You dont have javascript enabled! Please enable it! 1972.09.09 | দৈনিক ইত্তেফাক দালালীর অভিযােগে ২ ব্যক্তির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড - সংগ্রামের নোটবুক
৯-৯-৭২ দৈনিক ইত্তেফাক দালালীর অভিযােগে ২ ব্যক্তির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড 
গত বৃহস্পতিবার ঢাকার ১নং ট্রাইব্যুনাল জজ জনাব আবদুল হান্নান চৌধুরী ঢাকার কালিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসার ইউসুফ আলী চৌধুরী এবং ঐ থানার অন্তর্গত জিনারদী ইউনিয়নের শান্তি কমিটির সেক্রেটারী শামছুর রহমান ওরফে শাহজাহান। মিয়াকে স্বাধীনতা সংগ্রাম কালে অগ্নিসংযােগ ও দালালীর দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দণ্ডিত করিয়াছেন। প্রকাশ আসামী ইউসুফ আলী ঐ মামলার বাদী জিনারদী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জনাব ইমদাদ আলী জীবন ও তাহার এলাকাবাসীর জান ও মাল রক্ষা করিবার নিমিত্তে ৫০ হাজার টাকা ও ৮জন সুন্দরী মেয়ে চেয়েছিল। উহা জোগাড় করিয়া না দিতে পারায় ১৯৭১ সালের জুন মাসের ১৬ তারিখে ওসি ইউসুফ আলী। রাগান্তিত হইয়া শামসুর রহমান সহ তিন শত পাকবাহিনী নিয়া ইমদাদ আলীর বাড়ী আক্রমণ করে এবং ১৬টি বসতবাড়ী আগুন লাগাইয়া তিন লক্ষ টাকার সম্পত্তি নষ্ট করে। ট্রাইব্যুনাল জজ তার রায়ে বলেন জনগণ যখন স্বাধীনতার সংগ্রামে লিপ্ত ছিল তখন ইউসুফ আলী তাহার ব্যক্তিগত স্বার্থে জোর করিয়া টাকা আদায়ে ব্যস্ত। শুধু ইহাতে সে তুষ্ট নহে বরং দখলদার বাহিনীর ফুর্তির জন্য মেয়ে জোগাড়ে ব্যস্ত।

ইহা দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে সে পাকবাহিনীর দালাল ছিল। তদুপরি স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রতি তাহার পুরােপুরি অবজ্ঞা ছিল। মাননীয় জজ আরাে বলেন ১৯৭১ সালের কালাে রাত্রির পর দখলদার বাহিনী সমস্ত বাঙ্গালীর অস্ত্র ছিনিয়ে নেয় জোর করে। অন্য দিকে তাহাদের দোসরদের নতুন করিয়া অস্ত্রে সজ্জিত করে। ১৯৭১ সালের আগস্ট মাসে দখলদার বাহিনী কর্তৃক শাহজাহান মিয়ার নামে ইস্যুকৃত রিভালবারের লাইসেন্স ইহাই প্রমাণ করে যে সে পাকবাহিনীর একজন দালাল ছিল। ইউসুফ আলী ও শাহজাহান মিয়াকে বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ৪৩৬ ধারা এবং ১৯৭২ সালের দালাল আদেশের ১(খ) অনুচ্ছেদের বলে দণ্ডিত করা হইয়াছে। সরকার পক্ষে সিনিয়র স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর খন্দকার মাহবুব হােসেন এবং জনাব আব্দুল গনি সরকার মামলা পরিচালনা করেন।

সূত্রঃ সাজাপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধী ১৯৭১ -প্রত্যয় জসীম