১৮ এপ্রিল ১৯৭১ঃ কসবা আক্রমন – ক্যাপ্টেন আব্দুল গফফার হাওলাদার এর বর্ণনায়
১৮ই এপ্রিল রাতেই আমি কসবা বাজার ও কসবা রেলওয়ে স্টেশন আক্রমণ করার পরিকল্পনা করি। ৩ ইঞ্চি মর্টারের সাহায্যে হঠাৎ করে শত্রুদের উপর আক্রমণ শুরু করে দেই। শত্রুরা যেহেতু প্রস্তুত ছিলো না সেহেতু তারা এই আক্রমণে হকচকিত হয়ে পড়ে। এ অপ্রত্যাশিত যুদ্ধ দেড় ঘন্টা ধরে চলে এবং এর সাফল্য অপ্রত্যাশিত ছিলো। শত্রুরা তখনো পর্যন্ত কোনো বাঙ্কার তৈরি করেনি। ফলে তারা গাড়ি বোঝাই অস্ত্র ফেলে রেখে বাজারের কুঁড়েঘরে এবং দোকানে গিয়ে আশ্রয় নেয়।
রাত সাড়ে চারটাকে আবার আক্রমণ করার সময় হিসেবে বেছে নেই। আমি একটা লম্বা গাছের উপর উঠে শত্রুদের অবস্থান দেখে নেই এবং আমার সৈন্যদের প্লাটুনে ভাগ করে তিন দিক দিয়ে ঘিরে ফেলি। একটি মাত্র পথ শত্রুদের জন্য খোলা থাকে। ৩.৫ ইঞ্চি রকেট লাঞ্চার এবং ছোট অস্ত্র ও মর্টারের সাহায্যে শত্রুদের উপর গোলাগুলি ছুড়তে থাকি। এই গোলাবর্ষণের ফলে শত্রুদের ৭টা গাড়ি ধ্বংস হয়ে যায়। ৪৫/৫০ জন নিহত হয় এবং ৭০/৮০ জন আহত হয়। শত্রুরা এ আকস্মিক আক্রমণে পর্যুদস্ত হয়ে কসবা ছেড়ে আড়াইবাড়ি কুটির দিকে পালিয়ে যায় এবং সেখানে গিয়ে অবস্থান নেয়। যাবার সময় তারা বিধ্বস্ত গাড়ি ও অনেক মৃতদেহ ফেলে রেখে যায়। এ যুদ্ধ জয়ের ফলে আমাদের সৈন্যদের মনোবল অনেক বেড়ে যায়। কসবা নতুন বাজার দখল করার পর আমার হেডকোয়ার্টার কসবাতেই স্থাপন করি। অবশ্য আমি জানতাম, শত্রুরা কসবা দখল করার জন্য আবার বিপুল শক্তি সঞ্চয় করে আমাদের উপর আক্রমণ চালাবে।