You dont have javascript enabled! Please enable it! কংসতলা পাকিস্তানি ঘাঁটি আক্রমণ,রামনগর (বুড়িচং) গ্রামে আক্রমণ,কুমিল্লা সার্কিট হাউজ আক্রমণ,কালীর বাজার গ্রামে আক্রমণ,দেউশ-মন্দভাগ অভিযান, জাফরগঞ্জের যুদ্ধ, চাপিতলার অ্যামবুশ, - সংগ্রামের নোটবুক
কংসতলা পাকিস্তানি ঘাঁটি আক্রমণ
কুমিল্লার দক্ষিণে বুড়িচং থানায় শক্রদের কংসতলা ঘাঁটিটি মুক্তিযােদ্ধাদের। যাতায়াতে বিশেষ অসুবিধার সৃষ্টি করছিল। এ ঘাঁটি থেকে শত্রুদের টহল দল মুক্তিযােদ্ধাদের যাতায়াত পথে বিশেষ তৎপরতা চালাতাে। এ ঘাঁটিটিকে ধ্বংস করার জন্য ক্যাপ্টেন মাহবুবকে নির্দেশ দেওয়া হয়। বিশেষ তথ্য অনুসন্ধান করে ৫০জনের ১টি দল ক্যাপ্টেন মাহবুবের নেতৃত্বে। ৩০ সেপ্টেম্বর রাত ১টায় এ ঘাটিতে অনুপ্রবেশ করে আক্রমণ চালায়। ৩ ঘণ্টা। যুদ্ধের পর সুবেদার শাহ জামানসহ ১৬জন শত্ৰু নিহত এবং ৮জন আহত হয়। শত্রুরা এ আক্রমণের ফলে এতই বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে যে, সেখান থেকে তারা। তাদের অবস্থান পরিত্যাগ করে কুমিল্লায় চলে যেতে বাধ্য হয়। এর ২ দিন পর মুক্তিযােদ্ধাদের ডেমােলিশন পার্টি পেপুলিয়া বাজারের কাছে লালমাইসােনাগাজী সড়কের একটি সেতু বিস্ফোরক দিয়ে উড়িয়ে দেয়। শত্রুরা এ রাস্তাটিকে ট্যাংক এবং ভারী গাড়ি চলাচলের জন্য পুনর্নির্মাণের চেষ্টা করছিল। সেতুটি ধ্বংস করে দেওয়ার পর তারা রাস্তা মেরামতের কাজ বন্ধ করে দেয়। মুক্তিযােদ্ধাদের আরেকটি গেরিলা দল চান্দিনার কাছে দোতলায় রাস্তায়। মাইন পুতে শত্রুদের একটি গাড়ি ধ্বংস করে দেয়। এ ছাড়া কুমিল্লার দক্ষিণে ও উত্তরে ১ অক্টোবর থেকে মুক্তিযােদ্ধাদের সংঘর্ষে প্রাণছড়া, কোটোর, আজনাপুর, বিবির বাজার, আমতলী প্রভৃতি জায়গায় আনুমানিক ২৫জন শত্রু নিহত এবং ৮জন আহত হয়।
রামনগর (বুড়িচং) গ্রামে আক্রমণ
কুমিল্লা জেলা সদরের সবচেয়ে নিকটবর্তী (উত্তরে) বুড়িচং থানা। বুড়িচং থানার রামনগর গ্রামে মুক্তিযােদ্ধা গেরিলাদের একটি অবস্থান ছিল। শত্রুরা স্থানীয় দালালদের কাছে সংবাদ পেয়ে ৮ অক্টোবর দুপুরে ১টি শক্তিশালী দল নিয়ে সেই অবস্থানের ওপর আক্রমণ চালায়। মুক্তিবাহিনী বীরত্বের সঙ্গে সেই আক্রমণের মােকাবিলা করে। দুপুর ১টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত যুদ্ধ চলে। যুদ্ধে শত্রুদের। প্রায় ১৬জন সৈনিক ও ১৪জন রাজাকার নিহত হয়। পাকিস্তানি আক্রমণের চাপ বাড়তে থাকলে মুক্তিযােদ্ধারা তাদের অবস্থান পরিত্যাগ করে জাগলপুরে নতুন