১৮ এপ্রিল ১৯৭১ঃ কলকাতা মিশনের ৭০ জন কর্মকর্তা কর্মচারীর বাংলাদেশের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন
কলকাতায় নিযুক্ত পাকিস্তানের ডেপুটি হাই কমিশনার জনাব হোসেন আলী বাংলাদেশের প্রতি তাঁর পূর্ণ আনুগত্য ঘোষণা করেন। তিনি সেখানে উপস্থিত কূটনৈতিক ব্যক্তিবর্গের উল্লাস ধ্বনির মাধ্যমে সবুজ ও সোনালি রঙের বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন। পাকিস্তানিদের গণহত্যার প্রতিবাদে মিশনের সকল বাঙালি কর্মচারিদের নিয়ে তিনি বাংলাদেশের পক্ষে যোগ দেন। তাকে বাংলাদেশের পক্ষে আনতে বিএসএফ প্রধান রুস্তমজি ১৭ তারিখ থেকেই নেমে পড়েন। তিনি গোলক মজুমদারকে পাঠান তার কাছে। গোলক মজুমদার তার সাথে আলাপ করেন। হোসেন আলী বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর নিশ্চয়তা চাইলেন। রুস্তমজি তাই দিলেন। তাজ উদ্দিনের সাথে নদীর ধারে গেলউ রেস্তোরায় তাদের সাক্ষাতের ব্যবস্থা করা হয়।
তার নিরাপত্তার জন্য কমান্ডো বাহিনী মোতায়েন করা হয়। তার পর একটি অভিজাত রেস্তোরায় আবারো ২ বার রুস্তমজি গোলক মজুমদারের সাথে বৈঠক করা হয়। বৈঠকে না থাকলেও বিএসএফের আরেক ডিজি রাজগোপাল, মেজর জেনারেল নরিন্দর সিংহ তাদের সাথেই চলতেন (তাজউদ্দিনের ভারতীয় সামরিক উপদেষ্টা)। পক্ষ ত্যাগের আগে আমেরিকান এক ব্যাঙ্কে গচ্ছিত তার হাই কমিশনের সমস্ত টাকা (তিন কোটি) উত্তোলন করেন এবং অপর একটি ভারতীয় ব্যাঙ্কে (এসবিআই, চৌরঙ্গী শাখা) বাংলাদেশ ডেপুটি হাই কমিশন কলকাতা নামে নতুন একাউন্তে জমা করেন। এই একাউন্তে প্রবাসী সরকারের( ট্রেজারি থেকে আনা) অনেক টাকাও জমা হত। তার পর পরই কলকাতা মিশনে বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন হয়। পতাকা, সাইন বোর্ড আগে থেকেই বিএসএফ মজুদ রাখতো যাতে সময় নষ্ট না হয়।(ব্যারিস্টার আমিরুল এবং অন্য আরেকজন ভারতীয় সেনা কর্মকর্তা দাবী করেন এ প্রক্রিয়ায় তারাও ছিলেন)।