আলীনগর বিওপি আক্রমণ
ভারতীয় জেলা শহর কৈলাশহরের প্রান্ত ঘেঁষে ন’মৌজা বিওপি। এখানেই মুক্তিবাহিনীর অবস্থান। ন’মৌজা এলাকা সব সময় মুক্তিবাহিনীর দখলে ছিল। এ বিওপি থেকে আলীনগর আক্রমণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। কমলগঞ্জ থানা সদর থেকে প্রায় ১২ কিলােমিটার দক্ষিণ-পূর্বে আলীনগর বাগানের প্রায় শেষ প্রান্তে এ বিওপির অবস্থান। জুলাই মাসের শেষার্ধে ১৫জন মুক্তিযােদ্ধার ছােট ১টি গ্রুপ অপারেশনের প্রস্তুতি নিতে থাকে। অধিনায়কত্ব গ্রহণ করেন আবদুল গফুর। তার সাথে ছিলেন ফারুক আহমদ, হারুনুর রশীদ, আবদুল হাই, নাসির উদ্দিন, কুঠুর মিয়া, সফসর আলী, তখলিস আলী প্রমুখ। এ অভিযানের পুরাে পরিকল্পনা তৈরি করেন ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য রহিম উল্লা ওরফে বাদশা। সমস্ত পরিকল্পনা চূড়ান্ত হলে এক রাতে দলটি তাদের অবস্থান থেকে কৈলাশহর, টিলাবাজার, মিয়ার বাজার হয়ে পায়ে হেঁটে আলীনগর পৌছায়। সাথে তাদের অতি সাধারণ অস্ত্র। দীর্ঘ পথ অতিক্রম শেষে তারা যখন তাদের ঠিকানামতাে পৌছায়, তখন রাত প্রায় ভাের। অবস্থান নেয়ার পর পরই বিওপি’র পূর্ব-দক্ষিণ দিক থেকে মুক্তিযােদ্ধারা ঘেরাও করেন। অতর্কিতে গােলাবর্ষণ শুরু করলে ক্যাম্পের সব পাকিস্তানি সৈন্য ভয়ে পালাতে থাকে। তবে মুক্তিবাহিনীর শক্তিসামর্থ্য সীমিত থাকায় চূড়ান্তভাবে পাকিস্তানি বাহিনীকে পরাভূত করা যায়নি।
কিন্তু আলীনগর বিওপি দখলে আসে। অবশ্য পরবর্তীকালে আবার পাকিস্তানিরা আলীনগর দখল করতে সক্ষম হয়। মুক্তিযােদ্ধারা ঐদিন পাকিস্তানি পতাকা পুড়িয়ে বিওপি’র শীর্ষে বাংলাদেশের যে পতাকা উত্তোলন করেছিলেন, তা বেশ কয়েকদিন ধরে সেখানে ওড়ে। এলাকার মানুষ এতে করে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে। আশার আলাে ফুটে ওঠে তাদের চোখে-মুখে। ইতােমধ্যে চেরাগ আলী ও মফিজ আলী নামের ২জন দালাল মুক্তিযােদ্ধাদের নাম-ঠিকানা প্রকাশ করায় তাদের আত্মীয়স্বজন ও পরিবারের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে শত্রু। তারা কলিকোনা গ্রামে আক্রমণ চালিয়ে আবদুল গফুরের বাবা মকরম উল্লাহ, চাচা আইন উদ্দিন, চাচাতাে ভাই আবদুল সাত্তার, মামা নঈম উল্লাহ ও ভগ্নিপতি মসকন্দ আলীকে * ধরে নিয়ে আসে। তারপর পৃথমপাশার পদ্মাদিঘির পাড়ে এনে সবাইকে গুলি করে হত্যা করে। একে একে প্রতিটি গ্রামে প্রবেশ করে পাকিস্তানিরা একইভাবে একই স্থানে এনে হত্যা করে শতাধিক লােককে।
গৌড়নগর আক্রমণ
মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা থানা সদর থেকে প্রায় ১০ কিলােমিটার দক্ষিণে কেরামতনগর চা-বাগান। সীমান্তবর্তী এ বাগানে ছিল পাকিস্তানিদের শক্ত ঘাঁটি। আগস্টের শেষ দিকে গােটা সীমান্ত এলাকা জুড়েই মুক্তিযােদ্ধারা ছােট-বড়াে অপারেশন পরিচালনা করতে থাকেন। অবস্থা এমন হয়েছিল যে, পাকিস্তানিরা। মুক্তিবাহিনীর নাম শুনলেই আতংকে কেঁপে উঠত। এ অবস্থায় কেরামতনগর ও তার আশপাশে আধিপত্য বিস্তার করার জন্য কেরামত নগর ক্যাম্প থেকে প্রায় ৩ কিলােমিটার দক্ষিণে গৌড়নগর গ্রামে একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে পাকিস্তানি বাহিনী নতুন ক্যাম্প স্থাপন করে। এ ক্যাম্প স্থাপনের উদ্দেশ্য ছিল পাথারিয়া পাহাড়ের ভেতর দিয়ে মুক্তিবাহিনীর চলাচলে বাধা দেওয়া; কেরামতনগর, বড়লেখা, জুরী প্রভৃতি সড়ক দিয়ে শক্রর নিরাপদ চলাচল অব্যাহত ও কেরামত নগর ক্যাম্পটি নিরাপদ রাখা। এখানে ১৫জন পাকিস্তানি সৈন্য এবং বেশ কিছু রাজাকারও মােতায়েন করা হয়। কেরামতনগর ও অন্যান্য স্থানে অবস্থানকারী। শত্রুদের খাবারও তৈরি হতাে গৌড়নগরে। এখান থেকেই ট্রাক্টরযােগে খাদ্য সরবরাহ করা হতাে বিভিন্ন ক্যাম্পে। এসব কার্যকলাপ লক্ষ করে মুক্তিযুদ্ধের ৪ নম্বর সেক্টরের কুকিতল সাব-সেক্টর থেকে কেরামতনগর আক্রমণ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। ২৫জন সাহসী যুবক দিয়ে ১টি দল গঠন করা হয়। অধিনায়কের দায়িত্ব গ্রহণ করেন আবুল খায়ের চৌধুরী।
সহকারী অধিনায়ক ছিলেন তৎকালীন ছাত্রনেতা আবদুল হান্নান। পুরাে দলের পথপ্রদর্শক নিযুক্ত হন। মস্তাকিন আলী। ১টি ট্রাক্টরে চড়ে দলটি কুকিতল থেকে প্রায় ২৫ কিলােমিটার দূরের মােকামটিলা সীমান্তে পৌঁছে যায়। এখান থেকে পায়ে হেঁটে সােজা ডিমাই গ্রাম। পথে বারপুঞ্জি সাব-সেক্টর থেকে আবদুল মতিন চৌধুরী ও আবদুল জলিলের নেতৃত্বে আসা ৩০জনের আরেকটি দলের সাথে তাদের দেখা হয় । ২টি দল একসাথে গৌড়নগর আক্রমণ করার পরিকল্পনা করে। ২টি দলই। একসাথে ডিমাইয়ের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। মুক্তিবাহিনীর যৌথ দলটির এখানে পৌছতে রাত ১২টা বেজে যায়। দীর্ঘ। পথযাত্রায় সবাই ছিল ক্লান্ত, তাই ডিমাইয়ে বিশ্রাম নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। মূল দলকে ডিমাইয়ে রেখে আবুল খায়ের চৌধুরী ও আব্দুল জলিল টার্গেট