১৯৭৫ সনের ১৫ আগস্ট প্রসঙ্গে তৎকালীন ঢাকা ব্রিগেড কমান্ড কর্ণেল (অবঃ) শাফায়াত জামিলের সঙ্গে
সাক্ষাকার-আলাপচারিতা
প্রশ্ন : আপনি বােধ হয় জানেন, বিশিষ্ট সাংবাদিক এ্যন্থনী মাসকারেনহাস ‘বাংলাদেশ : এ লিগেসী অব ব্লাড’ শীর্ষক একটি বই লিখেছেন। সে বইতে আপনার ভূমিকা বেশ গুরুত্ব পেয়েছে এবং কিছু বিতর্কিত কথাও সেখানে রয়েছে। উক্ত বইয়ের (পৃ. ৫৬) লে. কর্নেল রশীদের জবানীতে বলা হয়েছে ভারতের গানারী স্টাফ কোর্স সমাপ্ত করে আসার পর স্বভাবতই তাকে যশােরের গানারী স্কুলে পােস্টিং করা হয়, কিন্তু রশীদ উক্ত কর্মস্থলে যােগদান না করে ঢাকায় থাকার চেষ্টা চালায়। এরই এক পর্যায়ে সে দাবি করেছে আপনার সংগে দেখা করেছে এবং সে সাক্ষাতের বদৌলতে তার ভাগ্য সুপ্রসন্ন হয় এবং তার পূর্বের পােস্টিং বাতিল হয় এবং ঢাকায় তাকে নতুনভাবে পােস্টিং করা হয় এবং ১৯৭৫ সনের এপ্রিল মাসে সে সেকেন্ড ফিল্ড আর্টিলারীর কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করে। লেঃ কর্নেল রশিদের এই বক্তব্য সম্পর্কে আপনার কিছু বলার আছে কি?
উত্তর : শাফায়াত জামিল, আব্দুর রশিদ নামে সামরিক এই অফিসারটি মুক্তিযুদ্ধের শেষ পাদে; অর্থাৎ অক্টোবরে এসে যােগদান করে, নভেম্বরে তার কথা জানতে পারি। দেশ স্বাধীন হবার পর কক্সবাজার ও রংপুরে আমি কর্মরত ছিলাম। রশিদের সংগে আমার কোন সাক্ষাৎ ঘটেনি। ভারত থেকে প্রশিক্ষণ শেষে রশিদ ঢাকায় আসে। চীফ অব স্টাফের অধীনে মিলিটারী সেক্রেটারী ব্রাঞ্চের এক অর্ডারে আমি দেখতে পেলাম তাকে যশােহরে পােস্টিং করা হয়েছে। তখন মিলিটারী সেক্রেটারী ছিলেন এ, এস, এম নাসিম। ১৫ থেকে ২০ দিন পর দেখলাম রশিদের ঐ পূর্বের পপাস্টিং ক্যান্সেল করা হয়েছে। পােস্টিং অর্ডার করার দায়িত্ব ছিল চিফ অফ স্টাফ জনাব শফিউল্লাহর। তার অধীনে সাধারণত মিলিটারী সেক্রেটারী এ সব কাজ করে থাকেন। রশিদের যশােরের পােস্টিং ক্যান্সেল করার ব্যাপারে আমার কিছুই জানা নেইকরণীয় কিছু ছিল না রশিদ যা বলছে তা মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণােদিত। ঢাকা ব্রিগেডের কমান্ডার হিসেবে আমার অধীনে ফাস্ট বেঙ্গল, সেকেন্ড বেঙ্গল, ফোর্থ বেঙ্গল, সিক্সটিন বেঙ্গল, সেকেন্ড ফিল্ড রেজিমেন্টের কমান্ডার অফিসারদের দেখা প্রায় প্রতিদিনই হতাে। সি, ও হিসেবে রশিদের সংগে দেখা হত। আর১০/১২ জন ও, সি, ছিলেন তাদের সংগেও সাক্ষাৎ হত। তবে রশিদ যেভাবে সাক্ষাতের কথা বলেছে তা একেবারেই মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণােদিত। উদ্দেশ্য প্রণােদিত কেন তা পরে বলছি। এ প্রসংগে আমি অত্যন্ত গুরুত্ব ও জোরের সংগে উল্লেখ করতে চাই, রশিদের যশােরের পােস্টিং কেন চিফ অর স্টাফ শফিউল্লাহ সাহেব ক্যান্সেল করেছিলেন—এ ব্যাপারে প্রকৃত তথ্য প্রকাশিত হওয়া উচিত। কেননা এই ঘটনাটি বঙ্গবন্ধুর হত্যার সংগে অবশ্যই সম্পর্কিত। জনাব শফিউল্লাহ কেন অথবা কোন্ উফতিন ব্যক্তির নির্দেশে অথবা চাপের মুখে রশিদকে ঢাকায় রেখেছিলেন আজ তা প্রকাশ হওয়া উচিত।
প্রশ্ন : ১৫ই আগস্ট সম্পর্কে আপনি কিছু বলুন?
