২০ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১
- ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী লুধিয়ানায় এক সমাবেশে বলেন, যেসব বিদেশী সরকার বাংরাদেশ সমস্যাকে পাকিস্তানের আভ্যন্তরীণ বিষয় বলে অভিহিত করছেন, তারা পক্ষান্তরে পাকিস্তান সরকারের অগণতান্ত্রিক কার্যক্রম ও গণহত্যার নীতিকে সমর্থন করছেন। তিনি বলেন, ভারত সরকার চান তার দেশে অবস্থানকারী বাংলাদেশের শরণার্থীরা মুক্ত স্বদেশে ফিরতে আগ্রহী।
- ১নং সেক্টরে মুক্তিবাহিনী সুবেদার রহমান আলীর নেতৃত্বে পাকবাহিনীর চম্পকনগর বিওপি আক্রমণ করে। কিছুক্ষণের এ যুদ্ধে পাকবাহিনীর ৩ জন সৈন্য হতাহত হয়। মুক্তিযোদ্ধারা কোনরূপ ক্ষতি ছাড়াই নিজেদের অবস্থানে ফিরে আসে।
- মুক্তিবাহিনীর গেরিলা দল চট্টগ্রামÑকুমিল্লা সড়কে জগন্নাথদীঘির কাছে বাজানকারা সেতুটি উড়িয়ে দিয়ে সেতুর উত্তরে ১০ জন গেরিলা ও একটি নিয়মিত বাহিনী পাকসেনাদের অপেক্ষায় অ্যামবুশ পাতে। বাজানকারা সেতু ধ্বংসের সংবাদ পেয়ে ফেনী থেকে পাকবাহিনীর একটি শক্তিশালী দল সেতুর দিকে অগ্রসর হয়। পাকসেনারা অ্যামবুশের আওতায় এলে মুক্তিযোদ্ধারা তাদের ওপর প্রচণ্ড আক্রমণ চালায়। এতে পাকবাহিনীর একজন অফিসারসহ ২৫ জন সৈন্য নিহত হয়। মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণের মুখে পাকসেনারা ছাত্রভঙ্গ হয়ে ফেনীর দিকে পালিয়ে যায়।
- ২নং সেক্টরে মুক্তিবাহিনী সুবেদার আলী আকবর পাটোয়ারীর নেতৃত্বে পাকসেনা ও রাজাকারদের রামগঞ্জ অবস্থানের ওপর আক্রমণ চালায়। এই আক্রমণে ১৪ জন পাকসেনা নিহত ও ১৭ জন আহত হয়।
- ‘দাবানল’ পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয় : মালিকনগর এলাকায় প্রায় দুই কোম্পানি পাকসৈন্যের সাথে মুক্তিবাহিনীর গোলা বিনিময়ে ২ জন পাকসৈন্য নিহত হয়।
- ‘মুক্তিযুদ্ধ’ পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয় : রংপুর জেলার ডিমলা থানার অন্তর্গত সুটিবাড়ি হাটের পশ্চিম জোড়জিগা গ্রামে মুক্তিবাহিনীর অতর্কিত আক্রমণে ৯ জন পাকসেনা নিহত হয় এবং কয়েকজন কোন প্রকারের অস্ত্রশস্ত্র ফেলে প্রাণ বাঁচায়। ওই থানার বালাপাড়া গ্রামে মুক্তিবাহিনীর পেতে রাখা মাইনে ৭ জন পাকসেনা নিহত হয়। পরে বর্বর পাকসৈন্যরা বালাপাড়া গ্রাম সম্পূর্ণভাবে জ্বালিয়ে দেয়।
- পূর্ব পাকিস্তানের শ্রম, সমাজকল্যাণ ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রী এ. এস. এম সোলায়মান ঢাকায় বলেন, পাকিস্তানের বীর সেনাবাহিনী শত্র“কে (মুক্তিযোদ্ধা) নির্মূল করে দিয়েছে। শত্র“রা প্রিয় মাতৃভূমি পাকিস্তান ভাঙতে চেয়েছিল। কোন শক্তিই পাকিস্তান ভাঙতে পারবে না।
- সৈয়দ আজিজুল হকের বাসায় পিডিপি’র বিশিষ্ট নেতাদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে উপনির্বঅচন পিছিয়ে দেবার ব্যাপারে নূরুল আমিনের দেয়া বিবৃতিকে অনুমোদন করা হয়। একই দাবী জানান কাইয়ুম মুসলিম লীগের সাধারণ সম্পাদক খান এ. সবুর।
- Source: Bangladesh Liberation War Museum