বাঙলাদেশের শরণার্থীদের প্রসঙ্গে মন্ত্রী প্রশ্নবাণে জর্জরিত অধ্যাপক মুখাজির প্রশ্নের জবাব সরকারকে দিতে হবে : স্পীকারের নির্দেশ
নয়াদিল্লী, ১০জুন (ইউএনআই) আজ লােকসভায় প্রশ্নোত্তর কালে কমিউনিস্ট সদস্য অধ্যাপক হীরেন মুখাজি জানতে চান যে, ভারত বাঙলাদেশ-এর প্রসঙ্গ জাতি সংঘের নিরাপত্তা পরিষদের তুলতে পারল না কেন? স্পীকার শ্রীধীলন তখন সরকারকে নির্দেশ দেন যে পরে তাদের অধ্যাপক মুখাজির প্রশ্নের জবাব দিতে হবে।
লােকসভায় তখন বাঙলাদেশ থেকে আসা শরণার্থীদের প্রসঙ্গ নিয়ে প্রশ্নোত্তর চলাচল এবং জবাব দিচ্ছিলেন পুনর্বাসন উপমন্ত্রী শ্রীবালগােবিন্দ বর্মা।
অধ্যাপক মুখাজি বৃটিশ পার্লমেন্টের কার্যবিবরণীর উল্লেখ করে বলেন, বৃটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী শ্রী হিউম নাকি বলেছেন, এই প্রশ্নটি নিরাপত্তা পরিষদে পেশ করার দায়িত্ব ভারত বা পাকিস্তানের। তিনি জানতে চান যে, সমস্যাটি একটি অসম্ভব পরিস্থিতির রূপ পরিগ্রহ করা সত্ত্বেও ভারত তা করছেন না কেন?
যেহেতু বিষয়টি পররাষ্ট্র দপ্তরের সঙ্গে সম্পর্কিত তাই স্পীকার পুনর্বাসন উপমন্ত্রীকে নির্দেশ দেন যে, তিনি যেন বিষয়টি পররাষ্ট্র দপ্তরের কাছে রাখেন পরে এক সময় তার জবাব দেবার জন্য।
তারপর মূল প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে পুনর্বাসন উপমন্ত্রী বলেন যে, সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলি থেকে বাঙলাদেশের শরণার্থীদের কতকাংশকে সরাবার ব্যাপারে তারা বিভিন্ন রাজ্যের সঙ্গে সংযােগ রাখছেন। ইতিমধ্যেই তার বিভাগের একটি দপ্তর কলকাতায় ভােলা হয়েছে।
তিনি বলেছেন, এ পর্যন্ত ৫৩ লক্ষ শরণার্থী ভারতে এসেছে এবং প্রতি দিন বিভিন্ন রাস্তা দিয়ে প্রায় ১ লক্ষ নতুন আসছে। কেন্দ্রীয় সরকার মধ্যপ্রদেশে দেড় লক্ষ শরণার্থী পাঠাবার কথা ভাবছেন। ওড়িশা এবং বিহারও কিছুসংখ্যক শরণার্থী নিতে রাজি।
তিনি বলেছেন পশ্চিমবঙ্গে প্রতিদিন প্রত্যেক শরণার্থীর জন্য এক টাকা এবং আসাম, মেঘালয় ও ত্রিপুরাতে একটাকা দশ পয়সা খরচ করা হয় এবং তা না কামাবার রাজ্য কতৃপক্ষকে কেন্দ্র জানিয়েছে।
তিনি আরও জানান যে, শরণার্থী শিবিরে থাকে না এমন শরণার্থীদের রিলিফ দেওয়া হয় নি, কিন্তু শিবিরে নাম নথীভুক্ত করলে এবং আশ্রয় চাইলে তেমন ব্যক্তিদের রিলিফ দেওয়া হয়। তিনি এই নিশ্চয়তাও দেন যে, আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে বসবাস করছে এমন শরণার্থীদেরও যাতে রিলিফ দেওয়া যায় তার কথা তারা বিবেচনা করবেন।
শ্রী এস-এম ব্যানার্জির প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাঙলাদেশ থেকে আসা শরণার্থীদের পুর্নবসতির জন্য তারা কোন আন্তর্জাতিক সংস্থাকে বলেন নি।
সূত্র: কালান্তর ১১.৬,১৯৭১