উত্তর : শাফায়াত জামিল, ১৪ই আগস্ট রাত বারােটার সময় তদানীন্তন চিফ অব লজিস্টিক ব্রিগেডিয়ার সি, আর দত্ত আমাকে নিয়ে সি, এম এইচ- এ গেলেন। সেখানে দুর্ঘটনাকবলিত ভারতীয় হেলিকপ্টারের ক্রুদের ছিন্নভিন্ন লাশগুলাে ভারতে পাঠানাের ব্যবস্থা হচ্ছিল। এ সব ছিন্নভিন্ন লাশের গন্ধে আমি বমি করতে থাকি। অসুস্থ হয়ে পড়ি এবং রাত দুটোয় বাসায় এসে ক্লান্ত দেহে শুয়ে পড়ি। সকাল ৬-১০ মিনিটে হন্তদন্ত হয়ে রশিদ আমার ঘরে ঢুকে বলে, উই হ্যাভ কিলডু শেখ মুজিব—এমন সময় টেলিফোন বেজে উঠে। আমি টেলিফোন ধরতে শফিউল্লাহ সাহেবের কান্নাভেজা বিমর্ষ কণ্ঠ শুনতে পেলাম। তিনি বললেন, বঙ্গবন্ধু আমাকে বিশ্বাস করলেন না বিশ্বাস করলেন না; টেলিফোনে তার ধরা গলা শুনতে পারলাম। শফিউল্লাহ সাহেব আমাকে কোন অর্ডার করলেন না অথবা তৈরি হতে বা প্রতিহত করতে হবে- এমন কিছুই বললেন না। আমার বাসা থেকে ডেপুটি চিফ জিয়াউর রহমান সাহেবের বাসা প্রায় ১০০ গজের দূরত্ব। আমি জিয়াউর রহমান সাহেবের বাসায় গেলাম। ডাকাডাকি করলাম। তিনি বেরিয়ে এলেন। অর্ধেক শেভ। শফিউল্লাহ সাহেবের কথা বললাম। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছে। তিনি বললেন, সাে হােয়াট। প্রেসিডেন্ট নেই, ভাইস প্রেসিডেন্টতে আছেন—ইউ এলার্ট ইয়াের উপস। ফাস্ট বেঙ্গলে গেলাম। তাদের অর্গানাইজ করলাম ৮-৩০ মিনিটের দিকে চিফ শফিউল্লাহ, ডেপুটি চিফ জিয়াউর রহমান, বিমান বাহিনীর প্রধান খন্দকার, নৌবাহিনীর প্রধান, এম এইচ খান এলেন। আমি তখন ফাস্ট বেঙ্গলে। এদের সঙ্গে ডালিম ছিল। ডালিমের সঙ্গে আমার কথা কাটাকাটি হল, বলতে পারেন ভালাে রকম ঝগড়া হয়ে গেল। আমাকে কিছুই বলা হল না। তারা চলে গেলেন। পরে দেখলাম সবাই খন্দকার মোশতাককে প্রেসিডেন্ট হিসেবে মেনে নিয়ে আনুগত্যের শপথ নিল। এ সময়ই সংবাদ পেলাম কুমিল্লা থেকে কিছু ট্রপস আসছে তারা নাকি ডালিমের লােক। আমি কর্নেল আমজাদের সঙ্গে কথা বলি এ বিষয়ে। তিনি ট্রপসদের কন্ট্রোল করেন। সারাদিন রেডি থাকলাম। এই জঘন্য বিদ্রোহ দমনের জন্য প্রস্তুত থাকলাম। এ সময় হতেই খালেদ মােশাররফ ফাস্ট বেঙ্গলে থাকতে শুরু করেন। আমার বুঝতে বাকি রইল না বঙ্গবন্ধু হত্যার মধ্য দিয়ে কি ঘটে গেল। মােশতাককে প্রেসিডেন্ট পদে দেখে বুঝতে বাকি রইল না তারা দেশটাকে প্রি-৭১-এর অবস্থায় নিয়ে যেতে চাচ্ছে। স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় থেকেই মোশতাককে জানতাম।
প্রশ্ন : পরবর্তী কোন উল্লেখযােগ্য ঘটনা কিছু থাকলে অনুগ্রহ করে বলবেন কি?
