পাক-বাহিনীর বৃহত্তম সাবমেরিন গাজির বিশাখাপত্তনমের বন্দরে সলিল সমাধি লাভ
বিশাখাপত্তনম, ১ ডিসেম্বর—বিশাখাপত্তনম বন্দরে প্রবেশ মুখে পাক সাবমেরিন “গাজি” ৩ ডিসেম্বর ভারতের নৌবাহিনীর সতর্ক প্রহরাকে ফাঁকি দিতে পারে নি। ঐ রাতেই এই বৃহৎ সাবমেরিনটি বিশাখাপত্তনমে সলিল সমাধি লাভ করে।
পূর্ব নৌবহরের অধিনায়ক ভাইস অ্যাডমিরাল এন, কৃষ্ণান সাংবাদিকদের কাছে এই সংবাদ দেন। তিনি বলেন, সাবমেরিনটি প্রকৃতই ডুবেছে কিনা তা যাচাই করার জন্য একদিন গেছে।
কৃষ্ণান জানান, ঐ রাতে প্রধানমন্ত্রী জাতির উদ্দেশ্যে বেতার ভাষণ দেওয়ার আগে এই সাবমেরিনটি ঘায়েল হয়। এর থেকেই বােঝা যায় যে, পশ্চিম পাকিস্তানের সামরিক প্রশাসক ভারতকে আচমকা আক্রমণের সুন্দর পরিকল্পনা করেছিল। তাদের উদ্দেশ্য ছিল একই সঙ্গে বিমান বন্দর ও নৌ-বন্দরগুলি আক্রমণ করা।
কৃষ্ণান জানান, এটি পাকিস্তানের সর্ববৃহৎ সাবমেরিন। এটি আমেরিকা ১৯৬৪ সালে পাকিস্তানকে দিয়েছিল।
কৃষ্ণান বলেন ঐ দিন থেকে এই সাবমেরিন নিয়ে আমাদের দুশ্চিন্তার অবধি ছিল না। এখন সে আমাদের দরজা গােড়ায় : মৃতি চিহ্নরূপে পড়ে আছে এবং একথাই মনে করিয়ে দিচ্ছে যে আক্রমণ কোন সময়েই লাভজনক হয় না। এই সাবমেরিন নিয়ে পাকিস্তানের সর্বমােট ২টি সাবমেরিন ধ্বংস হল।
কয়েকজন জেলেই নৌ বিভাগকে সন্ধান দেন যে বন্দরের জলে কয়েকটি মৃতদেহ ভাসছে ঐ জেলেদের ৫০০ টাকা পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। সাবমেরিনে ৮৯ জন নাবিক ছিল তার মধ্যে ঐ
৩ মৃতদেহ সমুদ্রে নাবিকোচিত সম্মানে সমাধিস্থ করা হয়েছে।
আরও ৪টি গানবােট
কৃষ্ণান বলেন, আজ আরও ৪টি গানবােট ডুবিয়ে দেওয়া হয়েছে। এগুলি আজ সকালে প্রতিরক্ষা-ব্যুহ ভেঙ্গে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে ভারতীয় জাহাজগুলি চ্যালেঞ্জ করে এবং তারা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে ডুবিয়ে দেওয়া হয়।
২ সওদাগরী জাহাজ ভারতীয় জাহাজগুলি পাকিস্তানের ২টি বাণিজ্য জাহাজ দখল করে। এগুলিকে ভারতীয় বন্দরে নিয়ে আসা হচ্ছে। এর একটির নাম বাকির। গতকাল মধুমতী নামে আর একটি বাণিজ্য জাহাজও গ্রেপ্তার করা হয়।
সূত্র: কালান্তর, ১০.১২.১৯৭১