গতকাল মঙ্গলবার ২৮শে নভেম্বর ঢাকার ১২নং স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল জ জনাব শেখ খেলাশেদ আলী খুনী রাজকার আৰু বহনকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেন : রাজাকারের বিরুদ্ধে নারায়নগঞ্জ পৌরসভার কর্মচারী গােলাম মােস্তফাকে নৃশংসভাবে হত্যা করার জন্য পুলিশ চার্জসীটে প্রদান করে। মামলায় বাদী পক্ষের অভিযোগ করা হয় যে বিগত হানাদার আমলে নভেম্বর মাসের ১৮ তারিখে গােলাম মােস্তফার গ্রামের বাড়ীতে গিয়ে তার বাড়ীর চারিপার্শের জঙ্গল কেটে পরিষ্কার করতে বলে। নিহত মােস্তফা বলে ইফতারের সময় হয়ে গেছে পরের দিন সে জঙ্গল কাটবে। এতে রাজাকাররা ক্ষুদ্ধ হয়ে তাকে প্রহার করতে করতে মাটিতে ফেলে দেয় এবং আসামী তাকে গুলি করে। গ্রামের লােক ও আত্মীয়-স্বজন গুলির শব্দে পালিয়ে যায় । তার পরের দিন বাদিনী দেখতে পায় যে তার স্বামীর মৃতদেহ শেয়াল কুকুরে খেয়ে ফেলেছে। গৃহপালিত কুকুর প্রভুর মাথাটি বাড়ীর দরজার সামনে রেখে পাহারা দিচ্ছে। দেশ শত্রুমুক্ত হবার পর নিহত মােস্তফার স্ত্রী হামিদা বেগম নারায়ণগঞ্জে আসামীকে রিক্সা চালাতে দেখে কৌশলে তার রিক্সায় চেপে স্থানীয় পরিষদ জনাব আব্দুস সত্তার ভূইয়ার বাড়ীতে নিয়ে যেয়ে সমস্ত ঘটনা বর্ণনা করে। তারপর আসামীকে আটক করে থানায় চালান করা হয়। আসামী সরকার পক্ষের নিযুক্ত কৌসুলি সকল অভিযােগ অস্বীকার করে। মাননীয় স্পেশাল জজ সাক্ষ্য প্রমাণ বিশ্লেষণ করে তার রায়ে উল্লেখ করেন মৃত্যুদণ্ড ছাড়া কোন লঘুদণ্ড প্রদানে কোন মানবীয় কারণ তিনি খুঁজে পাচ্ছে না। সরকার পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন সিনিয়র স্পেশাল পিপি খন্দকার মাহবুব হােসেন ও তাকে সহায়তা করেন এ বি এম রফিকুল। আসামী পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন সরকার নিযুক্ত কৌসুলি সৈয়দ আনােয়ার কামাল।
সূত্রঃ সাজাপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধী ১৯৭১ -প্রত্যয় জসীম