উত্তর : শাফায়াত জামিল, দেখুন তারিখটা মনে নেই। তবে বঙ্গবন্ধু হত্যার এক সপ্তাহের মধ্যেই হবে। আমাদের বলা হল ১৫ই আগস্ট কেন সংঘটিত হল এ সম্পর্কে প্রেসিডেন্টের পক্ষে আমাদের ব্রীফ দেয়া হবে। সেনাসদর দপ্তর। সকাল ১০টা। সেনাবাহিনী চিফ জেনারেল শফিউল্লাহ, ডেপুটি চিফ জিয়াউর রহমান, খালেদ মােশাররফ, লেঃ কর্নেল নুরুদ্দিন (তখন ডি, এম, ও) কর্নেল মঈনুল হােসেনসহ ঢাকার উপস্থিত সিনিয়র অফিসারবৃন্দ ঐ মিটিং-এ উপস্থিত। আমিও ঢাকা ব্রিগেড কমান্ডার হিসেবে সেখানে আছি। দেখলাম, রশিদ ও ফারুক এলাে। প্রেসিডেন্ট মােশতাকের পক্ষে তারা আমাদের ব্রীফ দেয়ার জন্য এসেছে। রশিদ কথা বলা শুরু করে। দেশে অরাজকতা, বিশৃংখলতা, অর্থনৈতিক ধ্বংসােনুখ ইত্যাদি বলার পর সে বলল, শেখ মুজিবকে উৎখাতের বিষয়টি এখানে উপস্থিত সিনিয়র অফিসারদের নিকট পূর্বেই জানানাে হয়েছিল। এ কথা বলার সাথে সাথে আমি প্রতিবাদ করে উঠলাম। বললাম, বঙ্গবন্ধুকে উৎখাত করা হবে এ কথা কবে কাকে কখন জানানাে হয়েছে তা আমার জানা নেই। তবে এটা আমার সম্পূর্ণ অজানা। আমি বললাম, মােশতাক আমার প্রেসিডেন্ট নয়, হি ইজ এ মার্ডারার। আমি প্রথম সুযােগেই তাকে ওভার থ্রো করব। তােমাদের অন্যায় বিদ্রোহ ও জঘন্য কর্মকাণ্ডের জন্য তােমাদের কোর্ট মার্শাল হবে। তােমরা মনে করেছ ইউ আর ডেসপারেটবাট দেয়ার আর ডেসপারেট পিপূল ইন দ্য আর্মি হু উইল ওভার গ্রো ইউ।। এ কথায় রশিদ স্তম্ভিত হয়ে যায়। আমি বললাম, তােমরা সেনাবাহিনীর চেইন ইন কমান্ড ব্রেক করেছাে, শৃঙ্খলা ভেঙ্গেছাে এবং সাংবিধানিক আনুগত্য বিনষ্ট করেছে।
প্রশ্ন : আজকাল বঙ্গবন্ধুর অন্যতম হত্যাকারী ফারুক রহমানকে মুক্তিযােদ্ধা হিসেবে দেখানাে হচ্ছে। আপনার অভিমত কি?
উত্তর : শাফায়াত জামিল, প্রকৃত প্রস্তাবে ফারুক মুক্তিযােদ্ধা নয়। সে জন্য মুক্তিযােদ্ধারে প্রদত্ত ২ বছরের সিনিয়রিটি সে পায়নি। এ সময়ে আর্মিতে নিয়ম ছিল ২১শে নভেম্বরের আগে যে সকল সামরিক অফিসার মুক্তিযুদ্ধে যােগ দিয়েছিল কেবল তারাই দুই বছরের সিনিয়ারিটি পাবে। সে হিসেবে ফারুক সিনিয়ারিটি পায়নি।
প্রশ্ন : সম্প্রতি একটি সাপ্তাহিক পত্রিকার এক সাক্ষাৎকারে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের অন্যতম লেঃ কর্নেল শাহরিয়ার বলেছে যে ১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি ঐ সময় ঢাকায় সকল উর্ধ্বতন সামরিক অফিসারবৃন্দ জানত। এমনকি ঢাকার ৪৬তম ব্রিগেড কমান্ডারের সংগে আলাপ করে ১৫ই আগস্ট সংঘটিত হয়েছিল? এ সম্পর্কে আপনার বক্তব্য কি?
