবেশন ব্যবস্থায় বেশ বড় ধরণের দুর্নিতি শুরু হবে। উপরমহল বিদ্যমান ব্যবস্থাকেই যথেষ্ট মনে করেছে। একারনে প্রাদেশিক সরকার প্রস্তাব রেখেছিলো প্রদেশের কেন্দ্রতে লবণের সরবরাহ বাড়ানোর উচিত এবং তাদের উচিত সরকারী খাতে লবণ রপ্তানি করা। সুতরাং এতে কোন প্রবাভ পড়বে না কারণ প্রধান সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো নিজেদের মধ্যে লবণ সরবরাহ করার। ১৯৫০ সালের ১৩ই নভেম্বরের সমুদ্র লবণ নিয়ন্ত্রনক্রম অনুযায়ী তারা ঘোষণা দিয়েছিলো যে লবণ তারা বিক্রয়,ক্রয় এবং আহরণ করবে তা নিয়ন্ত্রিত হবে প্রধান সরকার দ্বারা।

১৯৫০ সালের ১৪ই ডিসেম্বর এটা বিদেশ থেকে রপ্তানির অনুমতি দেয়া হয়েছিলো, প্রধান সরকারঅনুমতি দেয় তাদের দ্বারাএকচেটিয়া সমুদের লবণ আহরণের এবংপূর্ব বাংলায় পাঠানোর জন্য। তারা প্রাদেশিক সরকারকে এমন কোন পদক্ষেপ নিতে বারণ করেছিল যার ফলে পরবর্তিতে পুর্ব বাংলার লবণ রপ্তানিতে প্রভাব ফেলতে পারে। এটা বর্ণনা করা হয়েছিলো যে ‘করাচি সল্ট ওয়ার্ক্স’এ পুরো পূর্ব বাংলার লবণের চাহিদা পূরণের জন্য যথেষ্ট। আমরা একচেটিয়া পরিকল্পনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছিলাম কারণ একসাথে সকল বেসরকারি আমদানিকারকদের উচ্ছিন্ন করা কোন বুদ্ধিমানের নীতি ছিল না এবং মনে করা হয় সমগ্রের দায়িত্ব সরবরাহের জন্য এবং এটা মারাত্মক ছিলো।

এটা ১৯৫০ সালের ডিসেম্বর থেকেই প্রাদেশিক সরকার দেখেছিলোকরাচি থেকে লবণের চালানের উপর উদ্বেগের সাথে নজর রেখে যাচ্ছিল। ১৯৫১ সালের জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত সময়েকরাচি থেকে ৯,৭০,৯৪২ মণ লবণ গৃহীত হয় যেখানে অনুমানিক প্রয়োজন ছিল ২৫ লক্ষমণ।মে এর মাঝামাঝি সময়ে এই ঘটতিটি প্রধান সরকারের কাছে বিজ্ঞপ্তি আকারে তুলে ধরা হয় এবং তারা বলেছিলো একটা পরিকল্পনা পথ দ্রুত প্রেরণ করবে যাতে মাসে ৫ লক্ষ মণ যাতে সরবরাহ করা হয়। যাতে উপরে কিছু অতিরিক্ত হয়ে জমিয়ে রাখা সম্ভব হয়।কারণ কিন্তু প্রধান সরকারের পরিবহণের জায়গা পাওয়া কঠিন হয়ে পড়াই দ্রুত প্রেরণের ব্যবস্থা করতে পারে নি।মে মাসে শুরু হওয়া অভাবটি জুলাইয়ে আরও প্রকোপআকার ধারণ করে।

খরিদ করিতে লোক বাধ্য হইতেছে। এই অত্যাবশ্যকীয় এই নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের অভাবে জনসাধারণের দুৰ্দ্দশার অবধি নাই। তাই চারদিক হইতে কিছু কিছু সোরগোল উঠিয়াছে। আমাদের আফজল মন্ত্রী আবার বিবৃতি ঝাড়িয়াছেন, কেন্দ্রীয় সরকারে শৈথিল্য ও অব্যবস্থার জন্যই নাকি এই বিড়ম্বনা। সাপ্তাহিক নও বেলাল- এ প্রকাশিত সম্পাদকীয়, ১-১১-১৯৫১

লবণের বেসামরিক সরবরাহের অভাব মে মাসের পর জুলাই মাসে আরও বেড়ে যায় এবং সেটা উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে পূরণ করার জন্য মাননীয় মন্ত্রীর মাধ্যমে মহাপরিচালক ব্যক্তিগতভাবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে অবহিত করেছেন। করাচি থেকে লবণের সরবরাহ পাঠানো ত্বরান্বিত করতে ও বিদেশ থেকে আমদানী করতে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে জরুরী বার্তা প্রেরণ করা হয়েছে। এটা সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বলবত ছিল এবং কেন্দ্রীয় সরকারকে লবণের জন্য পুনরায় উন্মুক্ত দরপত্র আহবান করতে বলা হয়েছে। সেপ্টেম্বর মাসে মহাপরিচালক পুনঃরায় কেন্দ্রীয় সরকারকে অবস্থার অবনতি অবহিত করার জন্য গিয়েছিলেন। যেহেতু চট্টগ্রাম এবং চালনা বন্দরে কার্গো নামানোর সুবিধা অত্যন্ত সীমিত, বিদেশ থেকে আমদানী করা লবণের দামও সস্তা হবে না বিধায় বিদেশ থেকে লবণ আমদানী করার জন্য আমাদের দেয়া পরামর্শ অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহেই নাকচ করে দেয়া হয়। তাঁরা আমাদের এটাও অবহিত করেছিলো যে, উচ্চহারে মূল্য পরিশোধ করে বিদেশী জাহাজের মাধ্যমে করাচি থেকে পূর্ববঙ্গে লবণ সরবরাহের জন্য প্রস্তুতি নেয়া হয়েছিলো।

