You dont have javascript enabled! Please enable it!
শহীদ সােহরাওয়ার্দীর ঢাকা আগমনঃ ১৪৪ ধারা জারি
১৯৬৭ সালে জনাব জুলফিকার আলী ভুট্টোকে তথ্যমন্ত্রী খাজা শাহাবুদ্দিনের প্রকাশ্য মন্তব্য শুনিতে হইল যে, তিনি পাকিস্তানের নাগরিক নহেন। সরকারী দলের সৃষ্ট এই ধরনের ঘােলাটে রাজনৈতিক পরিস্থিতিতেই জনাব শামসুল হকের কারামুক্তি ঘটে। ফলে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ কর্মীদের মনে নব বলের সঞ্চার হয়।  নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে জনাব শামসুল হকের পক্ষে টাঙ্গাইল উপনির্বাচনের মামলা পরিচালনার জন্য জনাব সােহরাওয়ার্দী ১৯শে জুলাই (১৯৫০) ঢাকা আগমন করেন।বিমানবন্দর হইতে বিখ্যাত ব্যবসায়ী আরফান খানের তাঁতীবাজারের বাসভবনে পৌছিবার পরই মালপাত্র রাখিয়া কিছুক্ষণের মধ্যে আমরা জনাব সােহরাওয়ার্দীর সমভিব্যাহারে ঢাকার আরমানিটোলা ময়দানে আয়ােজিত জনসভায় যােগ দিতে উপস্থিত হই। এই সময়ে পুলিশ সুপারিন্টেন্ডেন্ট ১৪৪ ধারা জারির আদেশ জনাব সােহরাওয়ার্দীকে দেখাইলেন। ফলে সমবেত লক্ষাধিক লােককে আশাহত হইয়া বাড়ী ফিরিতে হইল। জনাব সােহরাওয়ার্দী জীপে আরমানিটোলা ময়দানে চতুর্দিকে ঘুরিয়া জনতার অভিনন্দন গ্রহণ করিলেন এবং জনতাকে এই মর্মে আশ্বাস দিলেন যে, ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার করা হইলে তিনি পুনরায় ঢাকা আসিবেন ও জনসভায় বক্তৃতা করিবেন। সেই মর্মস্পর্শী দৃশ্য আমার চোখে আজও সজীব। চিন্তা করুন, তখনকার দিনে বিরােধী দলীয় রাজনীতি কত কঠিন ছিল। নূরুল আমিন সরকার জনাব সােহরাওয়ার্দীর উপর ১৯৫০ সালের ১৯শে জুলাই এই মর্মে নােটিশ জারি করিলেন যে, আইনপেশাগত কার্যের বহির্ভুত কোন রাজনৈতিক ক্রিয়াকাণ্ডে যেন তিনি অংশগ্রহণ না করেন এবং ২৮শে জুলাইয়ের মধ্যে নির্বাচনী মামলার কাজ শেষ হইবামাত্র তাঁহাকে পূর্ব পাকিস্তান ত্যাগ করিতে হইবে। তদানীন্তন লীগ শাহীর দাপটে জনাব সােহরাওয়াদরিই যখন এমনি অবস্থা, তখন অন্যদের অবস্থা সহজেই অনুমেয়।
সূত্রঃ জাতীয় রাজনীতি ১৯৪৫ থেকে ১৯৭৫ অলি আহাদ
ছবি – ফাইল ফটো
error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!