আর অন্যদিকে বঙ্গবন্ধুকে নিশ্চিহ্ন করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ব্যক্তিরা মণিকে বাহবা দিয়ে দল পাকিয়ে তুলল। এদিকে একদলীয় শাসন প্রবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে প্রেসিডেন্ট মুজিব প্রশাসনের আমূল পরিবর্তনের কথা ঘােষণা করলেন। বাংলাদেশকে ৬১টি জেলায় ভাগ করে। গভর্নর নিয়ােগ ও ট্রেনিং-এর ব্যবস্থা হলাে। পার্লামেন্টের সদস্য, সামরিক ও বেসামরিক অফিসার এবং লব্ধপ্রতিষ্ঠ আইনজীবীদের মাঝ থেকে এসব গভর্নর পদে নিযুক্ত হলেন (৩৩ জন সংসদ সদস্য এবং তেরােজন ব্যুরােক্রেটসহ ২৮জন অরাজনীতিবিদ)। জেলায় জেলায় গভর্নর নিয়ােগের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু প্রশাসনিক ক্ষমতার দুশ বছরের চেইন ভেঙে অন্যভাবে তৈরি করলেন। মনােনীত গভর্নররা হলেন বিপুল ক্ষমতার অধিকারী। জেলার উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন, প্রশাসন ও বিচার ব্যবস্থা—এমনকি আইন শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বও গভর্নরদের উপর অর্পিত হলাে। প্রতিটি জেলা সদরের সঙ্গে সরাসরি রেডিও-টেলিফোনে যােগাযোগ স্থাপিত হলাে প্রেসিডেন্ট ভবনের সঙ্গে (পলিট ব্যুরাে, কেন্দ্রীয় কমিটি এবং জেলা গভর্নরদের পূর্ণ তালিকার জন্য পরিশিষ্ট দেখুন)। এ ব্যবস্থায় দুটো জিনিস প্রকট হয়ে উঠলাে। প্রথমত, ঢাকায় কেন্দ্রীয় সেক্রেটারিয়েট কার্যত ক্ষমতাহীন হয়ে পড়লাে। দ্বিতীয়ত, যে বঙ্গবন্ধু সরকার এতদিন পর্যন্ত শহর ভিত্তিক ক্ষমতার উপর বসে ছিল, রাতারাতি সেই ক্ষমতার উৎসকে সরিয়ে গ্রাম-বাংলায় নিয়ে যাওয়া হলাে। বঙ্গবন্ধু বুঝতে পেরেছিলেন, সরকারের বিভিন্ন নীতি ও কার্যকলাপের মাঝ দিয়ে শহরে শিক্ষিত মধ্যবিত্তদের আরাম-আয়েশের ব্যবস্থা এবং উন্নয়নের যত। সুযােগই দেয়া হােক না কেন, এরা কোনাে দিনই সন্তুষ্ট হবে না এবং এদের চাহিদারও শেষ নেই। উপরন্তু এতে দেশের সর্বাঙ্গীন উন্নতি কোনােদিনই সম্ভব নয়। তাই তিনি গ্রাম-বাংলার অর্থনৈতিক উন্নয়নের উদ্দেশে অত্যন্ত দ্রুত ক্ষমতার উৎসকে শহর থেকে মফস্বলে সরিয়ে নেয়ার প্রাক্কালে ঢাকায় এক জনসভায় প্রদত্ত বক্তৃতায় শহুরে শিক্ষিত মধ্যবিত্তদের ঢালাওভাবে কঠোর সমালােচনা করলেন।
সবার অজান্তেই বঙ্গবন্ধু তৈরি করলেন নতুন নতুন শত্রু ক্ষমতা হ্রাস পাওয়ায় পার্লামেন্টের সদস্যরা ক্ষুব্ধ হলেন। দেশ শাসনের ক্ষেত্রে কার্যত ‘ব্যুরােক্রেসি’র কোনাে ভূমিকা থাকবে না এবং মফস্বলের কর্মচারীরা ঢাকা সেক্রেটারিয়েটের চেয়ে গভর্নরদের নির্দেশ বেশি জরুরি মনে করবে বলে অফিসার মহল রাগান্বিত হলেন। এ ধরনের এক প্রেক্ষিতে ব্যুরােক্রেসিকে সন্তুষ্ট করতে প্রাক্তন সিএসপিসহ মােট ১৩ জন উচ্চ পদস্থ অফিসারকে গভর্নর হিসাবে নিয়ােগ করেও বঙ্গবন্ধু বিপদ এড়াতে পারলেন না। এরই পাশাপাশি বিডিআর, পুলিশ, রক্ষীবাহিনী ও অন্যান্য শান্তি রক্ষাকারী সংস্থাগুলাের কেন্দ্রীয় কর্তৃপক্ষ জেলায় অবস্থানকারী বাহিনীর উপর কর্তৃত্ব