চন্দ্রপুর-লাটুমুড়ার যুদ্ধ
চন্দ্রপুর-লাটুমুড়া যুদ্ধক্ষেত্রের অবস্থান চন্দ্রপুর-লাটুমুড়া এলাকাটি বাংলাদেশের অন্যান্য অঞ্চলের মতাে। তবে চন্দ্রপুর। এলাকাটি অপেক্ষাকৃত খােলা ও সমতল, পক্ষান্তরে লাটুমুড়া অঞ্চলটি ছােট ছােট। টিলা দ্বারা ঘেরা। এ এলাকাটি কসবা থানা সদর থেকে ৬ কিলােমিটার এবং আখাউড়া থেকে ১৫ কিলােমিটার দূরে এবং ২টি স্থানই আন্তর্জাতিক সীমারেখা থেকে মাত্র ২ হাজার গজ দূরে অবস্থিত। চন্দ্রপুর-লাটুমুড়া অঞ্চল কসবাআখাউড়া সড়ক ও রেলপথ থেকে ৩ কিলােমিটার উত্তর-পূর্বে অবস্থিত। যুদ্ধের পটভূমি পাকিস্তানিরা বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এলাকাকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে চন্দ্রপুরলাটুমুড়া দখলে রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। পরিকল্পনা মােতাবেক পাকিস্তানিদের ২৭ ব্রিগেডের অধীনস্থ ১২ ফ্রন্টিয়ার ফোর্সের এক কোম্পানি ২২ অক্টোবর থেকে চন্দ্রপুরে প্রতিরক্ষা অবস্থানে ছিল। পাকিস্তানি বাহিনীর ধারণা ছিল, সীমান্তবর্তী। এলাকা তাদের দখলে থাকলে ভারতীয় সেনারা সীমান্ত অতিক্রম করে আসতে। পারবে না। অনুরূপভাবে মুক্তিবাহিনীর জন্যও চন্দ্রপুর-লাটুমুড়া এলাকা দখল করা ছিল প্রথাগত আক্রমণে যােগ্যতার পরীক্ষাস্বরূপ। তাই এ আক্রমণ ছিল। অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যুদ্ধের সংগঠন যুদ্ধের সংগঠন ছিল নিম্নরূপ: ১. মুক্তিবাহিনী: ক, ‘এ’ ও ‘সি’ কোম্পানি। খ. ৯ম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট (৯ ইস্ট বেঙ্গল)। ভারতীয় বাহিনী: ক. ৭৩ মাউন্টেন ব্রিগেড। খ, ১৯ পাঞ্জাব রেজিমেন্ট (১৯ পাঞ্জাব)। গ. ৫৭ আর্টিলারি ব্রিগেড। শত্রু বাহিনীর সংগঠন: ক. ১২ ফ্রন্ট্রিয়ার ফোর্স (১২ এফএফ-এর ১টি কোম্পানি)। খ, ১টি ১০৫ মিলিমিটার হাউটজার গান/কামান।
যুদ্ধের পরিকল্পনা
সম্ভবত ১৭-১৮ নভেম্বর সকালে ভারপ্রাপ্ত সেক্টর অধিনায়ক মেজর সালেক এবং ৯ ও ৪র্থ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের অধিনায়ক মেজর আইনউদ্দিন মেলাগড়ে ৭৩ মাউন্টেন ব্রিগেড সদরে ব্রিগেডিয়ার তুলির সাথে বৈঠকে মিলিত হন এবং চন্দ্রপুর-লাটুমুড়া আক্রমণের পরিকল্পনা করেন। ব্রিগেডিয়ার তুলি বােঝালেন যে আখাউড়া মুক্ত করতে হলে চন্দ্রপুর-লাটুমুড়া দখল করতে হবে। তারা ২১-২২ নভেম্বর রাতে চন্দ্রপুর আক্রমণের পরিকল্পনা করেন। আক্রমণ করা হবে দক্ষিণ দিক থেকে। বামে রেললাইনের সাথে থাকবে ৯ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের ২টি কোম্পানি এবং ডানে থাকবে ১৯ পাঞ্জাবের ২টি কোম্পানি। ২ ইউনিটের সহ অধিনায়কেরা আক্রমণে থাকবেন। সমর্থনে থাকবে ডিভিশন আর্টিলারি । এ পরিকল্পনার সাথে ১টি ফায়ার সাপাের্ট পরিকল্পনাও করা হয়, যেখানে ব্রিগেডিয়ার তুলির সাথে মেজর সালেক ও মেজর আইনউদ্দিন ভিন্নমত পােষণ করেন। তারা কারণ হিসেবে দেখান যে পাকিস্তানিদের প্রতিটি অস্ত্রের অবস্থান পাকাপােক্তভাবে তৈরি করা হয়েছে, যা সহজে ধ্বংস করা যাবে না। তা ছাড়া। উঁচু স্থানে অবস্থানের কারণে তারা সহজেই আক্রমণ প্রতিহত করতে পারবে। কিন্তু ব্রিগেডিয়ার তুলি কোনাে কথা না শুনতে চাইলে শেষ পর্যন্ত এ পরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হয়। পর্যবেক্ষণ ও প্রস্তুতি ১৯, ২০ ও ২১ নভেম্বর মেজর আইনউদ্দিন ও লেফটেন্যান্ট কর্নেল কোলি পর্যবেক্ষণ করেন। দিনে ও রাতে পর্যবেক্ষণ করেও তারা অবস্থানের পূর্ণ ধারণা পেলেন না।
তদুপরি ২০ ও ২১ তারিখ রাতে ভারতীয় ডিভিশন আর্টিলারি বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে গােলাবর্ষণ শুরু করে। চন্দ্রপুরের স্থলে কিছু গােলা ব্রাহ্মণগাঁও, তিনলাখপুর, গােপীনাথপুর ইত্যাদি এলাকায় এসে পড়ে। এর ফলে কাছাকাছি থেকে পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হয় নি। অভিযানের বর্ণনা ২২ নভেম্বর ভাের ৪টায় রণঘণ্টা নির্ধারণ করা হয়। লেফটেন্যান্ট হারুন ও লেফটেন্যান্ট আজিজুল ইসলাম ৯ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের কোম্পানি ২টি পরিচালনা করেন। আদেশ প্রাপ্তি ও বিশ্রামের পর তাই আগের দিন রাতে ৯ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের ২ কোম্পানি সৈন্য অ্যাসেম্বলি এলাকায় চলে যায়। ভাের ৪টায় তারা অ্যাসল্ট লাইন অতিক্রম করে। এ সময় ভারতীয় আর্টিলারি। গােলাবর্ষণ শুরু করে। অকস্মাৎ শুরু হয় পাকিস্তানি প্রতিরক্ষা থেকে মেশিনগানের সমন্বিত গুলিবর্ষণ। এ গুলিবর্ষণ ও আর্টিলারির গােলার এয়ারবা প্রিন্টারের আঘাতে হতাহতের সংখ্যা বাড়তে লাগল।
সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট আজিজ প্রথমেই শহিদ হন। শহিদ হন ১৯ পাঞ্জাব রেজিমেন্টের ১জন শিখ মেজর। এ ছাড়া আরও অনেকে হতাহত হলে এ আক্রমণ ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। পাকিস্তানিরা প্রতিআক্রমণ করে তাদের সম্পূর্ণ এলাকা পুনর্দখল করে নেয়। বাংকারের ভেতর থাকায় তাদের তেমন কোনাে ক্ষতিই হয়নি। কিন্তু খােলা আকাশের নীচে থাকায় মুক্তিযােদ্ধারা সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আহতদের পাকিস্তানি সেনারা বেয়নেট দ্বারা খুঁচিয়ে হত্যা করে। যুদ্ধের ফলাফল। এ যুদ্ধে মুক্তিযােদ্ধা ও ভারতীয় বাহিনীর সম্মিলিত আক্রমণ ব্যর্থ হয়। ৯ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের ১জন অফিসার ও ৩০-৪০জন মুক্তিযােদ্ধা শহিদ হন। প্রায় ৩০ জনের মতাে আহত হয়। ১৯ পাঞ্জাবের ১জন মেজর এবং প্রায় ১৬৪ জন হতাহত হয়। পাকিস্তানিদের ১০৫ মি.