করে অবস্থান নেয়। পরদিন শত্রুদের আরেকটি শক্তিশালী দল সেই অবস্থানের ওপর আক্রমণ চালায়। প্রায় ৪ ঘণ্টা যুদ্ধ করে মুক্তিবাহিনী ৩৫জন শত্রুকে হতাহত করে। এরপর মুক্তিযােদ্ধারা সেই অবস্থান। পরিত্যাগ করে প্রধান ঘাঁটিতে আসেন। আসার পথে ৫জন শত্রু মুক্তিযােদ্ধাদের হাতে বন্দি হয়। মুক্তিযােদ্ধাদের ১জন শহিদ, ২জন আহত এবং ১জন বন্দি হন।
কুমিল্লা সার্কিট হাউজ আক্রমণ
সদর থানায় কুমিল্লা সার্কিট হাউজ অবস্থিত। ১১ অক্টোবর বেলা ১১টার সময় মুক্তিযােদ্ধারা কুমিল্লার সার্কিট হাউজ ও গােমতীর চাঁদপুর ফেরিতে মর্টারের গােলাবর্ষণ করেন। কুমিল্লা সার্কিট হাউজে শত্রুদের মার্শাল ল হেডকোয়ার্টার্স ছিল। এ গােলাবর্ষণের ফলে প্রায় ৩৯জন শক্র ও রাজাকার হতাহত হয়। শহরের ভেতরে বসে মর্টারের গােলাবর্ষণ করাতে শক্রদের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। পরে মুক্তিযােদ্ধারা জানতে পারেন যে, শহরে অবস্থিত অনেক টহলদার শত্রু ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে তাদের অস্ত্রশস্ত্র ফেলে ময়নামতি ক্যান্টনমেন্টের দিকে পালিয়ে যায়। মুক্তিযােদ্ধারা আরও জানতে পারেন যে, সার্কিট হাউজে গােলাবর্ষণের সময় সেখানে পাকিস্তানি ৯ পদাতিক ডিভিশনের জেনারেল অফিসার কমান্ডিং উপস্থিত ছিলেন। অল্পের জন্য তিনি মুক্তিযােদ্ধাদের আক্রমণ থেকে রক্ষা পান। কুমিল্লা শহরে প্রকাশ্য দিবালােকে মুক্তিযােদ্ধাদের দ্বারা এ আক্রমণের খবর রেডিও পাকিস্তান থেকেও প্রচার করে। শত্রুরা তাদের ৫জন। সৈনিক নিহত এবং ৩৯জন আহত হওয়ার কথা স্বীকার করে।
কালীর বাজার গ্রামে আক্রমণ
চৌদ্দগ্রাম থানার ১ মাইল উত্তরে ঢাকা-চট্টগ্রাম রােডের পাশে কালীর বাজার অবস্থিত। মুক্তিযােদ্ধাদের গেরিলারা কালীর বাজার গ্রামে শক্রদের ১টি সদর দপ্তরের সন্ধান পায়। এ সংবাদ পেয়ে লেফটেন্যান্ট ইমাম-উজ-জামান ১টি ৭৫ মিলিমিটার আরআর, মেশিনগান ও হালকা মেশিনগানসহ ১টি প্লাটুন পাঠিয়ে দেন। এ প্লাটুনটি পথপ্রদর্শকের সহায়তায় শক্রদের হেডকোয়ার্টার্সের কাছে রাতে পৌছতে সক্ষম হয়। ১২ অক্টোবর ভাের ৫টায় মুক্তিযােদ্ধাদের এ দলটি রকেট লঞ্চার ও মেশিনগানের সাহায্যে শক্রদের এ সদর দপ্তরে আক্রমণ করে। একটি বিল্ডিংয়ে অবস্থিত ২টি বাংকার সম্পূর্ণভাবে উড়িয়ে দেয়। শত্রুরা রকেট হামলায় ইতস্তত পালানাের চেষ্টা করে। এমতাবস্থায় মুক্তিযােদ্ধারা মেশিনগানের সাহায্যে গুলিবর্ষণ করে তাদের ১২জনকে হত্যা ও ৪জনকে আহত করে। এরপর মুক্তিযােদ্ধাদের দলটি নিরাপদে তাদের অবস্থানে ফিরে আসেন। এ ঘটনার ১ দিন পর বাগবাড়ি ও জাজিশরে আরেকটা আক্রমণে ৭জন শত্রু ও ৫জন রাজাকার নিহত হয়।
