দাগাব্লাডেট | নরওয়ে, ৮ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১ | সম্পাদকীয় – পূর্ব বাঙলার অধিবাসীদের সাহায্য করুন
পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের উপর যে আঘাত করা হয়েছে সেটি বিশ্বব্যাপী এখনো তেমনভাবে অনুভূত হয়নি। বছরের শেষে ১০ মিলিয়ন মানুষ দেশ ছেড়েছেন এবং প্রতিবেশী দেশ ভারত, যেখানে উদ্বাস্তুরা অবস্থান করছে সেখানে তারা প্রচুর পুষ্টির সমস্যার সম্মুখীন।
যারা সেখানে কাজ করছেন তারা বলছেন যে এখন পর্যন্ত ১০০০০০ শিশু খাদ্যের ওভাবে মৃত্যুর ঝুঁকিতে আছে। যদি দ্রুত খাদ্যের ব্যাবস্থা না করা হয় তবে তারা মৃত্যু মুখে ঝুঁকে পড়বে। পশ্চিমবঙ্গের ভারতীয়রা প্রায় ৩ মিলিয়ন শরণার্থীর জন্য ক্যাম্পে যায়গা করেছে। এই ভারতীয় রাজ্যে ৫ মিলিয়ন শরণার্থী এসেছে। এর অর্থ হচ্ছে ২ মিলিয়নেরও বেশি লোক গ্রামাঞ্চলে রাস্তায়, শহরে এবং অন্যান্য স্থানে প্যাভআউটগুলিতে বসবাস করছে যেখানে একটু থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
ক্ষুধা ছাড়াও কলেরা এখনো আছে। মহামারী একটি নির্দিষ্ট মাত্রায় স্থিত হয়েছে তবে রোগবালাই এখনো যারা দুর্বল রোগপ্রতিরোধক্ষমতাসম্পন্ন ওঁ অপুষ্টিতে ভুগছে তাদের আক্রমণ করছে। সবচেয়ে কম রোগপ্রতিরোধক্ষমতাসম্পন্ন হল শিশুরা। এদের প্রায় ১০০০০০ জন সরাসরি মৃত্যুর ঝুঁকিতে আছে। প্রায় ৩০০০০০ জন শিশু অপুষ্টিতে আছে।
এই পরিসংখ্যানগুলিতে একটি ট্রাজেডি রয়েছে যা বাইরের লোকের পক্ষে বোঝা সম্ভব না। এটির বিস্তার এত বিশাল যে তা বায়াফ্রার ঘটনাকেও ছাড়িয়ে যায়।
এই ত্রাণ কাজ এতদূর পর্যন্ত যথেষ্ট হয়েছে কিন্তু তা পর্যাপ্ত নয়। প্রায় অর্ধ বিলিয়ন নরওয়েজিয়ান ক্রোনারের মত সাহায্য প্রদান করা হয়েছে। এতে বোঝা যায় এই ট্র্যাজেডির বিশালতা। এবং এটা চাহিদা থেকে অনেক নগণ্য। এই মাসের শেষে, ইউএন এর রেফিউজি কমিশনকে আরো ৭০০ মিলিয়ন ক্রোনার দিতে হবে যদি এটাকে সচল রাখতে হয়।
এটি এই অসম্পূর্ণ ব্যাকগ্রাউন্ডের ভিত্তিতে যে ৫ টি নরওয়েজীয় রিলিফ সংস্থা নরওয়েতে তাদের বৃহৎ সংগ্রহের প্রচারাভিযান শুরু করেছে এবং ২০ শে সেপ্টেম্বর নির্বাচন দিবসে, ১০০০০ স্বেচ্ছাসেবক নির্বাচনী এলাকার বাইরে থাকবে এবং ৮০ শতাংশ ভোটদাতারা কাছে সাহায্য চাইবে যারা সেদিনের নির্বাচনে ভোট দিতে আসবে।