মি, আর্টিলারি গােলার আঘাতে ২টি মিডিয়াম গানের সাইট নষ্ট এবং গান পজিশনে ১০-১২জন ক্রু আহত হয়। এ ছাড়া কিছু হাতিয়ার ও ওয়্যারলেস সেট হারিয়ে যায়। শিক্ষণীয় বিষয় চন্দ্রপুর-লাটুমুড়া যুদ্ধ হতে নিমলিখিত বিষয়গুলাে শিক্ষণীয় হিসেবে জানা যায়: ১. শক্ত প্রতিরক্ষা অবস্থানে অবস্থিত শত্রুসেনাকে হটানাে অত্যন্ত দুরূহ। এর জন্য দরকার সমন্বিত সঠিক পরিকল্পনা। ২. অশুদ্ধ আর্টিলারি গােলাবর্ষণে আক্রমণকারী সৈনিকদের সুবিধার পরিবর্তে আত্মঘাতী হতে পারে। ভারতীয় অশুদ্ধ গােলাবর্ষণ এ যুদ্ধে। মুক্তিযােদ্ধার হতাহতের সংখ্যা বৃদ্ধি করে। সমন্বিত ও ভালাে স্থানে স্থাপিত স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র প্রতিরক্ষায় অবস্থানকারী সৈনিকদের ব্যাপক সুবিধা দিতে পারে এবং আক্রমণকারীদের জন্য হতে পারে খুবই ক্ষতিকর। যুদ্ধে পাকিস্তানিদের তাদের এমজি অত্যন্ত সহায়তা করে।
আখাউড়ার যুদ্ধ
ভূমিকা আখাউড়ায় পাকিস্তানি বাহিনী শক্ত ঘাঁটি স্থাপনের মাধ্যমে যৌথ বাহিনীকে ঢাকার দিকে অগ্রসর হতে বাধা প্রদান করেছিল। ঢাকা দখলের জন্য । আগরতলা-আখাউড়া-ব্রাহ্মণবাড়িয়া ছিল সব থেকে সহজ রাস্তা, যা অপসারণ। ছিল যৌথ বাহিনীর প্রধান লক্ষ্য। যুদ্ধক্ষেত্রের অবস্থান বা স্থান পরিচিতি আখাউড়া এলাকাটি খােলা ও সমতল, যার পশ্চিম দিক দিয়ে বয়ে চলেছে তিতাস নদ। এ এলাকায় অসংখ্য জলাভূমি থাকায় মেঠোপথে চলাচল ছিল কষ্টসাধ্য। আশুগঞ্জে মেঘনা নদীর ওপরে অবস্থিত রেললাইন ব্রিজটি আখাউড়ার সাথে রেলপথে ঢাকায় যােগাযােগকে সচল রেখেছিল। কসবা-আখাউড়া পাকা রাস্তাটি রেললাইনের সমান্তরালভাবে কসবাকে সংযুক্ত করেছে। আখাউড়ার পশ্চিমে তিতাস নদের অবস্থানের ফলে উত্তর দিক থেকে আখাউড়া যাওয়ার রাস্তাটি ছিল সংকীর্ণ। একইভাবে গঙ্গাসাগর থেকে আখাউড়া যেতে নােয়াপাড়ার কাছে রাস্তাটি সংকীর্ণ থাকায় প্রতিরক্ষা অবস্থান গ্রহণের জন্য এলাকাটি ছিল উপযােগী। | আখাউড়া শহরটি ছিল আগরতলা থেকে মাত্র ৫ কিলােমিটার পশ্চিমে এবং আগরতলায় অবস্থিত এয়ার ফিল্ডের অবস্থান ছিল আন্তর্জাতিক সীমারেখা থেকে মাত্র কয়েক শ মিটার দূরে আখাউড়ায় রেলওয়ে জংশন থাকার কারণে রেলপথে ঢাকা-সিলেট এবং ঢাকা-চট্টগ্রামের সংযােগ পথে শহরটি ছিল সেতুবন্ধ স্বরূপ। যুদ্ধের সংগঠন যুদ্ধের সংগঠন ছিল নিম্নরূপ: ১. মুক্তিবাহিনী: ক. ২ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট (২ ইস্ট বেঙ্গল)। খ. ১১ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট (১১ ইস্ট বেঙ্গল)। গ. ৩ নম্বর সেক্টর মুক্তিবাহিনী। ২. ভারতীয় বাহিনী: ক. ৫৭ মাউন্টেন ডিভিশন ।
৭৩ মাউন্টেন ব্রিগেড।
১৪ গার্ডস রেজিমেন্ট (১৪ গার্ডস)। ১৯ পাঞ্জাব রেজিমেন্ট (১৯ পাঞ্জাব)।
১৯ রাজপুত রাইফেলস (১৯ রাজপুত)। • ৩১১ মাউন্টেন ব্রিগেড। • ৫৭ মাউন্টেন আর্টিলারি ব্রিগেড।
২৩ মাউন্টেন রেজিমেন্ট। ৫৯ মাউন্টেন রেজিমেন্ট। ৬৫ মাউন্টেন রেজিমেন্ট। ৮২ লাইট রেজিমেন্ট।
১২৪ ডিভিশন লােকেটিং ব্যাটারি। ৩. পাকিস্তানি বাহিনী:
ক. ২৭ পদাতিক ব্রিগেড। খ. ১২ ফ্রন্টিয়ার ফোর্স। গ. ৪ ইস্ট পাকিস্তান সিভিল আর্মড ফোর্সের (ইপিসিএএফ)
২টি ব্যাটালিয়ন। ঘ, ৩৩ বালুচ রেজিমেন্ট (৩৩ বালুচ)। ঙ. ১টি ট্যাংক ট্রপ। চ, ১টি ফিল্ড ব্যাটারি। ছ, ৯৮ মুজাহিদের ১টি কোম্পানি।
জ. ২১ আজাদ কাশ্মীরের ১টি কোম্পানি। আখাউড়ার জন্য পাকিস্তানিদের প্রতিরক্ষা পরিকল্পনা পাকিস্তানি বাহিনীর ২৭ পদাতিক ব্রিগেড যৌথবাহিনী কর্তৃক নিচের ৩টি অক্ষে অগ্রাভিযানের সম্ভাবনাকে বিবেচনায় আনে: ১. চান্দুরা-সরাইল-আশুগঞ্জ অক্ষ। ২. আগরতলা-কসবা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া-আশুগঞ্জ অক্ষ। ৩, আগরতলা-আখাউড়া-ব্রাহ্মণবাড়িয়া অক্ষ। এ ৩টি পথের মধ্যে আগরতলা-আখাউড়া-সরাইল ছিল সর্বাধিক সম্ভাব্য অক্ষ, যেখান দিয়ে যৌথ বাহিনী তাদের অধিকসংখ্যক সৈন্য নিয়ে আখাউড়ার দিকে অগ্রাভিযান করতে পারতাে। তা ছাড়া এ পথ দিয়ে সহজে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রবেশ করা যায়। আগরতলা থেকে পশ্চিম দিকে অগ্রাভিযানরত কোনাে সৈন্যদলকে বাধা। প্রদানের জন্য আখাউড়া ছিল ১টি উত্তম প্রতিরক্ষা স্থান, যেখান থেকে অগ্রসরমাণ সৈন্যদের বাধা প্রদান করা সহজ ছিল। এ পথের গুরুত্ব বিবেচনা করে ২৭ পদাতিক ব্রিগেডের অধিনায়ক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাদ উল্লাহ প্রথম ও প্রধান যুদ্ধ আখাউড়াতে করার পরিকল্পনা করে।
পাকিস্তানি বাহিনী অনুধাবন করতে পেরেছিল যে যৌথ বাহিনী উত্তর দিক। থেকে আখাউড়া আক্রমণ করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রবেশ করে রেল ও সড়ক যােগাযােগ বিচ্ছিন্ন করে দিতে পারে। সুতরাং পাকিস্তানি বাহিনী আখাউড়ারাজাপুর-গঙ্গাসাগর এলাকায় তাদের অধিকাংশ সৈন্য মােতায়েন করার পরিকল্পনা করে। আখাউড়া ও তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে তারা যেভাবে সৈন্য মােতায়েন করে, তা ছিল নিম্নরূপ: ১. আখাউড়া ও গঙ্গাসাগর এলাকায় ১২ এফএফ ১টি রেজিমেন্ট,
ইপিসিএএফের ২টি কোম্পানি, ১টি ট্যাংক টুপ ও ১টি ফিল্ড ব্যাটারি।
আর্টিলারি নিয়ােজিত ছিল। ২. কসবায় ৩৩ বালুচ, ইপিসিএএফের ১টি কোম্পানি ও ১টি ফিল্ড
ব্যাটারি ছিল। ৩. সাধারণ এলাকা মাধবপুর-সাবাজপুরে অবস্থান নিয়েছিল ৯৮
মুজাহিদের ১টি কোম্পানি, ইপিসিএফের ১টি কোম্পানি, আজাদ
কাশ্মীরের ১টি কোম্পানি ও ১টি মর্টার ব্যাটারি। ৪. ব্রিগেড সদর দপ্তর ছিল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। তাদের সাথে ছিল ৩৩
বালুচের ১টি কোম্পানি, ২১ আজাদ কাশ্মীরের ১টি কোম্পানি এবং
ইপিসিএএফের ১টি কোম্পানি। যৌথ বাহিনীর আক্রমণের পরিকল্পনা যৌথ বাহিনী আখাউড়া দখলের পরিকল্পনাকে নিম্নবর্ণিত ৩টি পর্বে বিভক্ত করে: পর্ব-১ | ১. ৭৩ মাউন্টেন ব্রিগেড
ক, প্রাথমিকভাবে গঙ্গাসাগরকে ধরে রাখা। খ, কসবা দখলে গঙ্গাসাগর-কসবা রাস্তাকে বিচ্ছিন্ন করে শত্রুকে
