রাজ্য প্রশাসন শরণার্থীদের চাপ সহ্য করতে পারছে না প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপির খসড়ায় অন্য রাজ্যে শরণার্থী অপসারণের দাবি
(স্টাফ রিপাের্টা)
কলকাতা, ২ জুন বাঙলাদেশ থেকে আসা শরণার্থীদের অব্যাহত স্রোতের চাপ পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য প্রশাসনের পক্ষে আর বহন করা সম্ভব হচ্ছে না। অবিলম্বে এই শরণার্থীদের অন্যান্য রাজ্যে ছড়িয়ে দেবার জরুরী ব্যবস্থা করার জন্য রাজ্য সরকার পুনর্বার কেন্দ্রের কাছে অনুরােধ জানিয়েছেন।
পশ্চিমবঙ্গ মন্ত্রিসভার গত বৈঠকের পর এ ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রী শ্রীঅজয়কুমার মুখােপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি গান্ধীর কাছে এক জরুরী বার্তা পাঠিয়েছিলেন।
জানা গেল, মন্ত্রিসভার অভিমত হল, অবিলম্বে যুদ্ধবিহার জরুরী ব্যবস্থার ভিত্তিতে যদি শরণার্থীদের অপসারণের ব্যবস্থা কেন্দ্র না করে, তাহলে এই রাজ্যের প্রশাসন তাদের পক্ষে চালানাে সম্ভব হবে না। সেক্ষেত্রে রাজ্যের প্রশাসন ব্যবস্থাই কেন্দ্রের তুলে নেওয়া উচিত।
আজ কুমার সিংহলে গণতান্ত্রিক কোয়ালিশনের শরিক ও সমর্থক দলগুলির প্রতিনিধিদের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীকে দেবার জন্য একটি স্মারকলিপির খসড়া স্থির হয়েছে। এই খসড়ায়ও বাঙলাদেশের শরণার্থীদের অন্যান্য রাজ্যে সরিয়ে নেবার জন্য দাবি জানানাে হচ্ছে। কারণ ইতিমধ্যে একমাত্র পশ্চিম বঙ্গেই ৪০ লক্ষের উপরে শরণার্থী এসেছে। পশ্চিম বঙ্গে এমনিতেই জন সংখ্যার চাপ রয়েছে এবং বেকার সমস্যাসহ বিভিন্ন সমস্যায় এই রাজ্য কণ্টকিত। তার উপরে এতাে বিপুল সংখ্যায় শরণার্থীর সমাবেশ সীমান্ত এলাকায় নতুন করে আইন শৃঙ্খলা সমস্যার সৃষ্টি করছে। সুতরাং শরণার্থীদের ব্যাপারে কেন্দ্রকেই দায়িত্ব নিয়ে তাদের বিভিন্ন রাজ্যে সরিয়ে নিতে হবে বলে এই খসড়ায় দাবি জানানাে হচ্ছে। আগামী ৫ জুন প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি গান্ধী কলকাতা আসছেন প্রধানত এই শরণার্থী সমস্যা আলােচনার জন্যই। ঐদিন তিনি পুরাে মন্ত্রিসভার সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হবেন। এছাড়া কংগ্রেস কর্মী এবং উচ্চপদস্থ অফিসারদের সঙ্গেও তিনি আলাদাভাবে আলােচনা করবেন।
ইতিমধ্যে আজ বিকালে মুখ্যমন্ত্রী শ্রীঅজয়কুমার মুখােপাধ্যয়, উপ-মুখ্যমন্ত্রী শ্রী বিজয় সিং নাহার এবং অর্থ মন্ত্রী শ্রীতরুণকান্তি ঘোেষ কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী শ্রীজগজীবন রামের সঙ্গে দেখা করেন। পরে শ্রীনাহার সাংবাদিকদের নানান, শ্রীরামের সঙ্গে তারা বাঙলাদেশের শরণার্থী সমস্যা ও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আলােচনা করেছেন। এছাড়াও আরাে কিছু আলােচনা হয়েছে, যা তিনি জানাতে অস্বীকার করেন।
সূত্র: কালান্তর ৩.৬.১৯৭১