বিভাগীয় কর্মতৎপরতার পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী করাচিতে ভ্রমণকালে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে শক্ত বার্তাই দিয়েছেন। লবণের জাহাজগুলো অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়েই পৌছাতে আরম্ভ করেছিলো যখন কিনা পণ্যের দাম ইতোমধ্যেই হাতের নাগালের বাইরে চলে গিয়েছে। অক্টোবরের মাঝামাঝি সময় হতেই আমরা লবণের জাহাজগুলো গ্রহণ করা শুরু করলাম, চলতি মাস শেষ হওয়ার আগেই চট্টগ্রাম বন্দরে ৪টি এবং চালনা বন্দরে ১টি জাহাজ এসে পৌছায় যেগুলোতে প্রায় ৭,৪৬,৪২৯ মণ করাচির লবণ ছিল। আমরা আরও জানতে পেরেছিলাম যে, নভেম্বর মাস নাগাদ ৬টি জাহাজে করে আরও ৮,৮৭,০০০ মণ লবণ আসছে। এছাড়াও, কেন্দ্রীয় সরকার বিদেশ থেকে প্রায় ১০,০০,০০০ মণ লবণ আমদানি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং প্রদেশে মাসে ৭,০০,০০০ মণ লবণ সরবরাহ করবে এই মর্মে সম্মত হয়েছে । এর মাধ্যমে ৯থেকে ১০ লাখ মণ লবণের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে ১৫ই অক্টোবর থেকে ৩০শে নভেম্বর পর্যন্ত এই ৬ সপ্তাহে আমরা প্রায় ১৬,৩৩,০০০ মণ লবণ পেতে যাচ্ছি। তাই, আমরা আশা করছি ১৯৫১ সালের নভেম্বরের শেষ নাগাদ আমরা প্রায় ৫লাখ মণ লবণের যোগান পেতে যাচ্ছি।

এদিকে, ১৯৫১ সালের অক্টোবর নাগাদ লবণের যে সরবরাহ আমরা পেয়েছি তা প্রদেশের সব জায়গায় পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে এবং স্থানীয় কর্মকর্তাগণকে তা প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিতরণের ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে। লবণের সরবরাহ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ইতোমধ্যেই অনেক কর্মকর্তা বিতরণের কাজ শুরু করে দিয়েছেন। মূল্য নির্ধারণের মাধ্যমে বিভিন্ন শহরে বরাদ্দকৃত দোকানগুলোতে ৪-৫ সের করে লবণের সরবরাহ দেয়া হয়েছে, অন্যদিকে গ্রামাঞ্চলে নির্বাচিত খুচরা বিক্রেতাদের ৪-৬ সের করে দেয়া হয়েছে। সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন বিক্রেতাদের মাধ্যমে সরবরাহের সময় কালোবাজারির কথা শোনা গিয়েছে। এরকম প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে সরকারের নোটিশ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তা গ্রহণ করা হয়েছে ও অপরাধীকে শাস্তি দেয়া হয়েছে ।

আন্তঃ বিভাগীয় নিয়ন্ত্রকের আদেশ অমান্য করে লবণ বিক্রি করার জন্য পিরোজপুরের একজন পাইকারি বিক্রেতার ২জন কর্মচারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পিরোজপুরের আরও একজন পাইকারি বিক্রেতাকে তার মজুতের অংশ লুকানোর জন্য গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এরকম আরও অনেককেই বিভিন্ন জায়গায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ওজনে কম দেয়ার কারণে ঢাকার একজন পাইকারি বিক্রেতাকে কালো তালিকাভূক্ত করা হয়েছে। ময়মনসিংহ এবং অন্যান্য জেলাতেও একই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। সকল কর্মকর্তাদেরকে মজুতদারদের সম্পর্কে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে এবং সেই সাথে এই ক্ষেত্রে যারা ভালো করবে তাঁরা সরকারের বিশেষ নজরে আসবে বলে বলা হয়েছে।

জননিরাপত্তা অধ্যাদেশের অধীনে এইসব পদক্ষেপ নেয়ার পাশাপাশি যেসব বিক্রেতা এখনো উচ্চমূল্যে লবণ বিক্রয় করছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। জনগণকে সরকার কালো বাজারিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে এটা জানানোর পাশাপাশি বিক্রেতাদের তাদের অসামাজিক কার্যক্রমের জন্য সতর্ক করার সুযোগটা আমরা লুফে নিয়েছি।

আমাদের কাছে বর্তমানে উপ বিভাগীয় কর্মকর্তা এবং উপ বিভাগীয় মুসলিম লীগের সর্বশেষ রিপোর্ট আছে। রিপোর্ট অনুযায়ী মুক্তবাজারে কোথাও কোথাও প্রতি সেরের মূল্য ৬ রুপির উপরে ছিল। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।কিছু সংস্থার রিপোর্টে প্রকাশিত দামের বিবরণ আমি সংসদে পড়ে শুনাতে চাই।

যখন মূল্য অনেক বেশি হয়েছিল তখন এটি ঘটেছিল কিন্তু এখন মূল্য নেমে গিয়েছে।

স্থানের নাম              মূল্য (প্রতিসের)