প্রতিহত করা। | ২. ৩১১ মাউন্টেন ব্রিগেড। ক. আড়াআড়িভাবে অগ্রাভিযানের মাধ্যমে রেললাইন ধরে লােনাসার
ও নােয়াপাড়া দখল করা। খ. তিতাস নদের অপর পাড়ে ও আখাউড়ার রেলব্রিজের পশ্চিমে
১টি স্টপ লাইন তৈরি করা। গ, ‘এস’ ফোর্স সিংগার বিল জেটিতে প্রভাব বিস্তার করা এবং
রাজাপুর দখল করা। ঘ. সেক্টর বাহিনী পাকিস্তান বাহিনীর অবস্থানকে সামনাসামনি ধরে
রাখার জন্য মুক্তিযােদ্ধাদের ২ কোম্পানিকে চাঁদপুর (গঙ্গাসাগর) এলাকায় রাখা।
পর্ব-২ ১. ৭৩ মাউন্টেন ব্রিগেড ক, গঙ্গাসাগর দখল করা। খ, নােয়াপাড়া এলাকায় ৩১১ মাউন্টেন ব্রিগেডের সাথে সমন্বয়
রাখা।
২. ৩১১ মাউন্টেন ব্রিগেড আখাউড়া উদ্ধারে যুদ্ধ পরিচালনা করা। পর্ব-৩ দক্ষিণ দিক থেকে আক্রমণ পরিচালনা করে ৭৩ ও ৩১১ মাউন্টেন ব্রিগেড আখাউড়া দখল করবে এবং এস ফোর্স উত্তর দিক থেকে মূল আক্রমণ পরিচালনা করবে। যুদ্ধের বর্ণনা পর্ব-১ ৭৩ মাউন্টেন ব্রিগেড: পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৪ গার্ড রেজিমেন্ট ১ ডিসেম্বর মানিয়াদ এলাকা দখল করে। পরবর্তী সময় পাকিস্তানিদের বাধা সত্ত্বেও ১৯ পাঞ্জাব রেজিমেন্ট কর্নেলবাজার এলাকা দখল করে। ১২ কুমায়ুন ব্যাটালিয়ন কর্তৃক পাকিস্তানিদের ওপর পরিচালিত প্রথম আক্রমণ ব্যর্থ হয়, কিন্তু পরবর্তী আক্রমণে তারা এলাকার ভাঙা ব্রিজ দখল করে।
৩১১ মাউন্টেন ব্রিগেড: ১০ বিহার রেজিমেন্ট তুলনামূলকভাবে কম বাধার সম্মুখীন হয়, বিধায় নােয়াপাড়া সহজে দখল করতে পারে। অতঃপর ৪ গার্ড রেজিমেন্ট ১০ বিহারের মধ্য দিয়ে তিতাস নদের অপর পারে কোড়া এলাকায় শক্তিশালী ঘাঁটি তৈরি করে। যেহেতু পাকিস্তানের কোনাে সংরক্ষিত সৈন্য বা রিজার্ভ ছিল না, তাই ১৪ ডিভিশন লেফটেন্যান্ট কর্নেল বশিরের নেতৃত্বে ১টি ক্ষুদ্র দলের সাহায্যে ৪ গার্ডের ওপর আক্রমণ করে কিছুটা ক্ষতিসাধন করতে সক্ষম হয়, যা পরবর্তী সময় ৪ গার্ড রেজিমেন্ট পুষিয়ে নেয়। | ‘এস’ ফোর্স: ২ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট প্রথমে সিংগার বিল জেটি দখল করে এবং পরবর্তী সময় ২ ডিসেম্বর রাতে এক কঠিন যুদ্ধের মাধ্যমে রাজাপুর এলাকা দখল করে নেয়। পাকিস্তানি বাহিনী ভােররাতে ভারী গােলন্দাজ দ্বারা সজ্জিত হয়ে রাজাপুরের ওপর পাল্টা আক্রমণ করে এবং ঐ এলাকা তাদের দখলে নিয়ে নেয়। পরবর্তী সময় ২ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট ৩ ডিসেম্বর বেলা ২টার মধ্যে রাজাপুর এলাকা পুনরায় দখল করে। এদিকে মুক্তিবাহিনী পাকিস্তানিদের পিছু হটার সমস্ত রাস্তা বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ায় পাকিস্তানি বাহিনীর অনেক ক্ষতিসাধিত হয়।
