You dont have javascript enabled! Please enable it! আমেরিকার রিপন সোসাইটির উদ্যোগ - সংগ্রামের নোটবুক

রিপন সোসাইটির উদ্যোগ

১৯৭১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে রিপাবলিকানরা ক্ষমতায়। চলছে নিক্সন ও কিসিঞ্জারের রাজত্ব। মার্কিন রিপাবলিকানদের প্রতি আমাদের যে অনীহা তার কারণ ১৯৭১ সাল। কিন্তু আমরা জানি না যে, রিপাবলিকানদের একটি অংশ আমেরিকায় সর্বপ্রথম বাংলাদেশের পক্ষে এগিয়ে আসে। লিবারেল রিপাবলিকানরা যুক্তরাষ্ট্রে গঠন করেছিল একটি সমিতি, নাম, “রিপন সোসাইটি অব দি ইউ এস এ”। এটি ছিল প্রধানত বুদ্ধিবৃত্তিক সংগঠন। সংগঠনের সভাপতি ছিলেন লি অসপিৎজ। বাংলাদেশ সরকার গঠিত হওয়ার আগেই ৭ এপ্রিল তিনি, অধ্যাপক গুপ্তাভ পাপেনাক ও অধ্যাপক মর্গেলিন একটি প্রবন্ধ প্রকাশ করেন যা পরে পুস্তিকা আকারে প্রকাশিত হয়ে, নাম ‘পাকিস্তান ব্যকগ্রাউন্ড টু এ ক্রাইসিস ; এ রিপন সোসাইটি পজিশন পেপার। এ পুস্তিকায় পাকিস্তানের অর্থনৈতিক বৈষম্যের কথা তারা তুলে ধরেছিলেন তাঁদের মূল প্রতিপাদ্য ছিল স্বাধীন পূর্ববঙ্গ হয়ত’মডারেটলি প্রো ওয়েষ্টার্ণ পলিসি গ্রহণ করবে।

যুক্তরাষ্ট্রে সহায়তা দিয়ে সেই নীতি আরো সংহত করতে পারবে। কিন্তু স্বাধীনতা সংগ্রাম যদি দীর্ঘ হয় আর যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানকে সমর্থন করে তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্থ হবে কারণ খবর পাওয়া যাচ্ছে, গণহত্যায় যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র ব্যবহৃত হচ্ছে। গণহত্যার নিন্দা করে তাঁরা বলেন, পাকিস্তানকে অব্যাহত অস্ত্র ও অর্থ সাহায্য নিরপেক্ষতা নয়। “The American government must not be party to the killings of defenceless civilians or the forcible reperssion of the struggle by east pakistanis for control of their lives.”_ এপ্রিল মাসে সোসাইটি নিক্সন প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়ে এক বিবৃতিতে বলে, পাকিস্তানকে অস্ত্র সাহায্য বন্ধ করতে হবে এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা আনতে হবে।| এই রিপাবলিকানরা ঘোষণা করেন, পূর্ববাংলায় এক সন্ত্রাসের রাজত্ব স্থাপন করা হচ্ছে মার্কিন অস্ত্রের সাহায্যে। পূর্ব বঙ্গে অসহায় মানুষদের যেভাবে হত্যা করা হচ্ছে মার্কিন সরকার তার পক্ষ হতে পারে না। পূর্ববঙ্গের মানুষ তাদের জীবন নিয়ন্ত্রণের সংগ্রাম করছে যে কারণে তাদের ওপর জবরদস্তি মূলক নিপীড়ন চালানো হচ্ছে। শুধু তাই নয় ১৯৭০ সালের অক্টোবরে পাকিস্তানে যে মার্কিন অস্ত্রের চালান দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল তাও বাতিলের দাবি জানান।রিপন সোসাইটির সদস্যরা আরো বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীন হলেই শুধু দক্ষিণ এশিয়ার শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে। এবং মার্কিন কূটনীতির লক্ষ্য হওয়াই উচিত সে লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য কাজ করা।আমেরিকায় কোন রাজনৈতিক সংগঠনের বাংলাদেশের পক্ষ নিয়ে বিবৃতি দেয়া-এটিই ছিল প্রথম। ঐ একই সময় বিখ্যাত নিউ ইয়র্ক টাইমসও তার সম্পাদকীয়তে একই বক্তব্য উপস্থাপন করে।

সূত্র : India News, April, 1971.