নারায়ণগঞ্জ              ২ রুপি

মুন্সিগঞ্জ                             ৪ হতে ৬ রুপি

মানিকগঞ্জ                           ৩ হতে ৪ রুপি

কক্সবাজার               ৬ হতে ৮ রুপি

রাঙামাটি                           ৪ হতে ৫ রুপি

নোয়াখালী                            ২ রুপি

ফেনী                                ৩ হতে ৫ রুপি

ত্রিপুরা                   ৩ হতে ৫ রুপি

চাঁদপুর                              ৩ হতে ৪ রুপি

ব্রাহ্মণবাড়িয়া            ২ হতে ৮ রুপি

ময়মনসিংহ সদর                     নিয়ন্ত্রিত হারে

নেত্রকোনা                ৪ হতে ৫ রুপি

জামালপুর                            ২ হতে ৪ অথবা ৫ রুপি

টাঙ্গাইল                              ২ হতে ৪ রুপি

ঈশ্বরগঞ্জ                             ২ হতে ৮ রুপি

সুনামগঞ্জ                            রিপোর্ট নেই

হবিগঞ্জ                              ২ হতে ৩ রুপি

বরিশাল                             রিপোর্ট নেই

পিরোজপুর               ৩ রুপি

পটুয়াখালী                           ২ হতে ৫ রুপি

ফরিদপুর                            ১-৪ হতে ২-৮ রুপি

মাদারীপুর                           ৬ রুপি

গোপালগঞ্জ               রিপোর্ট নেই

গোয়ালন্দ                            ২ রুপি

কুষ্টিয়া                              ৪ হতে ২ রুপি

চুয়াডাঙ্গা                            ১২ হতে ১ রুপি

মেহেরপুর                রিপোর্ট নেই

যশোর                               ১২রুপি

মাগুড়া                              ৬রুপি

ঝিনাইদহ                            ১-৪রুপি

খুলনা                               ১২ হতে ১ রুপি

সাতক্ষীরা                            ১০ রুপি

বাগেরহাট                           রিপোর্ট নেই

রাজশাহী                             ১রুপি

আমি বগুড়া  হতে কোনো রিপোর্ট পাইনি। রাজশাহীতে১ রুপি। নওগাঁ-১২ আনা। নাটোর-১২ আনাহতে ১রুপি। চাঁপাইনবাবগঞ্জ ৪ আনাহতে ৭ আনা। দিনাজপুর- ৬ আনাহতে ১ রুপি।  রংপুর-১৪ আনা। নীলফামারী-৭ আনাহতে ৮ আনা। গাইবান্ধা-৮ আনাহতে ২ রুপি। কুড়িগ্রাম- ১ রুপি, পাবনা-৪ আনাহতে২রুপি। সিরাজগঞ্জ-২ হতে ৮ রুপি। বগুড়া-৮ আনাহতে ১ রুপি। আমি উপবিভাগীয় কর্মকর্তা এবং মুসলিম লীগের সেক্রেটারিদের তাদের এলাকায় লবনের সর্বোচ্চ মূল্য সম্পর্কে আমাকে জানানোর জন্য অনুরোধ করেছি। তারা আমাকে বলেছে যে এখন বর্তমান পরিস্থিতিতে মূল্য নিয়ন্ত্রণে আছে এবং প্রত্যেক শহরে নিয়ন্ত্রণ জারি করা হয়েছে এবং প্রত্যন্ত এলাকায়ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা জারি করা হবে। সুপারিশ করা হয়েছে যে, করাচী থেকে সরবরাহ করা লবণ বিতরণের জন্য প্রাদেশিক সরকার দায়বদ্ধ ছিল। আমরা উক্ত দায়িত্ব এড়িয়ে চলিনি। সরবরাহ চাহিদার তুলনায় অনেক কম ছিল এবং তাই সেখানে অল্প লবণই লভ্য ছিল। জানুয়ারি হতে সেপ্টেম্বর, এই মাসগুলোতে আমরা কেবল মানুষের ভোগ প্রতি নূন্যতম ৪৫ লক্ষ মণের চাহিদার বিপরীতে ২৫ লক্ষ ৭৮ হাজার মণ গ্রহণ করেছি। অনুর্বর সরবরাহ ব্যবস্থায় সবার জন্য লবণ লভ্য করা সম্ভব ছিল না। পুনরায় সরবরাহ বৃদ্ধি এবং রিজার্ভ যোগানের উদ্দেশ্যে ভারত হতে প্রদেয় ৪ লক্ষ মণ পর্যন্ত লবণ পাবার জন্য আমরা কলকাতায়চুক্তিপত্রপাঠিয়েছি। দুর্ভাগ্যবশত, যাইহোক, ঐ রাষ্ট্র হতে লবণ আমদানি লাইসেন্সাধীন রয়েছে এবং তা বিলম্ব ঘটাচ্ছে। আমরা বিদেশী রাষ্ট্র হতে আরো ১৫ লক্ষ মণ লবণ আমদানির পরিকল্পনা করছি, আমাদের নিজস্ব অর্থায়নে, কেন্দ্রীয় সরকারের আমদানির সংযোজনে এবং উক্ত উদ্দেশ্যে আমরা কেন্দ্রীয় সরকারের সাথে যোগাযোগ রাখছি।

জনাব মীর আহমেদ আলী: জনাব চেয়ারম্যান, স্যার, এত অল্প সময়ের মধ্যে ১৫ই অক্টোবর তারিখে কায়েদে মিল্লাতের শাহাদাতের পর আমাদের উপর দিয়ে যে ঝড় বয়ে গেল সেটা সবাই জানেন। সেটা গোপনীয় কথা নয়। পৃথিবীর সৃষ্টি থেকে আজ পর্যন্ত লবণের এই রকম দাম হয় নাই। গ্রামে গরীবদের দূর্দ্দশার সীমা নাই।তাদের বুক ভেঙ্গে গেছে। তাদের কান্না যে কেউ শোনে না সে কথা বলাই বাহুল্য। আগুনে ঝাপ দিলে যে পরিমাণ না জ্বলে দুঃখীর আর্তনিনাদ তার চেয়ে বেশি জ্বলে। ১৬ টাকা সের লবণ বিক্রয় হল তাতে গরীবের কোটি কোটি টাকা সর্বনাশ হয়ে গেল।আমি বলতে চাই যে, ঐ সময় আমার প্রধানমন্ত্রী সুযোগ্য নুরুল আমীন সাহেব করাচীতে চলে গেলেন। তিনি ৭/৮ লক্ষ মণ জোগাড় করে এসেছেন। সে জন্য তাঁকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। কিন্তু তাঁকে বলতে হবে যে কেন এই লবণ সঙ্কট হল। এই মন্ত্রণালয় গরীবের মন্ত্রণালয়, এটা বড় লোকের মন্ত্রণালয় নয়। গরীবকে কেন ১৬ টাকা সেরে লবণ কিনতে হল? কেন সময়মত লবণ আমদানি করা হল না।

