You dont have javascript enabled! Please enable it!

২৩ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১

  • ২নং সেক্টরে মুক্তিবাহিনীর এক প্লাটুন যোদ্ধা ও ১৬ জন গেরিলা লে. ইমামুজ্জামানের নেতৃত্বে মর্টার ও রকেট লাঞ্চারের সাহায্যে পাকহানাদার বাহিনীর গোবিন্দমাণিক্য দিঘী ঘাঁটির ওপর অতর্কিত আক্রমণ চালায়। এই আক্রমণে পাকসেনা ঘাঁটির কযেকটি বাঙ্কার ধ্বংস হয় এবং ১৫ জন পাকসেনা নিহত ও ১০ জন আহত হয়। এক ঘণ্টা যুদ্ধের পর মুক্তিযোদ্ধারা নিজেদের অবস্থানে নিরাপদে ফিরে আসে।
  • মুক্তিবাহিনীর এক প্লাটুন যোদ্ধা দেওতলীতে অ্যামবুশ পাতে। পাকবাহিনীর একটি দল কুমারসাইল মসজিদের কাছে এলে মুক্তিযোদ্ধারা তাদের ওপর আক্রমণ চালায়। এতে পাকবাহিনীর ৮ জন সৈন্য নিহত ও ১০ জন আহত হয়।
  • মুক্তিবাহিনী মানিকগঞ্জের দৌলতপুর থানায় পাকবাহিনীর অবস্থানের ওপর আক্রমণ চালায়। এতে মুক্তিযোদ্ধারা ৭৫ জন পুলিশ ও রাজাকারকে বন্দী করে এবং বিপুল পরিমাণ অস্ত্রশস্ত্র ও গোলাবারুদ দখল করে।
  • ৬নং সেক্টরে মুক্তিবাহিনী পঞ্চবিবির কাছে পাকহানাদারদের বিরুদ্ধে এক দুঃসাহসিক অভিযান চালায়। এতে ৬ জন পাকসৈন্য ও ২ জন রাজাকার নিহত হয়।
  • জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ‘বাংলাদেশ প্রশ্ন’ উত্থাপনের জন্য ভারত সরকার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।
  • সপ্তাহব্যাপী পশ্চিম পাকিস্তান সফরশেষে ফিরে আসার আগে নূরুল আমিন সাংবাদিকদের জানান, ‘পাকিস্তানের সংহতি ও অখণ্ডতা সম্পর্কে নতুন আস্থা নিয়ে দেশে ফিরে যাচ্ছি।’
  • শিক্ষামন্ত্রী আব্বাস আলী খানের সঙ্গে এম.আর. এ রেজভীর নেতৃত্বে মোহাম্মদপুর, মিরপুর ও পুরনো ঢাকায় বিহরী নেতারা সাক্ষাৎ করেন।
  • মতিউর রহমান নিজামী ইসলামী ছাত্রসংঘ আয়োজিত অনুষ্ঠানে ঘোষণা করেন, মাদ্রাসা ছাত্ররা দেশ রক্ষায় একযোগে এগিয়ে এসেছে। কারণ তারা ইসলামকে ভালবাসে। পাকিস্তানকে ভালবাসে। অথচ এই মাদ্রাসা ছাত্ররাই সবচাইতে অবহেলিত। পক্ষান্তরে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা ভোগ করা সত্ত্বেও পাকিস্তানকে ধ্বংস করার ব্যাপারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে।
  • ৭নং সেক্টরে মুক্তিবাহিনী কাটাখালী বিদ্যুৎ কেন্দ্রে অবস্থানরত পাকবাহিনীর ওপর ৩ ইঞ্চি মর্টারের সাহায্যে ব্যাপক আক্রমণ চালায়। এই আক্রমণে পাকবাহিনীর ২ জন সৈন্য নিহত ও ১০ জন আহত হয়।
  • ২নং সেক্টরে সুবেদার গোলাম আম্বিয়ার নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধা দল শ্রীপুর এলাকায় পাকহানাদরদের অ্যামবুশ করে। এই অ্যামবুশে পাকহানাদার বাহিনীর ২ জন সৈন্য নিহত ও কয়েকজন আহত হয়।
  • পাকবাহিনীর দুই কোম্পানী সৈন্য কুষ্টিয়ার তেতুলবাড়িয়া গ্রামের আওয়ামী লীগ দলীয় চেয়ারম্য নের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিলে মুক্তিবাহিনী তাদের ঘিরে ফেলে। মুখোমুখি সংঘর্ষে পাকহানাদর বাহিনীর ৩ জন সৈন্য নিহত ও ৫ জন গুরুতরভাবে আহত হয়। মুক্তিযোদ্ধারা প্রচুর অস্ত্রশস্ত্র ও গোলাবারুধ দখল করে।
  • মুক্তিবাহিনীর ৬০ জন গেরিলার একটি দল ভারতের মেঘালয়ের ক্যাম্প থেকে গেরিলা ট্রেনিং শেষে চারটি নৌকায় বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের পথে শালদা নদীতে পাকসেনাদের দ্বারা আক্রান্ত হয়। এই সংঘর্ষে মুক্তিবাহিনীর দুটি নৌকা পানিতে ডুবে যায়। এতে ৪ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ও একজন মুক্তিযোদ্ধা আহত হন।
  • ৮নং সেক্টরে মুক্তিবাহিনীর কোটা নামক এলাকায় অবস্থানরত পাকসেনাদের ওপর আক্রমণ চালায়। এই আক্রমণে পাকবাহিনীর ৪ জন সৈন্য নিহত হয়। মুক্তিযোদ্ধারা কোন ক্ষতি ছাড়াই নিরাপদে নিজেদের অবস্থানে ফিরে আসে।
  • পিপিপি প্রধান জুলফিকার আলী ভু্েটা করাচীতে ঘোষণা করেন, তাঁর দল পূর্ব পাকিস্তানের উপনির্বাচনে অংশ নেবে। তিনি জানুয়ারিরে আগেই দেশে পূর্ণ সংসদীয় গণতন্ত্র পুনঃ প্রতিষ্ঠার দাবি জানান।
    তিনি বলেন, জাতীয় পরিষদের অধিবেশন আহ্বান করে একই সাথে কেন্দ্রে ও প্রদেশসমূহে ক্ষমতা জনগণের প্রতিনিধিদের কাছে হস্তান্তর করতে হবে।
  • গভর্নর ডা. এ.এম মালিকের সভাপতিত্বে সেক্রেটারিয়েটের কেবিনেট কক্ষে মন্ত্রীপরিষদের প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। নবনিযুক্ত মন্ত্রীরা তাদের পাকিস্তান প্রীতির নিদর্শন হিসেবে বেতনভাতা কমিয়ে নেয়।
  • গভর্নর ডা. এ. এম. মালিক সংবাদপত্র ও বার্তা প্রতিষ্ঠানের সম্পাদকদের সঙ্গে এক বৈঠকে মিলিত হন। বৈঠকে প্রচারণার কৌশল নির্ধারণ করে দেয়া হয়।
  • Source: Bangladesh Liberation War Museum
error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!