You dont have javascript enabled! Please enable it!

আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা বিষয়ে কতিপয় ভ্রান্ত ধারনা ও প্রকৃত ইতিহাস

ভুলঃ মওলানা ভাসানী আওয়ামী মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠা করেন এবং নামটি তিনিই দিয়েছিলেন।
শুদ্ধঃ হোসেন শহীদ সোহরাওয়ারদী আওয়ামী মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠা করেন এবং নামটি তিনিই পছন্দ করেছিলেন। তার অনুগতরা পশ্চিম পাকিস্তানের সীমান্ত প্রদেশে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠার আগেই আওয়ামী মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠা করেন।

ভুলঃ অনেকেই বলে থাকেন ২৩ জুন ঢাকায় অল পাকিস্তান আওয়ামী লীগ জন্ম লাভ করে।
শুদ্ধঃ ২৩ জুন ঢাকায় পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগ জন্মলাভ করে।


নোটঃ অল পাকিস্তান আওয়ামী লীগের জন্ম ২৪ জানুয়ারী ১৯৫০। পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ, সীমান্ত প্রদেশ কেন্দ্রিক পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ এবং পাঞ্জাবের নবাব ইফতেখার হোসেন মামদুতের জিন্নাহ আওয়ামী মুসলিম লীগ তিনটি দল ও সোহরাওয়ারদীর নিজের জিন্নাহ আওয়ামী লীগ সমন্বয়ে অল পাকিস্তান আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা লাভ করে। এ দলটি সীমান্ত প্রদেশ প্রাদেশিক সংসদে বিরোধী দল ছিল। পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ এর নেতা পীর মানকী শরীফের সাথে শেখ মুজিব ১৯৫২ সালে চীন সফর করেছিলেন। তিনি ছিলেন সে দলের দলনেতা।
প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে আরও অনেক নেতা এ দলে যোগদানের কথা ছিল। তারা হলেন শেরে বাংলা ফজলুল হক, মোহাম্মদ আলী বগুড়া, ফজলুর রহমান।
হোসেন শহীদ সোহরাওয়ারদী নিজে মুসলিম লীগ ছাড়েননি তাকে বাধ্য করা হয়েছিল দল ত্যাগে। তিনি পাকিস্তানে ফিরে আসতে বিলম্ব করেছিলেন। তার গণপরিষদ সদস্যপদ বাতিল করার ৪ দিন পর তিনি পাকিস্তান গমন করেন। তাকে তার আসনে উপ নির্বাচন করে আসতে বলা হয়েছিল। দলের সমর্থনের বাহিরে তিনি জয়লাভ করতে ব্যার্থ হয়েছিলেন। তখনকার উপনির্বাচন ছিল পরোক্ষ। পরিষদ সদস্যরাই ছিলেন ভোটার। তাকে লাহোরে আবাস এবং আইন ব্যাবসায়ে বাধাগ্রস্থ করা হয়েছিল। তিনি করাচীতে তার আবাস বেছে নেন। দল গঠনের পূর্বে তিনি যতবার পূর্ব পাকিস্তান এসেছিলেন প্রায় প্রত্যেকটি সফর বাধাগ্রস্থ করা হয় এমনকি কয়েকবার বহিস্কার করা হয়।
সোহরাওয়ারদী অনুগতরা দেশ বিভাগের পর মুসলিম লীগের ঢাকাস্থ মোগলটুলী অফিস কাম বিশ্রামাগার দখল করে উপদলীয় কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল। এ অফিসটি নিজ খরচে চালাতেন লীগ কর্মী শওকত। এ অফিসে ভাসানীর আসা যাওয়া ছিল না। ভাসানীর সাথে যোগাযোগ ছিল ইয়ার মোহাম্মদ খানের। তিনি তার বাসাকে কেন্দ্র করে ঢাকায় তিনি দলীয় কার্যক্রম চালাতেন। দল গঠনের পর অফিস করা হয় এ ভবনেরই নীচ তলায়।
২৯ বছর বয়সী শেখ মুজিবুর রহমানের শক্তি ও উত্থান ছিল হোসেন শহীদ সোহরাওয়ারদীকেন্দ্রিক যাকে বলা হত তার রাজনৈতিক পুত্র।
প্রথম কমিটির অধিকাংশ সদস্য মনোনয়ন দেন মওলানা ভাসানী যাদের দল গঠনে বা বিকাশে তেমন কোন ভুমিকাই ছিল না অনেকেই দল ত্যাগ করেছিলেন। কেউ পত্রিকায় বিবৃতি দিয়ে সরে পড়েছিলেন।
আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠায় দলের কার্যক্রমে অকাতরে অর্থ ব্যায় করেছিলেন প্রতিষ্ঠাকালীন অর্থ সম্পাদক ইয়ার মোহাম্মদ খান। তিনি অনেক নেতার ঢাকার খরচ বহন করতেন।
১৯৪৯ সনের ২৪ এপ্রিল শেখ মুজিব গ্রেফতার হন দল গঠন বাধাগ্রস্থ করার জন্যই এ গ্রেফতার করা হয়েছিল। এ গ্রেফতার কালীন সময়ে আরও অনেক নেতাকে হয়রানী এবং প্রলোভন দেখানো হয় ফলে পূর্ণ শক্তির আওয়ামী লীগ গঠন সম্ভব হয়নি।
প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে আতাউর রহমান খানের কোন রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা ছিল না। তার কোর্ট চেম্বার প্রতিষ্ঠাকালীন অস্থায়ী অফিস হিসেবে ব্যাবহার আর আইনজীবী খ্যাতি তাকে উচ্চপদে আসীন করে।

পীর মানকি শরীফ, সভাপতি পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ। মার্চ ১৯৪৯

ইয়ার মোহাম্মদ খান

ওসমান আলী খান

পশ্চিম পাকিস্তানে আওয়ামী লীগের পথ সভা সোহরাওয়ারদি ভাষণ দিচ্ছেন

শওকত আলী খান

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!