কায়েদে মিল্লাতের শাহাদাতের পর আমাদের উপর দিয়ে যে ঝড় বয়ে গেল সেটা সবাই জানেন। সেটা গোপনীয় কথা নয়। পৃথিবীর সৃষ্টি থেকে আজ পর্যন্ত লবণের দাম এই রকম হয় নাই। গ্রামে গরীবদের দূৰ্দ্দশার সীমা নাই। তাদের বুক ভেঙ্গে গেছে। তাদের কান্না যে কেউ শোনে না সে কথা বলাই বাহুল্য। আগুনে ঝাঁপ দিলে যে পরিমাণ না জলে দুঃখীর আর্তনিনাদ তার চেয়ে বেশী জুলে। ১৬ টাকা সের লবণ বিক্রয় হ’ল তাতে গরীবের কোটি কোটি টাকা সর্বনাশ হয়ে গেল। আমি বলতে চাই যে, ঐ সময় আমার Premier সুযোগ্য Nurul Amin সাহেব করাচীতে চলে গেলেন। তিনি ৭/৮ লক্ষ মণ লবণের যোগাড় করে এসেছেন। সে জন্য তাঁকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। কিন্তু তাঁকে বলতে হবে যে কেন এই লবণ সঙ্কট হ’ল। এই Ministry গরীবের ministry, এটা বড় লোকের ministry নয়। গরীবকে কেন ১৬ টাকা সেরে লবণ কিনতে হ’ল? কেন সময়মত লবণ আমদানী করা হ’ল না। লবণ ত আমাদের বিদেশ থেকে আনতে হয় না। নিজ দেশের লবণ কেন সময় মত আনা হ’ল না। যখন লবণ কমে আসছিল তখন Civil Supply Minister সাহেব কোথায় ছিলেন? করাচীতে এই ব্যাপার সম্বন্ধে বহয়রং হওয়া দরকার। বাঙ্গালী লবণ অভাবে মরে নাই তবে কষ্ট হয়েছে যথেষ্ট। রসুলুল্লাহকে আল্লাহ বলেছেনঃ “হে মোহাম্মদ, পাল্লা ঠিক রাখ।” নেকি বদি পাল্লায় ওজন হবে। লবণের সের ১৬ টাকা হ’ল। আমার প্রধান মন্ত্রী পাগল হয়ে চলে গেলেন করাচীতে। আমি বলি আমার দেশে প্রচুর লবণ আছে। Search করুন। লবণ বের হবে। পুলিশ লাগিয়ে দিন। আমি প্রধান মন্ত্রী ও Civil Supply Minister সাহেবকে বলব যে লবণ Control করলে চলবে না। যেখানে control সেখানে অভাব। আমার কথা হচ্ছে যে, আপনারা ঈমান ঠিক রেখে প্রাণপণ চেষ্টা করুন। আপনারা চাষীর মন্ত্রী, গরীবের মন্ত্রী। আপনারা প্রাণপণ চেষ্টা করুন। পাকিস্তানের প্রধান মন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দিন সাহেবকে force করুন। আমি চাই যারা এই সমস্ত neglect করেছে তাদের সরিয়ে দিন Department থেকে। তাদের থাকবার দরকার নাই। তাদের জন্য আপনার বদনাম হয়। Sif Eiff Civil Supply Minister (TxI SIGRF Sf F# punishment f(ICEF GF STS (Trift অফিসারদের ছেড়ে দেওয়া হ’ল? কেন ৫০ লক্ষ মণের জায়গায় ৫ লক্ষ মণ লবণ আসল? যখন লিয়াকত আলী খানসাহেবের মৃত্যু হ’ল তখন লবণের মূল্য ১৬ টাকা সের হল। সত্যিকারের বিপদ পাকিস্তানে হচ্ছে। ভয় করবেন না। আপনি ভয় করবেন না। এ বিপদ কেটে যাবে। লবণের অভাব দূর করুন। tax বাদ দিন। যাতে লোকে কম মূল্যে লবণ পায় সেই চেষ্টা করুন। এই আমার নিবেদন। Mr. Benode Chandra Chakraborty : Mr. Chairman, Sir, WTTT; Toso off of সম্পর্কে যে বিবৃতি দিয়েছেন তা শুনে বাস্তবিকই আমার মনে হ’ল যেন তিনি ব্যর্থতার এক করুণ কাহিনী বর্ণনা করছেন। তিনি লবণের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে কারণ বর্ণনা করতে গিয়ে বলেছেন যে, Central government-এর অব্যবস্থার দরুন এই সংকট উপস্থিত হয়েছে। তাঁর এই কৈফিয়ৎ শুনে দেশের লোক সুখী হতে পারবে না। এই দেশের কর্তৃত্বভার যাঁদের উপর ন্যস্ত রয়েছে, তাঁদের দায়িত্বও কম নয়। এই বিরাট পূর্ববঙ্গের অধিবাসীদের সুখ, দুঃখ অভাব অভিযোগ সমস্ত কিছু দেখাশুনা দায়িত্বভার যাঁরা গ্রহণ করেছেন, আজ তাঁদের এই করুন কাহিনী শুনে জনসাধারণ সন্তুষ্ট হতে পারবে না। লবণ সঙ্কট সম্ভাবনা সম্বন্ধে আমরা পূবেৰ্ব যখন সরবরাহ সচিবকে বলেছিলাম তখন তিনি warning অগ্রাহ্য করে বলেছিলেন যে লবণের সরবরাহ ব্যবস্থা তাঁরা যেভাবে টিক করলেন তাহা না করলে লবণ সঙ্কট দূর হবে না। আজ Central Government-কে দায়ী করলেও আমি বলতে বাধ্য যে Central এবং Provincial Government-এর সঙ্গে যোগাযোগ রাখবার 7fīg. Provincial Government-azīĒ ĒoĦI GTSFIT EIfī zīFrī arī Provincial Government EET দায়িত্ব পালনের অক্ষম হয়েছে। এই দারুণ লবণ সঙ্কটের দিনেও আমরা সরবরাহ সচিবের কোন ঝঃধঃবসবহঃ ইতিপূবেৰ্ব পাই নাই- কাজেই বলতে হয় যে তিনি তার দায়িত্ব এ যাবৎ এড়িয়ে গিয়েছেন। সমস্ত দোষ Central Government-এর উপর চাপান সত্ত্বেও স্বভাবত এই কথাই মনে হয় যে Provincial Government-ও তার দায়িত্ব পালন করতে পারে নাই। পূর্ব বঙ্গে প্রতি বৎসর কত লবণের প্রয়োজন তা সরবরাহ সচিবের নিশ্চয়ই জানা আছে। আমরা দেখছি অনবরত এটা না একটা সমস্যার সম্মুখীন হয়ে আছি। কোন সময় চাউলের অভাব, কোন সময় চিনির অভাব, আবার কোন সময় তেলের অভাব একটা না একটা অভাব লেগেই আছে। আমাদের অভাবের জন্য দায়ী কে? অনেক লোভী ব্যবসায়ী এই লবণের অভাবের সময় উচ্চ মূল্যে বিক্রি করে অনেক অর্থলাভ করেছে। গভর্ণমেন্ট তাদের নিবৃত্ত করতে কোন চেষ্টা করেন নাই। গভর্ণমেন্টের হাতে Public Safety Ordinance রয়েছে, যা তাঁরা সমাজবিরোধীদের বিরুদ্ধে প্রয়োগ করতে পারেন। তাছাড়া গভর্ণমেন্টের হাতে আরও অনেক ক্ষমতা রয়েছে যার দ্বারা ইচ্ছা করলেই এইসব অতি লোভীদের শাস্তির ব্যবস্থা করা যেতে পারে। কিন্তু তা তাঁরা করেন নাই লবণ আমদানীর কথা অনেকদিন হইতে শুনছি কিন্তু লবণ আজও এসে পৌছায়নি। আমরা বুঝতে পারছি না লবণের দাম আরও বাড়বে কিনা। দেশে রীতিমতো প্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী সরবরাহ না করতে পারলে যে উদ্দেশ্যে Civil Supply Department সৃষ্টি করা হয়েছে তা ব্যর্থ হয়েছে। আমার মনে হয়

