You dont have javascript enabled! Please enable it!
হিয়াকুর যুদ্ধ
মহালছড়ির পতনের পর পাকিস্তানি সেনারা খাগড়াছড়ির দিকে অগ্রসর না হয়ে গুইমারা হয়ে রামগড়ের দিকে এগােতে থাকে। প্রথমে মুক্তিযােদ্ধারা খাগড়াছড়ি ছেড়ে গুইমারায় ডিফেন্স নেয়। পাকিস্তানি সেনাদের অন্য ১টি বড়াে দল করেরহাটহিয়াকু হয়ে রামগড়ের দিকে এগােতে থাকলে গুইমারা থেকে মুক্তিবাহিনীর ১টি দল মেজর জিয়ার নির্দেশে রামগড়ে পৌঁছায়। অন্যদিকে, ১২০ মিলিমিটার মর্টারসহ আধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত পাকিস্তানি বাহিনীর ১টি ব্যাটালিয়নের তৃতীয় দলটি ফটিকছড়ি-নারায়ণহাট হয়ে হিয়াকুর দিকে এগােয়। ২৯ এপ্রিল ভাের থেকে পাকিস্তানি বাহিনী হিয়াকুতে অবস্থিত মুক্তিবাহিনীর ঘাঁটির ওপর মর্টারের গােলা বর্ষণ করতে থাকে। হিয়াকুতে মুক্তিবাহিনীর প্রতিরক্ষা এলাকার সামনে ছিল খােলা মাঠ এবং দুই পাশে ছিল ঘন। বনাচ্ছাদিত ছােটো ছােটো পাহাড়। বােমা বর্ষণের ছত্রচ্ছায়ায় এ প্রতিরক্ষা অবস্থানের দিকে পাকিস্তানি বাহিনীর এগােনাের চেষ্টা মুক্তিযােদ্ধাদের কৌশল ও বিক্রমপূর্ণ পালটা হামলার মুখে ব্যর্থ হয়। তাদের সৈন্য শক্তি ছিল ২ কোম্পানি। পাকিস্তানি বাহিনী নতুন উদ্যমে এ প্রতিরক্ষা অবস্থানের ডান ও বাম, দুই দিক থেকে আবার আক্রমণ পরিচালনা করলে ২ ঘন্টাব্যাপী যুদ্ধ চলে। পাকিস্তানিদের আক্রমণের তীব্রতা বৃদ্ধি পেলে অবস্থান টিকিয়ে রাখা অসম্ভব হওয়ায় মুক্তিযােদ্ধারা হিয়াকু ছেড়ে চিকনছড়ায় নতুন প্রতিরক্ষা অবস্থান গ্রহণের জন্য পশ্চাদপসরণ করেন। ক্যাপটেন রফিক, ক্যাপটেন অলি, ক্যাপটেন এজাজ ও লে, মাহফুজ এবং ২ কোম্পানি সৈনিক এ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় খণ্ডযুদ্ধ
১৭ এপ্রিল পাকিস্তানি সেনাদের সাথে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ক্যাপটেন মুসলিম উদ্দিনের নেতৃত্বাধীন মুক্তিযােদ্ধাদের সংঘর্ষ হয়। এখানে মুক্তিযােদ্ধাদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।
চিকনছড়া ও বাগানবাড়ির যুদ্ধ
৩০ এপ্রিল পাকিস্তানি বাহিনী চিকনছড়া আক্রমণ করে। জনবল ও গােলাবারুদের অভাবে মুক্তিযােদ্ধাদের পক্ষে এখানে কোনাে প্রতিরােধ গড়ে তােলা সম্ভব হয় নি। তারা পিছু হটে বাগানবাড়িতে অবস্থান নিলে সেখানেও ১ মে পাকিস্তানি বাহিনী আক্রমণ করে। অবশেষে মুক্তিবাহিনী রামগড়ের অন্য যােদ্ধাদের সাথে যােগ দেন। 

সূত্রঃ   মুক্তিযুদ্ধে সামরিক অভিযান – প্রথম খন্ড

 

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!