You dont have javascript enabled! Please enable it!
তামাবিল অপারেশন
সিলেট জেলার গােয়াইনঘাট থানায় উত্তরে তামাবিল অবস্থিত। ৫ নম্বর সেক্টরের সাব-সেক্টর অধিনায়ক সুবেদার বি আর চৌধুরী তামাবিল-জাফলং এলাকায় অপারেশন করছিলেন। তাঁর অবস্থান ছিল ডাউকিতে বিপরীত দিকে তামাবিল ও জাফলংয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ক্যাম্প দূরত্ব খুবই কম প্রায়ই সংঘর্ষ হয় উভয় পক্ষের ক্ষয়ক্ষতিও প্রচুর হচ্ছে ২৫ জুন বি আর চৌধুরী একটি অপারেশন পরিকল্পনা গ্রহণ করেন সাথে তাঁর ২ কোম্পানি মুক্তিযােদ্ধা সঙ্গে অস্ত্রশস্ত্রও প্রচুর একই দিন তারা তামাবিল ও জাফলংয়ে আক্রমণ রচনা করেন। ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনী সুবেদার মেজর বি আর চৌধুরী ৩ ইঞ্চি মর্টার ব্যবহার করেন। মর্টার আক্রমণে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রতিরক্ষাব্যুহ ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়। ঠেকাতে পারেনি তারা মুক্তিবাহিনীর অভিযান ফলে শত্রুরা রণেভঙ্গ দিয়ে যে যেদিকে পারে পালিয়ে প্রাণ রক্ষা করে পিছনে ফেলে যায় সহকর্মীদের মৃতদেহ অস্ত্র, গােলাবারুদ এবং বেশ কিছু রসদসামগ্রী মুক্তিবাহিনীর ভাণ্ডারে জমা হয় প্রচুর পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র ও খাদ্যসামগ্রী শত্রুর হতাহতের সংখ্যাও ছিল প্রচুর।
শ্রীপুর আক্রমণ
সিলেট-তামাবিল সড়কের দক্ষিণে পাহাড়ের পাদদেশে গােয়াইনঘাট থানার অন্ত গত শ্রীপুরের অবস্থান উত্তরে ভারতীয় ভূখণ্ডের আওতাধীন উঁচু পাহাড়ি এলাকা সেখান থেকে নেমে এসেছে অসংখ্য ঝরনা। ছােটো-বড়াে পাথরের ওপর দিয়ে নেমে আসছে পানির ধারা। অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের স্থানে পাকিস্তানিরা একটি ক্যাম্প প্রতিষ্ঠা করে। ক্যাম্প থেকে আশপাশের এলাকাগুলােয় শক্ররা চালাতে আক্রমণ করতাে নারী নির্যাতন আর এর উপযুক্ত শিক্ষা দিয়ে শ্রীপুর মুক্ত করার লক্ষ্যে ২৬ জুন ডাউকি সাব-সেক্টর অধিনায়ক সুবেদার বি আর চৌধুরী আক্রমণ করেন শ্রীপুর আক্রমণের পর পরই দেখা যায়, পাকিস্তান সেনাবাহিনী পিছনে সরে যাচ্ছে। এ অবস্থা লক্ষ্য করে মুক্তিযােদ্ধারা আক্রমণের তীব্রতা বৃদ্ধি করেন। তারা ঝাপিয়ে পড়েন সর্বশক্তি নিয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ওপর পাকিস্তান সেনাবাহিনী বেশিক্ষণ  টিকে থাকতে পারেনি। মুক্তিবাহিনীর প্রচণ্ড আক্রমণে তারা পশ্চাদপসরণ করে। মুক্ত হয় শ্রীপুর জাফলং থেকে শ্রীপুর পর্যন্ত এলাকা এসে যায় মুক্তিবাহিনীর দখলে। সমগ্র সীমান্ত এলাকাজুড়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ওপর চাপ সৃষ্টি করে। মুক্তিবাহিনী, আর এটা অব্যাহত থাকে বহুদিন পর্যন্ত।
শেওলা ফেরিঘাট রেইড
সিলেট-চরখাই-জকিগঞ্জ সড়কে কুশিয়ারা নদীর ওপর শেওলা ফেরিঘাট অবস্থিত (বর্তমানে কুশিয়ারা নদীর ওপর ব্রিজ নির্মিত হয়েছে)। শেওলা ঘাট বিয়ানীবাজার থেকে ৮ কিলােমিটার উত্তরে জুন মাসের শেষ দিকে বিয়ানীবাজার থানার শেওলা ফেরিঘাটে আক্রমণ চালান ৪ নম্বর সেক্টরের মুক্তিযােদ্ধারা অতর্কিত হামলা প্রতিহত করতে যাওয়ার আগেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে ১২জন পাকিস্তানি সেনা তাদের গােলাবারুদ ও অস্ত্র হস্তগত হয়। মুক্তিযােদ্ধাদের হাতে শত্রুর কয়েকটি মেশিনগানও দখলে আসে তাদের। বন্দি করা হয় পাকিস্তান ফ্রন্টিয়ার রেঞ্জার্সের ১জন সৈন্যকে।

সূত্রঃ    মুক্তিযুদ্ধে সামরিক অভিযান – দ্বিতীয় খন্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!