পর্ব-২ ৭৩ মাউন্টেন ব্রিগেড: গঙ্গাসাগর পাকিস্তানি বাহিনীর দখলে ছিল, যা পরবর্তী সময় ১৪ গার্ড রেজিমেন্ট অনেক ক্ষতিসাধনের মাধ্যমে দখল করে নেয়। এদিকে ১৯ পাঞ্জাব রেজিমেন্ট কর্নেলবাজার এলাকা দখলের পর গঙ্গাসাগরে ১৪ গার্ড রেজিমেন্টের সাথে সমন্বয় সাধন করে। একইভাবে ১২ কুমায়ুন রেজিমেন্ট ভাঙা ব্রিজ এলাকা থেকে ১০ বিহারের সাথে নােয়াসারে সমন্বয় সাধন করে। ৩১১ মাউন্টেন ব্রিগেড: ১০ বিহার রেজিমেন্ট লােনাসার এলাকা থেকে অগ্রাভিযান কালে সিমরাইলে পাকিস্তানিদের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হয় এবং তাদের চাপের মুখে যৌথ বাহিনী কিছু ভূমি ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। পর্ব-৩ যুদ্ধের দ্রুত অগ্রগতি ও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য ৫৭ মাউন্টেন ডিভিশন অধিনায়ক তার পরিকল্পনায় কিছু পরিবর্তন আনেন। ৩ ডিসেম্বর তিনি ৩১১ মাউন্টেন ব্রিগেডকে নিয়ে আখাউড়া দখল করার পরিকল্পনা করেন। ‘এস’ ফোর্স অধিনায়ককে ব্রিগেডিয়ার মিশ্রর অধীনে থেকে মূল আক্রমণে অংশ নিতে বলা হয়। জিওসি ৫৭ মাউন্টেন ডিভিশন ৭৩ মাউন্টেন ব্রিগেডকে কসবা যােগাযােগের প্রধান সড়ক ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও কসবার মধ্যে রােড ব্লক স্থাপন। করতে নির্দেশ দেন। যুদ্ধ নিম্নলিখিতভাবে চলতে থাকে: | ‘এস’ ফোর্স: ৪ ডিসেম্বর সমস্ত দিন ‘এস ফোর্স রাজাপুর থেকে পাকিস্তানিদের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে থাকে। ৪ ডিসেম্বর মধ্যরাতে উত্তর দিক থেকে আগত আক্রমণের রণঘণ্টা পূর্ব ফায়ার আসতে থাকে। পাকিস্তানি বাহিনী সম্পূর্ণভাবে প্রবঞ্চিত হয়। পাকিস্তানি বাহিনীর একটি রেডিও নেট ৫৭ মাউন্টেন ডিভিশন সিগন্যাল দ্বারা জ্যাম করা হয়।
এ যুদ্ধে ২ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের অনেক যােদ্ধা ছিলেন, যারা দেশের জন্য প্রাণ বিসর্জন দেন। এরা হলেন: লেফটেন্যান্ট বদিউজ্জামান, নায়েব সুবেদার আশরাফ আলী খান, সিপাহি আমীর। হােসেন, সিপাহি নূরুল আমিন, সিপাহি শাহাবুদ্দিন ও সিপাহি মােস্তাফিজুর রহমান। ৩১১ মাউন্টেন ব্রিগেডঃ ৫ ডিসেম্বর রাত ৩টায় ১০ বিহার রেজিমেন্ট দক্ষিণ থেকে সিমরাইল আক্রমণ করে। ১৮ রাজপুত একই দিনে সকাল ৭টায় আখাউড়া রেল স্টেশন দখল করে। এ সেক্টরে মূলত ৪ ইস্টার্ন এয়ার কমান্ডের সাথে সমন্বয় না থাকায় চূড়ান্ত আক্রমণের রণঘণ্টা ৩ বার পরিবর্তন করতে হয়। আখাউড়া থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পর্যন্ত যুদ্ধ। আখাউড়াকে দখল করে যৌথ বাহিনী অনেক সম্ভাবনাকে উজ্জ্বল করে দেয়। পাকিস্তানি ফোর্স আখাউড়া থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়াগামী ২টি রেললাইনের ১টি উপড়ে ফেলে তা গাড়ি চলাচলের রাস্তায় রূপান্তরিত করে। যৌথ বাহিনী এটি জানতে পারে এবং জেনারেল গঞ্জালেস এ সুযােগকে কাজে লাগাতে চান। ফলে। তিনি দাউদকান্দি দখল না করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দিকে নজর দেন। যুদ্ধের বিশ্লেষণ বা সার্বিক মূল্যায়ন | ১, পাকিস্তানি বাহিনীর