You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.01.26 | ২৬ জানুয়ারি ১৯৭১ - সংগ্রামের নোটবুক

২৬ জানুয়ারি, ১৯৭১

  • মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী ব্রাহ্মণবাড়িয়ার লোকনাথ ময়দানে অনুষ্ঠিত এক বিরাট জনসভায় বক্তৃতা দিতে গিয়ে বলেন, একমাত্র লাহোর প্রস্তাবের ভিত্তিতে সার্বভৌম পূর্ব পাকিস্তান গঠনের মাধ্যমেই বাঙালিদের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সকল প্রকার শোষণের অবসান হতে পারে। এর জন্য অবিলম্বে ৭ কোটি পূর্ব পাকিস্তানির আন্দোলন শুরু করা প্রয়োজন। তিনি বলেন, ১৯৪৭ সাল থেকে তিনি লাহোর প্রস্তাব বাস্তবায়নের দাবি জানিয়ে আসছেন। এতে পূর্ব বাংলা স্বাধীন রাজ্য গঠনের প্রস্তাব ছিল বলে তিনি উল্লেখ করেন। নিজেদের মুক্তিলাভের জন্য তিনি পূর্ব পাকিস্তানের জনগণকে সর্বস্ব ত্যাগের জন্য প্রস্তুত থাকার আহবান জানান। শাসক শ্রেণীকে জনগণের মনোভাব উপলব্ধি এবং জনগণের ইচ্ছার প্রতি নতি স্বীকার কারার আহবান জানান। তিনি আরও বলেন, বৃটিশ সরকার এদেশ থেকে হাত গুটিয়ে নিলেও এখনও এদেশে শোষণের অবসান হয়নি, বরং জনগণ এখন অন্য ধরনের সাম্রাজ্যবাদ দ্বারা শোষিত হচ্ছে। শোষণের ধারা ও তার পরিণতি সম্পর্কে জনগণের পরিস্কার ধারণা সৃষ্টি হয়েছে এবং জনগণের মুক্তি আন্দোলন ঠেকাতে পারে এমন কোন শক্তি পৃথিবীতে নেই।
  • বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে নিখিল পাকিস্তান স্বর্ণকার ও স্বর্ণ ব্যবসায়ী সমিতির এক প্রতিনিধি দল সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাৎকালে প্রতিনিধিদল স্বর্ণকার ও স্বর্ণব্যবসায়ীদের বিভিন্ন দাবি-দাওয়া সম্পর্কিত একটি স্মারকলিপি বঙ্গবন্ধুর কাছে পেশ করেন। তারা স্বর্ণের ওপর ধার্যকৃত ১০ ভাগ বিক্রয় করের দরুণ উদ্ভুত পরিস্থিতি ব্যাখ্যাকালে জানান, এর ফলে ইতিমধ্যেই বহু স্বর্ণালঙ্কার প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে ৫০ লক্ষ লোক বেকার হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন। এই প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব করেন সমিতির আহবায়ক চৌধুরী খুরশীদ আহমদ নাসের, সাধারণ সম্পাদক নাসের আহমদ নাসের।
  • করাচীতে প্রেসিডেন্টের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা এম. এম. আহম্মদ করাচীস্থ শিল্প ও বণিক সমিতির সভায় বলেন, দেশের রফতানি বাণিজ্যে সহায়তা করার জন্য শীঘ্রই আমদানি রফতানি ব্যাংক ধরনের একটি অত্যন্ত বিশেষজ্ঞ ব্যাংক প্রতিষ্ঠান স্থাপন করা হবে। সভায় এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই প্রতিষ্ঠানটি সরকারি খাতে হবে কী না তা এ মুহূর্তে তার পক্ষে বলা সম্ভব নয়। অপর এক প্রশ্নকর্তাকে তিনি বলেন, এই সিদ্ধান্তটি একটি স্বতন্ত্র সিদ্ধান্ত এবং সম্প্রতি ঋণের ব্যাপারে যে বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়েছে তার সাথে এর কোন সম্পর্ক নেই। অপর এক খবরে প্রকাশ, এম. এম. আহম্মদকে উক্ত সভায় জনৈক সদস্য মুদ্রামান হ্রাস করার সম্ভাবনা আছে কি না জিজ্ঞাসা করলে তিনি এ সম্পর্কে মন্তব্য করতে অস্বীকার করেন।
  • Source: Bangladesh Liberation War Museum