বাঙলাদেশের মুক্তি সংগ্রামে সমর্থনে কলকাতার রাজপথে ছাত্র-ছাত্রীদের সুবৃহৎ মিছিল
(স্টাফ রিপাের্টার)
কলকাতা, ২১ এপ্রিল- আজ বিকেলে পাঁচটি কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগঠনের ডাকে ছাত্র-ছাত্রীদের এক সুবৃহৎ মিছিল কলকাতা মহানগরীর বিভিন্ন রাজপথ পরিক্রমা করে বাঙলাদেশের মুক্তিসংগ্রামের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের ছাত্র সমাজের একাত্মতা ঘােষণা করে।
বঙ্গীয় প্রাদেশিক ছাত্র ফেডারেশন, ছাত্র ব্লক, ছাত্র সভা সমাজবাদী ছাত্র সংগঠন ও বিপ্লবী ছাত্র সংগঠনের যৌথ উদ্যোগে আয়ােজিত এই মিছিলে অংশগ্রহণকারী ছাত্রছাত্রীরা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণ থেকে সার্কাস এভিনিউস্থিত বাঙলাদেশ কূটনৈতিক মিশনে গিয়ে মিশনের প্রধান জনাব এম হােসেন আলীকে আন্তরিক অভিনন্দন জ্ঞাপন করেন। তারপর মিছিলটি রাজভবন অভিমুকে যাত্রা করে এবং চৌরঙ্গীর মার্কিন প্রচার দপ্তরের সামনে বাঙলাদেশের মুক্তি সংগ্রাম দমনের উদ্দেশ্যে অস্ত্রসহ ইয়াহিয়া বাহিনীকে সহায়তাদানের জন্য মার্কিন বিরােধী ধ্বনি দেওয়া হয়। রাজভবনের সামনে ছাত্র-ছাত্রীরা ভারত সরকারের কাছে তিনটি দাবি অবিলম্বে বাঙলাদেশ সরকারকে স্বীকৃতি এবং শরণার্থীদের জন্য যথাশীঘ্র উপযুক্ত রিলিফ প্রেরণ, পাক ফৌজ দ্বারা ধৃত কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের দুজন ছাত্রের মুক্তির জন্য পাক সরকারকে বাধ্য করা উত্থাপন করে অবস্থান করেন।
বাঙলাদেশ কূটনেতিক মিশনে জনাব হােসেন আলীকে অভিনন্দন বার্তা দেওয়ার জন্য সর্বশ্রী সফিউল আলম (ছাত্র ফেডারেশন), ভােলা কুণ্ডু (ছাত্র ব্লক), হরিনারায়ণ পােদ্দার (ছাত্র সভা), আবদুস সাকুর (এসএসও) ও নির্ধন সর্দার (আর-এস-ও) জনাব আলীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তারপর জনাব আলী বাইরে বেরিয়ে এসে ছাত্রদের অভিনন্দন গ্রহণ করেন। এই সময় সমবেত কণ্ঠে বাঙলাদেশ মুক্তি সংগ্রামের সমর্থনে শ্লোগানে সমগ্র অঞ্চল মুখল হয়ে ওঠে।
রাজভবনে গিয়ে উপরােক্ত ছাত্র নেতৃবৃন্দ উপরিল্লিখিত দাবি সম্বলিত এক স্মারকলিপি পেশ করেন। এর আগে, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে এক ছাত্রসভায় শ্রী পীযুষ দাস (ছাত্র ফেডারেশন) সভাপতিত্ব করেন। রাজভবনের সামনে ভাষণ দেন ছাত্র ফেডারশনের সর্বশ্রী দিলীপ রাম ও সুদীপ রায়।
সূত্র: কালান্তর, ২১.৪.১৯৭১