প্রতিরক্ষামূলক যুদ্ধের পর্যালােচনা ক, সবল দিকগুলাে: আখাউড়ার গুরুত্বকে কৌশলগতভাবে বিবেচনা করে পাকিস্তানি বাহিনী ১টি শক্ত প্রতিরক্ষাব্যবস্থা নেয়। আখাউড়া-সিংগার বিল এবং গঙ্গাসাগরে পাকিস্তানি বাহিনীর অবস্থান যথেষ্ট শক্ত ছিল। এখানে উল্লেখযােগ্য বিষয়ের মধ্যে ছিল পাকিস্তানি বাহিনী কর্তৃক রাজাপুর থেকে দুর্গাপুর পর্যন্ত ৪০০ গজ অ্যান্টি-ট্যাংক ডিচ খনন, যা যৌথ বাহিনীর চলাচলকে সীমিত করেছিল। পাকিস্তানি বাহিনী সীমান্ত এলাকায় প্রতিটি অক্ষকে ঘিরেই তাদের প্রতিরক্ষা অবস্থান নিয়েছিল।
তাই যুদ্ধের প্রাথমিক অবস্থায় অধিক পরিমাণ এলাকা তাদের দখলে ছিল। দুর্বল দিকগুলাে: পাকিস্তানি ব্যাটালিয়ন ১২,০০০ গজ বিস্তৃতি নিয়ে প্রতিরক্ষা নেয়, যা ছিল স্বাভাবিকের চেয়ে ২ থেকে ৩ গুণ বেশি। তারা আখাউড়ায় প্রতিটি অঞ্চলে প্রতিরক্ষা নিতে চাওয়ায় অনেক ক্ষেত্রে অস্ত্রের পারস্পরিক সহযােগিতার কথা ভুলে যায় এবং কিছু এলাকা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ফলে আক্রমণকারী সৈন্য নিতান্ত কম বাধার সম্মুখীন হয়ে বিচ্ছিন্ন এলাকাগুলাে দখল করে নিতে সক্ষম হয়। পাকিস্তানিরা কোনাে বিকল্প পরিকল্পনা করেনি। সিংগার বিল, আখাউড়া ও গঙ্গাসাগর এলাকায় প্রতিরক্ষার জন্য অন্য কোনাে স্থান নির্বাচন করে রাখেনি। ফলে তারা আক্রমণকারী দলকে পরিকল্পিতভাবে বাধা প্রদানে ব্যর্থ হয় এবং নিজেদের পশ্চাদপসরণে ও বিচক্ষণতা দেখাতে ব্যর্থ হয়। পাকিস্তানি বাহিনীর আক্রমণাত্মক মনােভাবের অভাব ছিল, ফলে। তারা অনেক সময় যুদ্ধে কাঙিক্ষত ফললাভ করতে ব্যর্থ হয়। আখাউড়া পাকিস্তানিদের ১টি অন্যতম উল্লেখ্যযােগ্য ঘাটি হওয়া সত্ত্বেও প্রতিরক্ষার ফাঁকগুলাে তারা সঠিকভাবে দেখে রাখতে পারেনি এবং শত্রু কর্তৃক গ্যাপগুলাে দখলের সময় ও শক্তভাবে প্রতিরােধ গড়ে তুলতে পারেনি। মুক্তিবাহিনীর ভীতি ও আঞ্চলিক সহযােগিতা না পাওয়ার ফলে পাকিস্তানি গুপ্তচরেরা বিভিন্ন সংবাদ সংগ্রহে ব্যর্থ হয়।
এমনকি চূড়ান্ত আক্রমণের সময় পাকিস্তানি বাহিনী কোন দিক থেকে আক্রমণ আসছে, তা জানতে ব্যর্থ এবং যৌথ বাহিনীর দ্বারা প্রবঞ্চিত হয়। আখাউড়া-আশুগঞ্জ অক্ষ রক্ষার জন্য প্রধান বাধা তিতাস নদের গুরুত্ব ছিল অপরিসীম। তিতাস নদীকে তারা বাধা হিসেবে গুরুত্বের সাথে ব্যবহার করলে যৌথবাহিনীর জন্য তা অতিক্রম করা ছিল দুরূহ। তা ছাড়া সম্পূর্ণ পূর্ব সেক্টরই অনেক প্রাকৃতিক বাধা দ্বারা বেষ্টিত ছিল। কিন্তু পাকিস্তানিরা সেগুলাের সদ্ব্যবহার করে মিত্রবাহিনীর অগ্রাভিযানকে প্রতিহত করতে ব্যর্থ হয়। পাকিস্তানিদের নিষ্ঠুরতা, নারী নিপীড়ন ও ধ্বংসলীলা দিনে দিনে তাদের অমানবিক করে তােলে। তারা এমন সব কাজ করেছিল, যা সৈনিকসুলভ নয় এবং যার ফলে প্রতিনিয়ত তারা যুদ্ধ করার ক্ষমতা ও মনােবল হারাতে থাকে। ফলে স্বভাবতই তাদের মনােবল নিচু হতে শুরু করে। ২. যৌথবাহিনীর