You dont have javascript enabled! Please enable it! হবিগঞ্জ-শায়েস্তাগঞ্জ সড়কের যুদ্ধ,শায়েস্তাগঞ্জ খাদ্য গুদাম লুট,হরষপুর রেল স্টেশনের যুদ্ধ - সংগ্রামের নোটবুক
হবিগঞ্জ-শায়েস্তাগঞ্জ সড়কের যুদ্ধ
হবিগঞ্জ জেলার শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভার অন্তর্গত বড়চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সংলগ্ন হবিগঞ্জ-শায়েস্তাগঞ্জ সড়কের পশ্চিমে পাকিস্তানি বাহিনী ও মুক্তিযােদ্ধাদের প্রচণ্ড যুদ্ধ সংঘটিত হয়। মুক্তিযােদ্ধা হাফিজ উদ্দীন ও মহফিল | হােসেন প্রায় ৫০০জন লােক নিয়ে মনু নদের ওপর শেরপুর ফেরিঘাটের পশ্চিম তীরে অবস্থান গ্রহণ করেন। ৪-৫ এপ্রিল পাকিস্তানিরা নদীর অপর পাড়ে পৌছানাের সাথে সাথে উভয় পক্ষে প্রচণ্ড যুদ্ধ সংঘটিত হয়। এ যুদ্ধে হাফিজ উদ্দীন ও মহফিল হােসেন শহিদ হন। মােস্তফা আলী এমএলএ, অ্যাডভােকেট  সৈয়দ আফসার আলী, ছাত্রনেতা মতিন মিয়া, উল্লেখিত শহিদদ্বয়ের লাশ এখানে এনে পাশাপাশি দাফন করেন। এ ২জন হলেন হবিগঞ্জ জেলার প্রথম শহিদ মুক্তিযােদ্ধা।
শায়েস্তাগঞ্জ খাদ্য গুদাম লুট
এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে শেরপুরের যুদ্ধের পর মুক্তিযােদ্ধারা সিলেট হয়ে হবিগঞ্জে ফিরে আসেন। তখন তাদের মাঝে খাদ্যের অভাব ছিল প্রকট। তেমন কোনাে খাদ্যদ্রব্যের মজুদ তাঁদের কাছে ছিল না। মুক্তিযােদ্ধা সংগঠক মানিক চৌধুরী (সাবেক এমএনএ) অধিনায়ক হিসেবে পরিকল্পনা তৈরি করেন। প্রায় ৩০৩৫জন মুক্তিযােদ্ধা নিয়ে মানিক চৌধুরী অপারেশন পরিচালনার জন্য খাদ্য গুদামে উপস্থিত হন এবং দরজা ভেঙে প্রয়ােজনীয় খাদ্যদ্রব্য সংগ্রহ করেন। উল্লেখ্য যে, ঐ অপারেশনে খাদ্য গুদামের কর্তৃপক্ষ কেউই মুক্তিযােদ্ধাদের বিরুদ্ধে দাড়াননি।
হরষপুর রেল স্টেশনের যুদ্ধ
হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর থানার অন্তর্গত ১ নম্বর ইউনিয়নে হরষপুর রেল স্টেশন অবস্থিত। ৪-৫ এপ্রিল মেজর মইনুলের নেতৃত্বে ২য় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের ৩৫-৪০জন নিয়মিত সৈনিক ও ২০০জন মুক্তিযােদ্ধা হরষপুর রেল স্টেশনে প্রতিরক্ষা অবস্থান গ্রহণ করেন। প্রায় ১ মাসের বেশি সময় অবস্থানে। থাকার পর এ স্টেশনে পাকিস্তানি বাহিনী অভিযান পরিচালনা করে। মুক্তিযােদ্ধাদের পক্ষে এ বিশাল আক্রমণ প্রতিহত করা সম্ভব ছিল না। তাই মুক্তিযােদ্ধারা সাময়িকভাবে ভারতের কলকলিয়ায় চলে যান। শত্রুর ১০০জন সৈনিক ও প্রায় ৩৫-৪০জন রাজাকার নিয়ে হরষপুর রেল স্টেশনে তাদের ঘাঁটি স্থাপন করে এবং ১৬ ডিসেম্বরের ৪-৫ দিন পূর্বে তাদের অবস্থান প্রত্যাহার করে। হরষপুরে পাকিস্তানি ক্যাম্পের ওপর মুক্তিবাহিনী খণ্ড খণ্ড আক্রমণ। পরিচালনা করতাে এবং তাদের ব্যতিব্যস্ত রাখতাে।

সূত্রঃ    মুক্তিযুদ্ধে সামরিক অভিযান – দ্বিতীয় খন্ড