You dont have javascript enabled! Please enable it!

ভাষা আন্দোলনে সােহরাওয়ার্দী, ফজলুল হক ও শেখ মুজিব
:::::::::::::::::::::::
বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনে দুই জ্যেষ্ঠ নেতা ফজলুল হক ও সােহরাওয়ার্দীর ভূমিকা ছিল অনুজ্জ্বল। করাচিতে বসে সােহরাওয়ার্দী ঢাকার আন্দোলনের গতিপ্রকৃতি ধরতে পারেননি। একুশে ফেব্রুয়ারিতে পুলিশের বাড়াবাড়ির নিন্দা জানিয়ে তিনি একটা বিবৃতি দিয়েছিলেন। একই সঙ্গে উর্দু রাষ্ট্রভাষা হােক, এটা তিনি চেয়েছেন বলে পত্রিকায় খবর ছাপা হয়েছিল। দৈনিক আজাদ-এ সােহরাওয়ার্দীর সমালােচনা হয়। শেখ মুজিব সােহরাওয়ার্দীর সঙ্গে দেখা করতে করাচি যান, সেখান থেকে হায়দরাবাদ। রাষ্ট্রভাষা সম্পর্কে সােহরাওয়ার্দীর নামে যে খবর পত্রিকায় ছাপা হয়েছে, তার প্রসঙ্গ উঠতেই সােহরাওয়ার্দী বললেন, ‘এ কথা তাে আমি বলি নাই। উর্দু ও বাংলা দুইটা হলে আপত্তি কী? এ কথাই বলেছিলাম।’ শেখ মুজিব তাকে বললেন, ‘সেসব কথা কোনাে কাগজে পরিষ্কার করে ছাপানাে হয় নাই। পূর্ব বাংলার জনসাধারণ আপনার মতামত না পেয়ে খুব দুঃখিত হয়েছে।
সােহরাওয়ার্দীকে তিনি অনুরােধ করলেন, তাঁকে (সােহরাওয়ার্দীকে) লিখে দিতে হবে যে উর্দু ও বাংলা দুইটাই রাষ্ট্রভাষা হিসেবে তিনি সমর্থন করেন। কারণ, অনেক ভুল-বােঝাবুঝি হয়ে গেছে। মুসলিম লীগ এবং তথাকথিত প্রগতিবাদীরা প্রপাগান্ডা করছেন তাঁর বিরুদ্ধে তিনি বললেন, “নিশ্চয়ই লিখে দেব, এটা তাে আমার নীতি ও বিশ্বাস। তিনি লিখে দিলেন। এর পরপরই ঢাকায় একটি লিফলেট বিলি করা হয়। বাংলা ভাষার সমর্থনে অনেক বিশিষ্টজনের স্বাক্ষর ছিল এতে। স্বাক্ষরদাতাদের মধ্যে ফজলুল হক ও সােহরাওয়ার্দীর নামও ছিল। ফজলুল হক এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, তাঁর বিরােধীরা নুরুল আমিন এবং তার মধ্যে সম্পর্কে ফাটল ধরাতে চাইছে। তিনি সম্ভবত পূর্ব পাকিস্তান সরকারের অ্যাডভােকেট জেনারেলের পদে থাকা অবস্থায় কোনাে ঝামেলায় পড়তে চাননি। কিন্তু শিগগিরই তিনি বুঝতে পারলেন, নুরুল আমিনের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে ভবিষ্যতে তার কোনাে লাভ হবে না। সাধারণ নির্বাচন আসন্ন। তিনি তার পুরােনাে কৃষক-প্রজা পার্টিকে কৃষক-শ্রমিক পার্টি (কেএসপি) নামে পুনরুজ্জীবিত করলেন।
সূত্রঃ আওয়ামী লীগ-উত্থান পর্ব-১৯৪৮-১৯৭০ – মহিউদ্দিন আহমদ

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!