আমার মনে হয় বেসামরিক সরবরাহ বিভাগের কর্মচারীদের দুর্নীতিমুক্ত করতে না পারলে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম কমবে না এবং অভাবও কখনও মিটবে না। আমরা অনেক সময় দেখি, যে সব শহরে চিনির রেশনিং ব্যবস্থা রয়েছে সেই সব শহরেও সময় সময় চিনির অভাব হয়, এমনকি ক্রমান্বয়ে ২/৩ সপ্তাহ চিনি পাওয়া যায়না। শহরেই যদি এই অবস্থা হয় তবে গ্রামাঞ্চলের কথা সহজেই বুঝতে পারেন। যে জিনিস বেসামরিক সরবরাহের আওতায় নেওয়া হয় সেই জিনিসেরই অভাব হয়, এর অর্থ আমরা বুঝতে পারিনা। বেসামরিক সরবরাহ বিভাগের দ্বারা লবণ সরবরাহের ব্যবস্থা করলে লবণের অভাব শীঘ্র মিটবে না। বরং যে পরিমাণ লবণ পূর্ববঙ্গের জন্য প্রয়োজন তা পূর্বাহ্ণে আমদানি করে বাজারে ছেড়ে দিলে ফল ভালো হবে। এতে জনসাধারণের হয়রানিও কমবে এবং সরকারেরও কোন অসুবিধা ভোগ করতে হবে না। আজ মাসাধিককাল যাবত লবণ সঙ্কটের দরুন দেশের সকল শ্রেণীর লোককেই কষ্ট ভোগ করতে হচ্ছে। আজ যদিও দেশে জনসাধারণ নিষ্ক্রিয় হয়ে বসে আছে তাহলেও এমন একদিন আসবে যখন তারা চুপ করে থাকবে না। এখন হয়তো জনসাধারণের সংঘবদ্ধ হবার শক্তি নাই; কিন্তু এমন দিন চিরকাল থাকবে না। দেশের এই সঙ্কটকালে বর্তমান সরকার কোন কার্যকরী ব্যবস্থা অবলম্বন করতে পারে নাই। তাঁরা যে যুক্তি দিয়েছেন তাতে জনসাধারণ তুষ্ট হতে পারে নাই। সরকার জনসাধারণকে এমনভাবেই চেপে রাখতে চান যাতে কোন প্রকার অসুবিধাতেওতার মাথা যেন না তুলতে পারে। আজ লবণ সঙ্কটের দিনে যাদের হাতে কিছু টাকা আছে তারা, কালোবাজারি করে বহু টাকা রোজগার করছে। এখনও শুনছি অনেক স্থানপ মুসলিম লীগের কোন কোন সভাপতি এবং সহ-সভাপতিরাও কালোবাজারি করছে।

জনাব চেয়ারম্যান (আলহাজ্ব জনাব শরীফুদ্দীন আহমেদ): জনাব চক্রবর্তী, আপনার বক্তব্যের সময় আপনি কোন রাজনৈতিক দলকে উল্লেখ করতে পারবেন না। আপনার মুসলিম লীগ সম্পর্কে কোন কিছু বলার দরকার নাই।

