You dont have javascript enabled! Please enable it!

মুক্তিযুদ্ধে অ্যাকশন এইড

অ্যাকশন এইড বাংলাদেশের পক্ষে জনমত গঠনে এগিয়ে এসেছিল। শরণার্থীদের সাহায্য করেছিল। আর এইসব প্রচারের কারণেই প্যারিসে পাকিস্তানী এইড কনসোর্টিয়াম পাকিস্তানকে কোনো সাহায্য দেয়নি। | জুন মাসের ৩০ তারিখে অ্যাকশন এইড বিখ্যাত দৈনিক দি টাইমসে বিশাল এক বিজ্ঞাপন প্রকাশ করে। বিজ্ঞাপনটি ছিল এরকম ২০০-এর বেশি সংসদ সদস্য হাউস অব কমন্সে এই প্রস্তাবাবলির পক্ষে স্বাক্ষর করেছেন। এদের মধ্যে আছেন ১১জন প্রিভি কাউন্সিলরস এবং ৩০ জন প্রাক্তন মন্ত্রী।পূর্ববঙ্গে গণহত্যা এবং বাংলাদেশের স্বীকৃতি এই পরিষদ বিশ্বাস করে পূর্ববঙ্গে পাকিস্তান সেনাবাহিনী ব্যাপকভাবে সিভিলিয়ানদের হত্যা করছে এবং অত্যাচার চালাচ্ছে। এই কর্মকাণ্ড গণহত্যা বিষয়ক জাতিসংঘের সনদ বিরোধী যেখানে পাকিস্তানও স্বাক্ষর করেছে। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে জন মানুষ যে গণতান্ত্রিক ইচ্ছা প্রকাশ করেছে তা প্রত্যাখান করেছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে পূর্ববঙ্গ শাসনের কোন অধিকার নেই পাকিস্তানের সেনা সরকারের।পরিষদ বিশ্বাস করে যেহেতু জাতিসংঘের গণহত্যা সনদ ভঙ্গ করেছে এবং এই অবস্থা আন্তর্জাতিক শান্তির জন্য হুমকি স্বরূপ সেহেতু এ অবস্থা পর্যালোচনার জন্য জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের অধিবেশন জরুরি ভিত্তিতে ডাকা উচিত; পরিষদ আরো বিশ্বাস করে যে যতদিন জাতিসংঘের অধীনে শৃংখলা ফিরে না আসছে “ততদিন পূর্ববঙ্গের মানুষের আত্ম-অধিকারের মাধ্যম হিসেবে প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারকে স্বীকৃতি দেওয়া উচিত।”এরপর দুইশোরও বেশি সদস্যের নাম। টাইমস ছাড়া অন্য কোথাও এই দলিলটি পাওয়া যাবে না ।অ্যাকশন বাংলাদেশের (এইড শব্দটি তখন আর ব্যবহৃত হয়নি] পক্ষ থেকে জানান হয়েছিল ১ আগস্ট রোববার ২-৬ টা পর্যন্ত ট্রাফালগার স্কোয়ারে একটি সভা হবে। যারা উপযুক্ত মোশান বা প্রস্তাবের সমর্থক তাদের আমন্ত্রণ জানান হয়েছিল সভায়। এই ধরনের আরো বিজ্ঞাপন প্রকাশে অ্যাকশান মানুষের কাছে চাঁদা চেয়েছিল।অ্যাকশান বাংলাদেশের কার্যকরী কমিটির সদস্য হিসেবে তিনজনের নাম ছাপা হয়েছিল। এরা হলেন জন কনেট, ম্যারিয়েটা প্রকোপি এবং জন প্যাট্রিক ও’কনর।
ট্রেড ইউনিয়ন সংহতি১৯৭১ সালের মে মাসে, ভারতের ট্রেড ইউনিয়ন সংস্থাগুলি একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ গ্রহণ করে। পরিচিত ট্রেড ইউনিয়নগুলি মুক্তিযুদ্ধকে সাহায্য করার জন্য একটি কমিটি গঠন করে। বিভিন্ন ইউনিয়নের ১৪ জন প্রতিনিধিকে নিয়ে দিল্লিতে কমিটি গঠিত হয়। মৈত্রেয়ী বসু নির্বাচিত হন সভাপতি। এর নামকরণ করা হয় National Trade Union Committee of India for Solidarity With Bangladesh,কমিটির অন্যান্য সদস্যরা ছিলেন এস, এস, মিরাজকার, এ আই টি সি সি-র পি,রামমুর্থি, সিটুর মনোরঞ্জন রায়, এইচ এম এসের শান্তি প্যাটেল এবং মহেশ দেশাই এবং ইউ টি ইউ সির শ্রীকান্ত নায়ার। | এই কমিটি পৃথিবীর অন্যান্য দেশের ট্রেড ইউনিয়ন সমূহকে বাংলাদেশ পরিস্থিতি জানাবে। কমিটির গঠন হওয়ার পর মৈত্রেয়ী বসু জানান, ১৯ জুন তারা বাংলাদেশ দিবস পালন করবেন, সমাবেশ করবেন, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশকে যাতে স্বীকৃতি দেয়া হয় তা জানাবেন এবং পশ্চিম পাকিস্তানী। সামরিক বাহিনীর হাতে বন্দি শেখ মুজিবুর রহমানের মুক্তি দাবি করবেন। শুধু তাই নয়, তারা ভারতীয় শ্রমজীবিদের অনুরোধ জানাবেন বাংলাদেশের শ্রমজীবীদের একদিনের বেতন দান করার জন্য। মৈত্রেয়ী আরো জানান, জেনেভায় জুন মাসে শ্রমজীবীদের যে আন্তর্জাতিক সম্মেলন হবে সেখানেও তিনি বাংলাদেশ প্রসঙ্গ উত্থাপন করবেন।

সূত্র : হিন্দুস্থান স্ট্যান্ডার্ড, দিল্লি, ২৫-৫-১৯৭১।

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!