You dont have javascript enabled! Please enable it! 1973.04.12 | ১২-৪-৭৩ দৈনিক আজাদ | দেবীদার থানার জাফরগঞ্জ গ্রামের কুখ্যাত দালাল আব্দুল হাফিজকে ৪১ বছর সশ্রম কারাদণ্ড - সংগ্রামের নোটবুক
১২-৪-৭৩ দৈনিক আজাদ হত্যা, লুট ও দালালী মামলায় কুমিল্লার বিশেষ ট্রাইব্যুনাল ৪১ বছর সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন দেবীদার থানার জাফরগঞ্জ গ্রামের কুখ্যাত দালাল আব্দুল হাফিজকে বিভিন্ন ধারায়। সর্বমােট ৪১ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন কুমিল্লার অতিরিক্ত দায়রা জজ ও ২নং বিশেষ ট্রাইব্যুনাল জজ কাজী বশির উদ্দিন উক্ত দণ্ডাদেশ প্রদান করেছেন। এই কারা দণ্ডাদেশ একই সঙ্গে চলবে। মামলার বিবরণে বলা হয় যে ১৯৭১ সালের ১৫ই অক্টোবর রাতে আসামী আবদুল হাফিজ ওরফে হাফিজা কয়েকজন পাক সেনাসহ বাদী ইয়াসিন মিয়ার বাড়ীতে ঢুকে গুলি করলে তার ভাগিনা শাহ আলম নিহত ও তার বােন হালিমা খাতুনের পায়ে গুলি বিদ্ধ হয়। ইত্যবসরে ইয়াসিন মিয়া পাক সেনাদের আলামত দেখে বাড়ীর পিছন দিকে বাথ রুমের পিছনে লুকিয়ে থাকে। ঐদিকে পাক সেনাদের সহাতায় আসামী হাফিজা ইয়াসিন মিয়ার বন্দুক নং কে এইচ ০৫৩৬৮৮ চারটি স্বর্নান্ধুরী, স্বর্ণের বলয় দশটি, দুটি কানফুল, একটি রেডিও ও নগদ ৭৩০ টাকা আলমাৱা ভেঙ্গে নিয়ে যায় ।
দস্যুরা ইয়ানিনের মাতাকে ঘুসি মারে ও তার পিতাকে ধরে  নিয়ে যায় । ইয়াসিন মিয়া পিতার জীবন রক্ষার্থে পরদিন গ্রামবাসীর নিকট থেকে দুই হাজার টাকা ধার করে দস্যুদের কাছ থেকে পিতাকে ছাড়িয়ে আনে। বাদীর বােন। হালিমা খাতুনকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে তার একটি পা কেটে বাদ দেওয়া হয়। বাদী ইয়াসমিন মিয়া ১৯-১০-৭১ইং তারিখে থানার লিখিত এজাহার দেন। বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর পুলিশ তদন্তক্রমে বিবাদীর বিরুদ্ধে ১৫৫-৭২ তারিখে চার্জশীট দাখিল করে। বাদীপক্ষের মােট ১৪ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। মামনীয় আদালত বিবৃতিতে বাংলাদেশ ফৌজদারী দণ্ডবিধির ৩০২, ১০৯ ধারার সাথে বাংলাদেশের দালাল বিচার বিশেষ ট্রাইব্যুনাল আদেশ ১৯৭২ এবং ২নং বি. অনুচ্ছেদের এবং ১১ (এ) উপধারায় দোষী সাব্যস্ত করে সশ্রম যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেন।

সূত্রঃ সাজাপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধী ১৯৭১ -প্রত্যয় জসীম