জনাব বিনোদ চন্দ্র চক্রবর্তী : যা সত্য কথা, আমি তা বলেছি। আপনার চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেবার জন্যই আমি এই কথা বললাম। গলদ যা আছে তা আপনারা শোধরাবার ব্যবস্থা করুন। আমি মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠানের দোষ দেই নাই। আমি বলেছি এমন অনেক লোক আছেন যারা এই লবণ সঙ্কটের সুযোগ নিয়ে বহু টাকা লাভ করেছেন। আমি জানি লবণ সঙ্কট চিরদিন থাকবে না। কিন্তু যদি জনসাধারণ নিষ্ক্রিয় হয়েই বসে থাকে তাহলে লবণ সঙ্কট পার হয়ে গেলে নতুন এক সঙ্কট এসে উপস্থিত হবে। প্রাদেশিক সরকার যদি দেশের লোকের খাদ্য এবং প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সরবরাহ করতে না পারেন তাহলে তাঁদের এ দায়িত্বভার ত্যাগ করে যারা সক্ষম তাদের হাতে ছেড়ে দেওয়া উচিত। এমনভাবে আর অধিককাল দেশের নিরীহ জনসাধারণকে কষ্ট দেবার কোম অধিকার তাঁদের নাই।

জনাব চেয়ারম্যান (আলহাজ্ব জনাব শরীফুদ্দীন আহমেদ): জনাব লাহিড়ী, আপনি কি ৫ মিনিটের মধ্যে শেষ করতে সমর্থন হবেন?

জনাব প্রভাস চন্দ্র লাহিড়ী: না,স্যার।

 জনাব নুরুল আমীন: যদি জনাব লাহিড়ী ৫ মিনিটের মধ্যে তার বক্তব্য শেষ করতে সম্পন্ন না হোন, তবে তিনি হয়ত ১০ মিনিটের মধ্য এটি শেষ করবেন। আমরা আর কিছু মিনিট অপেক্ষা করতে পারি।

জনাব প্রভাস চন্দ্র লাহিড়ী: জনাব চেয়ারম্যান সাহেব, সরবরাহ সচিব লবণ সম্পর্কে যে বিবৃতি দিলেন আমরা তা শুনলাম। ব্যাপার দেখা যায় যে রাষ্ট্রের দুই প্রান্ত থেকে দুইজন দায়িত্বপূর্ণ ব্যক্তি দুই রকম কথা বলছেন। আমাদের সরবরাহ সচিব বলছেন যে, আমাদের যেটুকু লবণের প্রয়োজন কেন্দ্রীয়য় সরকার সে পরিমাণ লবণ সরবরাহ করেনি। লবণ সরবরাহে পূর্ণ দায়িত্ব কেন্দ্রীয় সরকার হাতে নিয়েছেন অথচ সরবরাহ করতে পারেননি। ৩১ শে অক্টোবর তারিখের পাকিস্তান অবজারভারে আছ। জনাব ফজলুর রহমান, পাকিস্তানের বাণিজ্য মন্ত্রী পাকিস্তান অবজারভারকে পূর্ব বাংলায় লবণের স্বল্পতা সম্পর্কে বলেছেনসেখানে দাম বেড়ে গেছে। তিনি আরও বলেন কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে যথেষ্ট পরিমান লবণ আছে প্রাদেশিক সরকারকে বিতরণের উদ্দেশ্যে দেবার জন্য। এখন সঠিক ও সুনিয়ন্ত্রিত ভাবে লবণ বিতরণের ব্যবস্থা করা প্রাদেশিক সরকারের দায়িত্ব।”

 