বিনষ্ট হবার আশঙ্কায় আতঙ্কগ্রস্ত হলেন। উপরন্ত শিক্ষিত মধ্যবিত্ত মহল বুঝতে পারলাে যে, এতদিন পর্যন্ত ক্ষমতাসীন প্রতিটি সরকার সমর্থনের জন্য তাদের যেভাবে তােয়াজ করেছে, নয়া পদ্ধতির দরুন ভবিষ্যতে আর তা অব্যাহত থাকবে না। শ্রেণী হিসাবে শহুরে মধ্যবিত্তরা তাদের আরাম-আয়েশ ও সুযােগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবে। তাই ভিতরে ভিতরে এরাও সমালােচনামুখর হয়ে উঠলাে এবং বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে নানা কথিত দুর্নীতির কথা প্রচারে লিপ্ত হলাে। অনেকের মতে পলিট ব্যুরােতে বঙ্গবন্ধুর দুজন আত্মীয় ছাড়াও জনাকয়েক জনপ্রিয়হীন ব্যক্তি থাকায় এসব প্রচারণা জোরদার হলাে। অন্যদিকে যেসব মন্ত্রী পলিট ব্যুরাের সদস্য হতে পারলেন না এবং নিজের জেলায় উপদলীয় নেতাকে গভর্নর হিসাবে দেখতে পেলেন, তারাও ক্ষমতাহীন অবস্থায় ভিতরে ভিতরে গুমরে উঠলেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কিংবা তার পরামর্শদাতারা আন্দাজই করতে পারলেন না, তারা ভীমরুলের চাকে হাত দিয়েছেন।
সৈন্যবাহিনী দিয়ে পার্লামেন্ট ভবন ঘেরাও করে সংবিধান সংশােধন থেকে শুরু করে গভর্নর নিয়ােগ পর্যন্ত সমস্ত ব্যাপারগুলাে কোনােরকম গণ্ডগােল ছাড়াই সমাধা হওয়ায় তারা আসন্ন দুর্যোগের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার কোনাে ব্যবস্থাই করলেন না। তারা বুঝতেই পারলেন , সর্বোচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন পলিট ব্যুরাে নিযুক্ত হওয়ায় মন্ত্রিসভায় বেশ কিছু সদস্যসহ আওয়ামী লীগের একটা বিরাট মহল নিরপেক্ষ ভূমিকায় চলে গেছে। আর বঙ্গবন্ধু সরকারকে নিশ্চিহ্ন করার উদ্দেশে বিদেশী ইংগিতে স্বার্থান্বেষী মহলগুলো যড়যন্ত্রের জন্য ঘন ঘন মিলিত হচ্ছে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে বানচাল করার লক্ষ্যে মার্কিনীদের যােগসাজশে মুজিবনগরে যে ষড়যন্ত্র হয়েছিল এবং পরবর্তীকালে বিদেশী সাংবাদিক লরেনস লিফসুজ যার তথ্য উদঘাটন (বাংলাদেশ : দি আনফিনিশড রেভলিউশন গ্রন্থ) করেছেন; তার বরাতে এক্ষণে এটুকু বলা যায় যে, স্বাধীনতার পর খন্দকার মােশতাকের উপদল যখন দেখতে পেল যে, ‘মুজিবনগরের যড়যন্ত্রের বিচার করে শাস্তি দেয়া তাে দূরের কথা ডামাডােলের মধ্যে পুরাে ব্যাপারটাই চাপা পড়ে গেছে এবং বিশেষ জানাজানি হয়নি; তখন তারা আবার ঢাকার আগামসি লেনে মিলিত হতে শুরু করলেন। মুজিবনগরে প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদ কর্তৃক পদচ্যুত পররাষ্ট্র সচিব মাহবুবুল আলম চাষী আবার বঙ্গবন্ধুর মহানুভবতায় চাকুরি ফিরে পাওয়ায় এরা দ্বিগুণভাবে উৎসাহিত হলেন। এসব বৈঠকগুলােতে পুরনাে রাজনৈতিক সাথীরা ছাড়াও মাঝে মধ্যে নতুন মুখের আমদানি হলাে। এদের মধ্যে আলহাজ্ব জহিরউদ্দিন, খােন্দকার আবদুল হামিদ, আসাফোদ্দৌলা রেজা এবং ইত্তেফাকের হােসেন ভ্রাতৃদ্বয় অন্যতম।