দেউশ-মন্দভাগ অভিযান
ব্রাহ্মণপাড়া থানায় দেউশ-মন্দভাগ বাজার অবস্থিত। ১৪ অক্টোবর খালেদ মােশাররফের নেতৃত্বে সালদা নদীতে প্রথম আক্রমণের সময় সুবেদার ওহাবের ৭ নম্বর প্লাটুনকে চোব্বশ-ছােট নাগাইশ এলাকায় প্রতিরােধ ভূমিকা পালনের দায়িত্ব দেওয়া হয়। ঐ আক্রমণ ব্যর্থ হওয়ার পর দেউশ-মন্দভাগ বাজার এলাকায় অবস্থানরত নায়েব সুবেদার বেলায়েতের প্লাটুনটির বদলির নির্দেশ আসে। নায়েব সুবেদার বেলায়েত তার ৮ নম্বর প্লাটুনটি নিয়ে সালদা নদী এলাকায় চলে যান। আর সেই স্থলে দেউশ-মন্দভাগ এলাকায় এসে প্রতিরক্ষা। অবস্থান নেয় সুবেদার ওহাবের ৭ নম্বর প্লাটুনটি।  ১৭ অক্টোবর সন্ধ্যার পর পরই সুবেদার বেলায়েতের ৮ নম্বর প্লাটুনের প্রতিরক্ষা এলাকায় অবস্থান নেয় সুবেদার ওহাবের ৭ নম্বর প্লাটুন। সুবেদার ওহাবের এরিয়ার সদর দপ্তর ছিল মন্দভাগ বাজারে। মন্দভাগ বাজারকে গভীরতা (Depth) হিসেবে রেখে দক্ষিণ-পশ্চিম চান্দলা খাল এবং উত্তর-পশ্চিম দিকে সালদা নদী কভার করার ফলে প্রতিরক্ষা অবস্থানটি ছিল মােটমুটিভাবে আদর্শ। সুবেদার ওহাবের জনশক্তি ছিল প্রায় ৬০জন। সহ-অধিনায়ক ছিলেন। সুবেদার মঙ্গল মিয়া এবং ভারী অস্ত্রের মধ্যে ছিল ২টি এমজি, ৭-৮টি এলএমজি ও ১টি ৬০ মিলিমিটার মর্টার। ১৮ অক্টোবর সকাল ৯টার দিকে বেশ কিছুসংখ্যক পাকিস্তানি সেনা সংগঠিত হয়ে এবং নতুন শক্তি নিয়ে পশ্চিম ও দক্ষিণ দিক থেকে অগ্রসর হতে শুরু করে। এ সময় সুবেদার ওহাবের এমজি পােস্ট এবং দলের অন্যান্য সদস্য নিজ নিজ অস্ত্র থেকে অত্যন্ত কার্যকরভাবে শক্রর প্রতি গােলাবর্ষণ করলে তাদের অনেকেই হতাহত হয়।
কিলিং জোনের মধ্যে মুক্তিবাহিনীর সমন্বিত গুলিবর্ষণের ফলে পাকিস্তানি সেনাদের প্রতিহামলার প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। শত্রু অগ্রসর হওয়ার বাসনা ত্যাগ করে পিছু হটে। | শত্ৰু পিছু হটে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরই শুরু হয় ব্যাপক আর্টিলারি গােলাবর্ষণ। প্রায় আধা ঘণ্টা যাবৎ শত্ৰু দেউশ এলাকার ওপর ইতস্তত বিক্ষিপ্তভাবে অসংখ্য আর্টিলারির গােলা নিক্ষেপ করে। কিন্তু আর্টিলারির গােলাগুলি শতকরা ৯০ ভাগই পড়ছিল খাল, বিল, পুকুর ও ডােবা-নালায়। কাউকেই অবস্থান ছাড়তে দেখা গেল না এবং মুক্তিবাহিনীর কোনাে ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। এ আক্রমণে শত্রুপক্ষের ১৫-২৫জনের মতাে হতাহত হয়। বেলা ১টার সময় ৪টি হেলিকপ্টারকে দেউশ এলাকার আকাশে দেখা গেল। ঘাবড়ালেন না। সুবেদার ওহাব। প্রতিটি বাংকারই ক্যামােফ্লাজ করা ছিল। হেলিকপ্টারগুলাে পর্যায়ক্রমে ২দিক থেকে গুলিবর্ষণ করতে থাকলাে। প্রায় ১৫ থেকে ২০ মিনিট কাল এ হামলা চলেছিল। হেলিকপ্টারগুলাে চলে যাওয়ার পর সুবেদার ওহাব তাঁর এমজি বাংকার। অবস্থান থেকে বেরিয়ে এলেন। খবরাখবর নিয়ে জানতে পারলেন যে তার বাহিনীর কেউ হতাহত হয়নি। তবে বেশ কিছু বেসামরিক লােকজন হতাহত হয়েছে। বিমান হামলার ঠিক পূর্ব মুহূর্তে সুবেদার ওহাব তার সিগন্যাল অপারেটর হাবিলদার মােসলেমের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার ফলে হামলা চলাকালীন এবং তারপরে প্রায় ১ ঘণ্টা কোনাবনে কোম্পানি সদরের সাথে যােগাযােগ করতে সক্ষম হননি। সুবেদার ওহাবের খবরাখবর নেওয়ার জন্য নায়েব সুবেদার শহীদের নেতৃত্বে ৪জনের একটি দল দেউশ অবস্থানের উদ্দেশ্যে ইতােমধ্যেই রওনা হয়ে গিয়েছিল। নায়েব সুবেদার শহিদ দেউশ পৌছে সুবেদার ওহাবের সাথে দেখা করেন এবং তখনই সিগন্যাল সেটের মাধ্যমে। কোনাবনে যুদ্ধের সর্বশেষ পরিস্থিতি জানিয়ে দেওয়া হয়।
এ অপারেশনে শত্রুপক্ষের ২জন অফিসারসহ নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছিল আনুমানিক ৫০-৫২জন। আহতদের সংখ্যা ৫০-৫৫জনের কম ছিল না। এতসংখ্যক শত্রুসৈন্য একটি মাত্র অপারেশনে হতাহতের নজির মুক্তিযােদ্ধাদের দীর্ঘ ৯ মাসের ইতিহাসের ছিল এক বিরল ঘটনা। এ অপারেশনের পর পরই শত্রুপক্ষ আবারও ঘােষণা দেয় যে, সুবেদার ওহাবকে জীবিত বা মৃত অবস্থায় ধরিয়ে দিতে পারলে ৫০,০০০ টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে।
জাফরগঞ্জের যুদ্ধ (রাজাকার আফসোের অপারেশন নামে খ্যাত)
দেবিদ্বার থানায় জাফরগঞ্জ অবস্থিত। অক্টোবর মাসের শেষের দিকে দেবিদ্বার থানার জাফরগঞ্জে দুধর্ষ রাজাকার অধিনায়ক আফসােকে ধরার জন্য মুক্তিবাহিনী আক্রমণ চালায়। মুক্তিবাহিনীর প্লাটুনটির নেতৃত্ব দেন সুবেদার আফজাল।। তাকে সহযােগিতা করেন অধিনায়ক জয়নাল ও সেকশন অধিনায়ক ফজলুর রহমান। দীর্ঘক্ষণের চেষ্টায় রাজাকার বাহিনীকে পরাজিত ও গ্রেপ্তার করা হয়। রাজাকার অধিনায়ক আফসাে নিহত হয়। এ যুদ্ধে মুক্তিবাহিনীর সদস্য অহিদুর রহমান শহিদ হন। এছাড়া ২৯ মার্চ জাফরগঞ্জ মসজিদের সামনে পাকিস্তানিদের সাথে ছাত্র জনতার এক প্রতিরােধযুদ্ধ সংঘটিত হলে ২০জনের মতাে ছাত্র জনতা গুলিবিদ্ধ হয় এবং ১৫জন পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়।