আক্রমণাত্মক যুদ্ধের পর্যলােচনা ক, সবল দিকগুলাে: ‘এস’ ফোর্স উত্তর দিক থেকে আক্রমণ রচনা করে সিংগার বিল আজমপুর এলাকা দখল করার দায়িত্ব পায়। ‘এস’ ফোর্সের এ উদ্দেশ্যকে নসাৎ করে দেওয়ার জন্য পাকিস্তানি বাহিনী তাদের ক্ষুদ্র সংরক্ষিত সৈন্য নিয়ে আজমপুরে পাল্টা আক্রমণ করার পরিকল্পনা করে, কিন্তু ৩১১ মাউন্টেন ব্রিগেড উত্তর দিকের পরিবর্তে দক্ষিণ দিক থেকে চূড়ান্ত আক্রমণ পরিচালনা করার পরিপ্রেক্ষিতে পাকিস্তানি বাহিনী প্রতারিত হয়।
গােলাবারুদ ও অন্যান্য প্রয়ােজনীয় জিনিসপত্র আনা-নেওয়ার জন্য রিশা, সাইকেল ও নৌকার ব্যবহার করা হয়। ফলে এসবের চালকেরা গুপ্তচর হিসেবে কাজ করেন পাকিস্তানি বাহিনীর জনবল ও তাদের মােতায়েনের স্থান সম্পর্কে সঠিক তথ্য দিতে থাকেন। যৌথবাহিনী নদীর বাধা অতিক্রমের জন্য অত্যাধুনিক পদ্ধতি ব্যবহার করে। যৌথবাহিনী দ্রুতগতিতে অগ্রাভিযান চালিয়ে যায় এবং একই রকম চাপ সর্বদা শত্রুর ওপর বজায় রাখে। যার ফলে প্রতিরক্ষাকারী দল তিতাস নদের পশ্চিমে তাদের প্রতিরক্ষাকে পুনর্গঠন করতে না পারায় অপরিকল্পিতভাবে পিছু হটতে বাধ্য রােড ব্লকের যথাযথ ব্যবহার পাকিস্তানি বাহিনীর পশ্চাদপসরণের রাস্তাকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়। এ কৌশল উধ্বর্তন ও নিচু স্তরের উভয় কমান্ডের ক্ষেত্রেই ব্যবহৃত হয়। ৭৩ মাউন্টেন ব্রিগেড সফলতার সাথে কসবা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া রাস্তায় রােড ব্লক স্থাপন করার সময় কসবাকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়। যৌথবাহিনীতে যথেষ্ট অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ফিল্ড অধিনায়করা ছিলেন, যারা যুদ্ধের দাবি বুঝে সেই সময়ানুযায়ী প্রয়ােজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে সক্ষম হন। খ. দুর্বল দিকগুলাে: যদিও যৌথ বাহিনীর পরিকল্পনা সঠিক ও পরিকল্পিতভাবে প্রয়ােগ করা হয়েছিল, তথাপি তাদের অনেক জীবন ও সম্পদের ক্ষতি স্বীকার করতে হয়েছিল, যা তাদের কল্পনাতীত। কিছু প্রধান সীমাবদ্ধতা ছিল, যা নিমরূপ: ভালাে গুপ্তচরব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও অনেক সময় মিত্রবাহিনী কোনাে কোনাে বিষয় সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানতে পারেনি। যেমন: ভাঙা ব্রিজ এলাকায় সংঘটিত আক্রমণটি ছিল সমুখ থেকে, যার ফলে পাকিস্তানি বাহিনী কর্তৃক যৌথ বাহিনীর অনেক ক্ষতি হয়েছিল। বিমানব্যবস্থার সাথে সমন্বয়ের অভাবে যৌথ বাহিনী। আখাউড়া আক্রমণের চূড়ান্ত সময়কে পরিবর্তন করে। মূলত পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডের সদর দপ্তর ও বিমান বাহিনীর সদর দপ্তর পাশাপাশি না থাকার কারণে সব সময় সমন্বয় সাধন সঠিকভাবে করা সম্ভব হয়নি।
সূত্রঃ মুক্তিযুদ্ধে সামরিক অভিযান – দ্বিতীয় খন্ড