You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.06.14 | গণতান্ত্রিক জার্মানী থেকে প্রথম দফার ত্রাণসামগ্রী পৌঁছেছে | কালান্তর - সংগ্রামের নোটবুক

গণতান্ত্রিক জার্মানী থেকে প্রথম দফার ত্রাণসামগ্রী পৌঁছেছে
(স্টাফ রিপাের্টার)

কলকাতা, ১৩ জুন বাংলাদেশ থেকে ভারতে আগত শরণার্থীদের সাহায্যার্থে গণতান্ত্রিক জার্মানী থে সরকারীভাবে প্রেরিত ত্রাণ সামগ্রী আজ একটি বিশেষ “ইস্টারফুগ” বিমানযােগে দমদম বিমান বন্দরে এসে পৌঁছেছে।
গণতান্ত্রিক জার্মান প্রজাতন্ত্র সরকারের পক্ষ থেকে ভারতের ঐদেশের পক্ষ থেকে ভারতে ঐদেশের অস্থায়ী কন্সাল জেনারেল মিঃ লুথার ডেনজেল ভারত সরকারের কলকাতাস্থ শ্রম কম বিনিয়োেগ ও ত্রাণ দপ্তরের কর্মকর্তার হাতে ঐ ত্রাণ সামগ্রী তুলে দেন। এই ত্রাণ সামগ্রীর মধ্যে কলেরাও টাইফয়েডের টাকা অ্যান্টি বায়ােটিক, ভিটামিন ও অন্যান্য ওষুধ ৬ টন এবং পরিহনযােগ্য শয্যা, তার, কম্বল প্রভৃতি ৫ টন রয়েছে। কোনও বিদেশী রাষ্ট্র থেকে সরকারী ভাবে বাংলাদেশ শরণার্থীদের জন্য ভারতে সাহায্য প্রেরণ এই প্রথম এবং এর কূটনৈতিক তাৎপর্যও লক্ষণীয়।
এ সম্পর্কে আজ সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে মিঃ ডেনজেল জানান যে, বাঙলাদেশের ঘটনায় যে পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছে, সে ব্যাপারে জার্মান গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রের সরকার ভারত সরকারের বক্তব্যের সঙ্গে সম্পূর্ণ একমত এবং এই ঘটনার ফলে যে আর একটা আন্তর্জাতিক সংঘর্ষের বিপদ রয়েছে, সে সম্পর্কে ভারত সরকারের উদ্বেগেরও তার অংশভাগী। গণতান্ত্রিক জার্মানীর প্রধানমন্ত্রী ভিলি স্টোফ ভারতের প্রধানমন্ত্রীর কাছে লিখিত এক চিঠিতে এই বিষয়ে শ্রীমতি গান্ধীর সঙ্গে ঐকমত্য ঘােষণা করেছেন যে, একমাস শান্তি পূর্ণ ও রাজনৈতিক উপায়েই সমস্যা সমূহের সমাধান সম্ভব।
গণতান্ত্রিক জার্মানীর অস্থায়ী কাল জেনারেল আরাে বলেন যে, বাংলাদেশ থেকে আগত শরণার্থীরা যাতে তাদের স্বদেশে ফিরে যেতে পারেন তার অনুকূল পরিস্থিতি ঐ দেশে সৃষ্টি করতে হবে এবং তা সৃষ্টি করার দায়িত্ব পাকিস্তানের। তাদের নিজেদের মধ্যেই শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের নীতির ভিত্তিতে মীমাংসায় উপনীত হতে হবে। কারণ, যুদ্ধ কোনও কালেই কোনও সমস্যার সমাধান করতে পারে না। | বাঙলাদেশ এর সমস্যা সম্পর্কে তার সরকারের দৃষ্টিভঙ্গ সম্পর্কে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি আরাে জানান যে, শরণার্থীরা যাতে দেশে ফিরে যেতে পারেন তার অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করার জন্য রাজনৈতিক সহায়তা করাও আন্তর্জাতিক শক্তিগুলিকে সােজার করে তােলার মধ্যে দিয়েই এই সমস্যার সমাধান হতে পারে।
তিনি জানান, আজ বিমানে যে সাহায্য এসেছে, তা হল প্রথম দফা। জার্মান রেড ক্রশ, আফ্রে-এশীয় সংহতি কমিটি, ক্র্যাজার্মান ট্রেড ইউনিয়নস এবং ব্রেড ফর দ্য ওয়লড এর সংহতি আন্দোলনের সহায়তায় গণতান্ত্রিক জার্মান সরকার শীঘ্রই ২০ লক্ষ টাকার ত্রাণ সামগ্রী পাঠাচ্ছেন।

সূত্র: কালান্তর, ১৪.৬.১৯৭১