এসবের বিস্তারিত তথ্য বিদেশী সাংবাদিক লরেনস লিফসুজ এবং এ্যন্থনী মাসকার্নহাসএর বরাতে অত্র পুস্তকে উপস্থাপিত করা হয়েছে। এরই পাশাপাশি নব্য গঠিত ‘গণ ঐক্য জোট’-এর মােকাবেলায় আওয়ামী লীগের দক্ষিণপন্থী উপদলের অন্যতম নেতা ব্যরিস্টার মইনুল হােসেনের কাকরাইলস্থ বাস ভবনে অনুষ্ঠিত হলাে বেশ ক’টি অঘােষিত বৈঠক। প্রকাশ, এ ধরনের এক বৈঠকে ব্যারিস্টার মইনুল স্বয়ং একটি পৃথক ‘সােহরাওয়াদী আওয়ামী লীগ’ গঠনের প্রস্তাব দিলেন। এমনকি ব্যারিস্টার সাহেব প্রস্তাবিত পার্টির একটা খসড়া মেনিফেস্টো পর্যন্ত পেশ করলেন। অনেক তর্ক-বিতর্কের পর উপস্থিত অনেকেই এ মর্মে মত প্রকাশ করলেন যে, স্বেচ্ছায় আওয়ামী লীগ থেকে বেরিয়ে আসা বুদ্ধিমানের কাজ হবে। লা। তাই ওয়াকেফহাল মহলের মতে আপাতত সিদ্ধান্ত হচ্ছে, পার্লামেন্টারি। গণতন্ত্রের কথা বলে বঙ্গবন্ধু সরকারকে বিপ্লবী কর্মসূচি গ্রহণ থেকে বিরত রাখতে হবে এবং কিছুতেই বাংলাদেশের প্রকৃত ইতিহাস প্রণয়ন এবং বাঙালি জাতির সঠিক ঐতিহ্য নির্ণয় করতে দেয়া হবে না। বিশ্বের এই সর্ববৃহৎ গাঙ্গেয় ব-দ্বীপ। এলাকায় স্থানিক বাঙালি কালচার-এর সঙ্গে পবিত্র ধর্মের যে অপূর্ব সমন্বয় হয়েছে, এই মৌলিক সত্যকে কোনাে অবস্থাতেই উপস্থাপিত করা বুদ্ধিমত্তার পরিচায়ক। হবে না এবং ইসলামের ভিন্নতর ব্যাখ্যা দিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে হবে। নিজেদের চিন্তাধারার স্বপক্ষে জনমত গঠনের দায়িত্ব হবে দৈনিক ইত্তেফাক-এর। এ ধরনের এক প্রেক্ষাপটে যে ব্যক্তিত্ব একদিন পাকিস্তানের অস্থায়ী প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দিল্লী সফরকালে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী পণ্ডিত জহরলাল নেহরুর জন্য এক পাতিল সুন্দরবনের মধু নিয়ে হাজির হয়েছিলেন এবং নেহরুকে ‘বড়ভাই’ হিসাবে সম্বােধন করেছিলেন, সেই সাংবাদিক-রাজনীতিবিদ আবুল মনসুর আহম্মদ বার্ধক্যের দ্বারপ্রান্তে এসে আবার লেখনী ধরলেন।
কিন্তু বক্তব্য ভিন্নধর্মী। দৈনিক ইত্তেফাকে তিনি লিখলেন, বিপ্লব নয়, পার্লামেন্টারি গণতন্ত্র; ‘বাঙালি জাতীয়তাবাদ নয়, বাঙালি মুসলিম জাতীয়তাবাদ’ ইত্যাদি। অথচ বাংলাদেশের। নয়া সংবিধানে তখন দেশে ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল গঠন পর্যন্ত বেআইনী। অন্যদিকে এক শ্রেণীর উঠতি বাঙালি শিল্পপতি অবাঙালিদের পরিত্যক্ত শিল্প দখলে ব্যর্থ হয়ে এবং শিল্প জাতীয়করণের নীতির ঘাের বিরােধিতার লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধুর মহানুভবতায় ক্ষমতাপ্রাপ্ত দক্ষিণপন্থী নেতৃবৃন্দের মদদ জোগাতে শুরু করলাে। ঢাকা-লন্ডন বিশেষ মহলের মধ্যে একটা নিবিড় যােগসূত্রের সৃষ্টি হলাে। ক্ষমাপ্রাপ্ত কোলাবরেটর আর বাংলাদেশের অস্তিত্বে অবিশ্বাসী নেতৃবৃন্দ ঘন ঘন। লন্ডন-জেদ্দা ও করাচী-লন্ডন যাতায়াত শুরু করল। প্রকাশ, পাকিস্তানি লবীর। সক্রিয় সমর্থনে লন্ডনে বেশ কয়েক দফা বৈঠকের পর ঢাকার কথিত ষড়যন্ত্রকারীদের সম্ভাব্য সাহায্যের আশ্বাস দেয়া হলো। শােনা যায়, মূল পরিকল্পনা অনুসারে চট্টগ্রামের বেতবুনিয়াতে যখন প্রেসিডেন্ট মুজিব উপগ্রহ কেন্দ্র উদ্বোধন করতে গিয়েছিলেন, তখনই তাঁকে হত্যা করার কথা। কিন্তু ট্যাঙ্ক বাহিনীকে সেখানে নেয়া সম্ভব নয় বলে হত্যাকাণ্ডের দিন পরিবর্তন করা হয়।