রেকি। করার জন্য এগিয়ে যান। ক্যাম্পের প্রায় আধ মাইল দূরে থাকতেই প্রচুর গুলির আওয়াজ পাওয়া যায়। মনে হয়, ডিমাই গ্রামের ওপর মর্টারের গােলা নিক্ষিপ্ত হচ্ছে। রেকি পার্টি ধারণা করে মূল দলটি আক্রান্ত হয়েছে, তাই তারা দ্রুত ফিরে আসে। অবশ্য দলটি সম্পূর্ণ নিরাপদেই ছিল। পরের রাতে আবার রেকি করতে বের হয়েই তারা জানতে পারে পাকিস্তানিদের গৌরনগরের নতুন ক্যাম্পের খবর। এ ক্যাম্পটির অস্তিত্ব মুক্তিবাহিনীর কাছে এর আগে অজ্ঞাত ছিল। সেখানে অপারেশন করার তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত হয়, কিন্তু টার্গেট এবং যাওয়া-আসার রাস্তাটি সম্পর্কে নিশ্চিত তথ্য মুক্তিযােদ্ধাদের কাছে ছিল না। তবে পাকিস্তানি সৈন্যদের অবস্থান সম্পর্কে জানার জন্য একটি সূত্র পাওয়া। যায়। আবদুল মতিন ও আবদুল জলিলের পরিচালনায় বারপুঞ্জির গ্রুপটি একজন রাজাকারকে ধরে বন্দি করেছিল। সে ঐ এলাকারই লােক। জায়গাটি সম্পর্কে তার একটি পরিষ্কার ধারণা আছে।
অপারেশনে সহযােগিতা করলে প্রাণ রক্ষা করা হবে, এ ভিত্তিতেই তাকে পথপ্রদর্শক হিসেবে গৌরনগর নিয়ে যাওয়া হয়। গৌরনগরে বনবিভাগের একটি বাংলাে ছিল। বাংলােয় এসে মুক্তিবাহিনী তাদের অবস্থান গ্রহণ করেন। যৌথ অভিযান পরিচালনা করছিলেন আবুল খায়ের ও আবদুল জলিল। সেখানে একটি রাস্তার ওপর এক দল লােক পাহারা দিচ্ছিল। তারা জানায়, পাকিস্তানিরা তাদের রাস্তা প্রহরায় বাধ্য করেছে। তারা পাকিস্তানিদের সম্পর্কে পুরাে তথ্য সরবরাহ করে। এদের মধ্যে ১২ বছরের এক কিশোেরও ছিল। কিশােরটি মুক্তিবাহিনীকে সক্রিয়ভাবে সাহায্য করতে আগ্রহ প্রকাশ করে। সে ক্যাম্পের ভেতরেও মুক্তিবাহিনীদেরকে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব গ্রহণ করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রথমেই গৌরনগর থেকে কেরামতনগর ও বড়লেখার রাস্তায় মাইন পুঁতে রাখা হয়। একইসাথে টেলিফোন লাইনও বিচ্ছিন্ন করা হয়।
এরপর মুক্তিবাহিনী দ্রুত পাকিস্তানিদের ক্যাম্প হিসেবে ব্যবহৃত বাড়িটার কাছে চলে আসে। বাড়ির দুই পাশে ২জন পাকিস্তানি সেনা সেন্ট্রি হিসেবে প্রহরারত ছিল। তাদের ২জনের হাতেই ছিল চাইনিজ এসএমজি। বাড়িটির দুই পাশে ২জন পাহারাদার ছিল। এদের নিরস্ত্র করার জন্য আবদুল জলিল ও মাহবুবের নেতৃত্বে ২টি দল দুই দিক থেকে অগ্রসর হয়। সেন্ট্রি ২জনের সাথে ধস্তাধস্তি শুরু হলে ভেতর থেকে গুলি করা হয়। ফলে মুক্তিবাহিনীকেও শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়ে গুলি চালাতে হয়। পাহারাদারদের হত্যা। করে তাদের এসএমজি ও গােলাগুলি নিয়ে আসেন জলিল ও মাহবুব। এদিকে। শত্রুপক্ষের ক্যাম্প থেকে প্রচণ্ড গােলাগুলি হতে থাকে। ফলে মুক্তিযােদ্ধারা পিছু হটে আসেন কৌশলের সঙ্গে। এ সময় পলায়নরত ৩জন রাজাকার ধরা পড়ে। ২টি এসএমজিসহ মােট ৪জন রাজাকারকে সাথে নিয়ে মুক্তিবাহিনীর ক্যাম্পে ফিরে আসেন। মুক্তিযােদ্ধা ইসমাইল তখন কিছুটা আহত। অধিনায়ক আবুল। খায়ের এক বুনাে গাছের স্পর্শে যন্ত্রণা ভােগ করতে থাকলে আবদুল জলিল তাঁকে কাধে তুলে নেন। পরদিন কেরামতনগর থেকে ট্রাক্টরযােগে আসার সময়। মাইন বিস্ফোরিত হয়ে আরও ৩জন পাকিস্তানি সৈন্য মারা যায়।
পাইকপাড়া সেতু ধ্বংস
মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ থানা সদর থেকে প্রায় ১৮ কিলােমিটার। কিলােমিটার উত্তর-পূর্ব মনু-চাতলাপুর সড়কের কোদালী নদীর ওপর পাইকপাড়ার একটি সেতু। এ সড়কের সাহায্যেই মনুতে অবস্থান গ্রহণকারী পাকিস্তানি বাহিনী ক্যাম্প থেকে চাতলাপুর পর্যন্ত যােগাযােগ রক্ষা করতাে। তাই এ অঞ্চলে যােগাযােগের ক্ষেত্রে সেতুটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ ছিল। কোদালী নদীর সেতু পাহারার জন্য প্রতিদিন ৫জন করে রাজাকার পাঠানাে হতাে। এরা সেতুর ওপর বসে কিংবা দাড়িয়ে সারারাত কাটাতাে। আর নিরস্ত্র নিরীহ জনতাকেও অস্ত্রের মুখে পাহারার কাজে ব্যবহার করতাে। নদীর দুই পাশ বরাবর স্থানে। কাটা পুঁতে রাখতাে, যাতে মুক্তিযােদ্ধারা সেতু ধ্বংস করতে না পারেন। পাকিস্তানি বাহিনীও রাতের বেলা মাঝে মাঝে টহল দিতে আসতাে। এ সেতু থেকে ভারতের কালিপুরস্থ মুক্তিবাহিনী ক্যাম্পের দূরত্ব মাত্র ৩ কিলােমিটার। মনু নদের অপর তীরে কালিপুর গ্রামেই অবস্থিত এ ক্যাম্প। ক্যাম্পটি জুলাই মাস অবধি দেশের অভ্যন্তরে ছিল। এখান থেকেই বিভিন্ন স্থানে গেরিলা আক্রমণ পরিচালনা করে অত্যন্ত সাহসের সাথে পাকিস্তানিদের মােকাবিলা করেছেন মুক্তিযােদ্ধারা। তারপর কৌশলগত কারণে ক্যাম্পটি কালিপুরে। স্থানান্তরিত করা হয়। অধিনায়ক ছিলেন ক্যাপ্টেন আবদুল হামিদ। আর তার সহকারী ছিলেন লেফটেন্যান্ট ওয়ালী ওয়াকিউজ্জামান। এ ক্যাম্পে বসেই সিদ্ধান্ত হয়, পাইকপাড়াস্থ কোদালী সেতু ধ্বংস করার। দায়িত্ব গ্রহণ করেন। শফিকুর রহমান ও মায়া মিয়া।
এ অঞ্চলের পথঘাট সবই মায়া মিয়ার জানা ছিল। পার্শ্ববর্তী গ্রামে তাঁর বাড়ি। শফিকুর রহমানের বাড়িও পাইকপাড়ার কাছাকাছি। সুতরাং অপারেশন পরিচালনার খুঁটিনাটি বিষয় তাঁদের নখদর্পণে ছিল। শফিক ও মায়া তাঁদের সাথে যারা সর্বাত্মক সহযােগিতা করতে সক্ষম, এ রকম আরও ৬জন লােক নির্বাচন করে ৮জনের ১টি দল গঠন করেন। অন্যরা হলেন মসদ্দর আলী, ফরিদ খান, বজিউদ্দিন, গােলাম মােস্তফা, মুসলেউর। রহমান ও ইউনুস আলী। প্রত্যেকের সাথে ১টি করে স্টেনগান, ১টি বেয়নেট, কয়েকটি হ্যান্ড গ্রেনেড এবং প্রচুর বিস্ফোরক। আগস্টের মাঝামাঝি সময় প্রাথমিক প্রস্তুতি সম্পন্ন হলে ৮জন মুক্তিযােদ্ধা ১টি নৌকায় করে মনু নদ অতিক্রম করে নিশ্চিন্তপুর গ্রামে ঢােকেন। তারপর অন্ধকারের সাথে একাকার হয়ে এক সারিতে অগ্রসর হতে থাকেন। প্রায় ৩ কিলােমিটার পথ অতিক্রম করার পর তাঁরা টার্গেটের কাছাকাছি চলে আসেন। ভূঁইগাঁও গ্রামের উত্তর পাশে এসেই তারা কোদালী নদীতে নেমে পড়েন এবং নদের স্রোতের সাথে তাল মিলিয়ে ভাটির টানে এগােতে থাকেন। বেশ দূর থেকেই স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে, সেতুর ওপর দণ্ডায়মান ৫জন সশস্ত্র রাজাকার। তাদের হাতে ধরা জ্বলন্ত হারিকেনের আলােতেই তাদের গতিবিধি ধরা পড়ে। তা ছাড়া টর্চের আলাে ঘন ঘন সেতুর দুই পাশে ফেলে মুক্তিবাহিনীর উপস্থিতি খুঁজছিল তারা। এ অবস্থায় নদের তীর দিয়ে সেতুতে উঠতে হলে রাজাকারদের আগে পাকড়াও করতে হবে, কিন্তু তাতে রাজাকারদের সাথে সংঘর্ষ বেধে গেলে। আসল কাজে ব্যাঘাত সৃষ্টি হতে পারে বলে মুক্তিবাহিনী নদপথেই অগ্রসর হতে থাকেন। অবশেষে ৫জন রাজাকারের চোখকে ফাঁকি দিয়ে মুক্তিযােদ্ধারা অনায়াসে সেতুর নীচে অবস্থান নিতে সক্ষম হন। সেতুর নিচ বসে তারা।
বিস্ফোরক সংযােজনের কাজ পর্যন্ত সমাধা করে ফেলেন সন্তর্পণে। ঠিক এ মুহূর্তেই রাজাকাররা মুক্তিযােদ্ধাদের উপস্থিতি টের পেয়ে যায় ও সেতুর নিচের দিক লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে থাকে। মুক্তিবাহিনী এ সময় গুলি না করে হঠাৎ পুলের ওপর উঠে ৩জন রাজাকারকে ধরে ফেলে। বাকি ২জন আহত অবস্থায় পালিয়ে যায়। এরপর সেতু থেকে আবার নীচে নেমে বিস্ফোরকে অগ্নিসংযােগ করা হয়। বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে, ভেঙে যায় পাইকপাড়া সেতু। এদিকে মনু থেকে পাকিস্তানি বাহিনী গুলিবর্ষণ শুরু করে। কিন্তু ততক্ষণে বিপদসীমার বাইরে চলে গেছে মুক্তিযােদ্ধারা।
সূত্রঃ মুক্তিযুদ্ধে সামরিক অভিযান – দ্বিতীয় খন্ড