বরিশালসহ বাঙলাদেশের সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে গেরিলা তৎপরতা সম্প্রসারিত
নয়াদিল্লী, ১২ জুলাই (ইউএনআই) বাঙলাদেশের বরিশাল সহ অন্যান্য সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকায় গেরিলা তৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে পাকসেনাদের গানবোেট টহলদারাও অনেক সংক্ষিপ্ত হয়ে এসেছে।
রংপুর রণাঙ্গনের ছিলাঘাট এলাকায় গেরিলাবাহিনী একটি সেতু ধ্বংস করে দিয়ে পাকহানাদারদের সড়ক যােগাযােগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে। পানিতলা এলাকায় ও মুক্তিফৌজের অনুরূপ তৎপরতার সংবাদ পাওয়া গেছে।
কয়েকদিন আগে রংপুরের একটি সরকারী ধান গুদাম গেরিলারা ধ্বংস করে দিয়েছে এবং ঐ স্থান থেকে দু’জন পাক দালালকে তারা বন্দী করেছে।
গত ৮ জুলাই যশোের সেক্টরে মুক্তিবাহিনীর গোেপন মাইন বিস্ফোরণে একটি পাক সামরিক ট্রাক ধ্বংস হওয়ার ফলে ট্রাক ড্রাইভার সহ অপর দুজন নিহত হয়েছে।
মুক্তিফৌজ সম্প্রতি ঠাকুরগাঁও পাক সামরিক সদর দপ্তরে আক্রমণ চালিয়েছিল। সেখানে একজন পাকসেনা নিহত এবং বহু আহত হয়েছে।
গত ৭ ও ৮ জুলাই রাত্রে দিনাজপুর এলাকার পাকসামরিক ঘাঁটিতে আক্রমণ চালিয়ে গেরিলারা হানাদারবাহিনীর প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি সংঘটিত করেছে। গত ৭ জুলাই গেরিলারা পাকসেনাদের কাছ থেকে একটি টেলিফোন লাইনের দখল নিয়েছে।
গত ৪ জুলাই পব রণাঙ্গনের আটগ্রামে গেরিলাদের মর্টার আক্রমণে ১০ জন পাকহানাদার নিহত হয়েছে।
ঐ সেক্টরে গত ৫ জুলাই তথাকথিত পুতুল ইউনিয়ন বাের্ডের জনৈক চেয়ারম্যানকে গেরিলারা ধরে নিয়ে এসেছে এবং তথাকথিত শান্তি কমিটির জনৈক সদস্য গেরিলাদের হাতে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছে।
গত ৯ জুলাই কুমিল্লা জেলায় পাকসেনাদের একটি ঘাটি মুক্তিসেনাদের দ্বারা আক্রান্ত হয় এবং জাফল, এলাকায় উভয় পক্ষে তুমুল সংঘর্ষ হয়। কয়েকদিন আগে ঐ জেলার মালখান থানা গেরিলাদের দ্বারা আক্রান্ত হয়। ফলে প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
গত দু’দিনে কুষ্টিয়া সেক্টরের নানাস্থানে গেরিলাদের তৎপরতা উল্লেখযােগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। কৃষ্ণনগরে থেকে ইউএনআই সংবাদ দিয়েছে।
সংবাদে বলা হয়েছে যে, উল্লিখিত সেক্টরের বিভিন্ন পাক অধিকৃত সীমান্তবর্তী ঘাঁটিতে গেরিলা তৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে। গতকাল মধ্যরাত থেকে একটানা সংঘর্ষ শুরু হয় আজ সকলে সংঘর্ষ ব্যাপ্তি লাভ করে।
প্রাগপুর কুষ্টিয়া রােডে দুই পক্ষের সংঘর্ষে ৩ ইঞ্চির মর্টার ব্যবহৃত হয়েছে। মহিষকুণ্ডি, কাদিরপুর, সাহিবনগর, ইচাখালি, মেহেরপুর, এবং পাকসী এলাকায় ও গেরিলা তৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
সূত্র: কালান্তর, ১৩.৭.১৯৭১