মুকসুদপুর থানার পাকদালাল খালেক মুন্সীকে দমন করার পরও ঐ এলাকায় ওহাব মিয়া, জলিল মিয়া, নয়া মিয়া, আবুল খায়ের, তােপু মিয়া, নওয়াব আলী এবং ছহিরুদ্দিন মাতুব্বর প্রভৃতি পাকসেনা সহযােগীদের স্বাধীনতার বিরােধী কার্যকলাপ অব্যাহত ছিল। তাই স্থানীয় মুক্তিকামী জনসাধারণ তাদের তালিকা আমাদের নিকট পেশ করে বার বার তাদের অপারেশন করবার জন্য অনুরােধ করছিল। অতঃপর আমরাও ঐ থানায় আবার দালাল খতম অভিযানে বের হওয়ার জন্য সিদ্ধান্ত নিলাম। একদিন সকালে আজিজ মােল্লা মুকসুদপুর থানার দক্ষিণ অঞ্চলে এক কুখ্যাত পাকসেনা সহযােগীকে অপারেশন করার জন্য বের হন। ফিরে আসার পথে রাজাকার কমান্ডার উজানীর খায়েরের বাড়ি অপারেশন করার পরিকল্পনা ছিল। ঐ দিন বিকালে কয়েকখান কেরাই নৌকোয় মুক্তিযােদ্ধারা যখন উজানী গ্রাম সংলগ্ন প্রবাহিত খালের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল তখন আবুল খায়েরের বাড়ি হতে রাজাকাররা ভারতগামী হিন্দুদের নৌকা মনে করে গুলি করে। মুক্তিযােদ্ধারা তখন ডাঙ্গায় নেমে রাজাকারদের আক্রমণ করল। কিছুক্ষণ গুলি বিনিময়ের পর টিকতে না পেরে আবুল খয়েরসহ অন্যন্য রাজাকাররা পালিয়ে যায়। মুক্তিযােদ্ধারা দুটি রাইফেল উদ্ধার করে। যাত্রা পথে বাধাপ্রাপ্ত হওয়ায় আজিজ মােল্লা দলের লােকজনসহ বাড়ি ফিরে আসার জন্য রওয়ানা হন। আসার পথে যাত্রীবাহী লঞ্চ ধরে আনেন। কারণ এই লঞ্চে পাকসেনারা গােপালগঞ্জ হতে মুকসুদপুর আসত। লঞ্চটি পরে চাঁদহাট কুমার নদীতে ডুবিয়ে দেওয়া হয়। খায়েরের বাড়ি অপারেশন করে তাকে কোন কিছু করতে না পারলেও ঐ অঞ্চলের পাকসেনা সহযােগীদের কার্যকলাপ অবশ্য বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। ( সূত্র ঃ মুক্তিযুদ্ধে বৃহত্তর ফরিদপুর, মােঃ সােলায়মান আলী।)
সূত্রঃ মুক্তিযুদ্ধের দু’শো রণাঙ্গন – মেজর রফিকুল ইসলাম পিএসসি সম্পাদিত