মতিয়া চৌধুরী জন্ম: ৩০ জুন, ১৯৪২
মতিয়া চৌধুরী ইডেন কলেজে অধ্যয়নরত অবস্থায় ছাত্র রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। তিনি ১৯৬১-৬২ সালে ইডেন কলেজ ভিপি নির্বাচিত হন। ১৯৬৩-৬৪ সালে ডাকসু জিএস নির্বাচিত হন। ১৯৬৫ সালে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন এর সভাপতি নির্বাচিত হন। মতিয়া চৌধুরী যখন ছাত্র ইউনিয়ন থেকে ডাকসু জিএস এবং ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি ছিলেন তখন ছাত্র ইউনিয়নই ছিল পূর্ব পাকিস্তানের সর্ব বৃহৎ ছাত্র সংগঠন। ১৯৬৬ সালে শেখ মুজিবের ৬ দফা সমর্থনে তার জোরালো ভুমিকা ছিল। ষাটের দশকের প্রগতিশীল ছাত্র আন্দোলনের শীর্ষস্থানীয় নেত্রী মতিয়া চৌধুরী, যাঁর আগুন ঝরানো বক্তৃতা স্বৈরশাসক ইয়াহিয়া খানের গদি কাঁপিয়ে দিয়েছিল। সাতষট্টি সালে সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে ‘আপত্তিকর’ বক্তৃতা দেওয়ার অপরাধে মতিয়া চৌধুরী গ্রেফতার হন। ময়মনসিংহের জেলখানায় রাজনৈতিক বন্দী হিসেবে তাঁকে আটকে রাখা হয়। মতিয়া চৌধুরী ইডেন ভিপি থাকা অবস্থায় ৬২ এর শিক্ষা আন্দোলনে ব্যাপক ভুমিকা পালন করেন। সে আন্দোলন শুরু করেছিল ঢাকা কলেজের ছাত্ররা ক্রমেই তা ছড়িয়ে পরে ইডেন কলেজ এবং ঢাকা পলিটেকনিক সহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ১৯৬৭ সালে “অগ্নিকন্যা” নামে পরিচিত মতিয়া চৌধুরী পূর্ব পাকিস্তান ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টিতে যোগ দেন এবং এর কার্যকরী কমিটির সদস্য হন। ১৯৭১ এর উত্তাল মার্চে তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রস্তুতি, প্রচারণা এবং আহতদের শুশ্রুষায় সক্রিয় অংশগ্রহণকারী ছিলেন। ১৯৭১ এর নয়মাস তিনি ত্রিপুরায় এবং আসামের শরণার্থী শিবির সমুহ পরিদর্শন করে শরণার্থীদের দুঃখ দুর্দশা লাঘবে তৎপর ছিলেন। আশির দশকে মতিয়া চৌধুরী আওয়ামী লীগে যোগদান করেন এবং তৎপরবর্তী সকল আন্দোলন সংগ্রামে জোরালো ভুমিকা পালন করেন।
Additional info:
বলা হয়েছে ৬ দফা সমর্থনে জোরালো ভুমিকা ছিল। প্রচার বা আন্দোলনে যুক্ত থাকার কথা বলা হয়নি। ৬ দফা দেয়ার কিছুদিন আগে মতিয়া তার ছাত্র সংগঠনের সভাপতি হন। তার মেয়াদ কালে ৬ দফা ঘোষিত হয়। ৬ দফার সাথে যুক্ত ছিলেন ন্যাপ এর মুখপাত্র সংবাদের খায়রুল কবির। খায়রুলের মাধ্যমে ন্যাপ ও ছাত্র ইউনিয়ন মতিয়া গ্রুপে তা বহুল প্রচার হয়। ৬ দফার আন্দোলনের (৭জুন) পরপর ডাকসুর যে সংসদ আসে সে সংসদ ৬ দফা সমর্থন করে। এ সংসদ ছিল ছাত্র ইউনিয়নের এ সংসদের ভিপি মাহফুজা নিজে ৬ দফার প্রচারে নিজে অংশ নেন। মতিয়া প্রকাশ্য ভাবে কিছু না বললেও তার প্রভাবেই তার কমিটি এবং তার কমিটির ডাকসু ও হল সংসদ নেতারা ৬ দফা সমর্থন করে। ৬ দফার বছর খানেকের মধ্যেই ন্যাপ বিভক্ত হয়। ন্যাপ মস্কোপন্থীরা এবং তাদের ছাত্র সংগঠন ছাত্র ইউনিয়ন ৬ দফার সমর্থনে থাকে।