উত্তর : শাফায়াত জামিল, দেখুন এ ব্যাপারে এ পত্রিকায় আমি একটি প্রতিবাদ পাঠিয়েছি। তিনি বিবৃতির একটি কপি প্রদান করেন বিবৃতি নিম্নরূপ। জনাব সম্পাদক সাহেব, সাপ্তাহিক মেঘনা। ৪ এবং ১১ই সেপ্টেম্বর তারিখে প্রকাশিত লেঃ কর্নেল (অবঃ) শাহরিয়ারের সাক্ষাতকারটির প্রতি আমার দৃষ্টি আকর্ষিত হয়েছে। এই নিবন্ধে আমার নাম বেশ কয়েকবার উল্লেখ করা হয়েছে। আমার সম্পর্কে বেশ কিছু অসত্য কাহিনীর অবতারণা করেছেন তিনি। শাহরিয়ার কিছুদিন আমার অধীনে রংপুরে চাকুরী করেছেন ১৯৭৬ সালে। সম্ভবত ১৯৭৪ সালে অবসর নেন স্বাস্থ্যগত কারণে কুমিল্লায় থাকাকালীন। ৭৩ সাল হতে ৭৫ সালের অক্টোবর পর্যন্ত তার সাথে আমার কোন সাক্ষাত্ত হয় নাই। এই দীর্ঘ দুই বছর তার সাথে আমার কোন যােগাযােগও ছিল না। এই সময়কাল আমি। তাকে দেখিওনি। সুতরাং ৭৫ সালের ১২ আগস্ট তারিখে আমার সাথে আলাপ করার কথা একেবারেই বানােয়াট, মিথ্যা, উদ্দেশ্যপ্রণােদিত, দুরভিসন্ধিমূলক এবং বিভ্রান্তিকর। আমি এই উদ্দেশ্যমূলক মিথ্যা বানােয়াট প্রচারের তীব্র প্রতিবাদ জানাই। ফিল্টার টিপৃড় সিগারেট নিয়ে আমার সাথে বর্ণিত বাক্যালাপটি একেবারেই বাল্যসুলভ মনােবৃত্তির পরিচয় হেতু মন্তব্য নিষ্প্রেয়ােজন। ১৫ই আগস্টের বিদ্রোহ এবং হত্যাকাণ্ড আমি এবং তৎকালীন সেনাবাহিনীর শৃঙ্খলাপরায়ণ, বিবেকবান অফিসারেরা কেউই মেনে নিতে পারেনি। ১৫ই আগস্ট যারা সেনাবাহিনীতে বিদ্রোহ করিয়ে নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করেছেন তাদেরকে প্রথম সাক্ষাতেই আমি আমার মনােভাব খােলাখুলিভাবেই জানিয়ে দিয়েছিলাম সেনাসদর দপ্তরে তৎকালীন সেনা প্রধান ও অন্যান্য সিনিয়র অফিসারদের উপস্থিতিতেই। আমি ষড়যন্ত্রে কখনও বিশ্বাসী নই, অতীতে যখন যা করেছি নিঃশঙ্ক চিত্তে, উন্নতশিরে খােলাখুলিভাবে বলে কয়েই করেছি। আমি একজন যুদ্ধাহত মুক্তিযােদ্ধা, দেশ ও জাতি আমার কাছে অনেক বড়। তৃতীয় বিশ্বের জাতীয়তাবাদী নেতাদের অনেকেই জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তির পথে সক্রিয় পদক্ষেপ নেয়ার কারণে আন্তর্জাতিক শক্তির বিরাগভাজন হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন। বঙ্গবন্ধুও সেই একই পথের পথিক। তিনি জীবন দিয়ে দেশবাসীর ভালবাসার ঋণ পরিশােধ করে গিয়েছেন। শাহরিয়ার এবং তার সহযােগীরা যদি মনে করে থাকেন তারা ইতিহাস বিকৃত করতে এবং বঙ্গবন্ধুকে বিতর্কিত ব্যক্তিত্ব রূপে দেশবাসীর সামনে উপস্থাপিত করতে সক্ষম হবেন, তাহলে তারা অবাস্তব কল্পনার রাজ্যে বিচরণ করছেন। সত্য শাশ্বত এবং চিরন্তন। অন্ধ হলে প্রলয় বন্ধ হবে না। ইতিহাস নিশ্চয়ই বঙ্গবন্ধুর যথার্থ মূল্যায়ন করে পরম শ্রদ্ধার আসনটি দেবে ভবিষ্যতে। লেঃ কর্নেল শাহরিয়ার ও তার সহযােগীরা তাদের কৃতকর্মের যথার্থ বিচারের অপেক্ষায় থাকতে পারেন।
ধন্যবাদান্ত কর্নেল শারফাত জামিল (অব.) বীরবিক্রম
১৫/এ পুরানা পল্টন ঢাকা-২, বাংলাদেশ
সূত্রঃ ফ্যাক্টস্ এন্ড ডকুমেন্টস্ বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ড অধ্যাপক আবু সাইয়িদ