অসামরিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার জন্য এখন তৈরি হােন :
নিপ্রদীপ মহড়া সফল করে তুলুন
৯ই নভেম্বর, মঙ্গলবার, সন্ধ্যে ৬ টা থেকে ৬.৩০ মিঃ পর্যন্ত সারা কলকাতায় নিপ্রদীপের মহড়া হবে। ঐ সময় রাস্তার সব আলাে নেভানাে থাকবে। ৬-৩০ মিঃ এর সময় সাইরেন বিপদমুক্তির সংকেত ধ্বনি শােনা যাবে। মহড়া যাতে সফল হয় সে জন্য পুলিস ও অসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থার সঙ্গে সহযােগিতা করা আপনাদেরই কাজ।
আপনাদের যা যা করতে হবে :
১. বাইরে থেকে যাতে না দেখা যায় সেইভাবে ঘরের ভিতরকার সব আলাে ভালােভাবে ঢেকে রাখবেন। টিউবলাইট আর নিওনলাইট আদৌ জ্বালবেন না।
২. আপনাদের আয়ত্তে রাখা রাস্তার ব্র্যাকেট-লাইটগুলাের সুইচ বন্ধ করে রাখবেন।
৩. টর্চের কাঁচের ওপর খবরের কাগজ জড়িয়ে তা শুধু নিচের দিকে মুখ করেই জ্বালাতে পারেন।
৪. লণ্ঠন, গ্যাসবাতি বা এই ধরনের অন্য কোনাে রকমের বাতি খােলা জায়গায় নিতে হলে এমনভাবে তা ঢেকে রাখবেন যাতে আর আলাে একটি মােমবাতির আলাের চেয়ে জোরালাে না হয়।
৫. মােটর গাড়ির হেড লাইট নিভিয়ে রাখবেন। শুধু সাইড-লাইট জ্বালাবেন। অন্ধকারে অন্য গাড়িকে ওভারটেক করবেন না।
৬. ঘােড়ার গাড়ি, গােরুর গাড়ি, ঠেলাগাড়ি প্রভৃতির বাতি এমন ভাবে ঢেকে রাখবেন যাতে তা একটি মােমবাতির আলাের মতােই স্তিমিত থাকে।
৭. নিতান্ত প্রয়ােজন না হলে ব্ল্যাক-আউটের সময় রাস্তায় বেরুবেন না।
৮. ব্ল্যাক-আউটের সময় বাড়ীর বাইরে থাকলে ফুটপাথে উঠে যানবাহন চলাচলের জন্য সড়ক ছেড়ে দেবেন।
৯. ব্ল্যাক-আউটের সময় সজাগ ও সতর্ক থাকবেন, কিন্তু কখনই আইন নিজেদের হাতে তুলে নেবেন না। আইন রক্ষার ব্যাপারে পুলিস ও অসামারিক প্রতিরক্ষা কর্মীরাই আপনাদের সাহায্য করবেন।
নিস্প্রদীপ মহড়ার সময় কেবল নিম্নবর্ণিত আলােগুলিই বিধিনিষেধ আওতা থেকে বাদ থাকবে :
(১) হাসপাতাল ও নার্সিং হােমের আলাে।
(২) বিমান বন্দরের আলাে।
(৩) কলকারখানার ভিতরকার আলাে।
(৪) উঁচু উঁচু অট্টালিকার মাথায় জ্বালা নিশানাসূচক লাল আলাে।
(৫) হাওড়া সেতুর সব আলাে।
(৬) ট্রাফিক সিগন্যালের আলাে।
(৭) রেলওয়ে সিগন্যালের আলাে।
(৮) ট্রাম-বাসের ভিতরকার আলাে।
(৯) শ্মশানের আলাে।
অসামরিক প্রতিরক্ষা অধিকর্তা, পশ্চিমবঙ্গ কর্তৃক প্রচারিত ৪২৩৮(১০)
সূত্র: কালান্তর, ৭.১১.১৯৭১