জনাব ফজলুর রহমান Press Reporter-দের কাছে এই বিবৃতি দিয়েছেন। যদি এই বিবৃতি সত্য হয় তাহলে সম্পূর্ণ দায়িত্ব পূর্ববঙ্গ সরকারের। তিনি বলেছেন যে যথেষ্ট পরিমাণ লবণ সরবরাহ করা হয়েছে, পূর্ববঙ্গ সরকার Fair distribution করতে পারেননি, তাঁদের গাফিলতির জন্য দাম বেড়েছে। আর একটা কথা তিনি বলেছেন লবণের দাম exaggerate করা হয়েছে। একথা যদি সত্য হল তাহলে ফজলুর রহমান সাহেব এখানে উপস্থিত থাকলে তাঁকে জিজ্ঞাসা করতাম যে দাম কি পরিমাণ বাড়লে সেটাকে exaggerate বলা যেতে পারে। সরবরাহ সচিবের বিবৃতিতে সর্বোচ্চ মূল্য রয়েছে ৬ টাকা সের। যে লবণ দুই আনা ১০ পাই হতে চার আনা সের দরে বিক্রি হত তার দাম যদি ৬ টাকা হয় তাহলে কত গুণ হয়েছে? সরবরাহ সচিব তাঁর বিবৃতিতে রাজশাহীতে লবণের সের ১ টাকা বলেছেন, আর নবাবগঞ্জে লবণের সের আট আনা বলেছেন। অনুসন্ধান করে দেখুন যে Border এলাকায় দাম কত, কারণ সেইসব জায়গায় লবণ অন্য রাষ্ট্র থেকে smuggled হয়ে আসে। রাজশাহী বা নবাবগঞ্জে দাম কম বলে মন্ত্রী মহাশয় আনন্দ প্রকাশ করেছেন: রাজশাহী বা নবাবগঞ্জে চোরাকারবারীরা smuggle করে এনে লবণ বিক্রি করছে, তাই দাম সস্তা। এতে যদি আমরা আনন্দ প্রকাশ করি তাহলে রাকারবারীদের সমর্থন করা হবে। অন্য জায়গা থেকে চোরাকারবার করে লবণ আনছে তারা অসাধু, তাদের বলার আর মুখ থাকবেনা। সংবাদপত্রে দেখা যায় নানা জায়গায় লবণের দর ভীষণভাবে বেড়ে গিয়েছে। বেশী দূর নয় এই নরায়ণগঞ্জে লবণ ১৫/১৬ টাকা সের। শুনলাম নারায়ণগঞ্জ হাসপাতালে ২জন লোক লবণ খেয়ে মারা গিয়েছে- প্রকাশ হয়েছে লবণের ভিতর Bone dust মিশানোর ফলেই তাদের মৃত্যু হয়েছে। (Voice: কোথায়?) এ ঘটনা হয়েছে বেশী দূর নয় এই নারায়ণগঞ্জ হাসপাতালে। গৰ্ভৰ্ণমেন্ট একটু খোঁজ করলেই জানতে পারবেন। আজ চট্টগ্রাম থেকে খবর এসেছে যে সেখানে ভেজাল লবণ খেয়ে লোকে পেটের অসুখে ভুগছে। সরবরাহ সচিবের দেশ বরিশালের রিপোট সেখানে লবণের সঙ্গে চিনি মিশান হচ্ছে। এই উপলক্ষে আমার একটি গল্প মনে পড়ে গেল। এক জায়গায় দুর্ভিক্ষ হয়েছিল। সেখানে এক ঠাকুর মহাশয় থাকতো, খেতে পেতো না। তার এই অবস্থা দেখে তার এক শিষ্য তাকে বললো “ঠাকুর মহাশয়, আপনি আমাদের দেশে চলুন সেখানে জিনিষপত্র সস্তা।” এই কথায় ঠাকুর মহাশয় মহাশয় শিষ্যকে জিজ্ঞাসা করলো এসব জিনিষের দাম কত। শিষ্য উত্তর দিল যে এখানে সব জিনিসের দাম এক আনা। চাল মুড়ি ও মুড়কি সব জিনিসের এক আনা দাম। ঠাকুর মহাশয় তো এই কথা শুনে তল্পতল্পা গুটিয়ে রওনা হলেন। শিষ্য জিজ্ঞাসা করলো যাচ্ছেন কেন? ঠাকুর মহাশয় বলল যে যেখানে মুড়ি মুড়কির দাম একদর সেখানে থাকবো না। সেই অবস্থা দাঁড়িয়েছে আমাদের এখানে-লবণে ভেজাল চিনি আর চিনিতে ভেজাল লবণ এবং গভমেন্টকে গালাগালি করে লাভ নেই। আমার এই সম্পর্কে প্রস্তাব হচ্ছে যে ২টি scheme নিতে হবে। of short term SIA of long-term zoo short-term of Tofo, “so long-term scheme K.I short-term scheme fossa zwTR 5R 3T, immediately of 5 TKw zw, ERTE ERE directly আনা হোক এবং পশ্চিম বঙ্গে লবণ এখানে আনতে গেলে করাচী হয়ে জাহাজ তারপর এখানে আসবে, এ নীতি বন্ধ করুন। সরাসরি লবণ আমদানীর ব্যবস্থা করুন। আর স্বরাষ্ট্র সচিবের হাতে পুলিশ আছে। কার ঘরে লবণ মজুত আছে তা তাঁর জানা উচিত। পুলিশ দিয়ে মজুত লবণ বের করে জনসাধারণের মধ্যে যাতে বিলি হয় তার বন্দোবস্ত করা উচিত। long-term scheme সম্বন্ধে বলবো যে, এই পূর্ববঙ্গে লবণ তৈরীর ব্যবস্থা করুন। এ সম্পর্কে আমি ব্যক্তিগতভাবে বারবার বাজেট বক্তৃতায় বলে আসছি। Proceedings তোলা ছাপা হয় না। (হচ্ছে, ছাপা হচ্ছে) কয় বৎসরের হয়েছে? বাজেট অধিবেশনে আমরা যে প্রস্তাব করি তা তো আপনারা আর দেখেন না। আমরা যে সব প্রস্তাব দিয়েছি সেই অনুসারে লবণ তৈরীর ব্যবস্থা করুন। নোয়াখালীতে বা সমুদ্র তীরে অনেক লবণ তৈরী হত। কায়েদে মিল্লাত লিয়াকত আলী খান যখন ভারতের অর্থমন্ত্রী হয়েছিলেন তখন তিনি লবনের উপর tax তুলে দিয়েছিলেন; জানি না কে আবার tax বসান হয়েছে। Income- tax ইত্যাদির জন্য নোয়াখালী, চট্টগ্রাম ইত্যাদি জায়গায় যে, লবণ তৈরী হ’ত তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। সেগুলো receive করে যাতে পর্যাপ্ত পরিমাণ লবণ তৈরী হতে পারে বা সরবরাহ হতে পারে তার ব্যবস্থা করুন এবং সে জন্য long-term scheme করুন। সৰ্ব্বোপরি কেন্দ্রীয় সরকারের control ভেঙ্গে দিন। আপনারা শক্ত হন। আপনারা পূর্ববঙ্গের শক্তিতে শক্তিমান হয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে বলুন যে আমাদের প্রয়োজনীয় লবণ তৈরীর জন্য তোমাদের লবণের উপর ট্যাক্স রহিত করতে হবে এবং লবণ decontrol করতে হবে। লবণের পূর্ণ দায়িত্ব আমাদের হাতে ছেড়ে দিতে হবে। আজ লবণের সমস্যা দেখা দিয়েছে; এরপর সরিষার তেল, কেরোসিন তেল এবং নারিকেল তেলের সমস্যা এসে পড়লো বলে। সরিষা তেলের দাম দিন দিন বাড়ছে। পরিষদের অধিবেশন আর থাকবে না। তখন আপনারা একভাবে না একভাবে চালিয়ে যাবেন। প্রকাশ্যভাবে বাইরে আমাদের কিছু বলবার উপায় নাই; Special Power Ordinance ঘাড়ের উপর ঝুলছে। আপনারা হয়ত নিৰ্ব্বিবাদে চালিয়ে যাবেন, কিন্তু তার বিষময় ফলের চিন্তা করবেন।

Mr. Chairman (Al-haj Janab sharfuddin Ahmed): The house stands adjourned till 3 p.m. tomorrow. ADJOURNMENT The Assembly was then adjourned at 8-10 p.m. on Saturday, the 3rd November, 1951.