হরিসরদার বাজারে পাকিস্তানি ঘাঁটি আক্রমণ
চৌদ্দগ্রাম থানাধীন হরিদাসপুর বাজারে লে. ইমাম-উজ-জামানের নেতৃত্বে ২২ অক্টোবর ভাের ৪টার সময় মেশিনগান, মর্টার ও ১০৬ মিলিমিটার আরআর এর সহায়তায় হরিসরদার বাজারের ওপর শত্রুদের ১টি নতুন ঘাঁটির ওপর আক্রমণ চালানাে হয়। প্রায় ১২ ঘণ্টার যুদ্ধে শত্রুদের প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়। আরআর এর সাহায্যে বেশ ক’টি বাংকার মুক্তিযােদ্ধাদের আক্রমণকে প্রতিহত করে। প্রচণ্ড কামানের আক্রমণের ফলে সন্ধ্যা ৬টার সময় মুক্তিবাহিনী গােলার অভাবে পিছু হটে আসতে বাধ্য হয়। আসার সময় শত্রুদের অবস্থানের কাছে রাস্তায় মাইন লাগিয়ে আসে।
পরদিন সকালে মাইন বিস্ফোরণের ফলে ৭-৮জন শত্রু আহত হয়। এর ১দিন পর মুক্তিযােদ্ধাদের আরেকটি দল সকাল ৭টার সময় চৌদ্দগ্রামের ১ মাইল উত্তরে শত্রুদের কালীর বাজার ঘাঁটির ওপর মর্টার এবং আরআর এর সহায়তায় আক্রমণ চালায়। এ আক্রমণে প্রায় ১২জন শত্রু হতাহত হয়। শত্রুরা তাদের গােলন্দাজ বাহিনীর সহায়তায় আক্রমণকে প্রতিহত করতে সক্ষম হয়। এর কয়েকদিন পর শত্রুদের ১টি টহল দল চৌদ্দগ্রাম থেকে সাড়ে ৪ মাইল দক্ষিণে ১টি বাজারের কাছে মুক্তিযােদ্ধাদের অ্যামবুশে পড়ে ফলে ৮জন শত্ৰু নিহত
চাপিতলার অ্যামবুশ
কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর থানার অন্তর্গত চাপিতলা। নায়েব সুবেদার শিকদার আফজাল হােসেনের নেতৃত্বে ৪র্থ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের ১টি কোম্পানি শত্রুদের পেছনে অনুপ্রবেশ করে চাপিতলায় অ্যামবুশ পাতে। পরদিন ভাের। ৪টার সময় শত্রুদের ২টি কোম্পানি তাদের অগ্রবর্তী ঘাঁটিগুলাে শক্তিশালী করার জন্য অগ্রসর হয়। শত্রুদের এ দলটি ভাের ৫টায় মুক্তিযােদ্ধাদের অ্যামবুশে পড়ে। প্রায় ৪ ঘন্টা যুদ্ধ চলে। যুদ্ধে প্রায় ৫০জন শত্রু হতাহত হয়। এ আক্রমণের পর পরই শত্রুরা মুক্তিযােদ্ধাদের অবস্থানের ওপর জঙ্গিবিমান দিয়ে। ৯টা ৪৫ মিনিট থেকে ১০টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত আক্রমণ করে। মুক্তিযােদ্ধাদের পক্ষে কোনাে ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। ৪র্থ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট শত্রুদের কামালপুর, মহনপুর, লক্ষ্মীপুর অবস্থানগুলাের ওপর তাদের চাপ আরও জোরদার করে তােলে।

সূত্রঃ    মুক্তিযুদ্ধে সামরিক অভিযান – দ্বিতীয় খন্ড