১৭ এপ্রিল ১৯৭১ঃ বাহিনী পুনর্গঠন ও প্রতিরোধ যুদ্ধ- ব্রাহ্মণবাড়িয়া
শাহবাজপুরে তিতাস ব্রিজ এলাকায় অবস্থানরত ক্যাপ্টেন মতিনের মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর পাকবাহিনীর একটি ব্যাটালিয়ন আর্টিলারি গানবোট সহকারে আক্রমণ চালায়। সারারাত স্থায়ী যুদ্ধে ৫ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। এতে মুক্তিযোদ্ধারা পিছু হটে মাধবপুরে গিয়ে ক্যাপ্টেন নাসিমের বাহিনীর সাথে অবস্থান নেন। ১৭ই এপ্রিল ভোরবেলা পাকিস্তান সেনাবাহিনী দরুইন গ্রামে ক্যাপ্টেন আকবর, ক্যাপ্টেন সুবিদ আলী , ক্যাপ্টেন মাহবুব এর মুক্তিবাহিনীর অবস্থানের উপর মর্টার ও আর্টিলারীর গোলাবর্ষণ শুরু করলে মেজর শাফায়াত জামিল ১১ নম্বর প্লাটুনকে দরুইন গ্রামে আগের প্লাটুনের সাথে যোগ দেয়ার নির্দেশ দেন। ১১ নম্বর প্লাটুন নিয়ে হাবিলদার মুনির দরুইনে পৌছেন। সিপাহী মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল তার নিকট থেকে গুলি নিয়ে নিজ পরিখায় অবস্থান গ্রহন করেন। বেলা ১১ টার দিকে শুরু হয় শত্রুর গোলাবর্ষণ। সেই সময়ে শুরু হয় মুষলধারে বৃষ্টি। সাড়ে ১১টার দিকে মোগরা বাজার ও গঙ্গা সাগরের শত্রু অবস্থান থেকে গুলি বর্ষিত হয়।
১২ টার দিকে আসে পশ্চিম দিক থেকে সরাসরি আক্রমণ। প্রতিরক্ষার সৈন্যরা আক্রমণের তীব্রতায় বিহ্বল হয়ে পড়ে। কয়েক জন শহীদ হন। মোস্তফা কামাল মরিয়া হয়ে পাল্টা গুলি চালাতে থাকেন। তাঁর পূর্ব দিকের সৈন্যরা পেছনে সরে নতুন অবস্থানে সরে যেতে থাকে এবং মোস্তফাকে যাবার জন্য অনুরোধ করে। কিন্তু তাদের সবাইকে নিরাপদে সরে যাওয়ার সুযোগের জন্য মোস্তফা পূর্ণোদ্যমে এল.এম.জি থেকে গুলি চালাতে থাকেন। তাঁর ৭০ গজের মধ্যে শত্রুপক্ষ চলে এলেও তিনি থামেননি। এতে করে শত্রু রা তাঁর সঙ্গীদের পিছু ধাওয়া করতে সাহস পায়নি। এক সময় গুলি শেষ হয়ে গেলে, শত্রুর আঘাতে তিনিও লুটিয়ে পড়েন। এদিন আখাউরার পতন হয় মুক্তিবাহিনী আগরতলা বিওপি এর কাছে অবস্থান নেয়। পাকিস্তান সেনাবাহিনী এক প্রেস রিলিজে জানায় তারা ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও আখাউরার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। তারা কিছু অস্র গোলাবারুদ আটক করে।