 

 

নাজিমউদিনের ভাষা সংক্রান্ত বক্তৃতা দৈনিক আজাদ ২৮শে জানুয়ারী, ১৯৫২ পল্টন ময়দানের জনসভায় প্রধানমন্ত্রীর আহবান। প্রদেশের সর্বাঙ্গীণ উন্নয়নে সরকারের ভূমিকা বর্ণনা (ষ্টাফ রিপোর্টার) “আজও সীমান্তপারের হুমকির অবসান হয় নাই। পাকিস্তানকে নিরাপদ ও শক্তিশালী করিয়া গড়িয়া তুলিতে হইলে সর্বপ্রকার ভেদাভেদ ভুলিয়া ঐক্যবদ্ধভাবে পাকিস্তানের সেবায় আত্মনিয়োগ করিতে হইবে।” গতকল্য অপরাহ্নে পুরানা পল্টন ময়দানে এক বিরাট জনসভায় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী খওয়াজা নাজিমুদ্দিন দেড় ঘন্টাব্যাপী বক্তৃতায় জনসাধারণের প্রতি উপরোক্ত আহবান জানান। খওয়াজা নাজিমউদ্দিন মরহুম কায়েদে আযমের বাণী উদ্ধৃত করিয়া ঐক্য, বিশ্বাস ও শৃংখলার মধ্য দিয়ে সকলকে জাতি ও দেশ গঠনের আহবান জানান। প্রাদেশিক প্রধানমন্ত্রী জনাব নূরুল আমীন এই সভায় সভাপতিত্ব করেন। প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতা বেতারে প্রচার করা হয়। প্রধানমন্ত্রী জনাব খওয়াজা নাজিমউদ্দিন তাঁহার বক্তৃতায় বলেন, কায়েদে মিল্লাত মরহুম লিয়াকত আলীর মৃত্যুর পর আমার স্কন্ধে যে গুরুদায়িত্ব আরোপিত হইয়াছে সে দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করিতে হইলে পাকিস্তানের জনসাধারণের সহযোগিতাই আমার একমাত্র কাম্য। যাহারা পূর্ব পাকিস্তানকে সুদৃঢ় করিতে আমাকে সাহায্য করিয়াছেন,যাঁহারা আমার সকল সময়ের সাথী হিসেবে আমার সহিত কাজ করিয়াছেন এবং যাঁহাদের উপদেশে আমি উপকৃত হইয়াছি আজও আমি তাহদের সর্বপ্রকার সাহায্য ও সহযোগিতা কামনা করি। আমার সহিত তাঁহারাও যে জাতির ও দেশের খেদমতের জন্য সবসময় প্রস্তুত আছেন, এ বিশ্বাস আমার আছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রত্যেক পাকিস্তানী যদি স্ব স্ব কর্মক্ষেত্রে থাকিয়া দেশ ও জাতির খেদমতে আত্মনিয়োগ করেন, আমার গুরুদায়িত্বভার অনেকখানি লাঘব হইবে। পূর্ব পাকিস্তানে এ যাবৎ যে সমস্ত উন্নতি সাধিত হইয়াছে তাহার বিস্তারিত আলোচনা করিবার পূর্বে জনাব মোসলেম লীগের নির্বাচনী ওয়াদা পালন করিয়াছেন। পূর্ববঙ্গ সরকারকে এ জন্য আমি মোবারকবাদ জানাইতেছি।” প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, “এ যাবৎ পূর্ব পাকিস্তানের কোনই উন্নতি সাধিত হয় নাই বলিয়া কেহ কেহ মত প্রকাশ করিয়া থাকেন, এমনকি কোন কোন সংবাদপত্রেও এইরূপ সমালোচনা হইয়া থাকে। কিন্তু নিরপেক্ষভাবে বিচার করিয়া দেখিলে পূর্ব পাকিস্তানের উন্নতির কথা কেহই অস্বীকার করিতে পরিবেনা। এমনকি সফরে আগত বিদেশী প্রতিনিধিরাও পূর্ববঙ্গের সর্বাঙ্গীণ উন্নতির প্রশংসা করিয়াছেন। প্রদেশের উন্নতির জন্য সরকারী সাহায্য অতঃপর প্রধানমন্ত্রী বলেন যে এই প্রদেশের উন্নতিকল্পে কেন্দ্রীয় সরকার বর্তমান বৎসরে বহু অর্থ সাহায্য করিয়াছেন। পূর্ববংগের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার কি পরিমাণ অর্থ সাহায্য করিয়াছেন প্রধানমন্ত্রী তাহার সংক্ষিপ্ত আলোচনা করেন।

 

প্রাদেশিকতার বিরুদ্ধে

প্রাদেশিকতার বিরুদ্ধে জনাব খওয়াজা নাজিমুদ্দিন বলেন, পাকিস্তানকে আমরা এছলামী রাষ্ট্ররূপে গঠন করিতে যাইতেছি এবং যে এছলামে কোনরূপ কুসংস্কার বা ভেদাভেদ নাই সেই রাষ্ট্রে কেমন করিয়া প্রাদেশিকতার বীজ বপন করা চলিতে পারে? তিনি বলেন যে, মরহুম কায়েদে আযম বলিয়াছেন যে প্রাদেশিকতাকে যে বা যাহারা প্রশ্রয় দেয় তাহারা পাকিস্তানের দুশমন। পাকিস্তানের ভাষা সম্পর্কে জনাব খওয়াজা নাজিমুদ্দীন মরহুম কায়েদে আযমের বক্তৃতা উদ্ধৃত করিয়া বলেন যে, প্রদেশের ভাষা কি হইবে তাহা প্রাদেশবাসীই স্থির করিবে কিন্তু পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হইবে উর্দু। প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, একাধিক রাষ্ট্রভাষা থাকিলে কোন রাষ্ট্রভাষা শক্তিশালী হইতে পারে না। সভার প্রারম্ভে প্রাদেশিক প্রধানমন্ত্রী জনাব নূরুল আমীন পূর্ব পাকিস্তানের সাড়ে চার কোটি নর-নারীর পক্ষ হইতে প্রধানমন্ত্রী জনাব খওয়াজা নাজিমুউদ্দিনকে সংবর্ধিত করেন।

——-