ষড়যন্ত্রকারীরা যেভাবে হত্যার দিন ঠিক করেছিল, তা চিন্তা করলে অবাক লাগে। কেননা এ সময় রক্ষীবাহিনীর প্রধান বিগ্রেডিয়ার নুরুজ্জামান দেশের বাইরে এবং সামরিক গােয়েন্দা বিভাগের নয়া ডিরেক্টর জেনারেল কর্নেল জামিল তখনও দায়িত্বভার গ্রহণ করেননি। এটা এমন একটা সময় যখন বঙ্গবন্ধুর সরকারের প্রতি বন্ধু দেশগুলাের মনােভাব কিছুটা ঝাপসা এবং সন্দেহের বীজ বপন হয়েছে। কেননা বঙ্গবন্ধুর কথা হচ্ছে ‘বশ্যতা নয়; বন্ধুত্ব। অন্যদিকে বাকশালের পলিট ব্যুরাে গঠনে আওয়ামী লীগের বিরাট মহল নিরপেক্ষ হওয়ার প্রেক্ষিতে জাতীয়তাবাদী শক্তি অনেকটা ছত্রভঙ্গ আর শিক্ষিত মহল বিভ্রান্ত। মুজিব-বিরােধীরা বুঝতে পেরেছিলেন, যা কিছু করার তা পহেলা সেপ্টেম্বর থেকে জেলায় জেলায় গভরশীপ পদ্ধতির প্রশাসনের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর নতুন ক্ষমতার উৎস সৃষ্টির আগেই করতে হবে। চরম আঘাত হানার জন্য ষড়যন্ত্রকারীরা এমন একটা সময় বেছে নিলাে, যখন জেলায় জেলায় গভর্নরের ক্ষমতা গ্রহণের আর মাত্র সপ্তাহ দুয়েক বাকি আছে। একবার গভর্নররা গদিতে বসতে পারলে সরকারের শক্তির উৎস প্রচুর। পরিমাণে জেলাগুলােতে স্থানান্তরিত হওয়ার প্রেক্ষিতে বঙ্গবন্ধুর আগামী সরকারকে নিশ্চিহ্ন করা মুস্কিল হবে। সেক্ষেত্রে জেলাগুলো থেকেই সংঘবদ্ধভাবে প্রতিরােধ আসতে বাধ্য।
এজন্য পহেলা সেপ্টেম্বরের আগেই বঙ্গবন্ধু হত্যার ষড়যন্ত্রকে বাস্তবায়িত করতেই হবে। তাই যারা একথা বলেন যে, সপরিবারে বঙ্গবন্ধু হত্যা একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা। মাত্র, তারা সত্যের অপলাপ করছেন। আসলে অত্যন্ত সন্তর্পণে এক সুদূরপ্রসারী ষড়যন্ত্রের জের হিসাবেই এ নৃশংস হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। ষড়যন্ত্রকারীরা নানা অছিলায় সবার দৃষ্টি শুধুমাত্র সংশ্লিষ্ট মেজরদের উপর নিবন্ধ রাখার জন্য। তখনও প্রচেষ্টা চালাচ্ছিল। তাই মূল পরিকল্পনা হিসাবে পরােক্ষভাবে জিয়ার ‘ইমেজ তৈরি ও রাস্তা সুগম। করার উদ্দেশে কাজ শেষ হবার সঙ্গে সঙ্গে খন্দকার মোশতাক, জেনারেল। ওসমানী, খালেদ মােশাররফ, কর্নেল তাহের, মেজর ফারুক-রশীদের দল, বিচারপতি সায়েম এবং এয়ার ভাইস মার্শাল তাওয়াব-একে একে সবাইকে উচ্ছিষ্টের মতাে নর্মায় ফেলে দেয়া হলাে। অবস্থা দৃষ্টে মনে হয় যে, বঙ্গবন্ধুকে বেআইনীভাবে ক্ষমতাচ্যুত করার ষড়যন্ত্রের কথা মােটামুটিভাবে সব কটি উপদলের জানা থাকলেও, পাক-মার্কিন বিশেষ মহলের সমর্থনে নানা ঘাত-প্রতিঘাতের মাঝ দিয়ে শেষ পর্যন্ত জেনারেল জিয়াকে যে ক্রীড়নক হিসাবে ক্ষমতায় বসানাে হবে—এই ষড়যন্ত্রের কথাটা অনেকের অজানা ছিল।
সূত্রঃ মুজিবের রক্ত লাল – এম আর আখতার মুকুল