মােশতাকের দস্তখতকৃত যে অর্ডিন্যান্স-এ রাষ্ট্রপতি মুজিবের হত্যাকারীরা ক্ষমা পেয়েছিল
রেজিস্ট্রেশন নং ঢাকা ১
বাংলাদেশ গেজেট
এক্সট্রা-অর্ডিনারি কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রকাশিত। শুক্রবার, ২৬শে সেপ্টেম্বর, ১৯৭৫
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার আইন, পার্লামেন্ট বিষয়ক ও বিচার মন্ত্রণালয় (আইন ও পার্লামেন্টারি ডিভিশন)
প্রকাপিন।
ঢাকা, ২৬শে সেপ্টেম্বর, ১৯৭৫ নং ৬৯২-পাব, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট কর্তৃক ১৯৭৫ সালের ২৬শে সেপ্টেম্বর জারিকৃত অত্র অর্ডিন্যান্স সর্বসাধারণের জ্ঞাতার্থে প্রকাশিত হলাে : ক্ষমা প্রদর্শন অর্ডিন্যান্স, ১৯৭৫ ১৯৭৫ সালের ১৯নং অর্ডিন্যান্স
১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট প্রত্যুষের ঐতিহাসিক পরিবর্তন এবং সামরিক আইন ঘােষণার লক্ষ্যে যেসব প্রয়ােজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ, পরিকল্পনা প্রণয়ন ও পদক্ষেপ বাস্তবায়িত করা হয়েছে, এবং এতদসম্পর্কিত যেসব বিশেষ কর্মকাণ্ড হয়েছে। সেইসব কার্যক্রমের বিরুদ্ধে কোনােরূপ আইনানুগ অথবা অন্য কোনাে ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণের বিরুদ্ধে অত্র অর্ডিন্যান্স।
যেহেতু ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট প্রত্যুষের ঐতিহাসিক পরিবর্তন এবং সামরিক আইন ঘােষণার লক্ষ্যে যেসব প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ, পরিকল্পনা প্রণয়ন ও পদক্ষেপ বাস্তবায়িত করা হয়েছে, এবং এতদসম্পর্কিত যেসব বিশেষ কর্মকাণ্ড হয়েছে। সেইসব কার্যক্রমের বিরুদ্ধে কোনােরূপ আইনানুগ অথবা অন্য কোনাে ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা আরােপ জরুরি হয়ে পড়েছে এবং যেহেতু এ সময় পার্লামেন্টের কোনাে অধিবেশন চলছে না এবং রাষ্ট্রপতিও এ মর্মে সন্ত্ৰষ্ট যে, বিদ্যমান পরিস্থিতিতে জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণ প্রয়ােজনীয় হয়ে পড়েছে; এখন, সেহেতু, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ৯৩ বিধির (১) নং অনুচ্ছেদ-এ অর্পিত ক্ষমতা অনুসারে রাষ্ট্রপতি সন্তুষ্ট পূর্বক নিম্নোক্ত অর্ডিন্যান্স প্রণয়ন ও জারি করেছে : ১. সংক্ষিপ্ত নামকরণ : এই অর্ডিন্যান্স-এর নামকরণ হচ্ছে ১৯৭৫ সালের ক্ষমা প্রদর্শন অর্ডিন্যান্স। ২. বিশেষ ধরনের কর্মকাণ্ড এবং ঘটনা সম্পর্কে জড়িত ব্যক্তিবর্গের বিরুদ্ধে কোনােরূপ আইনানুগ অথবা অন্য কোনাে ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা আরােপ… ক) ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট প্রত্যুষে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পরিবর্তন এবং সামরিক আইন ঘােষণার লক্ষ্যে সংঘটিত কর্মকাণ্ড ও পদক্ষেপ আশু প্রয়ােজনীয় বিবেচনাপূর্বক যেসব ব্যক্তিবর্গ এতদসম্পর্কিত প্রস্তুতি গ্রহণ অথবা পরিকল্পনা প্রণয়ন অথবা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন অথবা অন্য যে কোনাে কার্যকলাপ করেছেন, তাদের মধ্যে অতীতে কোনাে সময়ে অথবা বর্তমানে ডিফেন্স সার্ভিসের আইনের আওতায় ছিলেন অথবা রয়েছেন, এমন সব লােকজনসহ অন্য যারাই আলােচ্য কার্যক্রমে লিপ্ত।
ছিলেন তাদের কারও বিরুদ্ধে ডিফেন্স সার্ভিসের যে কোনাে বলবকৃত আইনসহ দেশের অন্য কোনাে আইনে সুপ্রিম কোর্ট এবং কোর্ট মার্শালসহ যে কোনাে কোর্ট কিংবা যে কোনাে কর্তৃপক্ষের সমীপে মামলা দায়ের, স্যুট দাখিল অথবা অন্য কোনাে ধরনের আবেদনের মাধ্যমে আইনানুগ অথবা শৃঙ্খলাজনিত বিধি মােতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে না। আলােচ্য অনুচ্ছেদ কার্যকরী করার প্রয়ােজনে রাষ্ট্রপতি অথবা তার নিকট থেকে প্রাপ্ত ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যক্তি কর্তৃক এ মর্মে একটি সার্টিফিকেট দেয়া হবে যে, অত্র সার্টিফিকেটে বর্ণিত যে কোনাে ব্যক্তি যেহেতু ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট প্রত্যুষে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পরিবর্তন এবং সামরিক আইন জারির লক্ষ্যে যে কোনাে কার্যকলাপ, ঘটনাবলী অথবা যেকোনাে পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করেছেন অথবা ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট প্রত্যুষে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পরিবর্তন এবং সামরিক আইন জারির লক্ষ্যে প্রয়ােজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন; এবং সেহেতু এসব কর্মকাণ্ড, ঘটনাক্রম ও পদক্ষেপগুলাে ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট প্রত্যুষে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পরিবর্তন ও সামরিক আইন ঘােষণার পক্ষে প্রয়ােজনীয় সাক্ষ্য হিসাবে বিবেচিত হবে।
ঢাকা।
খন্দকার মােশতাক আহম্মদ ২৬শে সেপ্টেম্বর ১৯৭৫
রাষ্ট্রপতি। এম এইচ রহমান
সচিব [এই অর্ডিন্যান্স ইংরেজি ভাষায় প্রকাশিত। পাঠকদের সুবিধার্থে বঙ্গানুবাদ করা হয়েছে।-লেখক]
সূত্রঃ মুজিবের রক্ত লাল – এম আর আখতার মুকুল