You dont have javascript enabled! Please enable it! 1972.10.06 | দৈনিক আজাদ ড. আজাদ হত্যা মামলার রায় - সংগ্রামের নোটবুক
৬-১০-৭২ দৈনিক আজাদ ড. আজাদ হত্যা মামলার রায়
 অভিযুক্ত তিন ব্যক্তি মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত (২য় প্রতিবেদন) বিশিষ্ট গাণিতিক ড. এম এ কে আজাদকে অপহরণ পূর্বক হত্যায় সাহায্য করার দায়ে অভিযুক্ত তিন ব্যক্তির প্রত্যেকেই বিশেষ আদালত গতকাল বৃহস্পতিবার মৃত্যুদণ্ড দান করেছেন। ঢাকার প্রথম আদালতের এ্যাডিশনাল সেশন জর্জ সৈয়দ সিরাজুদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে গঠিত বিশেষ আদালত এই মৃত্যুদণ্ড দান করেন। আদালতের দীর্ঘ রায়ে বলা হয়েছে যে, অভিযুক্ত জুবায়ের ওরফে এস আহমেদুল্লাহ একদল আল বদরকে ড, আজাদের বাসভবন চিনিয়ে দেয় এবং অতঃপর তারা ড. আজাদকে হিংস্রভাবে ঘর থেকে ধরে নিয়ে যায়। উক্ত অভিযুক্ত জুবায়ের আলিয়া মাদ্রাসার ছাত্র ছিল এবং বর্তমানে বেআইনী ঘোষিত প্রতিক্রিয়াশীল রাজনৈতিক দল জামাতে ইসলামীর ছাত্র ফ্রন্ট ইসলামী ছাত্র সংঘের একজন সদস্য ছিল। আদালত রায় দেন যে, অন্য দুজন অভিযুক্ত মকবুল হােসেন ও আইয়ুব আলী ময়মনসিংহ জেলার ফুলপুর থানার একই গ্রামের বাসিন্দা ও তারা রাজাকার ছিল এবং যে পাচ জন আল বদর ড, আজাদকে তাঁর আজিমপুরস্থ বাসভবন থেকে অপহরণ করে এরা তাদের সাথে ছিল । রায়ে বলা হয়েছে যে, এই তিন জন অভিযুক্ত ব্যক্তি অন্যান্যদের সাথে গত বছর ১৫ই ডিসেম্বর স্বাধীনতার একদিন পূর্বে ড. আজাদকে নির্মমভাবে হত্যাকাণ্ডে সহায়তা করেছে। তারা এটা করেছেন পাক দখলদার বাহিনীর সাহায্য করে, যারা তাদের শাসন দেশের নেতৃত্ব স্থানীয় বুদ্ধিজীবীদের নির্মূল করে কায়েম রাখতে চেয়েছিল।

ড. আজাদের শব স্বাধীনতার তিনদিন পর রায়ের বাজারের এক গর্ত থেকে উদ্ধার করা হয়। তার দেহে অসংখ্য মারাত্মক আঘাতের চিহ্ন ছিল। পরে তাকে আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করা হয়। এ মামলায় ২৬ জন স্বাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। স্বাক্ষীদের মধ্যে ড. আজাদের বৃদ্ধ মাতা, ভগিনী ও ভায়েরা ছিলেন। তারা উ, আজাদকে অপহরণ কালের বেদনাদায়ক দৃশ্য প্রত্যক্ষ করেছিলেন এবং তারা আদালতের সম্মুখে মৌখিক বিবরণ দেন এ দ্বারাই অভিযুক্তদেরকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। অভিযুক্তদের নির্দোষিতা প্রত্যয়ন করে আদালত বলেন যে, ঘটনার সময় স্বাক্ষীগণ। কর্তৃক তাদেরকে সনাক্ত করণ তাদের গ্রেফতার তারা যে দোষী তা প্রমাণ করে। সরকার কর্তৃক নিযুক্ত জনাব মােহাম্মদ আজম সৈয়দ হাবিব উল্লাহ ও জনাব এম এ জলিল অভিযুক্ত জুবায়ের জনাব এ এস জোয়ারদার মকবুল হােসেনের এবং জনাব ফরিদুদ্দিন ভুইয়া আইয়ুব আলীর পক্ষ সমর্থন করেন। স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর জনাব আবদুর রাজ্জাক এই মামলা পরিচালনা করেন।

সূত্রঃ সাজাপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধী ১৯৭১ -প্রত্যয় জসীম