১৭ এপ্রিল, ১৯৭১ঃ বাংলাদেশ সরকারের শপথ গ্রহন
কুষ্টিয়া জেলার মেহেরপুর মহকুমার বৈদ্যনাথতলার ভবেরপাড়া গ্রামের ‘মুজিব নগর’-এ প্রায় পাচ হাজার মানুষের বিপুল হর্ষধ্বনির মধ্যে আওয়ামীলীগ চীফ হুইফ অধ্যাপক ইউসুফ আলীর স্বাধীনতা সনদ পাঠের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার’ গঠিত হয়। সনদটি রচনা করেন ব্যারিস্টার আমিরুল ইসলাম এবং কর্নেল বাইন্স সম্পাদনা করেন কলকাতার বিখ্যাত এডভোকেট সুব্রত রায় চৌধুরী। এ অনুষ্ঠানে ৮২ জন দেশী-বিদেশী সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন। এদের আনার জন্য ১৮ টি জীপ ও দুটি ট্রাক ব্যাবহার করা হয়। তাজ উদ্দিন তার ভাষণে উপস্থিত বিদেশী সাংবাদিকদের ধন্যবাদ জানান। নবগঠিত মন্ত্রীসভায় শেখ মুজিবর রহমান রাষ্ট্রপতি এবং সশস্ত্র বাহিনী ও মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক, সৈয়দ নজরুল ইসলাম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতির দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-রাষ্ট্রপতি, তাজউদ্দিন আহমদ প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী হিসেবে খন্দকার মোস্তাক আহমদ, মনসুর আলী, এ.এইচ.এম কামরুজ্জামানের নাম ঘোষণা করা হয় এবং পরিচয় করে দেয়া হয়।
অস্থায়ী রাষ্ট্রপতির দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামের শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন অধ্যাপক এম.ইউসুফ আলী। স্বাধীনতার সনদ ঘোষণা ও শপথ অনুষ্ঠানে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামকে মুক্তিবাহিনীর দুটি প্লাটুন আনসার,ইপিআর,মুজাহিদ এসডিপিও/ ক্যাপ্টেন মাহবুবউদ্দীনের নেতৃত্বে সামরিক অভিবাদন জানায়। এই অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন গণপরিষদ সদস্য আবদুল মান্নান। অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন শরীফ থেকে তেলাওয়াত করা হয় তেলাওয়াত করেন পাশের গ্রামের দশম শ্রেণীর ছাত্র মোহাম্মদ বাকের আলী। শেষে জাতীয় সঙ্গীত ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালবাসি’ পরিবেশন করা হয় পরিবেশন করেন কৃষ্ণনগরের স্থানীয় শিল্পীবৃন্দ। শপথের সময় সেনা কর্মকর্তাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কর্নেল ওসমানী, মেজর ওসমান, লেঃ হাফিজ, ক্যাপ্টেন এ আর আজম চৌধুরী, ক্যাপ্টেন এটিএম সালাহউদ্দিন। ভারতীয় বাহিনীর মধ্যে ছিলেন লেঃ কঃ মেঘ সিং সিভিল ড্রেসে।